জ্বলদর্চি

পদ্মপাতায় শিমুল--৩/ সীমা ব্যানার্জ্জী-রায়

পদ্মপাতায় শিমুল

সীমা ব্যানার্জ্জী-রায়

পর্ব-৩

ও শিমুল ও পলাশ

বটানি আর সিভিল নিয়ে ঠুনকো মজাদার লড়াইটা চলে প্রায়ই দুজনের। যদিও এখন দুজনেই এক বিষয়-এ পারদর্শী হয়েছে এই আমেরিকায় এসে। পরিবেশ!... বাতাস নিয়ে পর্যালোচনায় শিমুল আর জল নিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কাজকর্মে দক্ষ পলাশ।

--“এ মুমেন্টস ইন্সাইট ইজ সামটাইমস ওয়ার্থ এ লাইফ এক্সপিরিয়েন্স।” সেটা জানো কি শিমুল? ইনসিগনিয়া ক্যাসেট প্লেয়ার এ তখন গান ভেসে আসছে । “মন চলো নিজ নিকেতনে...” আহা! এই গানটা শুনলে মনটাকে ধরে রাখতে পারি না, বিশ্বাস করো। আজ পাখিরা খুব লাট খাচ্ছে কেন গো? এগুলো কি পাখি?

--এ হল মনপাখি। ছটফটানি দেখে বুঝতে পারছ না? সব যেন সুপারস্টার হবার জন্য নাচন কোদন করছে। সরি! সিরিয়াসলি এগুলো হল বদরী পাখি। দুটো থেকে অতগুলো হয়েছে। মুখ টিপে হেসে ফেলল শিমুল। আমি মনে মনে ভাবি বিধাতা মানুষের মনকে কী বিচিত্র ভাবেই না তৈরী করেছেন। মনে মনে নিজের মনের দিকে তাকাই। দিশা পাই না। কথারা ছুটে চলে।

--আমার কি বিশ্বাস জানো? সময়ের মধ্যে আজও সুসময় দাঁড়িয়ে আছে। পলাশ বাইরের দিকে চেয়ে বলল।

--যাই বলো, বড় একলা জায়গা এই আমেরিকা। কেউ আসে না। যেখানে মনের মিলের অভাব-সেখানে একাকীত্বই বাসা বাঁধে। আবার অন্যদিকে ভাবি আসেও। আমার নিঃশ্বাস -প্রশ্বাসে স্মৃতির সঙ্গ গুটিসুটি পায়ে চুপিসারে দলবেঁধে আসে। সেই সব পুরানো ক্ষয়ে যাওয়া স্মৃতিচারণ কুয়াশার মতন টুপ টুপ করে খসে পড়ে...হামাগুড়ি দিয়ে সামনে আসে। তাদের কুড়োতে গেলেই চোখের জলে সব ম্যাশাকার। যে দুটো একটা আঁচলে রাখা যায়—তাই নিয়ে বুনে চলি একটার পর একটা উলকি দেওয়া কাঁথা। এই বিচিত্র উলকির শরীরে হাত রেখেছো কি আঙুল স্পর্শ করবে সাতসুর! আমার তোমার মুখের ভাষায় 'সিকিমিদিনি'-পাহাড়ের আগে পাহাড়, নদীর আগে নদী, স্মৃতির আগে স্মৃতি। যদিও আমার এই আবেগ শুধু মোমবাতির আলোর মতো ভদ্র হিম; তবুও কিছু কিছু শব্দ আর অক্ষর শুধু মনকে বিদ্ধ করতে জানে। নিরালম্ব তো মানুষ বাঁচতে পারে না, বিশেষত মেয়েরা। মেয়েরা বাঁচতে চায় দাবি নিয়ে, যে কোনও একটা সম্পর্ক ঘিরে। মেয়েরা একবার মন দিলে সেটা আর ফিরিয়ে নিতে পারে না। মন যার ওপর গিয়ে পড়ে তাকেই মনের মানুষ বলে মনে করে। এ তো বাজারের জিনিস নয় যে ইচ্ছে করলেই আবার পালটে নিয়ে আসবে। যদিও তারা সফল হয় খুব কম।

--বাব্বাঃ! 'সিকিমিদিনি' আবার কী শিমুল? কত কিছু জানছি তোমার থেকে বলো তো?

--'সিকিমিদিনি' শব্দটা আমি পড়েছিলাম সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এর একটা কবিতায়। আমার মনে হয়েছিল মানেটা কিস্তিতে কিস্তিতে।

--ওহ! আচ্ছা, পৌষ লক্ষ্মী না কি যেন করো এখনও। সেই খড় দিয়ে বাঁধো। আর বিড় বিড় করে বলো। একটু বলো না। বেশ লাগে শুনতে। পাখিগুলোর মুখে খড়ের কাঠি দেখে মনে পড়ল। ডোন্ট মাইন্ড।

--আসলে মা করত এইসব। তারপর মেজদিদিয়াও সব করত। সেখান থেকে শেখা। আউনি বাউনি (বানানান্তরে আওনি বাওনি) বা আগলওয়া। পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে একটা শস্যোৎসব পালন করা হয়। ক্ষেতের পাকা ধান প্রথম ঘরে তোলা হয়। অনুষ্ঠানবিশেষে সেই উপলক্ষে কৃষক পরিবারে এই উৎসব পালন করা হয়। পৌষ সংক্রান্তির দিন দু-তিনটি ধানের শিষ বিনুনি করে 'আউনি বাউনি' তৈরি করা হয়। শিষের অভাবে দু-তিনটি খড় লম্বা করে পাকিয়ে তার সঙ্গে ধানের শিষ, মুলোর ফুল, সরষে-ফুল, আমপাতা সব একসাথে গেঁথে 'আউনি বাউনি' তৈরি করার রেওয়াজ আছে। এই আউনি বাউনি ধানের গোলা, ঢেঁকি, বাক্স-পেটরা-তোরঙ্গ-এর ওপর এবং খড়ের চালে গুঁজে দেওয়া হয়। বছরের প্রথম ফসলকে অতি পবিত্র ও সৌভাগ্য দায়ক মনে করে একটি পবিত্র ঘটে সারা বছর ধরে সংরক্ষণ করা হয়। এই আচারটিকেই 'আউনি বাউনি' বলে।

এখানে আমরা অত করতাম না-কারণ সবাই তো ছুটছি। স্কুল, কলেজ, চাকরি। কাজেই নিয়মটুকু করি।

মা মারা যাবার পর আমাদের বাড়িতে দিদিয়া সব নিয়ম-কানুন বজায় রেখেছিলেন। “এসো পৌষ বোসো পৌষ-জন্ম জন্ম থাকো; গেরস্থ ভরিয়ে থাকো, দুধে ভাতে রাখো।” এতদিনে আমার জীবনে সেই দুধে ভাতে থাকার পৌষ এসেছে। প্রথম পঞ্চাশ বছরের মধ্যে নয় বছরে হঠাৎ দুঃখের পর চল্লিশ বছর সুখ। আমার বিশ্বাস, এটা হয়েছে এইসব পুজো করার ফল। 'বাউনির বাঁধন'-আমিই বাঁধতাম। সবার ছোট ছিলাম, তাই মা আমাকেই বলত, "কিছু যেন বাদ না যায় সিমটি।" চালের ডোল থেকে শুরু করে বাইরের দরজায় গিয়ে শেষ হত। সব যায়গায় খড় দিয়ে বাঁধতে হত। বাঁধবার সময় মুখে বলতাম নিয়ম মতন মায়ের শেখানো বুলি, “বাহান্ন কোটি দরজা হোক। বাহান্ন কোটি এটা হোক, ওটা হোক”। যেখানেই বাঁধতাম সেখানেই বলতাম। তাই আজও বলি।

আবার কালি পুজোর সময় চোদ্দ পিদিম ঘরের কোণে কোণে দিয়ে বলি, “চোদ্দ পুরুষ অন্ধকারে ছিলে, আলোয় এসো।” এইসব কিন্তু খারাপ নয়। সব কিছুতেই বিজ্ঞান কাজ করে।

ঐ যে কথায় আছে না অভ্যাস যায় না ধুলে। আর আমার শাশুমা তো বলেইছিলেন, “ পুজো আচ্চাতে আমার বারণ নেই।” এমন মা কোথায় পাই বলো? হয়ত আমার ভাগ্য ভালো তাই এমন শাশুড়িমা পেয়েছিলাম। এই কথা বলেই মুখটা করুণ করল শিমুল। কথা বলতে বলতে খেই হারিয়ে ফেলি আজকাল। তাই যা মনে আসে আগে বলে নি।

ওই ''ইতু” পুজো করো-ওটা কিন্তু আমার খুব ভালোলাগে। এত কথা বলো তুমি-সেই তুমি চুপ থাকো খাবার সময়, ভাবা যায় না। অবশ্য আমার ভালো লাগে বলে আমিও করি।
খাবার পর ব্যাটন রুজ থেকে সেজদার ফোন আসে- “ইতুর পালুনী হল?” আমরা বলি, “কি করে বলব? পাপ মুখে হল।” তিনবার বলি তাই না? এটা কিন্তু দারুন লাগে আমার। কি কি করো যেন রান্না?

-সাদা ভাত(গোবিন্দ ভোগ চাল পাওয়া যায় না তো)-তাই বাসমতী চালের ভাত, পাঁচ রকম সবজি সেদ্ধ সাথে মুগের ডাল সমেত। খালি ঘি দিয়ে খেতে হয়, তেল চলে না। গুলি সুলির( আটা বা ময়দা মেখে তার থেকে সেমুই-এর মতন আকার করে পাতলা পাতলা করতে হয় হাতের তেলোতে রেখে) পায়েস। সব কিছুই ঘি এর ব্যাপার। তারপর সেটাকে হাল্কা ভাবে ভেজে দুধ দিয়ে পায়েস। হয়ে গেল গুলি সুলির পায়েস। আর একটা করি -গুড় আর তেঁতুল জলে গুলে । সব শেষে “পাপমুখে হল”, বলে তবে উঠতে হয়। দারুণ না? আর মাটিতে বসে খেতে হয় আর নিজের বাসন নিজে ধুতে হয়। আসলে কলাপাতায় খাওয়ার নিয়ম-তারপর সেই পাতা গরুকে খাওয়াতে হয়। এখানে আর সেসব হয় না। দেশে থাকতে আমার পাঞ্জাবী বান্ধবীরাও করত আমাদের সাথে। কি মজা যে হত তার কোন হিসেব নেই। এখন বাড়ির আর কেউ করে না এইসব। আমি করি-ভালো লাগে। বড় ভালো লাগে।

নীরব শান্তি রাশি

সেই মান্ধাতার আমল থেকে কত আঁকিবুঁকি কাটি মনের সাদা পাতায়। যেমন থাকে নিরুক্ত কথারা, একা সঙ্গোপনে। এই বয়সটাই হয়ত পড়তে পারে সেইসব কথাদের এই একলা যাপন। সেই জন্যেই তো আমরা কথা জমিয়ে রাখি মনের সিন্দুকে। যদিও কিছু কিছু কথা হঠাৎ স্মৃতির জঞ্জাল থেকে উঠে আসে। ডায়েরি লিখতাম আগে, এখন আর ভালো লাগে না ওসব।

দেখো এই পড়ন্তবেলায়, এখন আমরা শুধু দুজন। পঞ্চাশ পেরিয়ে গেলেই মনে হয় হাফ সেঞ্চুরি করে ফেলেছি। মনে আছে, তোমার? তুমি যখন আমেরিকায় প্রথম এলে, কিছুই ছিল না। ভাবতে রান্না করবে কিসে আর খাবার রাখবেই বা কিসে? ফলে খেতে না কি? খেতে ঠিকই। বিছানা বলতে একটা বালিশ , পাতার জন্য চাদর আর গায়ে দেবার একটা কম্ফোর্টার ছিল, কিন্তু বই আর বই। সারাটা বিছানা জুড়ে হুড়ুযুদ্ধি করত তারা। তাই শুতে না? শুতেও। সবই করতে, কিন্তু নতুন উদ্যমে ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে। আজকাল কত রঙ টেবিলে, তাই না? চুমু খায় তারা তোমার আর আমার কিছুটা ঝুঁকে থাকা পূর্ণিমার মত লাল হৃদয়-এ। যদিও আমি এদেশে এসেই হাতের কাছে সবই পেয়েছিলাম নদাদার সাজানো বাগানে এসে। এইদিকে আমি খুব ভাগ্যবতী।

--ফানি, ফানি ফানি, ফানি টু দি পাওয়ার অফ ইনফিনিটি। আমি যেন বড্ড স্ত্রৈণ হয়ে পড়ছি দিন প্রতিদিন। কেন বলো তো?

--কার জন্য আবার স্ত্রৈণ? বাবা তুমি পারো বটে? শিমুল মজার মুখ করে হাসল।

--শিব কিন্তু ঠিক আমার মতন। কুমার সম্ভব পড়েছ নিশ্চয়? অষ্টম পর্বের শেষ পড়লে বুঝবে, স্বয়ং মহাদেব কেমন পঁচিশটি ঋতু জগত সংসার ভুলে কেবল পার্বতীকে নিয়েই মগ্ন ছিলেন। শিবের দক্ষযজ্ঞ টা শুধু কিন্তু সতীর জন্যে।

--আর আমি যদি বলি, নিজের অপমানের শোধ তোলার জন্য। সতীর বাবা হিমালয়ের মুন্ডুচ্ছেদও করে দিয়েছিলেন। ছেড়ে দাও তো শিব-সতীর কথা। ওসব পুরাণ -টুরাণেই মানায়। বাস্তব জীবনের জন্য নয়। বিয়ের প্রথম প্রথম ওমনি সবাই শিবঠাকুর থাকে। শুনে মুখটা কাঁচুমাচু করে ফেলল পলাশ। তারপর পলাশের দিকে তাকিয়ে... "আচ্ছা, বাবা ! তুমি স্ত্রৈণ! রসং নিবেদনমিদং!” বলেই এবার একটু জোরে হেসে ফেলল শিমুল। প্লিজ চুপ করে শোনো। এমনি করলে কি গল্প বলা যায়? মাঝে মাঝে আবছা খাবছা প্রশ্ন করো।

--এই তো আধুনিক যুগের মেয়ের কথা। কে বললো? শিমুল পুরানোপন্থী। কিন্তু ইংরেজির ওপর তোমার এত খুঁতখুঁতে স্বভাব কেন?

--পুরানোপন্থি কেন হব? আর খুঁতখুঁতে স্বভাব-ই বা হবে কেন? মাঝে মাঝে টের পাই প্রবাসী হবার কি বেদনা। ইচ্ছে হলেও সব মনের মতো পাওয়া যায় না। লিখতে ভালোবাসি তাই ভাবি বাংলায় যেটা অনায়াসে প্রকাশ করতে পারব সেটা ইংলিশে কি করা যাবে? একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আস্তে করে বললঃ 'যা পেয়েছি প্রথমদিনে তাই যেন পাই শেষে...'

মানুষ দীর্ঘকাল যেখানে বসবাস করে, গাছের মতো সেখানে তার শিকড় গেড়ে যায়, বুঝলে? ইংরাজিয়ানার ওপর আমার রাগ বরাবরই। আমার মনে হয় কিছু ভারতীয়দের ইংরেজি শুনেই সাহেবরা দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন। এতদিন এদেশে এসেও ঠিক বোঝা যায়, এরা ভারতের কোন দেশ থেকে এসেছে। হা হা হি হি করে দুজনেই হেসে উঠল। অফিসে আমার কাছের বন্ধুরা সব আলোচনা করত। শুনে খারাপ লাগত যদিও। কিন্তু কিছু বলতাম না তাদের। হাজার হোক আমার জন্মভূমি তো। আমি আমার দেশকে খুউব খুব ভালোবাসি। দাদারাও বলে “একমাত্র তুই কিছুতেই চেঞ্জ হলি না। সবাই নিজেদের কেমন পালটে ফেলেছে।” পাল্টাই নি বলেই এখানকার মানুষের এত ভালোবাসা পাই। যার জন্য আমার খুব গর্ব। দেখেছিলে তো আমার আমেরিকান বন্ধু-বান্ধবীদের।

এবার একটু হাসির গল্প করি।

আমাদের জব্বলপুরের বাড়িতে একটা ছোট্ট বাচ্চা ছেলেকে নিয়ে এসেছিল বটি মানে আমার ছোড়দা। ও তখন শিবপুরে বি-ই কলেজের স্টুডেন্ট। মেদিনীপুরের ঘাটালে সেইবার সাংঘাতিক বন্যা হয়েছিল। বছরটা ঠিক মনে নেই। মনে হয় ১৯৭২ সাল। তখন ওরা কয়েকজন বন্ধু মিলে সেখানে গিয়ে কিছু বাচ্চাকে নিজেদের বাড়িতে রেখে সাহায্য করেছিল সেই সব ফ্যামিলিদের।

আমাদের বাড়িতে যাকে আনে সে একটা দশ এগারো বছরের ছেলে। নাম তপন দাশ। সে তো এল টুকিটাকি কাজের জন্য। তাকে আমার দিদিয়া প্রথম প্রথম ভাত, সবজি, মাছ খেতে দিলে সে বলত, “আমি খালি ফ্যান ভাত খাই। ওসব খাবু নি।” তাও দিদিয়া বকে তাকে খাওয়াত। আবার ওকে মুখ ধোবার জন্যে কলের কাছে যেতে বললে, সে তো কিভাবে কল খুলবে জানে না। কাজেই, ওকে শেখানো হল। “হুই মা এইখানেক হাত দিতিছি জল পড়িনছে, ওইখানেক হাত দিতিছি জল পড়িনছে। ছিলিক ছিলিক করিন জল পড়িনছে। ও দিদিয়া বালতিতে জল কেমন ছলাৎ ছলাৎ করাইনছে, দেখো বটেক।" আর আমরা হেসে কুটোপাটি। দিদিয়া আমাদের বকত তখন। সন্ধ্যে হলে সে প্রথম প্রথম জিজ্ঞাসা করত “লন্ঠন কুথা? এখন পরিষ্কার না কইরলে রাত হয়েইন যাবেক বটে।” ছোট ভাই বাবু বলত, “এখানে ওসব করতি হবেক লাই রে তোকে। ইখানটায় আরামসে থাইকবেক। পড়তে বসতে হবেক। সন্ধ্যে হোক দেখিস তখন।” মেদিনীপুরে থাকার দরুণ আমি আর ছোট ভাই মেদিনীপুরিয়া ভাষা বলতে পারি। তারপর তাকে শেখানো হয়েছে, এইভাবে সুইচ টিপলে আলো জ্বলে উঠবে। সে তো আনন্দে আত্মহারা। "ও ছোদ্দা, দেওয়ালে হাত দিতিছি, ঝিলিক মারিন আলোক জ্বলিন গেএলো।” বেশ কিছু বছর ছিল আমাদের বাড়িতে। তারপর আমরা এখানে আসার সময় আবার ওকে ঘাটালে রেখে আসে বটি। এইসব কথারা ছুটে ছুটে আসে মনে।

--হা হা হা বেশ মজার তো। দুজনেই একসাথে হেসে উঠল। আমাদের দেশে কত বিচিত্র মানুষের ভাষা, বলো। আমেরিকার মানুষেরা শুনে তো অবাক হয়ে যায়। আমরা কি সব ভাষা জানি নাকি?

--আমি তো সুযোগ হাতছাড়া করি না। ঠিক তালে গোলে এদেশের লোকেদের শুনিয়ে দি যে, আমাদের মতন বিভিন্ন ভাষা আর বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষ পৃথিবীর কোন দেশে নেই। ওরা তো নিজের দেশ ছাড়া আর কোন দেশের খবর জানে না। হাজার হোক আমরা বাঙালিরা জ্ঞান দিতে পারলে ছাড়ি না। তাই না? কি বলো পলাশ?

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇


Post a Comment

0 Comments