জ্বলদর্চি

ছোটোবেলা বিশেষ সংখ্যা ১০৮

 ছোটোবেলা বিশেষ সংখ্যা  ১০৮
সম্পাদকীয়,
উৎসবের রেশ নয় গো এও এক উৎসব। শিশু উৎসব। সেই উৎসবে মেলা বসে। সেই মেলায় নাচ গান কবিতা পাঠের পাশাপাশি আঁকাও হবে। তাই তো টুংকুড়ি রাত জেগে জেগে আঁকছে। টুংকুড়ি কে চেনো তো?জানতাম বলবে, চিনি না তো। তাই তো এবারের প্রচ্ছদের জন্য ওর ছবি তুলে পাঠাতে বললাম, ঋপণ আঙ্কেলকে। শুধু টুংকুড়ি নয়,তোমরা যারা প্রতিটা সংখ্যায় এঁকে পাঠাও তারা কিন্তু ছবি আঁকায় নাম দিও। আর পুজোয় যা দেখেছো এঁকে এসো। শিশু উৎসব তো আজ বাদে কাল। ১৪ ই নভে। আমাদের দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর জপ্নমদিনে পালিত হয়, শিশুদিবস। তবু কিজানি কেন মন এখনও দুর্গাপুজোর রেশ ধরে রেখেছে। শুধু কি আমার? স্বাগতা মাসিমণিও গল্পে বলেছে,বুবলি নাকি অন্য রকম পুজো কাটিয়েছে। তাহলে আমার কি একার দোষ বলো? তাছাড়া কোভিডের পর এবার আমরা প্রত্যেকেই অন্যরকম পুজো কাটিয়েছি। তাইনা? তাহলে বলতে ভয় কিসের। জানি বলতে ভয় নয় ভয় ভূতের। কে ভূতে ভয় পায়? তোমাদের বন্ধু আফরিন। বন্ধুর কথায় মনে পড়ে গেল প্রিয়াঞ্জলি দিদি তোমাদের একটা বন্ধুর ছড়া শুনিয়েছে। আর ছোটো বন্ধুরা জয়াবতীর গল্পে তৃষ্ণা আন্টি কেমন বিন্ধ্য পর্বতের গল্পটা শুনিতেছে পড়ে নাও। বন্ধু শুভঙ্কর আর দীপঙ্করের আঁকাতেও উৎসব রয়ে গেছে দেখেছো? এত উৎসবের ব্যস্ততার মধ্যেও কিন্তু কুহেলী আন্টি পাঠপ্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। সুতরাং শিশু উৎসবে ছোটোবেলা পড়ে লিখে পাঠিয়ে দাও, কেমন লাগল তোমাদের পত্রিকা। সেটা প্রকাশ করেই  শুরু হবে শিশু উৎসব। ----মৌসুমী ঘোষ।


ধারাবাহিক উপন্যাস
জয়াবতীর জয়যাত্রা
পর্ব ৩৩

তৃষ্ণা বসাক

অনেক দূরে দক্ষিণের কোন দেশে। অগস্ত্য মুনি তাকে টপকে চলে যাবার সময় বলে গেছিলেন মাথা নিচু করে থাকতে। বিন্ধ্যবাসিনী মানে তো সেই পাহাড়ে যে মেয়ে থাকে। এত সুন্দর সবুজ শ্যামল ধান খেত, পুকুর মরাই গাছপালা, নদীনালা ছেড়ে সে কেন মরতে পাহাড়ে গিয়ে থাকবে? ওই নাম ধরে কেউ ডাকলে এক তো মনে হয় অন্য কাউকে ডাকছে, ওটা তার নাম নয় তো, তাছাড়া তার মনে খুব দুঃখু হয়, মনে হয় মার কাছ থেকে কত দূরে কোন পাহাড়ে চলে গেছে। এই কথায় পুণ্যির চোখ জলে ভরে এল, আর তাই দেখে জয়াবতী তার দিকে কটমট করে তাকাল। বদ্যিঠাকরুন বলে সব হেদিয়ে গেল, সেই ঠাকরুন যদি ফ্যাঁচ ফ্যাঁচ করতে শুরু করে কেউ মানবে? কিন্তু পুণ্যি তো সুযোগ পেলেই কাঁদে, অমন যে শক্ত মেয়ে উমাশশী, সেও আঁচল দিয়ে চোখ মুচ্ছে নাকি? ওর আবার কী হল? অবাক কাণ্ড। জয়াবতী কিছু বলার আগেই উমাশশী তাড়াতাড়ি বলে ওঠে, ‘কী একটা পড়ল চোখে, চোখ করকর করছে যে’ জয়াবতী একটু থমকে গেল। সব্বোর কথায় নিশ্চয় ওর মায়ের কথা মনে পড়েছে আর চোখে জল এসেছে। মেয়ের মান আর হুঁশ খুব তো, তাই কাঁদার কথা সবীকার করবে না। আজই ফিরে ওর সব ব্যাপার জানতে হচ্ছে। আপাতত সবার সামনে ওকে লজ্জা দিতে চাইল না জয়াবতী। সে সব্বোকে বলল ‘তোমার নামের ব্যাখ্যান পরে শুনব। নাম বদলাতে না চাইলে বিন্ধ্য নামে সাড়া দেবে না, ব্যস, এখন ঠাকমার কথা বলো দিকি। অসুক বাঁধাল কী করে?’
- ঠাকমা গত কাল মাথা ঘুরে পড়ে গেছে।
‘কেন? শরীর দুর্বল ছিল? নাকি এমন হয় মাঝে মাঝে?’
‘দুর্বল হবে না? পরপর তিনদিন নির্জলা উপোস দিলে? শরীর তো খারাপ হবেই। কী বলো বদ্যিঠাকরুন?’
জয়া খেয়াল করে বধূটি তাকে এখনো আপনি আজ্ঞে করছে। সে এই মুহুর্তে  সেই কথা না ধরে বলল ‘তিনদিন পরপর নির্জলা উপোস? তবে তো আমাকে না ডেকে খাটিয়া বানাবার ছুতোর  ডাকলেই হয়!’
 ( ক্রমশ)

শুভঙ্কর সেন, পঞ্চম শ্রেণী, সোদপুর বয়েজ হাই স্কুল
উত্তর ২৪ পরগণা

ছুটির মজা
স্বাগতা ভট্টাচার্য্য

এবারে স্কুলে পুজোর ছুটি পড়ার দিনে বুবলি ওরফে সমাদৃতা বন্ধুদের সাথে গল্প করতে গিয়ে শুনলো -ঋজুরা সিমলা যাচ্ছে, অভিরূপ যাবে মালদ্বীপ ।তানিশা যাচ্ছে আন্দামান ।বুবলিদের এবছরও কোথাও যাবার প্ল্যান নেই ।লাস্ট মে মাসে করোনা হয়েছিল বাবাই এর ।তারপর থেকেই বাবাই এখনও সুস্থ হলেও নানা সমস্যা হচ্ছে ।মা,বাবাই দুজনেই অফিসে চাকরী করে ।সকালে রোজ অফিস যায় ।করোনা পিরিয়ডে  শুরু হয়েছে বাড়ি থেকেই কাজ ।এখনও মা অফিস যায় কিন্ত বাবাই বাড়ি থেকেই কাজ করছে ।ল্যাপটপ নিয়ে সারাদিন শুধুই কাজ ।খুব অভিমান হয় বুবলির ।এমন পচা বাবাই ছিল না ।আগে কতো খেলা করতো ।বেড়াতে নিয়ে যেতো ।আইসক্রীম পার্লার, সায়েন্স সিটি, নিকো পার্ক, চিড়িয়াখানা সব ঘুরেছে বাবাই ও মা ।
এখন সারাদিন ল্যাপটপ নিয়ে বসে আছে ।সানডেতে  বের হতো তিনজনে, খাওয়া ঘোরা সেসব আজকাল হয় না ।ডিপ্রেশন শব্দ টার  ডিটেলস বোঝে না-  তবে কানে আসে ।মনটা খারাপ হলেও পুজোর ছুটি বলে কথা !আকাশ ঝকঝকে নীল, রাস্তায় প্যান্ডেল তৈরীর কাজ শেষ ।মাইকে গান ।আলোয় আলোয় সেজে উঠেছে বুবলিদের আবাসন ।দোকানে দোকানে এখনও ভীড় ।
এখানেও অন্যান্য বছরে বাবাই পুজোর ঝক্কি সামাল দেয় ।বাড়ি ঢুকে বুবলি অবাক ।ট্রলি, ব্যাগ গুছিয়ে নিচ্ছে বাবাই মা ।
-কোথায় যাবো আমরা মা?
হেসে বাবাই বললো-আমার গ্রামের বাড়িতে ।ভোর ভোর গাড়ি নিয়ে রওনা হলো জামালপুর ।বর্ধমান থেকে আরো কিছুটা পথ যেতে হবে ।সেখানে মজুমদার বাড়ি বলতে সবাই দেখিয়ে দিলো ।বাবাই বাচ্চাদের মতো দেখাচ্ছে-বুবলি দেখ এটাআমার স্কুল, এখানে আমরা খেলতাম।ছোটবেলায় অনেকটা সময় মামাবাড়িতে কেটেছে ।
পিচ ঢালা সুন্দর চওড়া রাস্তা ধরে এগিয়ে চলে তারা ।কতো মাঠে ফসল ভরে আছে ।জল ভরা পুকুরে হাঁস চরছে যেন ঠিক সিনেমায় দেখা ।কাঁচা বাড়ি, পাকা বাড়ি,নানা দোকান, বাজার মাঝে পড়েছে ।বাবাই গাছ, পাখি চেনায় ।বুবলির মনে হয় যেন স্বপ্ন দেখছে ।অবশেষে একটা পুরনো পেল্লাই বাড়িতে এসে গাড়ি থামলো ।ভেঙে পড়েছে এদিকে ওদিকে ।কড়ি বর্গার বাড়ি ।অনেক পুরনো সময়ের বাড়ি এটা ।
ঢাক বাজছে, ঠাকুরদালান জুড়ে আঁকা আলপনা।সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়লো ওদের নিয়ে ।তারপরের দিনগুলো যেন স্বপ্নের মতো কেটে গেলো ।কলাপাতায় দুপুরে গরম খিচুড়ী ভোগ হাত দিয়ে খাচ্ছে বুবলি সাথে বেগুনী, সবজি, চাটনী পাপড়।কয়েকজন বন্ধু ও হয়েছে ওর ।সকালে শিউলি ফুল ছড়িয়ে থাকা বাগান দেখে অবাক হলো সে ।পুজোর দিনগুলো যেন প্রজাপতি হয়ে পাখা মেলে উড়ছে ।এখানে কলকাতার মতো নামী প্যান্ডেলে লাইন দিয়ে ঠাকুর দেখা নেই ।কিন্ত আছে নাগরদোলা, গরম জিলিপি, চুড়ি, আরো কতো কিছু ।ছোটদাদু, দিদার আদর- খই, মুড়ি, চিঁরে র নাড়ু ,ঘন দুধ ,লুচি, ছোলার ডাল সবকিছুই যেন অন্যরকম ।তারপর ঠাকুর বিসর্জন ।সেদিন রাতে সবাই লাইন দিয়ে বসে মাংস ভাত ।মাও এই কদিন একটুও বকে নি ।কি মজায় কেটে গেলো বুবলির পুজো ।
-বাবাই বাড়ি গিয়ে এমনই  থাকবে তো?
ছোট্ট বুবলির প্রশ্ন একটু থমকে দেয় বাবা সুজনকে ।
-কেমন লাগলো আমার মামার বাড়ি?
-একদম অন্যরকম পুজো কাটলো এবারে ।এতো সব নিয়ম, সন্ধি পুজোর একশো আট প্রদীপের আলো যেন চোখে ভাসছে ।ঘোর কাটে না বুবলির ।
ঠাকুর দালানের সেই খাঁ খাঁ শূণ্যতা যেন বুকে ।একদল আত্মীয়ের সাথে এই কদিনের আনন্দ বড্ড দামী।
আবার ভোরের আলো থেকে সকাল হচ্ছে ।গাড়ি র ভিতরে বুবলি,বাবাই, মা ।ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে জামালপুর.... কলাগাছ, আমগাছ সারি বেঁধে যেন সি অফ করছে...বড্ড কান্না পাচ্ছে এখন..... অচেনা মানুষগুলোর চেনা আতিথ্য বুকের গভীরে বড্ড ভার করছে । কিন্ত সিমলা, আন্দামান, মালদ্বীপ না যেতে পারার কষ্টটা আর যেন নেই ।কারণ বুবলি নিশ্চিত, স্কুলের বন্ধুরা এমন  জায়গায়  বেড়াতে যেতে  নিশ্চই পারেনি।

দীপেন্দু দেবনাথ, ষষ্ঠ শ্রেণী, সোদপুর চন্দ্রচূড় বিদ্যালয়
উত্তর ২৪ পরগণা

স্বজনবেলা
প্রিয়াঞ্জলি দেবনাথ 

আমরা যখন ঘরের কাছে দোরের কাছে যাবোই ফিরে
আকাশ তখন সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালিয়েছে ঠিক তোমায় ঘিরে।
তুমি বলছ ফিরবে আবার গাছের পাতায় নদীর স্রোতে
দেখবে তখন ওরা কেমন অনেক আগেই আসন পাতে।
দেখবে তুমি পাখিরা সব ডাকছে কেবল তোমার ডাকে
তুমি শুধু বন্ধুতা দাও জড়িয়ে রাখো মনের ফাঁকে।
আকাশ আলো পথের রেখা দিগন্তে ওই যাচ্ছে ছুঁয়ে
তোমার চোখে নিবিড় আবেগ খেলনাবাটির স্বপ্ন নিয়ে।
ছোট্ট গ্রামের গল্পকথা ফুল ফুটেছে চাঁদ ডেকেছে
এরাই তো সব স্বজন তোমার বন্ধু বলে নাম রেখেছে।।


ভূতের ভয়      
আফরিন নিগার     
দশম শ্রেণি, কেশপুর গার্লস স্কুল, মেদিনীপুর 

আমার মামার বাড়িটি বেশ বড়। গাছ গাছালি ভর্তি। আম জাম জামরুল লিচু বেলের মতো কোনো ফলই কিনতে হয় না। 
প্রতিবছর বন্ধুরা আমরা মামাবাড়ি যাই। আম বাগানে পিকনিক করি। গান বাজনা করে দারুন হইহুল্লোড় হয়।  বন্ধুরা সবাই বেশ বীরত্ব দেখায়, কারো নাকি ভূতের ভয় নেই।  
আমার মামাতো বোন সানি বড় দুষ্টু। সেবার আমরা ঠিক করলাম সবাইকে ভূতের ভয় দেখাবো। জামরুল গাছে কয়েকটা প্লাস্টিকের কব্জি থেকে আঙুল পর্যন্ত হাত কিনে ঝুলিয়ে রাখলাম। আর পুকুরের পাড়ের গাছের আড়ালে কাকতাড়ুয়া সাজিয়ে ছোটো মামার এক সাকরেদকে দাঁড় করিয়ে রাখলাম। মামারা ব্যবসায়ী। সবাই রাত দশটা নাগাদ ফিরলো। দিনটা বরাবর থাকে ৩১ শে মার্চ। ইয়ার এন্ডিংএর ঝামেলা শেষ হল। সবাই মন খুলে আনন্দ করে খাওয়াদাওয়া মেটাতে রাত বারোটা হয়েই যায়। 
ভালো করে খেয়ে পরে বিছানায় একসঙ্গে সানি আমি আর সব বন্ধুরা শুয়ে পড়ি। এর মধ্যে সানি বলল, আমার খুব ভয় করছে, আমার সঙ্গে কেউ একটু যাবে আমতলার পাশে জামরুল গাছের সামনে। ওখানে বিকেলে টাকার ব্যাগ আর জলের বোতল রেখে এসেছি। টাকা হারালে মা খুব বকবে। 
হঠাৎ শ্রেয়া চেঁচিয়ে বলল, তোকে যেতে হবে না, আমি যাচ্ছি। বলে টর্চ চেয়ে নিয়ে গেল। কিছুক্ষণ পরেও শ্রেয়া না ফেরায় আমাদের কথায় মামারা সেখানে গেলেন। মানে আমরাও চাইছিলাম না বেশি দেরি করতে। মামারা গিয়ে দেখলেন শ্রেয়া গাছ তলায় বসে গোঁ গোঁ করছে। চোখে জলের ঝাপটা দেওয়া হলো। ধরাধরি করে নিয়ে এল জ্ঞান ফিরতে বলল, ভূত ....ভূত.....সত্যিই দেখেছি। তখন আমরা সবাই নৃত্য করে বললাম, ভূত নিয়ে খুব বীরত্ব দেখাস। আজ এপ্রিল ফুল। তাইতো তাই তোর সঙ্গে মজা করলাম। যদিও এমন মজা করার জন্য বড়রা আমাকে আর সানিকে বকাও দিয়েছিল, আমরা গায়ে মাখিনি।


পাঠ প্রতিক্রিয়া
(জ্বলদর্চি ছোটবেলা ১০৭ পড়ে গল্পকার কুহেলী দাশগুপ্ত, কোন্নগর,  হুগলি, যা লিখলেন)

"জ্বলদর্চি ছোটবেলা" সগৌরবে এগিয়ে চলেছে। নবীন, প্রবীণ সকলের প্রচেষ্টায় রবিবারের সকালটি জমে ওঠে ছোটদের উৎসাহিত করার প্রয়াসে। সম্পাদক মৌসুমী ঘোষ উপস্থাপন করেন চমকপ্রদ তালিকা সূচী।" জ্বলদর্চি ছোটবেলার "সাথে নবীন কিশলয়েরা মাতৃভাষা চর্চায় অগ্রণী হয়ে চলেছে। এমন করেই আগামী প্রজন্মের ভাবনায় সাহিত্য  চর্চার উন্মেষ ঘটবে।
      
        বিশেষ সংখ্যা ১০৭ এর প্রচ্ছদ এ পাই চিত্রগ্রাহক অপু পালের  তোলা মায়াময় ছবিখানি।  কান্না ভেজা চোখে শিশুটি ভরসার  আলিঙ্গনে শান্ত হয়। উৎসব মুখর দিনে অবোধ শিশু শান্তির খোঁজ পায় মমতাময়ীর ছোঁয়ায়।
  তৃষ্ণা বসাকের "জয়াবতীর জয়যাত্রা"য় পেরজাপতি,  পুণ্যি আর জয়াবতী পরস্পরকে কাছে টানে। একে অপরের ভরসা জুগিয়ে চলে। দস্যি মেয়ে জয়াবতী চোখে চোখে রাখে সকলকে। আর পুণ্যি দিদি যেন মা সরস্বতী! শিখিয়ে ,পড়িয়ে বুদ্ধিদীপ্ত গড়ে তুলতে চায়। পেরজাপতির কান্না জড়ানো কথায় শৈশবে হারানো মায়ের স্মৃতি।  ভাইয়ের জন্মের সময় মাকে হারিয়ে সে বুঝেছে, আতুরঘর পরিচ্ছন্ন হওয়া প্রয়োজন। 
     শ্রীছন্দা বোস এর "গরিবের দীপাবলি" মন কেমন করা। সত্যিই তো! আমরা ভেবে দেখি না গরিব ঘরে ছোট ছেলেমেয়েদের আলোর উৎসব কতটা আর জমজমাট হয়! অপরের উদ্বৃত্ত পেয়ে তারা সন্তুষ্ট থাকে।
বিপ্লব চক্রবর্তী মহাশয়ের বড় গল্প "ঘোষাল বাড়িতে ডাকাতি" টান টান উত্তেজনা পূর্ণ।  আট বছর বয়সের বড় মামা দাদু বুদ্ধি খাটিয়ে কিভাবে জমিদার বাড়ির গুপ্ত পথের সন্ধান পেয়েছিলেন আর সেই সাথে বৈকুন্ঠ ডাকাতের সদলবলে জব্দ হওয়ার ঘটনা। শ্রেয়া ব্রজবাসী একটি খুব সুন্দর ছবি এঁকেছে। সায়ক সরকারের  "টুই" পড়ে আমার  ও মনে হোল এই শীতের আমেজে পাখির  ডাকে কার মন চায় বিছানা ছেড়ে উঠতে!  তবুও ভোর সকালে পাখির কূজনে ঘুম  হাল্কা হয়ে আসে। শুভশ্রী সরকার লক্ষ্মী নারায়ণের সুন্দর  ছবি এঁকেছে।
সুব্রত দেব মহাশয়ের শারদ শব্দছকটি  বেশ মজার।  এরকম  শব্দ ছকে সমাধান করে ছোট , বড় সকলের শব্দ ভান্ডার পূর্ণ হতে থাকবে। জানার ইচ্ছে  আরও ব্যাপ্ত হবে । কখনো মনে হয় অনেক সহজ ব্যাপার কেন জানতে পারিনি! আবার ছোটরা ও অনেক কঠিন বিষয় সহজে পেরে যায়। আসল কথা হোল চর্চা। জ্বলদর্চি ছোটবেলার জয় যাত্রা দীর্ঘায়িত হোক-এই কামনা করি।
 
পেজে লাইক দিন👇



Post a Comment

0 Comments