জ্বলদর্চি

পদ্মপাতায় শিমুল-১৮/সীমা ব্যানার্জ্জী-রায়

পদ্মপাতায় শিমুল-১৮

সীমা ব্যানার্জ্জী-রায়

আমি তো প্রাইমারী স্কুলে পড়ি নি। বাড়ীতেই দিদিয়ার কাছে পড়তাম। বিহারের জামালপুরে এম. ই স্কুল-এ পড়েছি মাত্র ছয় মাস...তারপর ঝাড়গ্রামে এসে ক্লাস সিক্স-এ ননীবালা বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হই ।

দুপাশের সারি সারি শালগাছ-এর মাঝখান দিয়ে মেঠো রাস্তা ধরে ননীবালা স্কুলে যেতাম। ...জঙ্গলের মধ্যে মাঝে মাঝে এক একটা দৈত্যের মতো বিরাট বাড়ি মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকত।

স্কুল যাবার সময় আমরা প্রত্যেকটা শালগাছের গোড়ায় চক দিয়ে গোল কাটতাম। পরের দিন স্কুল যাবার সময় ভালো করে দেখতাম গোলটা থেকে যেন এক চুল গাছের গুঁড়ি এগিয়ে গেছে। তার মানে শাল গাছ চলতে পারে। মজার ব্যাপার হল-কেউ এ নিয়ে কিছু বললে এখনও তর্ক করি।

পড়তে খুউব ভালোবাসতাম। কিছু বই না পেলে ব্রতকথা পড়তাম। নতুন বই-এর গন্ধ শুঁকতাম। মেজদা সব নতুন বই ব্রাউন পেপার দিয়ে বাঁধিয়ে দিত।

ইংলিশ একদম পারতাম না। তবে অঙ্ক আর বাংলায় ভালোই ছিলাম। তাই ভর্তি হয়ে গেলাম। স্কুলে অনেক বন্ধু হল। রেখা ঘটক, অসীমা ভট্টাচার্য্য, কল্যাণী ঠাকুর আরো অনেকে। রেখা প্রথম হত সব পরীক্ষায়। আমি দ্বিতীয়। কল্যাণী থার্ড। ইংলিশে সব সময় রেখার চেয়ে বেশ অনেক কম নম্বর পেতাম। সবকিছুতে ভালো ছিল রেখা।

রেখার গল্পটা ঐন্দ্রজালিক। ওরা থাকত আমাদের স্কুলের খুব কাছে। খুব নিরিবিলি ছিল জায়গাটা। ওর বাবা ছোট বাচ্চারা মারা গেলে সেইসব শিশুদের মাটিতে গর্ত করে রাখার কাজ করতেন। ডোম বলা চলে। ওর কাছে শুনেছি শ্মশানবাসীদের ফেলে রেখে যাওয়া কুপি নিয়ে দুই বোন ঘরে যেত। সেই আলোয় পড়াশোনা করত।

খালি পায়ে, হলদেটে হয়ে যাওয়া সাদা ফ্রক পড়ে স্কু্লে আসত। একবারের একটা ঘটনা ভাবলে আজও মনটা ছুটে চলে যায় সেই ননীবালা গার্লস স্কুলের কাছে, যেখানে রেখা ঘটকদের বাড়ী ছিল।

জঙ্গলের মধ্যে গোল করে থাকা শালগাছের মাঝখানে ছিল ওদের খড়ের ছাউনি দেওয়া মাটির বাড়ি আর একটা ছোট্ট মাটির বারান্দা। বারান্দার এক পাশে ছাউনি দেওয়া ছিল। সেখানেই ওর মা রান্না করত। দেখাই যেত না সেই বাড়ি। মা বাবার সাথে দুই বোন থাকত। আমাদের কোনদিন ডাকে নি ওদের বাড়িতে। দূর থেকে যা দেখা যেত-সেটা মনে আছে।

রেখা প্রথম আর আমি দ্বিতীয় হয়েছি ক্লাসে। প্রাইজ নিতে যাব কি করে, তাই জানতে এসেছিল আমাদের বাড়ি। জানলার পেছনে বাইরে দাঁড়িয়ে আমাকে বলছিল: “তুই কিভাবে প্রাইজ আনতে যাবি, তাই মা আমাকে জিজ্ঞেস করে পাঠাল। তাহলে তোর সাথে আমি আর আমার দিদি প্রাইজ আনতে যাবো।”

বললাম, “ আমি তো রিক্সা করে যাব। আর আনন্দে ওকে আর একটা কথা শোনালাম। জানিস আমার নদাদা কলকাতা থেকে আমার জন্য চারটে সিল্কের সাদা ফ্রক, আর দু জোড়া নতুন জুতো এনেছে। আমি তাই পরে যাব। তুই কি পরে যাবি, রে?”

রেখা বলল: “আমি এই জামা পরে যাব। আমার তো একটাই জামা।” হাসি মুখ করে বলল। হঠাৎ শুনি মা জানলা দিয়ে আমাকে ডাকছেন, “সিমটি, একটু ভেতরে আয় তো”।

--আসছি মা। একটু পরে।

--না! এখুনি আয়। খুব দরকার আছে। ছুটে গেলাম ভেতরে। মা বললেন, “দুটো জামা নিয়ে রেখাকে দে। দুজনে একই রকমের পরে যাবি।”

অবলা মনের আঙিনায় তখন মেঘ জমতে দেখে মা বললেন, -“দেখবি, কত ভালো লাগবে দুজনে একরকম জামা পরে গেলে।”

বুঝে গেলাম সেই ছোট্ট বয়সে। মা শিখিয়ে দিলেন, আনন্দ ভাগ করে নিতে হয়। রেখার হাতে তুলে দিলাম দুটো জামা।

রেখা হাসি মুখে বলল, “আমি তোর কাছে জামা চাইতে আসিনি, শিমুল। আমি এসেছি- অতদূর কিভাবে যাব, তাই জানতে।”

আমি ওকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলাম, “দুজনে এক রকমের জামা পরে যাব, কি মজা হবে তাই না?” সেই দুজনের হৃদয়ের স্পন্দন এখনও বুকের মধ্যে বাজে। এটা স্মৃতি ছাড়া কিছু নয়-অতীতে বিঘ্নও মধুর হয়।

শুনেছি, ওরা দুই বোনেই নাকি ডাক্তার হয়েছে। একবার, শুধু একবার আবার ফিরে পেতে চাই সেই মেয়েবেলার বন্ধুকে। একবার তাকে বুকে জড়িয়ে ধরতাম। দুজনের চোখের নোনা জলের স্বাদ চেখে দেখতাম। চোখের জলের স্বাদ এক আছে, না বদলে গেছে।

সেইসময় থেকেই একটু আধটু লেখালিখি করে শুকতারা প্রতিযোগিতায় পাঠাতাম। দু -বার পুরস্কৃত হই। জানি না সুখ কাকে বলে? তবে সুখ সেই বিষণ্ণতা যে আমার আঁচলে আজও বাঁধা আছে। হয়ত, সেই জন্যই আবার হঠাৎ করে বাংলা লেখা মাথায় আসে। এখানে আসার পরেও শুকতারায় বেশ কয়েকটা লেখা প্রকাশ পেয়েছে।

আমাদের বাড়ির সামনে দুদিকে দু-দুটো মাঠ ছিল। বাড়ি লাগোয়া মাঠটাতেই বেশি খেলাধুলো চলত। ওই মাঠটাকে আবার অনেকে 'ভুলভুলাইয়া'র মাঠ বলত। 'ভুলভুলাইয়া'র মাঠ বলত কারণ- ওই মাঠে এলেই নাকি সবাই সব ভুলে যেত...অদ্ভুত।

বাড়ির সামনের মাঠ পেরুলে সন্ধ্যাদের বাড়ি। ওদের বেড়ার গা ঘেঁষে ডানদিকে আবার একটা মাঠ। সেই মাঠের চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে কিছু বাড়ি।

তবে মাঠের শেষে সুখময় সেনগুপ্তের অট্টালিকার মত বাড়ি ছিল। ওদের বাড়ির আমগাছটার কিছু ডালপালা পাঁচিল টপকিয়ে এদিকে মাঠের দিকে ঝুলে থাকত। গ্রীষ্মকালে ঝড় আসলেই ছুটির দিনে কচিকাঁচারা আম কুড়োতে ছুটে যেতাম।

সুখময় বাবু ছিলেন ঝাড়্গ্রাম রাজ কলেজের প্রিন্সিপ্যাল। উনি স্টেটসম্যান পত্রিকার এডিটিং-ও করতেন। ওনার কাছেই আমি ইংলিশ পড়তে যেতাম। ওনার ছেলে মণিময়দা হাইয়ার সেকেন্ডারিতে কুমুদকুমারী ইন্সটিটিউট থেকে আর্টস-এ প্রথম হয়েছিল।

দাদারা একদিন বিকেল বেলা মাঠে ফুটবল খেলছিল। হঠাত বেশ কিছু গাড়ির সাথে সেই মাঠে পুলিশের জিপ এসে হাজির হয়।

আমাদের বাড়িটাই আগে চোখে পড়ত তাই, তাঁরা আমাদের বাড়িতে আসেন। মাঠের সব ছেলেরা তখন যে যেদিকে পেরেছে...সেদিকে দৌড় দিয়েছে। কারণ, তখন নকশালের দাপট চলছিল। আমার মেজদাদা ঘর থেকে বাইরে বেরুলে ওনারা জিজ্ঞেস করেন, "মণিময় সেনগুপ্তের বাড়ি কোথায়- বলতে পারবেন স্যার?”

দাদা তখন কারণ জিজ্ঞেস করলে ওনারা জানান যে, “মনিময় হাইয়ার সেকেন্ডারিতে আর্টসে প্রথম হয়েছে, তাই ওর ইন্টারভিয়্যু নিতে এসেছি।”

তখন দাদা ওদের বাড়ি দেখায় এবং আমাদের বাড়িতেও যারা লুকিয়ে ছিল তাদের বলে সেই কথা। তখন সবাই হৈ হৈ করে বেরিয়ে আসে, সাথে মনিময়দাও। সবাই খুব আনন্দ করে ওদের বাড়ী যায় একসাথে।

আমাদের বাড়ির পাশে পরিতোষবাবুর বাড়ির পাশের রাস্তার ওপারে মিত্র দের বিরাট তিনতলা বাড়ি ছিল। দাদাদের সরস্বতী পূজার সময় আমাদের বাগানের ফুল চাইতে পাঠাত। কত্ত ফুল-সাজি উপছিয়ে পড়ত। চন্দন বাটা আর দূর্বা তোলা আমাদের কাজ ছিল-কিন্তু প্রসাদের সময় গদগদে কলা আর নেতিয়ে পড়া শশা প্রসাদ দিত। বলত, “এগুলো খা-দেখবি খুব ভালো রেজাল্ট করবি।” আমরা কেউ কিছু না বলে গজগজ করতাম।

এক অদ্ভুত সত্য ঘটনার গল্প বলি- মনে পড়লে এখনও শিহরণ লাগে।

আমারই এক বান্ধবী, মিতা তার নাম। সকালে নিজেদের বাড়ির বাগানে সাজি নিয়ে ফুল তুলতে গেছিল। রাত্রে জানলার কাছে ওদের বিছানা ছিল। সেদিন খুব গরম তাই জানলা খোলা ছিল-এখনকার বাড়ির জানলার মতন ছিল না। সেদিন মিতা সন্ধ্যে থেকেই নিজের মা কে বলছে, “মা আমার খুব ভয় করছে, কেন কে জানে?”

শুনে ওর মা বলেছেনঃ “যা শুয়ে পড় আর রাত করিস না। কাল পরীক্ষা আছে।”

বলে, “ না মা, আমি তোমার সাথে শোবো।”

তখন ওর মা ওকে বকতে শুরু করেন। শেষে কাঁদো কাঁদো হয়ে একাই বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়েছে। হঠাৎ ওর মা ঘর থেকে গোঙানীর আওয়াজ শুনতে পান- ছুটে গিয়ে দেখেন ওর গলায় বিষধর সাপ জড়িয়ে আছে। আর ঠিক ওর মুখের কাছে জিভ নিয়ে সাপটা ফোঁস ফোঁস করছে। ওর মা তখন ছুটে ওর বাবাকে ইশারায় ডাকেন-চিৎকার করলে যদি কামড়ে দেয়।

ওর বাবা বাইরে গিয়ে পাড়ার সবাইকে ডাকেন -কেউ কেউ বন্দুক নিয়ে আসে্ন, ওঝা আসেন...কিন্তু সবাই দাঁড়িয়ে পড়েছে-বেশি বাড়াবাড়ি করলে তো ওকে কামড়ে দেবে। পরের দিন জানা গেল-ও মারা গেছে... আমার জীবনের সবচেয়ে প্রথম করুণতম গল্প।

তারপরেই আরেক ঘটনার কথা না বললে-অসম্পূর্ণ থেকে যাবে মেয়েবেলা। তখন ক্লাস সেভেন এ পড়ি-আমাদের পাড়ায় বেবি নামে আমারই বয়সী একটি মেয়ে কলকাতা থেকে এল। আমার মা আর ওর মা -এর খুব বন্ধুত্ব হল। আমি আর বেবি হলাম প্রাণের বন্ধু। দুজন দুজনকে চোখে হারাতাম। স্কুল থেকে এসেই ওদের বাড়ি চলে যেতাম। ওরা থাকত ছোদ্দার বন্ধুর বাড়িতে ভাড়া দিয়ে।

ঠাকুর যেন নিঁখুত করে ওকে তৈ্রী করেছিলেন। যারাই দেখত তারাই বলত এই কথা। ঝাড়্গ্রামের জল-হাওয়া খুব ভালো তাই নাকি ওরা ঝাড়্গ্রামে এসেছে।

দুই বোনের মধ্যে দিদি স্কুলে যায় কিন্তু ও যায় না। সব সময় মাথায় রুমাল বেঁধে থাকে। আর সূর্য অস্ত গেলে তবে বাইরে বেরুত।

আমি মা-কে জিজ্ঞেস করতাম... “ও মা বেবি সব সময় মাথায় রুমাল বেঁধে কেন থাকে?” মা কিছু বলেন নি- শুধু বলেছিলেন... “ওর ভালো লাগে তাই বেঁধে থাকে। ওকে জিজ্ঞেস করিস না, কেমন?”

একমাস পরেই বেবি মারা গেল- মা আমায় যেতে দেন নি সেদিন সেখানে। খুব কেঁদেছিলাম সেদিন। পরে জানতে পারলাম ওর এমন অসুখ করেছিল যার কোনো ওষুধ নেই। তাই ওর ডাক্তারবাবু বলেছিলেন, “যে কদিন বাঁচবে -জল-হাওয়া ভাল...সেখানে নিয়ে যান।”

কত হাত ধরে ধরে দুজনে বেড়াতাম। একসাথে গলা মিলিয়ে গান করতাম। “কোথাও আমার হারিয়ে যাবার নেই মানা...” কিশোরী মনের নিষ্পাপ হাসিতে হেসে উঠত জ্যোৎস্না-অধীর মন্থর বাতাস, কদম্বের থালার মতন এক চাঁদ”... মিতা-বেবি...তোরা ছিলিস দুঃখের দোসর সুখ।

মাঝে মাঝে আমার মা-এর বালবিধবা নদি এসে থাকতেন। আমরা ডাকতাম মাসু। বেশ মজার কথা বলতেন মাসু। স্কুল থেকে আসার পর যখন দরজা ধাক্কাতাম, “ও মাসু! দরজা খোলো! আমি । আমিইইইই...সিমটি”।

-- “কে এ ? মেয়ের ঢিবি?” বলতে বলতে পঁয়ষষ্টি বছরের মাসু দরজা খুললেন। বালবিধবা মাসু! সদ্য মা - হারানো দুটো ছোট ছোট ছেলে মেয়েকে দেখাশুনোর জন্য আমাদের বাড়িতে কিছুদিনের জন্য এসেছেন। ছোট্ট মেয়ে জিজ্ঞেস করে মাসুকে, “তুমি আমায় “মেয়ের ঢিবি বলো কেন, মাসু? বটী-বাবুকে তো বলো না? মেয়ের ঢিবি কি?”

--“বটী-বাবু হল সোনার বেলপাতা! ধুলেই সব পরিস্কার ঝকঝকে, তকতকে। মেয়ের ঢিবি যে কি...বললে এখন বুঝবি না, মা। বড় হয়ে বুঝবি তখন। বড় খারাপ এই মেয়ে জন্ম রে। বড্ড খারাপ!” বলে একটা বড় দীর্ঘশ্বাস ফেললেন।

সেই ছোট থেকে বড়ো হয়েও ভেবে দেখেছি এই সুন্দর ছোট্ট “মেয়ে” শব্দ আর অহিংস মিথ্যে কথাটা যা আমি শেষ দিন পর্যন্ত মনে রাখতে পারি।

নয় বছর বয়সে মাসুর ফুলিয়ার জমিদার বাড়িতে বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের তিন মাসের মাথায় স্বামী হারান লাবণ্যমণি। আহা! নাম শুনলেই মনে হয় খুব সুন্দরী। হ্যাঁ! সত্যি খুব সুন্দরী। টকটকে গোলাপী রং, এক মাথা রুপোলী চুল, নিখুঁত মুখে যেন তেল গড়িয়ে পড়ছে। প্রসাধনী বলতে দুধের সর মুখে লাগানো। তারপর!

নাবালিকা স্বামীহারা মাসু সমস্ত বিষয় সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হয়ে নবদ্বীপে একমাত্র ভাই-এর সংসারে থাকেন সসম্মানে। মাঝে মাঝে ছোট বোনের সংসারে আসেন, থাকেন- আবার চলে যান। সন্ধ্যেবেলা হলেই নিজের খাটে শুতেন-আমাদের দুই ভাই বোনকে পাশে নিয়ে। আর গাইতেন, “হরি দিন তো গেল, সন্ধ্যে হল/পার করো আমারে।”

ছুটির দিন পূর্ণিমার জ্যোৎস্না দেখে আমাদের নিয়ে বাইরের বারান্দায় বসতেন। ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক , জোনাকির তিড়িক তিড়িক নাচ, আর ঝড়া পাতার টুপ টাপ শব্দ-গন্ধে আমাদের আলো আঁধারি বারান্দা মায়াবী হয়ে উঠত। ছোদ্দা খুব দুষ্টুমি করত মাসু-এর সাথে -

একদিন আমরা বসে আছি হঠাৎ দেখে ছোদ্দার বন্ধুর মুক্তিদিদি তার প্রেমিক কে নিয়ে হাত ধরাধরি করে যাচ্ছে, কোচিন থেকে ফিরছিল বোধহয়। আমাদের দেখতে পায় নি হয়ত। ছোদ্দা তাই দেখে গলা নীচু করে বলে- “ও মাসু ! দেখো দেখো জ্যান্ত আধাকেষ্ট যাচ্ছে। প্রণাম করো।”

আর মাসু রেগে গিয়ে বলতেন, “ শোনো হাড় জ্বালানি ছেলের কথা-ছিঃ ছিঃ এ শোনাও পাপ।”

ছোদ্দাঃ- “কেন কেন মাসু-ওরা তোমার আধাকেষ্ট নয়, কেন? উনিই তো লীলা করতে শিখিয়ে গেছেন। আর আমরা করলে দোষ কেন?”

মাসুঃ- “জানি না, যাঃ। যত সব অলুক্ষুণে কথাবার্তা তোর। ঘরে চল দিকি। রাত বেড়েছে।”

হা হা হা! ও সত্যি-খুব মজার ছেলে।
(চলবে)

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇

Post a Comment

0 Comments