গুচ্ছ কবিতা
অজিত মিশ্র
পাপীয়সী, তোকে
১.
বললাম, আর একটু বসে যাও ।
বসল না। উঠে চলে গেল ।
তখন সুচারু রোদ বাইরে পড়ে আছে।
সমস্ত দরজা জানলা একা একা
ঘরের সমস্ত ঘর ফাঁকা, শুনশান ।
বসতে কি পারত না ? আচমকাই উঠে চলে গেল ।
তখন ঘিরেছে অভিমান ।
সটান দরজা খুলে নেমে গেল সিঁড়ি
একবারও ফিরে তাকাল না ।
তখনও ঘিরেছে অভিমান ।
একটা ফোন কল এল কিছুক্ষণ পর
“চা খাওয়াবেন বলেছিলেন-'
তারপর নিভে গেল স্বর।
সত্যি তো । ভুলে গেছি।
পৃথিবীর সর্বস্বান্ত ভুল ।
মনোযোগ, কোন গ্রহে ছিলে ?
আমার যে অভিমান তারও চেয়ে বড় অভিমান
আছে এই সত্যটুকু কাছে এনে দিলে ।
২.
সুজাতা, পায়েস দিলে। ব্লাড সুগার। এক চামচ
তাও তো খেয়েছি।
মুহূর্তে অন্ধ গলি বোধিবৃক্ষ হয়ে গিয়েছিল।
বুড়ো পাঁজরের জন্য এক চামচ পায়েস শুধু ।
আর কিছু নয়।
পরমান্ন বুকে নিয়ে ঠোঁটের অমৃত নিয়ে
সুজাতা, ফিরলে আন বাড়ি।
একা বোধিবৃক্ষ থেকে একা একটি পাতা ঝরে গেল ৷
এক ফুঁয়ে নিভল দীপ ৷ নির্বাণ, নির্বাণ ৷
জ্বলদর্চি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন। 👇
৩.
অন্যের বারান্দায় শাড়িটা শুকোচ্ছে তোর
দেখতে পেয়েছি।
অন্য কারও সঙ্গে তুই দোপাটি ফুলের মতো
ফুটে যে আছিস-
দেখতে পেয়েছি।
দেখতে পেয়েছি, প্রেম ক্রুশকাঠে ঝুলে আছে
হাতে পায়ে ধারালো পেরেক ৷
তাও কি নিষ্কৃতি আছে ? বটগাছের নীচে বাংলা ঠেক
আকণ্ঠ গিলে নিয়ে স্মৃতি
আমাকে কষতে দেয় ত্রিকোণমিতির অঙ্ক
কঠিন জ্যামিতি ।
8.
অলৌকিক, হঠাৎই এ বুকে এসেছিলে।
বুঝতেও পারিনি যে তুমি এসেছিলে, অলৌকিক ।
যান জট, মানুষের সম্ভ্রান্ত মিছিলে
কুসুমের গন্ধ ছিল, ছিল মোম আলোর ঝিলিক ।
বুঝতে না বুঝতেই উড়ে চলে গেছে মায়াবতী
রেখে গেছে মুহূর্তের তীব্র অনুরাগ
শরীরের সুঘ্রাণ, চুম্বনের পলকা প্রণতি-
রেণু রেণু স্তনের পরাগ
এমনই নির্বোধ আমি কোনও কিছু আগলে রাখিনি
অমৃতের কণা এসে গলে গেছে স্খলিত আঙুলে
অযাচিত করুণায়, অলৌকিক, করে গেছ ঋণী
সহজে কি মোছে সেই ঘামগন্ধ
সাবানে অজস্রবার ধুলে
জ্বলদর্চি তিরিশ পেরিয়ে 👇
1 Comments
ভালো লাগল।
ReplyDelete