জ্বলদর্চি

তিনটি কবিতা /বিমান কুমার মৈত্র

তিনটি কবিতা 
বিমান কুমার মৈত্র 


বিভ্রম  বিলাস

বর্গাকার কাঁচঘরে স্বতন্ত্র কেবিন
আকুয়ারিয়ামের এক বর্গ টেবিল 
মাঝখানে স্বছতার স্ফটিক প্রাচীর 
আমাদের মুখোমুখি কফির ধোঁয়ায়।

নিচে যত জলপরী মেতেছে খেলায় 
অন্য জগতে ওরা বাস করে হায়!

নিরাকার মুহূর্তের নির্বাক আলাপ 
আমরা কি তবে মৃত নক্ষত্রের মতো 
যোজন আলোকবর্ষ দূর থেকে আসা
দুটি মুখ। নিশ্চুপ। কেবিন দর্পণে।
আমাদের মুখোমুখি কফির ধোঁয়ায়।

নিচে যত জলপরী মেতেছে খেলায় 
অন্য জগতে ওরা বাস করে হায়।।


আরব্য রজনী 

প্রথমে তুমি ঘরে ঢুকে 
দরজা বন্ধ কর,
আয়নাটা ভেঙে টুকরো টুকরো 
কর নিজেকে।
তারপর ----
উজ্জ্বল আলোটাকে নিভিয়ে 
অগুনতি তুমি আমার 
চোখের আড়ালে চলে যাও।
তোমার কপালে জ্বলে ওঠে 
এক চক্ষু নীল বাতি 
এবং আমার আত্মসমর্পণ ।
সকালে চোখের জ্বল ফেলতে
ফেলতে শব মিছিলে যোগ দাও।
নির্নিমেষ রাত্রি আসে তবু ,
আমি ফিরে আসি, 
তুমি ফিরে আসো 
আর আসে নীল বাতি আর….
ক্যালেন্ডারের পাতা 
ছিঁড়ে ছিঁড়ে পড়ে।।


কৃষ্ণ গর্ভ

নাভিমূল টান দিলে তবেই 
ক্রমশ কেন্দ্রীভূত
হতে পারো তুমি।
সেক্ষেত্রে অবশ্য তাত্বিক ভাবে
তোমার জীবনের ভার 
তোমাকেই অতিক্রম 
করে যেতে হবে।
তারপর অন্ধকার….
অন্ধকারের বড় ক্ষিদে।
মেটেনা কখনো।

তাই একদিন মাকে ঘিরে আমরা 
ঘটনা বলয় হয়ে দাঁড়ালাম।
পুরোহিত মশাই বলল: 
আর এগিও না।
বড় টান ওই নাভি মূলে।

জীবন – সে এক যাত্রা যেন 
জ্ঞানের শূন্যতা থেকে 
শূন্যতার জ্ঞানে।

 
পেজে লাইক দিন👇

Post a Comment

0 Comments