জ্বলদর্চি

মারণবীজের আজব ধাঁধা-৯/ বাসুদেব গুপ্ত

মারণবীজের আজব ধাঁধা পর্ব ৯

বাসুদেব গুপ্ত

নভীন ও অর্চি হঠাৎ এরেস্ট হয়ে একেবারে হতভম্ব হয়ে যায় । দুজনে দুজনের দিকে তাকায়। তারপর সিরাজের দিকে তাকায়, সে অন্যদিকে তাকিয়ে। ভাবলেশহীন। দুজনেই বুঝতে পারে একটা বেখাপ্পা প্যাঁচে পড়ে গেছে, এর থেকে বেরোতে এখন অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে। 
-আমরা ওঁকে খুন করতে যাবো কেন? আমরা তো ওনাকে বাঁচাবারই চেষ্টা করছিলাম। আপনি কিছু ভুল করছেন। 
নভীন আমতা আমতা করে প্রতিবাদ জানায়। প্রতিবাদ না করা মানে পরে ধরে নেওয়া হবে আসামী অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছে। 
প্রজাপতি গুঁফো এবার অর্চির পিঠে এক ঠেলা দিয়ে বলে, 
-ফালতু কথা বাড়াবেন না। চলুন আমাদের সংগে। গাড়িতে উঠুন। 
-আশ্চর্য! এভাবে বলার আপনি কে? আপনি আমাদের এরেস্ট করার অধিকার পেলেনই বা কোথায়? আপনার নাম কি? আইডি দেখান। কোন থানা থেকে এসেছেন? গায়ে হাত দিচ্ছেন কেন? জানেন আমি সাংবাদিক?
-আমরা এনআইএ, সিআইএ, সিবিআই, র- যা খুশি হতে পারি। আপনারা দুজন এরেস্টেড। বাস। আর আমাদের সাংবাদিক টাংবাদিক দেখাবেন না তো। ওরকম অনেক সাংবাদিক আমাদের খাঁচায় রোজ গান গায়। আমার নাম জানতে চাইছেন? যমের আবার একটা নাম হয় নাকি। বলে হাঃ হাঃ করে হেসে খুব খুশি হয়ে যান প্রজাপতি গোঁফ। নভীন দেখল, হাসলে গোঁফটা প্রজাপতির ডানার মত কাঁপতে থাকে। ও প্রতিবাদ চালিয়ে যায়। 
- আশ্চর্য আপনারা আমাদের নাম জানলেন কি করে? আপনারা জানতেন আমরা এখানে আছি। 
- হাঃ হাঃ। বলব কেন? আপনি কি আমাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন নাকি? ওটা যে আমরা করবো। বোকা। হা হা হা।  
- হুম। কিন্তু আপনারা এখানে এলেন কি করে। কে খবর দিলো? সিরাজ ফোন করেছিল! আমরা তো ফোনে এম্বুলেন্স অব্দি পাই নি। 
 - খুব সোজা। বলছেন সাংবাদিক, এদিকে কিছুই খবর রাখেন না। দুয়ারে যত্ন শুনেছেন? ডঃ দাসের নম্বর দুয়ারে যত্ন প্রকল্পে রেজিস্টার। প্রতি চার ঘণ্টায় ওনার ফোনে একটা iamalive বাটন ট্যাপ করতে হবে। উনি যদি না করেন, সিগনাল চলে যাবে এই নম্বরে। আমরা বুঝব হুয়া কোই এমারজেন্সী। হয় রবারি বা কেউ অসুস্থ। আমরাও চলে আসব। হুস করে। 
শুনে মনে হয় একেবারেই একটা ধাপ্পা। বিশ্বাস করতে মন যায় না। তবে এ দেশে এখন অনেক কিছুই দুয়ারে আসছে। হতেও পারে। 

তবু এমন সারভিসের কথা শুনে সন্দেহের চোখে ওদের দিকে তাকায় নভীন। কিন্তু এরা তো আইডিও দেখাচ্ছ না। অবিশ্বাস না করেই বা উপায় কি। 
এরা জেনুইন পুলিশ হোক না হোক পুরো ব্যাপারটা গায়ের জোরের। ওরা দুই বন্ধু নেহাত একটা তাগিদ থেকে এই অনুসন্ধানে নেমেছে। ওরা ফেলুদাও নয়, গোয়েন্দা একেনও নয়। এই নিজেদের পুলিশ দাবী করা লোকগুলো গাঁট্টাগোট্টা, সংখ্যায় বেশি। এদের সংগে যাওয়া ছাড়া আর উপায় নেই। কেস একটা হবেই। আর যে পরিস্থিতিতে আমাদের দেখেছে তাতে মনে হয় তদন্ত না করে এরা ছাড়বে না। 
-এতো আচ্ছা মুস্কিল হল। আমাদের ভাইরাসের ইনভেস্টিগেশানটা তো বন্ধ হয়ে যাবে। অর্চি ফিসফিস করে। 
-দেখা যাক। আমারও সরকারী মহলে চেনা শোনা আছে। অত সহজে ছাড়ছি না। নভীনের চোয়ালটা শক্ত হয়ে ওঠে। 

তিন জনের দল ওদের হাতে আস্তে আস্তে লাঠির ঠোকা দেয়। ইংগিত পরিস্কার। এগোও নৈলে মারতে মারতে নিয়ে যাবো। আমেরিকান সিনেমায় দেখা যায় পুলিশ এরেস্ট করার আগে একটা মন্ত্রের মত পাঠ করে, you have the right to remain Silent ইত্যাদি। রাইট টু প্রোটেস্ট বা রেজিস্ট কেউ বলে না। আর কালো হলে তো কথাই নেই। ছুতো পেলেই আগে গুলি। ঠা ঠা ঠোক দো। আমাদের দেশে এসব প্রথার কথা কেউ শোনেনি। এই এরেস্টটা দেখে অর্চির মনে হচ্ছিল কাফকার Kর কথা। খুব মিল। মনে মনে হাসল। মনে পড়ল রুচির কথা। ও দেখলে এখন খুব মজা পেত। নিশ্চয় বলত দেখ এবার আমার হেফাজত থেকে পুলিশের হেফাজতে যেতে কেমন লাগে। 

পিছনে পড়ে থাকে নিথর ডঃ দাসের দেহ। সবাই বেরিয়ে গেলে সিরাজ ফোন করে। কিছুক্ষণ পরে এম্বুলেন্সের থামার শব্দ হয়। এতক্ষণ কি নেট জ্যাম করা ছিল? সিরাজ কি বোঝে সেই জানে। 

বাইরে দাঁড়িয়ে একটা বিরাট কালো রংঙের ৭ সীটার সাফারি। “পুলিশেরা বেশ ভালো ভালো গাড়ী পাচ্ছে আজকাল।“ নভীন মন্তব্য করে। অর্চি ঘাড় নাড়ে, কোন কথা বলে না। এমনিতেই ওর শরীরটা এখনো বেশ দুর্বল, মাথায় সেই ভয়ংকর আবু পাহাড়ের ঘটনার স্মৃতির বোঝা। ওকে যখন লাঠির গোঁত্তা দিয়ে মাঝখানের সিটে উঠতে বলা হয় ও চুপচাপ এক চলন্ত শবের মত উঠে বসে পড়ে। কি কি ঘটছে গুছিয়ে ভাবতে গিয়ে মাথায় কেমন একটা ঘোর আসে। 

নভীন গটগট করে হেঁটে গাড়ীর ডানদিক দিয়ে ঢুকে পড়ে। হাত ধরে, গুঁফোর সাগরেদ দরজা খুলে ওকে ঠেলে দেয় ভিতরে। সারাক্ষণ হাতে রিভলভার উঁচিয়ে গুঁফো তদারক করে। তারপর ঝপাঝপ সামনে দুজন পেছনে দুজন বসে গাড়ী স্টার্ট দেয়। গাড়ীটা দুবার একটু ঘড়ঘড় করে, বাধ্য ঘোড়ার মত এক লাফ দিয়ে লাগায় দৌড়। 
-কোনরকম চালাকি বা পালাবার চেষ্টা করবেন না। ভালোয় ভালোয় অফিসে চলুন। সেখানে সাহেব খুন নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। তারপরের ফয়সালা তিনিই করবেন। আমি ডিপোজিট করেই খালাস। 
বলে একটা হাই তোলে গুঁফো। নভীনের কানে অফিস আর সাহেব কথাটা লাগে। কি জানি হয়ত ইনি খুবই জুনিয়র কেউ।
-চালাকি করলে জানেন তো কি হয়? সেই বিরাট চৌবের কথা মনে আছে তো? আইনের রক্ষকদের হাতে সব ক্ষমতা। তার কি হল ওস্তাদি করতে গিয়ে? এনকাউন্টার। সোজা মর্গের কাউন্টারে জমা হয়ে যাবেন। 
বলে আবার সেই হাসি। আবার সেই প্রজাপতির কাঁপতে থাকা ডানা। পিছনে দুই সাকরেদও প্রবল হাসে। একজনের মুখ থেকে সুপুরি ছিটকে এসে অর্চির গালে এসে পড়ে। অর্চির গা রি রি করে কিন্তু কাউন্টারের ভয় মনে পড়ে যেতে চুপ করে হজম করে নেয়। 

পুলিশ হলেও এরা শিল্প রসিক। মিউজিক চালিয়ে দেয়। উরির গান। গানের পছন্দ দেখে নভীনের মনে হয় এরা পুলিশ না হয়ে যায় না। গাড়ী নিউটাউন থেকে কলকাতার দিকে চলতে থাকে। বাঁ দিকে একটা বিশাল প্লাস্টারের প্যাঁচা। কোথায় যেন এরকম দেখতে কাকে দেখেছি, ভেবে পায় না নভীন। গাড়ী লালবাজার যাচ্ছে না কি? 
কিন্তু ক্ষণকাল পরেই ঘটনাপ্রবাহ যাকে বলে উত্তাল হয়ে ওঠে ও তীরবেগে অন্যদিকে মোড় নেয়। কলকাতার দিকে না ঘুরে সাফারি হঠাৎ সোজা বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে দিল্লী রোডের দিকে ছুট লাগায়। ভিতরে দুজন বিমূঢ় বন্দী। হাইওয়ে পৌঁছে গতি যায় হু হু করে বেড়ে। কোথায় নিয়ে চলেছে? এযাত্রা কি শেষ হবে আজ রাতে? এখন বোঝা যায় দুয়ারে যত্নটা আরো অনেক দুয়ারের মত গল্পই ছিলো। দক্ষিণ দুয়ার। অর্চি ভাবে আর দাঁত ঘসে দাঁতে। কিন্তু কোথায় নিয়ে যাচ্ছে? দিল্লী? 

বিবিসির ৭ নম্বর ফোনে মেসেজ আসে। প্রতিটি রাজ্যের পিন কোড ধরে আলাদা ফোন। এটা গয়াল সাহেবের আইডিয়া। 
মেসেজে ইংরেজীতে লেখা, দুটো কবুতর নিয়ে আসছি। কাল বিকেলের মধ্যে খাঁচায় ভরে দেব। রেখে দিন দু তিন সাল।
গাড়ী চলছে আর সবাই ঢুলছে। উরি শেষ হয়ে কাশ্মীর ফাইলসের হাম দেখেংগে পর্যন্ত শুনে গান বন্ধ। পিছনে নাক ডাকছে। গুঁফোর মাথাটা হেলে গেছে। শুধু ড্রাইভার একমনে গাড়ী ড্রাইভ করে চলেছে। 

চারঘণ্টা গাড়ী চলার পর নভীন আস্তে আস্তে হাতের মুঠোয় পাকিয়ে রাখা কাগজের গোলাটা বার করে। ভাগ্যে সার্চ করে নি। যদিও তা থেকেই বোঝা উচিত ছিল এরা পুলিশ নয়। মাঝে মাঝে আবছা আলো আসে আবার চলে যায়। চোখ খানিকটা সয়ে যেতে আস্তে আস্তে পড়তে পারে। লেখাটা জুড়ে একটা ম্যাপ। 
মাঝখানে একটা লেকের মত কিছু। লেখা ব্ল্যাক সি। ডান দিকে একটা বিন্দু, লেখা kavkaz oil terminal। একটা চেনা নাম। মারিয়োপল। আর একটা ওডেসা। তার ডানদিকে খারসন। সেটা আবার লাল গোল রেখা দিয়ে ঘেরা। কাভকাজ থেকে একটা ডটেড লাইন সোজা নেমে গেছে নীচে। সেখানে লেখা জহরলাল পোর্ট নভী মুম্বাই। বাঁদিকে তীর দিয়ে লেখা ইউক্রেন। উপরে তীর দিয়ে লেখা রাশিয়া। আর খারসনের ওপর তীর দিয়ে লেখা বায়ো ল্যাব। ব্যাস আর কিছু নেই। নভীনের চক্ষু চড়কগাছ। এসব কি। ডঃ দাসের কি মাথা গোলমাল হয়ে গিয়েছিল না কি? ওনার কাছে ভাইরাস সম্বন্ধে জানতে এলাম আর উনি রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়ে পড়লেন। 

ওই জায়গা গুলো সবই যুদ্ধের সময় খুব চেনা হয়ে গিয়েছিল। রুশ ইউক্রেন যুদ্ধ এখন লং কোভিডের মত। অল্প অল্প সেনা মরছে অল্প অল্প লোক মরছে। সেনারা লোক নয়। ওরা তো কেনা। মরাটা ওদের জব ডেস্ক্রিপশানের এক নম্বর পয়েন্ট। অভ্যেস হয়ে আসছে সবার। কতই তো যুদ্ধ হয়। নিজের পায়ের মাটি যতক্ষণ না কাঁপে, সবাই  আনন্দে চোখ বন্ধ করে চর্ব চোষ্য, লেহন মেহন চালিয়ে যায়। 

এক্ষুনি গুগল করা দরকার। একটা জাহাজ দুর্ঘটনা। সাম্প্রতিক কালে। কিন্তু ল্যাপটপ ট্যাবলেট বাড়ীতে। ফোনগুলোও বাঁদরগুলো নিয়ে নিয়েছে। শুধু স্মার্ট ওয়াচটা খেয়াল করে নি। সার্চ করার থেকে ডেসপ্যাচ করার দিকেই মন বেশি ছিল। I browse web টা সবে ইনস্টল করেছে আই ওয়াচে এখনও অভ্যস্ত হয় নি নভীন। আবার কানেকট করতে ওয়াই ফাই চাই। গুড লর্ড, গাড়ীর ওয়াইফাইতে দিব্যি ফ্রি একসেস দিয়ে এরা গান শুনে যাচ্ছে। একটু হাসি পায়। যাদের সিকিউরিটি সম্বন্ধে বিন্দুমাত্র ধারণা নেই তারা কেবল পিটিয়ে আর এনকাউন্টার করে সিকিউরিটি বজায় রাখতে পারবে? 

কানেকশান হয়ে গেল। ৩.২ এমবিপিএস স্পীড। গুগল করার জন্য চলবে। গাড়ী চলছে তো চলছেই। অর্চিও হেলে যায় ওর দিকে। একটু ফিসফিস করে কথা হয়। নভীন ওকে নির্দেশ দিতে থাকে। কিছু খবর পাওয়া গেল শেষ পর্যন্ত। একটা রাশিয়ান জাহাজ আর ইউক্রেনের স্পীডবোট। ধাক্কা লেগেছিল। টুইটারে একজন লিখেছে। ইয়েভশেংকি আর নভতস্কায়া দুজন গবেষক হারিয়ে যায়। অনেক সার্চ করে পাওয়া গেল খারসনে দুজনের সংগে এদের প্রোফাইল মিলে যাচ্ছে। 

আর ঠিক এই সময় অঘটনটা আবার ঘটল। আবার একটা শিহরণ ধরানো টি আরপি বাড়ানো দুর্ঘটনা। গাড়ীটা হঠাৎ ডান দিকে টাল খেতে শুরু করল। ব্রেক ফেল? চালক চেষ্টা করছে বেগ কমাতে, বেগ কমছে কমছে কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর পারলো না। একটা নয়ানজুলিতে এসে চারটে পাক খেয়ে জলের মধ্যে পড়ল। দরজা লক দুদিকে প্রচন্ড দড়াম আওয়াজ করে খুলে গেল। দুজনে ছিটকে গিয়ে পড়ল একটা ঝোপে। ঝোপ নয় খড়।  গাদা করে রাখা ছিলো ট্রাকে উঠবে বলে। 

ঝেড়ে ঝুড়ে উঠতে সময় লাগল। পায়ে অল্প চোট নভীনের, অর্চির চশমাটা গুঁড়িয়ে গেছে। অল্প পাওয়ার। দেখা যাচ্ছে মোটামুটি। গুঁড়ি মেরে উঠে খড়ের গাদা থেকে উঁকি মেরে দেখল গাড়ীর মধ্যে সব নিথর। অমাবস্যার আকাশ। ধূধূ করছে মাঠ দিগন্ত পর্যন্ত কাটা ধানের খেত। 

সাহস করে গাড়ীর দিকে এগোতে গিয়ে হঠাৎ কিছু একটা নড়ছে দেখে বিদ্যুতের মত দুজনে কভার নিল। সাফারির সর্দারজী ড্রাইভার না? চোখে হাত রগড়াচ্ছে আর মুখ থেকে অস্ফুট গোঙানি। সেটা বাড়ছে। বাড়তে বাড়তে হঠাৎ তীক্ষ্ণ আর্তনাদে চারপাশের ছোট তাল সুপুরি গাছগুলোও যেন থরথর করে কাঁপতে থাকল। লোকটা একপা দুপা এগিয়ে আসতে আসতে হঠাৎ নিথর হয়ে পড়ে গেল। ঠিক সেইসময় একটা ট্রাকের হেডলাইটের আলো চারপাশটা দিনের মত উজ্জ্বল করে দিতে অর্চি আর নভীন আতংকে থরথর করতে করতে দেখলো চালকের চোখগুলো ঠেলে বেরিয়ে এসেছে অনেক খানি। আর চারপাশটা ভরে যাচ্ছে জোয়ারের মত কালো রক্তে। 

রান। নভীন একটাই কথা বলে দৌড়তে শুরু করল হাই ওয়ে দিয়ে। তার পেছন পেছন অর্চি। পায়ের চোট কখন তাদের ভুলিয়ে দিয়েছে এই বীভৎস দৃশ্য। তারা দৌড়তে থাকল দৌড়তে থাকলো যতক্ষণ না তাদের ধরে ফেলে একটা নতুন কুসাক এস ইউভি। সেখান থেকে নামল দুজন চেনা ও একজন অচেনা মানুষ। উর্বী সিরাজ আর-
- তাড়াতাড়ি বলে দিই এনার নাম নিশা । নিশা কৌশল। মলিকিউলার বায়েলজিস্ট। কনফিউসড? বেশী ভাবতে হবে না। গাড়িতে চটপট উঠে পড়ুন। ফ্লাস্কে কফি আছে। আর কোক আছে আইস বক্সে। পরে সব বলছি।
উর্বী চটপট দক্ষ ম্যানেজারের মত পরিচয়পর্ব সেরে, গাড়ীতে ওদের তুলে দিয়ে সিরাজকে ইঙ্গিত করে
-স্টার্ট করুন।
প্রবল উত্তেজনা বিস্ময় আতংকের স্রোত থেকে উদ্ধার পেয়ে হঠাৎ শান্তি। গাড়ী চলতেই ঘুমের অতলে তলিয়ে গেল দুজনে। 
মুচকি হাসল উর্বী। ও এরকম, ঘুমিয়ে পড়তে এক মিনিট লাগে না। নিশার সংগে চোখাচোখি হতে দুজনেই আর একটু মুচকি হাসল। তারপর সিরাজকে বলল, 
-রামালুগাড়ু, এবারে চলুন কোথায় যাবেন।
-হ্যাঁ দিদি, দলমার দিকে। 
গাড়ী সামনের একজিটে টার্ন নিয়ে বুলেটের মত উল্টো দিকে উড়ে চলল অন্ধকার চিরে। 
 -ক্রমশঃ-

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇

Post a Comment

0 Comments