জ্বলদর্চি

জঙ্গলমহলে শিবের প্রভাব /সূর্যকান্ত মাহাতো

জঙ্গলমহলের জীবন ও প্রকৃতি
পর্ব - ৫৭

জঙ্গলমহলে শিবের প্রভাব
সূর্যকান্ত মাহাতো

জঙ্গলমহলে 'শিব' পূজা বা শিবের আরাধনা বা 'লিঙ্গ' পূজা বসন্তকালের সবথেকে বড় উৎসব। সে 'শিবরাত্রি'-ই হোক আর চৈত্র সংক্রান্তির 'চড়ক' উৎসবই হোক। 'শিবরাত্রি'র সময় সুবর্ণরেখার দক্ষিণ তীরবর্তী 'রামেশ্বর' মন্দিরে বসে বিশাল বড় আকারের মিলনমেলা। শুধু এখানেই নয়, শিবরাত্রির সময় ঝাড়গ্রাম সহ জঙ্গলমহলের প্রতিটি শিব মন্দিরেই ঐদিন ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ে। তেমনি চৈত্র সংক্রান্তিতেও 'চোরচিতা' গ্রামের 'চোরেশ্বর' মন্দিরে যে চড়ক ও গাজনের মেলা বসে, তাকে জঙ্গলমহলের সবথেকে বড় উৎসব বলা যেতে পারে। ওই সময়ও জঙ্গলমহলের প্রতিটি শিব মন্দিরেই পূজা ও নানা ধরনের অনুষ্ঠান পালিত হয়। যেমন আগুন ছড়ানো, জিভ ও পিঠের চামড়ায় লোহার আঁকশি বিঁধা তার মধ্যে অন্যতম। এছাড়াও সারা বছর ধরে সপ্তাহের প্রতি সোমবার তো ইতি-উতি এই শিবের আরাধনা চলতেই থাকে। জঙ্গলমহল জুড়ে শিবের এমন দারুণ প্রভাব কীভাবে হল? এই প্রশ্নটা বেশ কিছুদিন ধরে মনকে অস্থির করে তুলল। কিছু বই সংগ্রহ করে পড়লাম। কিন্তু উপযুক্ত কারণ ও তথ্য না পাওয়ায় মনটা কিছুতেই তৃপ্ত হচ্ছিল না। দু একজনকে মনের সে কথা বললামও। তারপরেই এক ভদ্রলোকের সন্ধান মিলল। যে নাকি আমার মনের এই সমস্যার সমাধান করে দিতে পারবেন। মনে মনে ভাবলাম কোন তান্ত্রিক-টান্ত্রিক আবার নয় তো? না হলে তথ্যের থেকে তথ্য বিকৃতই ঘটে যেতে পারে। একটা কিন্তু কিন্তু ভাবনা নিয়ে একদিন গেলাম তার সঙ্গে দেখা করতে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। তাই তাকে 'শিবভক্ত' বলেই উল্লেখ করছি। তার বাড়িতে পৌঁছে আমার সমস্ত পূর্ব ধারনা পাল্টে গেল। একদম সাদামাটা সহজ সরল মানুষ। তন্ত্রসাধনার কোন চিহ্ন বা লক্ষণ মাত্রই নেই। বরং টেবিলের পাশে রাখা আছে বইয়ের স্তূপ। সেখানে 'শিব পুরাণ', 'কালিকা পুরাণ', 'যজুর্বেদ' এর মতো একাধিক বই সহ নানান ধরনের উপন্যাস ও প্রবন্ধের বইও আছে। আসলে তিনি যে একজন প্রকৃতই বড় মাপের পাঠক সে বিষয়ে একরকম নিশ্চিত হলাম।

দু একটি কথার পর আমি সরাসরি তাকে প্রশ্ন করলাম, "আমাদের এই জঙ্গলমহলে শিবের এমন দারুণ প্রভাব কীভাবে হল?"

উনি বললেন, "তার আগে 'শিব' কে ছিলেন, সেটা জানতে হবে। না হলে এর উত্তর পাবে না।"

জ্বলদর্চি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন। 👇



বললাম, "সে তো সবাই জানে। উনি একজন পৌরাণিক দেবতা।"

"ঠিক এখানটাতেই সকলে ভুল করেন। সকলেই 'পুরাণ' থেকে শুরু করেন এবং শিবকে পৌরাণিক 'দেবতা' মনে করেন। কিন্তু 'পুরাণ' পূর্ববর্তী সময়টাও জানা দরকার। শিব যে দেবতা সেটা তো তিনি পরবর্তীকালে হয়ে উঠেছেন। যীশু ও বুদ্ধের মতোই।"

আমি প্রচন্ড বিস্মিত হয়ে বললাম, "মানে! আপনি কি বলতে চাইছেন! উনি যীশু ও বুদ্ধের মতো একজন রক্তমাংসের শরীর বিশিষ্ট মানুষ ছিলেন? এটা কথার কথা! নাকি কোন শক্তিশালী তথ্য প্রমাণ রয়েছে?"

"আগে প্রথমটার উত্তর দিই। হ্যাঁ তিনি তোমার আমার মতোই একজন মানুষ ছিলেন। তিব্বতে জন্ম ও সেখানকার  বাসিন্দা ছিলেন। সেখানকার এক অনার্য উলঙ্গ শ্মশানচারী মানুষ ছিলেন তিনি। আমাদের দেশে হাতে করে এনেছিলেন সাম্যবাদী নব্য তন্ত্রের বিস্ময়কর শাস্ত্র 'তন্ত্রশাস্ত্র', এবং প্রাচীন চিকিৎসা বিজ্ঞানের অভ্যুদয়ের দ্যুতি (তন্ত্রের শিকড় সন্ধানে/ ডঃ জয়দেব মুখোপাধ্যায়, পৃষ্ঠা ২৭)।"

"তন্ত্রশাস্ত্র! সে তো আজকের দিনে সব থেকে ঘৃণ্য এক তন্ত্র। সেখানে তো তান্ত্রিকদের নানা রকম ভ্রষ্টাচার কাম উন্মাদ ও যৌনাচারের ছড়াছড়ি। এজন্য তো তান্ত্রিকদেরকে আজকাল কেউ ভালো চোখে দেখেনও না। এমন একটা 'তন্ত্রশাস্ত্র' শিব নিয়ে এসেছিলেন!"

"বর্তমানে 'তন্ত্রশাস্ত্র' বলতে আমরা এরকমটাই বুঝি। কিন্তু এগুলো সবই বৈদিক পরবর্তী যুগের তন্ত্র সাধনা। শিব যে তন্ত্রশাস্ত্রের প্রবর্তন করেছিলেন সেটা আরো কয়েক হাজার বছর আগের, ঋগ্বেদ ও অথর্ববেদ এর মাঝামাঝি কোন এক সময়কার (তন্ত্রের শিকড় সন্ধানে, পৃষ্ঠা ৪৩)। তার তন্ত্রধর্মে কোন উচ্চ-নিচ জাতিভেদ তো ছিলই না, নর-নারীদেরও সমান অধিকার ছিল। মানুষের কল্যাণকারী এক ভেদহীন সাম্যের ভিত্তিতে তৈরি নতুন সমাজতন্ত্র গঠনের দিশা ছিল। ঝাড়গ্রামের অন্তর্গত রামেশ্বর মন্দিরে শিবরাত্রি উপলক্ষে যে অনুষ্ঠান ও মেলা বসে সেখানে আদিবাসী ও অ-আদিবাসী মানুষদের যেভাবে সহজাত উপস্থিতি ঘটে এবং পরস্পর একসঙ্গে আনন্দ উদযাপন করেন সেটাই তার সব থেকে বড় উদাহরণ।"

আমি তবুও নাছোড়বান্দা। বললাম, "'শিব' যে মানুষ ছিলেন তার প্রমান কোথায় সেটা তো বললেন না?"

আমার দিকে একটু সন্দিগ্ধ দৃষ্টিতে তাকালেন। তারপর একটু হেসে বললেন, "ভুরিভুরি উদাহরণ আছে।তৃতীয় 'বেদ' হল তার প্রমাণ। 'যর্জুবেদের' তৃতীয় অধ্যায়ের শেষ মন্ত্রে শিবের পিতৃ পরিচয় রয়েছে---
"শিবো নামাসি। স্বধিতিস্তে পিতা নমস্তে অন্তু মা মা হিংসী"(৩/৬৩)
অর্থাৎ শিবের পিতার নাম 'স্বধিতি'। এতেই তো বোঝা গেল তিনি কাল্পনিক দেবতা নন।"

বললাম, "কিন্তু পিতার ঔরসে এবং মাতৃগর্ভে শিবের জন্মের তো কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সে কথা তো স্বয়ং কালিদাসও তার "কুমারসম্ভব" কাব্যে বলেছেন---
"বর্পুবিরুপাক্ষমলক্ষো জন্মতা"
অর্থাৎ শিবের কুলের কোন পরিচয় নেই। তিনি স্বয়ম্ভু। তাছাড়া পুরাণে তো কেবল শিবের লীলারই পরিচয় পাই।"

কিছুটা গম্ভীর হয়ে বললেন, "কালিদাস কী বলেছেন সেটা সত্য নয়। গবেষক জয়দেব মুখোপাধ্যায় কালিদাসের এই বক্তব্যের দারুণ জবাবও দিয়েছেন, কারণ উনি(কালিদাস) সম্ভবত বেদ বা সংহিতা না পড়েই এমনটা  লিখেছেন (তন্ত্রের শিকড় সন্ধানে, পৃষ্ঠা ৩৭)।"

"কিন্তু আপনি যে বারবার বেদের কথা বলছেন সেই 'বেদ'-এ শিবের উল্লেখ তো নেই?"

"সে কি! তুমি রুদ্রদেবের নাম শোনোনি! ঋকবেদে তো পরিষ্কারভাবেই বলা আছে, রুদ্রদেবতা ছিলেন অতি ভীষণ, কোপন স্বভাবা এবং সংহারক। অন্যদিকে জ্ঞানী, দাতা, ভূমির উর্বরতা সাধক, সুখদাতা, ঔষধ সমূহের প্রয়োগ কর্তা এবং রোগারোগ্যকারী (ঋক- ১/২৭/১০)।"

বললাম, "কিন্তু পুরাণ বা মহাভারতের 'শিব'-ই যে বেদের 'রুদ্রদেব'- এমন প্রমাণ কি কোথাও পেয়েছেন?"

অবশ্যই পেয়েছি। বিখ্যাত প্রাচ্যবিদ্যার্ণব নগেন্দ্রনাথ বসুর 'বিশ্বকোষ'(বিংশ খণ্ড) গ্রন্থে বলা আছে, বেদ, সংহিতায় যিনি রুদ্রদেব তিনিই 'রামায়ণ' 'মহাভারত' এবং 'পুরাণ' সমূহে 'শিব' নামে প্রসিদ্ধ (পৃষ্ঠা ৪১৯)। যজুর্বেদের রুদ্রই পরবর্তীকালে 'শিব' বা 'মহাদেব' হয়েছেন। আরো বড় প্রমাণ যদি চাও তাও রয়েছে ঋকবেদেই। ঋকবেদের ১০/৯২/৯ ঋকে রুদ্র-ই যে শিব তারও উল্লেখ রয়েছে---
"স্তোমং বো অদ্য রুদ্রায় শিক্কসে ক্ষয় দ্বীরায় নমসা দিদিষ্টম।
যেভি শিব: স্ববাঁ এবয়াবভিদিব: নিষক্তি স্বয়শা নিকাসভি:।।"(ঋক ১০/৯২/৯)
এছাড়াও 'যজুর্বেদ' বা 'বাজসনীয়' সংহিতাতেও শিবের উল্লেখ আছে (৩/৬১)।"

বললাম, "বেদে রুদ্রদেব যদি শিব হয়ে থাকেন তবু তো তিনি পূজিত 'দেবতা' হিসেবেই। 'মানুষ' শিব এমন প্রমাণ কোথায়?"

"তুমি সুশ্রুত বলে কাউকে চেনো?"

বললাম, "চিনবো না কেন। তিনি প্রাচীন ভারতের একজন শ্রেষ্ঠ চিকিৎসক ছিলেন। তাঁকে 'অস্ত্রোপচার' ও 'প্লাস্টিক সার্জারির' জনকও বলা হয়।"

"এই সুশ্রুতকে চিকিৎসা শাস্ত্র শিক্ষা দিয়েছিলেন স্বয়ং শিব। শুধু সুশ্রুতকে নয় এ গোটা পৃথিবীকে প্রথম চিকিৎসা বিজ্ঞানের অ আ ক খ তিনিই শিখিয়েছিলেন (তন্ত্রের শিকড় সন্ধানে, পৃষ্ঠা ৩৪)। তিনি কত বড় চিকিৎসক ছিলেন সে বিষয়ে একাধিক ঋকে সে কথা উল্লেখও আছে। যেমন--- রুদ্র ঔষধ দান করেন (২/৩৩/২২)। রুদ্র প্রত্যেক রোগের ঔষধ ব্যবস্থা করেন (৫/৪২/১১)। সহস্র ঔষধ তার জানা (৭/৪৬/৩)। সর্বোপরি ঋকবেদের ২/৩৩/৪ ঋকে বলা হয়েছে ---"উরো বীবাঁ অর্পয়ভেষজেভিভিষক্তমং ত্বাং ভিষজা শৃণোমি।।"---অর্থাৎ তিনি চিকিৎসকগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ও প্রধান চিকিৎসক। সুতরাং সুশ্রুত নিশ্চয়ই কোন দেবতার কাছ থেকে চিকিৎসা শিক্ষা লাভ করেননি। কারণ সেটা সম্ভব নয়। তাই শিব যে একজন 'চিকিৎসক' বা বৈদ্যনাথ ছিলেন সে কথা তো পরিষ্কার।"

কিন্তু লোকে বিশ্বাস করবে কেন যে সুশ্রুত শিবের কাছেই শিক্ষা লাভ করেছিল এ কথা কি কোথাও বলা আছে? বরং শুনেছি 'সুশ্রুত' 'ধন্বন্তরী'-র কাছে চিকিৎসা শিক্ষা লাভ করেছিলেন।"

"'গরুড়' পুরাণের ১৫ অব্দে বলা আছে ধন্বন্তরী বিশ্বামিত্র পুত্র সুশ্রুতকে আয়ুর্বেদ শিক্ষা দেন। সুতরাং তুমি ঠিকই শুনেছো। কিন্তু এই ধন্বন্তরীই যে শিব, সে কথা কি জানো?"

"'ধন্বন্তরী'-ই 'শিব'! জানা নেই তো!"

"তুমি আসলে মহাভারতের 'অনুশাসন' পর্বের ১৭ অধ্যায়টি পড়োনি। না হলে এমন কথা বলতে না। ওখানে শিবের সহস্র নামের উল্লেখ আছে। সেখানে শিবের নাম যে 'ধন্বন্তরী' সে কথারও উল্লেখ আছে---ধন্বন্তরি ধূমকেতু: স্কন্দো বৈশ্রবন স্তথা।"

আমি সমস্ত যুক্তিগুলোই শুনলাম। কিন্তু সবগুলোই 'বেদ' ও 'পুরাণ' আশ্রিত। এ বিষয়ে আমার জ্ঞানও সীমিত। তাই আর তর্ক বাড়ালাম না। বললাম, "জঙ্গলমহলে এর প্রভাব নিয়ে আপনি কী বলবেন?"

বললেন, "শিবের তিব্বত থেকে আগমনের প্রেক্ষাপটটি একবার ভেবে দেখো তাহলেই অনেকটা উত্তর পেয়ে যাবে।  আর্য সমাজে ঠিক যখন বর্ণাশ্রম নিয়ে প্রহসন চলছিল, আদিবাসী ও দরিদ্র সাধারণ মানুষের উপর অকথ্য অত্যাচার ও অবিচার চলছিল, এবং সর্বোপরি ব্রাহ্মণ্যবাদের প্রবল মাতামাতি শুরু হয়েছিল ঠিক সেই সময় তার আবির্ভাব ঘটেছিল (তন্ত্রের শিকড় সন্ধানে, পৃষ্ঠা -২৭)। এই যোগ ঐশ্বর্যবান মহাপুরুষকে তাই প্রথমে আর্যরা নয় অনার্যরাই গ্রহণ করেছিলেন। এবার জঙ্গলমহলের মানুষগুলোকে দেখো এখানেও প্রাচীনকাল থেকেই অনার্য মানুষদের অবস্থান। সুতরাং তাদের কাছে তিনি সহজেই একমাত্র আরাধ্য হয়ে উঠেছিলেন। এটা নতুন কিছু নয়। তুমি তো আবার বেদ ও পুরাণের তথ্যগুলোকে ঠিকঠাক বিশ্বাস করছো না। তাহলে আরও একটা তথ্য জানাই। ক্ষিতিমোহন সেন "ভারতের সংস্কৃতি" গ্রন্থে বলেছেন, 'শিব ছিলেন শূদ্রের দেবতা। শবর ও কিরাতের দ্বারা পূজিত 'শিব' ছিলেন কিরাত বেশী। সুতরাং এখানকার শবর ও কিরাত বাসী'র সঙ্গেও শিব পূজার সম্পর্ক থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। কারণ এখানেও শবর জাতির একটা দীর্ঘ অংশ বসবাস করে আসছেন অতীত কাল থেকেই। তবে এর থেকেও বড় কারণ একটা আছে।"

"সেটা কী?" 

"'শিব' যে অলৌকিক দেবতা নন সেটা আরো একবার মনে করিয়ে দিই। কারণ সুধীর কুমার করণ তাঁর 'সীমান্তবাঙলার লোকযান' গ্রন্থে বেশ স্পষ্টভাবে বলেছেন, লৌকিক দেবতাদের মধ্যে প্রাচীনতম দেবতা হলেন শিব (পৃষ্ঠা - ৫২)। উনি 'লৌকিক' কথাটি কেন ব্যবহার করেছিলেন ভেবে দেখো। নিশ্চয় এমনি এমনি না। পৌরাণিক কথাটা এড়িয়ে গেছেন কারণ শিবের অস্তিত্ব একসময় ছিল বলেই। এবার জঙ্গলমহলে শিবের প্রভাবের সব থেকে বড় কারণটি বলি, শুরু থেকেই এখানকার সিংহভাগ মানুষ কৃষিজীবী। কৃষিকাজের জন্য পুরোটাই প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল থাকতে হয়। যেখানে পদে পদে অনিশ্চয়তা। তাই দেবতার উপর নির্ভরশীল হতেই হত। শিবের স্তুতি তাই এখানেও অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছিল। কারণ ঋগ্বেদের রুদ্রদেব বা শিব ছিলেন 'ভূমির উর্বরতা সাধক'(১/২৭/১০)। আবার প্রাচীন বাংলা সাহিত্যেও শিবকে  'কৃষকের দেবতা' বলে উল্লেখ করা হয়েছে(সীমান্তবাঙলার লোকযান, পৃষ্ঠা-৫২)। শুধু তাই নয় এবার ১/৪৩/৬ ঋকটা দেখো। সেখানে শিবের স্তুতিতেও বলা হয়েছে রুদ্রদেব অশ্ব, মেষ ও গো প্রভৃতির মঙ্গল সাধন করেন। এগুলো তো কৃষি ও পশুপালনের সঙ্গেই সম্পর্কিত। তাই সকলের মঙ্গল বা শুভ কামনায় শিব আরাধনাও এখানকার জনসমাজে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। এবার নিশ্চয় তোমার প্রশ্নের অনেকখানি উত্তর পেয়ে গেছো?"

চলবে...

Post a Comment

0 Comments