জ্বলদর্চি

গুচ্ছ কবিতা /দুঃখানন্দ মণ্ডল

গুচ্ছ কবিতা 
দুঃখানন্দ মণ্ডল  


ঐকিকরেখা

ভুলে যাবো বলে
অভিমান করিনি। 
ভুলে যাবো বলে 
কোনো অভিযোগ ছিল না।

তুমি বেশ আছো পর্দার ওপারে
প্রতিনিয়ত উঁকি দাও
 প্রশস্থ রাস্তা পেরিয়ে আমার দরজায়।

তুমি বেশ জানো; 
আমার হেরে যাওয়ার কারণ  
দাবার গুটি চালো অজানতে নিজের জন্য।

ভুলে গেছো কি কারণ ছিল অভিমানের! 
ভুলে গেছো কি কারণ ছিল একটি কলের! 

ভুলে যাবো বলে অভিমান করিনি
ভুলে যাবো বলে তোমার হাত ধরিনি
কেমন করে সময় চলে যায় হারিয়ে যাওয়ার!
সময়ের মানদণ্ড ঐকিক নিয়মে আর মিলে না
সম্পর্ক ভাঙতে থাকলে মুছতে থাকে স্মৃতি
নদীর কিনারা হারিয়ে ফেলে পাড়
স্রোত নয়নজুলি ছুঁয়েছে
দূরত্ব ক্রমান্বয়ে অনুভব করে এক গভীর শূন্যতা...


রেখাংশ
  
উদ্বাস্তু হওয়া একটি মন ছুঁয়ে আছে অনুভূতি
বিকেল দেখে ঘরে ফেরা পাখির দল 
দূরত্ব অনেক তবুও অনুভব খুব কাছের

পশ্চিমে ডুবে যাওয়া সূর্যের সাথে বিকেলের মেলবন্ধন 
স্থলপদ্মের পাপড়িতে আলতা রং লাগা
চাঁদের কপালে লেগেছে গোধূলির ছায়া   

তুমি রোজ রাস্তা পেরিয়ে বিকেল দেখো
একঝাঁক জংলী হাঁস অতিক্রম করে ঘাট 
আলপথ ছুঁয়েছে নয়নজুলি 
সময়ের টানে প্রদীপ জ্বলে ঠাকুরতলায়


জ্বলদর্চি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন। 👇


জ্বলদর্চি তিরিশ পেরিয়ে... 
আগুন

মেয়েটি রোজ রাতে জ্যোৎস্না দেখে 
তাকে ফুলের সাথে শিশির উপহার দেই অজান্তেই 

জ্বলন্ত সিগারেট থেকে খসে পড়ে ছাঁই
চোখের দৃষ্টি এড়িয়ে তারা খোসে পড়ে আকাশ পথে

কলতান কানে আসে চাঁদের গায়ে সাদাকালো দাগ
মেয়েটি বাঁশির সুর শোনে জোসনা রাতে একা

তুমি প্রেমিক হবে বলে রাধা নাম জপো গভীর রাতে
মেয়েটি এখন ঘুমিয়ে পড়েছে সুরের মূর্ছনায়

সিগারেট নিভে এলে অন্ধকারে ডুবে যায় আগুন
তুমি হাত ধরলে সম্মতি ছাড়াই অন্ধকারের


দাগ ৭৮

অনেকদিন পর বিকেল দেখলাম 
বাতাসে আজানের সুর আর কৃষ্ণ নাম
কোনো কলোরব নেই কানে ভাসে পাখিদের কলতান। 

বিকেলের চোখে নদীর ফল্গুধারা 
স্রোতের সাথে সন্ধ্যা নামার শঙ্খধ্বনি তুলসী তলায়।

তোমার ফিরে আসার পথ নদীর পাড় বরাবর
তুমি দিনের শেষে কি যেন আলাপচারিতা সেরে নাও
শিল্পীর তুলিতে আঁকা হয় গোপন প্রেমের কথা
খুব পাড়ের কাছাকাছি তুমি আর এক সম্পর্ক।

এ কোন গোপন সম্পর্কের বাঁধন বিকেল আর গোধুলির
অঙ্কের খাতায় হিসেব মিলছে না আজ  
তুমিও ধীর পায়ে ফিরে এসেছো না বলা কথা শেষ করে।

Post a Comment

0 Comments