জ্বলদর্চি

গুচ্ছ কবিতা /সৌভিক ঘোষ

গুচ্ছ কবিতা
সৌভিক ঘোষ

প্রতিবিম্ব

তুমি থামলে আয়না হাতে,
আমার ছবি তোমার আরশি মাঝে,
তুমি দেখলে আমার মুখ,
আমি তোমার,প্রতিবিম্ব আমার চক্ষু খাঁজে।
ভাঁজে ভাঁজে ভাঙছি আমি,আজকে এই  গভীর সাঁঝে
চিনতে শিখি নিজের কাছে,আমি কেমন নিজে!
ভুল ভাঙতে হলে ভাঙতে হয় নিজের কাছে,
গড়তে হয় আকাশ টাকে নিজের ছাঁচে।
সাজানো সব মেঘের তুলো বদলে আসে ঝোড়ো ধুলো,
যেনো সব খুঁটি ভাঙ্গা চালা-ঘর গুলো,
এক নিমেষেই ভীষণ ভীতু,বুঝি তারা পাতাল ছুঁলো!
থামলে ঝড় বৃষ্টি শেষে,জমা জলে তাকিয়ে দেখো,
সত্যিকারের প্রতিবিম্ব তোমার সৃষ্টি হলো।


স্বপ্নের রামধনু

উনুন ধোঁয়ায় কালো দেওয়াল পটে স্বপ্নের রামধনু,
শ্রমিক শিশুটি চায় বৃষ্টি হতে।
কালো মেঘের আড়াল হতে,বিন্দু বিন্দু জলকণা হয়ে
রোদ মেখে হতে চায় রঙিন আলো।
কিন্তু এ সমাজ তাপে তাকে পুড়তে হবে ভীষণ দারুন।
ডোবা হতে বাষ্প রূপে ধূপের ধোয়ার মত হালকা হয়ে,
উঠতে হবে অনেক উঁচু।
তারপর, ভারী দানা রূপে জমতে হবে সেই কালো মেঘেই,
একদিন হঠাৎ তার ডাক আসবে ওই মাটির দেশে।
ঝরবে অঝোর ধারায় ভাসবে কিছু মাঝ আকাশে,
অবশেষে মিলবে আলো এক ফালি রোদ মেঘের কোলে।
 
       
জ্বলদর্চি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন। 👇


জ্বলদর্চি তিরিশ পেরিয়ে... 
                   
 জীবন্ত জীবাশ্ম

তুমি গিয়েছ ছেড়ে সেই আদিম যুগেই।
তখনও আসেনি উল্কার দল আকাশ ছেয়ে,
তখনও দেইনি প্রাণ শত শত বিলুপ্ত প্রায় লুপ্ত জীবে
দেখেছি সবই কোটি কোটি যুগ ধরে এই দুচোখ ভরে!

আমি আজও টানি সেই বোঝা যা কিছু যায়নি সেদিনও বোঝা,
খোঁজা হয়নি আজও তার কারন যা কিছু ছিলো শুধু আমার জন্যে বারণ!
অকারণ ঘুরে বেড়ায় আজও এ দেহ তার আত্মা ধরে,যেনো এক ভুত
সারা দেহ মাখা ধুলো চামড়া সব উল্কার তাপে  হয়ে ভস্ম,
আমি আজ একাকী এক জীবন্ত জীবাশ্ম।

তুমি হারালে যেদিন হাজার তারার বলয় ঘেরা নদীর স্রোতে,
এ বিশ্ব বিবর্তন হতে বহু দুর বিদেশ সমুদ্র মাঝে,
সেদিন হতেই আমি আশ্রয় নিয়েছি ভাঙ্গা প্রস্তর খাঁজে।
জনমানব হতে বহু দুর, অবিবর্তিত পরিবর্তন হীন এক সত্তা রূপে,
বাড়ছে বয়েস অভিজ্ঞতার চক্ষু মিলে।

জানিনা কখন মিলবো সে ছায়াপথে?
লুপ্ত হবো এ বিশ্ব হতে অভিযোগ হীন এক প্রেমিক হয়ে,
সৃষ্টির আদি হতে অন্ত ফিরে,ফের বিপর্যয় আর পরাজয়ের সাক্ষী হয়ে,
সংরক্ষিত কোনো জাদুঘর কিংবা কোনো প্রস্তর কোলে,
 রয়ে যাবো এক স্থায়ী পাললিক জীবাশ্ম হয়ে!

Post a Comment

0 Comments