জ্বলদর্চি

হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঁচটি কবিতা(উৎসব ১৪২৮)

হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঁচটি কবিতা 



জানলা বন্ধের লোকজন 

সূর্যের আগুনকে
কবিতায় ধরে রেখেছে আমার শরীর -----
এই বলে গাছ মানুষের দিকে এগিয়ে দিল
একটি সাদা পাতা 

জানলা বন্ধের লোকজন
ভরদুপুরে সূর্যের আগুনকে উড়তে উড়তে
রঙ দিলো

আজও ছাই মানুষের 
গাছ নিয়ে কোনো বাক্য নেই





গল্প পাঠের পর

গভীর রাতে
তোমার গল্প পড়ে 
তোমার কন্ঠস্বর শুনতে ভীষণ ইচ্ছা করে 

কুয়াশায় ঢাকা চারপাশ 
শীতের চাদরে কথা ভারি হয়ে যায় 
একের পর এক সাজানো বাক্যের পরেও 
অনেক কথা জমা হয়
হঠাৎ করে মনে পড়ে আমার এক আলোর দুয়ারে 
শীতের সন্ধ্যের আড্ডায় তোমাকে 
রাতের গল্প পড়ার এক অদ্ভুত গন্ধের কাছে নিয়ে যাব

এতসব কথা ধরতে গিয়ে 
হাতের ফাঁক দিয়েই অনেক কিছু গলে যায় 
দেখতে পাই ভোরের আলোয় 
তোমার মুখের মধ্যাহ্নের এক অদ্ভুত ঢেউ 
গল্পের শব্দে পড়ে ফেটে ফেটে যায়। 





বিষণ্ণ বিকেলের হাতে 


তোমার চোখ মুখ নাক কান ... 
রোজ একটু একটু করে পড়ি
সব পাতাতেই এত উজ্জ্বল রঙ
তুলি এলোমেলো হয়ে যায় 

বেশ খানিকটা হাঁটার পর
নদীর সঙ্গে সুর মিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি 
কিছুটা এসে জলরঙ সাদা পাতায়
বিষন্ন বিকেলের হাতে একেবারে চুপ হয়ে যায়। 





ঘুড়ি  


সুতো ছাড়তে ছাড়তে 
যখন আর দেখা যায় না 
তখন ঘুড়ি আকাশ হয়ে যায় 

হাতের সুতোয় তখনও সে ধরা থাকে 
কিন্তু কোনো টান থাকে না 

একটা বাক্যেই তখন এঁকে ফেলা যায় 
সমগ্র ঘুড়ি 

এক একটা শব্দ তখন মহাসাগর। 




কে তোমাকে ভালো রাখে

রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে 
কেউ একজন তোমাকে বলল, এসো
তুমি রাস্তা বদলে তার দুয়ার পর্যন্ত গেলে

এক ডাকাতেই এতদূর পর্যন্ত আসা কি ঠিক হলো, 
এই প্রশ্নও তোমার মনে উঁকি দিয়েছিল

যে তোমাকে দুয়ার পর্যন্ত টেনে নিয়ে এলো 

যে তোমাকে দুয়ার থেকে ফিরিয়ে নিয়ে এলো 

কে তোমাকে ভালো রাখে ? 

আরও পড়ুন 

Post a Comment

4 Comments

  1. ঘুড়ির সুতো এখনো ধরা আছে বুকে।

    ReplyDelete
  2. কবি হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতা মানেই চোখের সামনে উন্মুক্ত জীবনের খোলা মাঠ। কি নেই সে মাঠে! কবিকে শ্রদ্ধা।

    ReplyDelete
  3. কে তোমাকে ভালো রাখে খুব ভালো লাগল। তাছাড়া অন্য কবিতাগুলিও খুব সুন্দর।

    ReplyDelete