জ্বলদর্চি

গুচ্ছ ছড়া /অনিমেষ মন্ডল



গুচ্ছ ছড়া
অনিমেষ মন্ডল

                   
 খোকার রাগ
                    
খোকার এখন ভীষণ রাগ
        বলবে না আর কথা,
মায়ের কাছে মারটি খেয়ে
        পেয়েছে খুব ব্যথা।

আবদার তার আজব রকম
        ফুলকে পাতায় মিতে,
মাকে বলে, ''মেঘ এনে দাও
        ভাসবো তাদের সাথে।''

গাছের পাতায় ঘর সাজাবে
        থাকবে ধানের ক্ষেতে,
ব্যাঙের ডিম আনতে গিয়ে
        গ্যাঙর্ গ্যাঙে মাতে।

রাতের বেলায় চাঁদের আলোয়
         পাখির বাসা খোঁজে,
ভূতের কথা বললে বলে,
         "ভূত নয়কো বাজে।"

খোকার মনে কথার পাহাড়
          গোমড়া মুখে বসে,
মা যখন ডাকবে,"খোকা"
          উঠবে আবার হেসে।
           

মায়ের গল্প
            
মায়ের কথা শুনলে খুকুর
             ঝরে চোখে জল,
শ্রাবণধারা মেঘের থেকে
                পড়ে অনর্গল।

চিন্টু, মিতা,মিন্টু ,সীতা
          আরো বন্ধু যত,
সবাই বলে মায়ের গল্প
         আদর স্নেহ কত। 

মাকে তার নেইকো মনে
        বাবা বলেন, 'তারা',
আকাশ মাঝে কেমন করে
         আছে তাকে ছাড়া!

তার মায়ের কি মন নাই গো?
          ভুলেই গেছে তাকে,
বাবায় বলে,'একবারটি তুমি
          আসতে বলো মাকে'।

বাবা তখন চোখটি মুছে
       তাকে কোলে তোলে,
আদর করে জড়িয়ে ধরে
         মায়ের গল্প বলে।
         
          
জ্বলদর্চি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন। 👇


জ্বলদর্চি তিরিশ পেরিয়ে... 
  
 ভুতের ছেলের বিয়ে

ঘুতুম ভুতের ছেলের বিয়ে শাঁখচুন্নির সাথে 
বাঁশ ঝাড়েতে বিয়ের আসর অমবস্যার রাতে,
কলিকাতা, হাওড়া,রাঁচি, দীঘা থেকে উটি
সবখানেতে খবর গেল আয়োজনটা খাঁটি ।

পেত্নী, যক্ষী, বম্মোদত্যি যে যেখানে ছিল
ঝড়ের বেগে ছুটলো সবাই বিয়ের দিনে এল,
বাঁশবাগানে খুশির লহর খাবার নানান রকম
বম্মোদত্যি ধামসা বাজায় ধাঁই ধুমা ধুম ধুম।

বর দেখে এক সাঁচীর পেত্নী মজলো মনে মনে
নাকি সুরে গাইলো গান ভোলায় রূপে গুণে,
ঘুতুম বেটা কাতুম ভুত ঘায়েল পেত্নী চালে
দেখা করে ফন্দী আঁটে পালাবে না বলে।

বিয়ের আসর রইল পড়ে বর ভেগেছে সাঁচী
লগ্নভ্রষ্টা শাঁখচুন্নি বলে, 'কেমন আমি বাঁচি',
গাঁই গুঁই হাঁউ কুঁই কাঁদছে বিয়ের পাত্রী
ঘুতুম ভুতের মাথায় হাত ভেবেই কাটে রাত্রি।
                  
               
হোক প্রতিবাদ

হুতুম গেল রাজার কাছে প্রশ্ন মনে নিয়ে
তার পেট যে চলছে না আর মানুষ পাড়ায় থেকে,
মাছ মাংস পায় না খেতে সবাই ফ্রিজে রাখে
রান্না ঘরে যায় না ঢোকা গ্যাস ওভেনের ভয়ে।

মানুষ এখন কুকুর প্রেমী হরেক জাতের পোষে
বিড়াল দেখলে কুকুররা সব উচ্চস্বরে ডাকে,
মানুষরাও হয়েছে পাজি আর বলে না 'মেনি'
খাবার সময় শুনলে 'ম্যাও' রেগেই তেড়ে আসে।

রাজা মশায় থাকতে তাদের এমন হাল কি মানায়
বিহিত একটা করুন এবার চাইছি ন্যায্য বিচার,
রাজা মশায় গোঁফে তা দেন, ভাবেন হুলোর বিপদ
মাথা চুলকে ফন্দি আঁটেন কি করা যায় উপায়।

গর্-গরিয়ে ডাকটি ছেড়ে বলেন রাজা রেগে
আমি কেবল বনের রাজা রাজ্য গেছে কমে,
ব্যাটারা সব জঙ্গল কেটে করছে বেঘর রোজই
তার উপর হুলো তাড়ায় কেমন আনি বাগে !

বনের যত পশু ছিল যোগ দিতে যায় সভায়
রাজার ডাকে মিছিল হবে মানুষদের এই রাস্তায়,
অবলাদের নির্যাতনে 'হোক প্রতিবাদ' স্লোগান
মিছিল দেখে মানুষরা সব যে যার ঘরে লুকায়।
                
         
 জয় জয়

খিল্ খিল্ হাসে ফুল,
চোখ দুটো ঢুল ঢুল।
শন্ শন্ বায়ু বয়,
লাগে কেন ভয় ভয়।
টুপ টুপ ঝরে জল,
ঘাস ভিজে ছল ছল।
ঘর ঘর হল ভোর,
শাঁখ বাজে দোর দোর।
দলে দলে কাজে যায়,
শ্রম তারা চায় চায়।
ঘন্ ঘন্ পড়ে বাজ,
ক্ষেত জুড়ে কাজ কাজ।
দিন দিন কাটে মাস,
গতি পায় দেশ দেশ।
জয় জয় শ্রমিকের,
জয় হোক ঢের ঢের।
      

Post a Comment

0 Comments