জ্বলদর্চি

ছোটোবেলা বিশেষ সংখ্যা -১২০

ছোটোবেলা বিশেষ সংখ্যা -১২০


সম্পাদকীয়,
কথায় আছে,  মাঘের শীতে বাঘ কাঁপে। এই প্রবাদ দিয়ে শীতের তীব্রতা কে বোঝানো হয় সাধারনত। মাঘ মাসে এতটাই শীত পড়ে যে বাঘও শীতে কাবু হয়ে যায়। এবারে মাঘ মাসে বাঘ কাঁপা তো দূরে থাক, বাঘের মাসিও কাঁপেনি। তাই শীতের আমেজ যাকে বলে যেমন দুপুরে রোদে পিঠ দিয়ে বসে আচার খাওয়া বা বই পড়া বা উল বোনা এসব দেখাই গেল না, তাই না? তবু সুদীপ আঙ্কেল পুরুলিয়ার এক গ্রামের ছবি পাঠিয়েছেন ছোটোবেলার বন্ধুদের জন্য। প্রচ্ছদ দেখে আমি একছুটে চলে গেছি ঐ পাখি বাড়িটাতে। এসো তোমরাও দেখে যাও। ময়ূর আঁকা বাড়িটার সামনে পায়রারা কেমন চাল খাচ্ছে। তাহলে কথায় যা বলে তা যে সবসময় সত্যি নয়, এবার মানবে তো? এই যেমন কথায় বলে, গাধার মতো বুদ্ধি। এটা দিয়ে গাধার কম বুদ্ধি বোঝানো হচ্ছে। কিন্তু দিলীপ জেঠুর গল্প পড়ে জেনে নাও গাধারও বেশ বুদ্ধি হয়, সে কথা। তোমাদের বন্ধু রিয়া পুজোর ছড়া পাঠিয়েছে। যদিও পুজো অনেকদিন আগেই চলে গেছে।  এখন মেলার ছড়ার দিন। আর রূপা পিসি সেই বইমেলার ছড়া লিখে পাঠিয়েছে। তোমরা বইমেলায় কে কে যাবে জানাও। আমি তো যাচ্ছি, রূপা পিসির সঙ্গে দেখা করতে। যাবার আগে বলে নিই, দোলনচাঁপা আন্টি তোমাদের অনেক অনেক অজানা দিবসের কথা বলছেন। জানি সেগুলশ মনে রাখাই খুব কঠিন তবু বলি কঠিনেরে লও সহজে। এবারের ছোটোবেলার মূল্যবান সম্পদটি হল, মলয় জেঠুর পাঠপ্রতিক্রিয়া। অতি মূল্যবান পরামর্শ দিয়ে তিনি মাঝে মাঝেই আমাদের সঠিক পথ চিনিয়ে দেন। আরো একটি আনন্দের কথা বলে নেব চুপি চুপি। আসছে নতুন ধারাবাহিক থ্রিলার উপন্যাস। কি খুশি তো? খুশি বেড়ে যাবে যদি রুহানা, সৌনকশৌর্য আর তুহিনের আঁকা দেখে নাও।  --- মৌসুমী ঘোষ।


বইমেলাতে  
রূপা চক্রবর্ত্তী 

 যাবি কে কে বইমেলাতে 
 হাতটি তুলে জানা ,
 রাজি সবাই হলে জানি 
 করবে না মা মানা |

 মজার ছড়া গল্প ঝুলি 
 ছবি যদি খুঁজিস  ---
 পাবি সবই এই মেলাতে 
 (যদি ) চলতে চোখও বুজিস |

 নানান রকম খাবার আছে 
 চাস যদি কেউ খেতে ,
 নাচে গানে মন ভরাতে 
 বসবি আসন পেতে |

 চলরে খুশির জোয়ার টানে 
 ভাসবি সবাই মিলে ---
 এমন মিলন মেলায় ফাঁকি 
 পড়লে যে দুখ দিলে |

সৌনকশৌর্য দাস, সপ্তম শ্রেণী, বিদ্যাসাগর শিশু নিকেতন,পশ্চিম মেদিনীপুর


সংস্কৃতির বন্ধু 
দিলীপকুমার মিস্ত্রী

সংস্কৃতি এবার ক্লাস ফোরে উঠল। খুব বুদ্ধিমতি মেয়ে। ক্লাসে সে বরাবর ফার্স্ট হয়। এবার জেলা বৃত্তি পরীক্ষায়ও খুব ভালো রেজাল্ট করবে,বাড়ির সকলে এমনটাই আশা করছে। 
         সংস্কৃতি খুব চটপটে মেয়ে। সারাদিন ঘরে বই নিয়ে বসে থাকার মেয়ে সে নয়। তবে সকাল সন্ধ‍্যায় নিয়মিত পড়তে বসার কথা তাকে কখনো বলতে হয়না বাবা-মাকে। দুই দুই চার ঘন্টা, এক মনে সে পড়াশোনা করে। কিন্তু বিকেলে এবং ছুটির দিনগুলোতে তার শুধু খেলা আর খেলা। ছোট থেকে বড়,পাড়ার সকলের সাথে তার গভীর বন্ধুত্ব। তাই কখনও  খেলার সাথীরও অভাব হয়না। 
            ইদানিং তার এক নতুন বন্ধু জুটেছে,একটি বুড়ো গাধা। গাধাটা ওদের পোষ‍্য নয়,পাড়ারও নয়। দূরের কোনো গাঁ থেকে এসে সে ওদের ঘরের পিছনে,বাগানে জামতলায় আশ্রয় নিয়েছে,মাস তিনেক আগে। মনে হয়,গাধাটা কারও পোষ‍্য ছিল। এখন বয়সের ভারে তেমন কাজ করতে পারে না,তাই হয়তো সে বিতাড়িত। খুব শান্ত প্রকৃতির গাধাটিকে দেখে সংস্কৃতি খুব মায়ায় পড়েছে। সে তার সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়ে,তাকে তাদের বাগানেই পাকাপাকিভাবে থাকতে বলেছে। আরও বলেছে,এখন বর্ষাকাল নয়,সবে বসন্ত এসেছে। এরপর গ্রীষ্ম,তারপর আসবে বর্ষা। সে ঢের দেরী। তাই চিন্তার কিছু নেই,জামতলায় তুমি আরামেই থাকতে পারবে। বর্ষা আসার আগে আমি ঠাকুমা,বাবা-মাকে বলে, তোমার জন্য একটা চালা-ঘর গড়ে দেব। 
             নানা জনে নানা রকম কথা বলে। বলার মতোই তো কথা। গাধার সঙ্গে মানুষের বন্ধুত্ব,তাই আবার কখনও হয় ? কিন্তু সংস্কৃতি সেসব কথায় কান দেয় না,এমন আলোচনাকে পাত্তা দেয় না। সে রোজই তার বন্ধুর সঙ্গে দেখা করে সকালে বিকেলে। তাকে খেতে দেয় এটা-ওটা। তাকে আদর করে,তার সঙ্গে কতরকম গল্প করে। গাধাও তার বন্ধুকে মাঝেমধ্যে পিঠে চড়িয়ে বাগানের মধ্যেই ঘুরু-ঘুরু করে। বাইরে যায় না,কারণ পাড়ায় তাদের হিংসে করার মানুষের তো অভাব নেই। 
               সংস্কৃতি আদর করে বন্ধুর নাম রেখেছে গোকুল। একদিন সে বন্ধুকে জিঙ্গেস করল,আচ্ছা গোকুল,তোমার নিজের ঘর কোথায় গো? সেখানে তোমার আর  কে কে আছে ? নাকি তুমি কা’রও ঘরে পোষ‍্য হিসেবে থাকতে ?  তারা কেন তোমায় তাড়িয়ে দিল গো ? এটা ভারী অন‍্যায় হয়েছে। ওদের মনের মধ্যে মায়া-দয়া বলতে কোনকিছু নেই। 
                   বন্ধুর মুখে একসঙ্গে এতোগুলো প্রশ্ন শুনে,গাধার চোখ মুখ শুকিয়ে কাঠ। মনের মধ্যে দুঃখও জমেছে অনেকটা।  তবু সে নিজেকে সামলে নিয়ে বলতে লাগল। বন্ধু, সে অনেক দুঃখের কথা। ছোটবেলায় আমি একদিন হাটে বিক্রি হয়ে যাই একজন ধোপার কাছে। সে আমাকে দু’বেলা খাওয়ালেও,তখন থেকেই প্রচুর খাটাতো। তাই অল্প বয়সেই আমার শরীর ভেঙে পড়ে,বুড়ো হয়ে যাই। এখন আর আগের মতো পরিশ্রম করতে পারি না। তাই মালিক একটি নতুন পোষ‍্য তার ঘরে এনেছে। তাকে আনার পর থেকে মালিক আমাকে খেতে দেয়না,ঘরে থাকতে দেয়না। আমার দিকে সে একবারটি ফিরেও তাকায়নি গত আট মাসে। তাই মনের দুঃখে,নিজেই সে গ্রাম ছেড়ে এই দূর গ্রামে চলে এসেছি- তোমাদের ঘরে। গোকুলের মুখে এসব কথা শুনে সংস্কৃতির খুব কষ্ট হল। সে বন্ধুর গলায় হাত বুলিয়ে আদর করে বলল,বন্ধু,সেসব কথা একেবারে ভুলে যাও। আর কখনও সেসব কথা মনে এনোনা। এখন থেকে তুমি এখানেই থাকবে পাকাপাকিভাবে। তোমার কোনও কষ্ট হবে না। আমি তো তোমার পাশে রয়েছি গোকুল! সংস্কৃতির আশ্বাস পেয়ে গাধার মুখে হাসি ফুটে উঠল। 
         এর কিছুদিন পর,একদিন বিকেলে সংস্কৃতি কথায় কথায় তার বন্ধুকে  চুপিচুপি বলল,জানো বন্ধু,আমাদের গন্ধরাজ লেবু গাছের ডালে দুটি টুনটুনি পাখি বাসা বেঁধেছে। তাদের দুটি ছানাও হয়েছে। ভাবছি,ছানাগুলো একটু বড় হলে,আমি তাদের খাঁচায় রেখে পুষবো। কী মজা হবে, তাইনা বন্ধু? 
               বন্ধুর কথা শুনে গাধা মুখ শুকনো করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইল। সংস্কৃতি গোকুলকে এমন বিমর্ষ অবস্থায় দেখে আবার বলল,বন্ধু,আমি কী কিছু ভুল বললাম তোমাকে ? তোমাকে কী আমি কোনভাবে দুঃখ দিলাম ?  চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকো না বন্ধু। প্লিজ, কথা বল! আমার যে খুব কষ্ট হচ্ছে।
                    গাধা এবার মুখ খুলল। বলল, বন্ধু,তুমি এমন কাজ করার কথা আর কখনও মনে এনো না। এটা একেবারেই ঠিক নয়। বলতে পার,এটা ভীষণ অন‍্যায়,অনুচিত কাজ করা হবে। টুনটুনির ছানাগুলোকে তাদের বাবা-মায়ের কাছ থেকে চিরদিনের মতো আলাদা করে দেওয়া একেবারেই ভালো কাজ হবে না। এর ফলে,এমনও হতে পারে, শোকে-দুঃখে ছানা দুটো,এমনকি ওদের বাবা-মা’ও মারা যেতে পারে। বন্ধু, আমি হলাম গাধা। আমাকে সবাই বোকা ভাবে। তাই আমার পরামর্শ কেউ কখনও নেয় না, শোনে না। তুমিও না শুনতে পার। কিন্তু আমার বিচার-বুদ্ধি বলে,চোখের সামনে ঘটতে থাকা অন‍্যায়ের  প্রতিবাদ করা উচিত। তাকে আটকানোর চেষ্টা অন্তত করা উচিত। তাই তোমাকে শেষবারের মতো অনুরোধ করছি,এমন পরিবেশ ধ্বংসাত্মক সিদ্ধান্ত থেকে তুমি সরে এসো। আচ্ছা বন্ধু,তোমাকে যদি তোমার বাবা-মায়ের কাছ থেকে কেউ কেড়ে নিয়ে যায়,তোমার কষ্ট হবে না ? তোমার বাবা-মায়ের কষ্ট হবে না ?
        গোকুলের কথা শুনে সংস্কৃতি একেবারে চমকে উঠল। কিছুক্ষণ চুপটি করে দাঁড়িয়ে মনে মনে ভাবল,কে বলে,গাধার মাথায় বুদ্ধি নেই,গাধা জল ঘোলা করে খায়! এসব একদম সত্যি নয়। শুধু গাধা কেন,সকলের মধ্যেই কম-বেশি বুদ্ধি থাকে,যা থেকে সমাজের উপকার হতে পারে। এরপর সে হাসিমুখে,এক দৃষ্টিতে বন্ধুর চোখে তাকিয়ে রইল। দেখল,বন্ধুর দু’চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে নামছে। তা দেখে সংস্কৃতির খুব কষ্ট হল। তার চোখও ঝাপসা হয়ে আসছে। তবু সে আগে নিজের হাতে বন্ধুর চোখ থেকে গড়িয়ে নামা জল মুছে দিল। তার গায়ে হাত বুলিয়ে খুব করে আদর করল। সবশেষে বলল,বন্ধু,সবাই বলে আমার মাথায় নাকি খুব বুদ্ধি। কিন্তু আমার বিশ্বাস,তুমি আমার চেয়ে অনেক বেশি বুদ্ধিমান এবং অনেক বড় সমাজ-দরদী। তোমাকে বন্ধু হিসেবে পেয়ে,আমি সত্যিই খুব খুশি। তুমি এভাবেই সবসময় আমার পাশে থাকো। আমার ভুলগুলো শুধরে দিয়ে,আমাকে একজন আদর্শ মানুষ হয়ে উঠতে সাহায্য কর। কারণ,তুমিই যে আমার আসল বন্ধু এবং একজন যথার্থ বুদ্ধিমান বন্ধু। তোমাকে পাশে পেয়ে আমার জীবন ধন‍্য হল।

তুহিন সরকার, সপ্তম শ্রেণী,সুখচর কর্মদক্ষ চন্দ্রচূড় বিদ্যায়তন,উত্তর ২৪ পরগণা

এবার পুজোয়
রিয়া মণ্ডল,  
নবম শ্রেণী, জওহর নবোদয় বিদ্যালয়, পশ্চিম মেদিনীপুর


     আগমনীর সুর মেতেছে
     শিউলি ফুলের গন্ধ,
    ঢ্যং-কুড়া-কুর বাজছে ঢাক
    সকাল থেকে সন্ধ্যা।।
    
    দেখতে দেখতে এলো চলে
            মহালয়ার দিন,
    সবাই মিলে দেখছি টিভি
    অসুর বধের সিন।।
    
    গজে করে এবার মা
    এলেন বাপের বাড়ি,
    দশমীতে বিদায় নেবেন
    দিয়ে নৌকা পাড়ি।।
      
     রোজ বিকেলে বাবারসাথে
    দেখতে যাব মেলা,
     মেলার মাঝে বন্ধুরা সব
         করছে বেলুন খেলা।
      
      অষ্টমীতে আটপৌড়েতে
      দেখতে গেলাম পূজা,
     পূজার শেষে প্রসাদ খেয়ে
       করলাম অনেক মজা।
         ‌‌
রুহানা খাতুন,তৃতীয় শ্রেণী,কিশোলয় মডেল স্কুল,দক্ষিণ ২৪ পরগনা


বিশ্ব ক্যান্সার দিবস
(৪ই ফেব্রুয়ারি)

 দোলনচাঁপা তেওয়ারী দে

প্রতিবছর ৪ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ক্যানসার দিবস পালিত হয়। ক্যান্সার বিশ্বব্যাপী বহু মানুষের মৃত্যুর কারণ। আজ জানবো ক্যান্সারের ইতিহাস ও লক্ষ্য সম্পর্কে।
বিশ্ব ক্যান্সার দিবস পালনের উদ্দেশ্য হলো যাতে এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণ গুলি চিহ্নিত করা যায় এবং এই রোগ কে প্রতিরোধ করা যায়। এছাড়া এই রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে মানুষকে শিক্ষিত ও উদ্বুদ্ধ করা যায়।
মোটামুটি ভাবে ইউনিয়ন ফর ইন্টারন্যাশনাল ক্যান্সার কন্ট্রোল ২০০৮ সালে বিশ্ব ক্যান্সার দিবস উদযাপনের পদক্ষেপ নেয়।
বিশ্ব ক্যান্সার দিবসের প্রাথমিক লক্ষ্য হলো ক্যান্সার থেকে যে অসুখগুলো হয়, সেগুলোকে এবং ক্যান্সারকে প্রতিরোধ করা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংগঠন অনুসারে সারা বিশ্বে যত মৃত্যু হচ্ছে তার এক অন্যতম কারণ হল ক্যান্সার।
১৯৯৩ সালে একটি  সংস্থা ইউনিয়ন ফর ইন্টারন্যাশনাল ক্যান্সার কন্ট্রোল (U.I.C.C) বিশ্বব্যাপী ক্যান্সার নির্মূল করতে এবং ক্যান্সার চিকিৎসার গবেষণাকে অগ্রসর করবার জন্য জেনেভাতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ওই বছরই সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনায়  আন্তর্জাতিক ক্যান্সার দিবসের আয়োজন করা হয়।
বিশ্ব ক্যান্সার দিবস ২০০০ সালে প্রথম বিশ্ব ক্যান্সার শীর্ষ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। 
তারপর ২০০৮ সালে প্রথম বিশ্ব ক্যান্সার দিবস পালিত হয়।
বিশ্ব ক্যান্সার দিবস ক্যান্সারের বিশ্বব্যাপী প্রভাব সম্পর্কে বলে এবং সচেতন করে। এটি মহা মূল্যবান মানব জীবনের ক্ষতি কমাতে প্রাথমিক সনাক্তকরণ এবং চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেওয়ার একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে।
বিশ্বজুড়ে ব্যক্তির পরিবার ও সম্প্রদায়ের উপর ক্যান্সারের নেতিবাচক পরিণতি কমাতে এবং সহযোগিতা করার জন্য ব্যক্তি,সরকার এবং বিশ্ব  স্বাস্থ্য সংস্থা ক্যানসার প্রতিরোধের জন্য এই দিনটিতে একটি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায়।
বর্তমানে বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর ৭.৬ মিলিয়ন মানুষ ক্যান্সারে মারা যায় যার মধ্যে ৪ মিলিয়ন মানুষ অকালে মারা যায় তার সংখ্যা সম্ভবত ৩০ থেকে ৬৯ বছর বয়সী মানুষেরা। তাই এই রোগের থেকে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ক্যান্সার মোকাবিলার বাস্তব কৌশল আমাদেরকে জেনে নিতে হবে।
মনে করা হচ্ছে যে ২০২৫ সাল নাগাদ ক্যান্সারের কারণে অকাল মৃত্যু প্রতিবছর ৬ মিলিয়ন করে বৃদ্ধি পাবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চেষ্টা করছে ২০২৫ সাল নাগাদ ক্যান্সারের কারণে মৃত্যুহার কমিয়ে আনার ব্যাপারে।


জ্বলদর্চি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন। 👇



পাঠপ্রতিক্রিয়া

(ছোটোবেলা ১১৯ পড়ে মলয় সরকার যা লিখলেন)


দেখতে দেখতে, শিশুবেলাটা নিয়মিত হাতে তুলে দিতে দিতে, মৌসুমী  তো কায়দা করে আমার নেশা ধরিয়ে দিল দেখতে পাচ্ছি, এই পত্রিকার। শুকতারা পড়া হয় না অনেকদিন। তারপর কিশোরভারতী, চাঁদমামাও আর খুলে দেখা হয় না -, সে-ও অনেক দিন হল।
তারপর–
যাক গে, সে অনেক কথা। এবারের সংখ্যাটা কেমন লাগল বলি। প্রথমেই এক পুতুলের মত মিষ্টি সরস্বতীকে দেখে মন 'খুশ'। মনে হল আর কিছুই  দেখব না।সত্যিই, ওর হাতে বইটা বলছে 'একের মধ্যে সব'। আমারও মনে হল, সব দেখা হয়ে গেল এক 'কচি সরস্বতী'র মধ্যেই।ওই বাসন্তী শাড়ি, ওই নিষ্পাপ চোখ– আর কি চাই?
তবু এগোলাম ভিতর দিকে।নিয়ম হল শুধু বাইরের খোলস দেখে ভুললে তো হবে না।এগোতে হবে ভিতরের দিকে। শুধু রাজবাড়ির সিংহ দরজা দেখলেই তো হবে না।ভেতরে ঢোকাও তো চাই।

প্রথমেই পেলাম নস্টালজিয়ার গন্ধ। সেই পুরানো রূপশালি ধানের, গরম ধোঁয়া ওঠা, ঝরঝরে সাদা শিউলি ফুলের মত, ভাতের গন্ধ।তাকে তো এক গ্রাসে খাওয়া যায় না।খেতে হয় তারিয়ে তারিয়ে।শতদ্রু মজুমদার সেই গন্ধই উপহার দিতে চেয়েছেন, যা বুক ভরে নিলাম–।
আসরফী খাতুন শরতের আবহে একটা সুন্দর হাল্কা ছবি এঁকেছে কল্পনার চোখে।তবে শেষে সরস্বতীর কাছে দীক্ষা নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে জ্ঞানের প্রার্থনা করেছে।আমার মনে হয়, একজন সুস্থ মানুষের মনে বোধ হয় জ্ঞানের প্রদীপের ইন্ধনের ক্ষুধা জ্বলতেই থাকে।এটাই তাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে।সমগ্র মানবজাতির, সেই প্রাচীনকাল থেকে, অগ্রগতির মূল কথাই তো এই। আসরফী এটাও বুঝেছে বা বুঝিয়েছে যে, জ্ঞান-ধনের মূল্য অন্যান্য ধনের থেকে অনেক উপরে।তাই একজন প্রকৃত মানুষের প্রার্থনা জাগতিক ধনের চেয়েও অনেক বেশি জ্ঞানের আলোকে উজ্জীবিত হওয়ার।

ভানুপ্রিয়া পুরানো শিশু লেখিকা।ও এবারে বেশ একটা গুরু গম্ভীর আলোচনা করেছে।তবে আমি জানি না, এতে দু একটি বাক্য ব্যবহার হয়েছে, যা ঠিক শিশুবোধ্য নয় বলেই মনে হয়।এটা একটু ধাক্কা দিয়েছে। আর একটি কথা।হয়ত সরকার চেষ্টা করছেন,কিন্তু ভারতবর্ষে নারী উন্নতির প্রকৃত অবস্থা এখনও যথেষ্ট দুঃখজনক। দু চারটে বিচ্ছিন্ন সংবাদ হয়ত পাই, মেয়েদের অগ্রগতির, কিন্তু তা দিয়ে কিছুই বিচার করার মত প্রকৃত অবস্থা আজও আসে নি।তবে একটা কথা ঠিক, আমরা অবশ্যই আশাবাদী।ধীরে হলেও হয়ত একদিন, সবাই এর অর্থ বা প্রয়োজনীয়তা বুঝবে এটাই আশা। অতীতে অনেক সময়ই অনেক জায়গায় নারীরাও পুরুষদের সমকক্ষ হয়েছে, ভবিষ্যতেও তা সম্পূর্ণ ভাবে হবে, বিচ্ছিন্নভাবে নয়, এটা আশা করতেই পারি।
দোলনচাঁপা তেওয়ারী দেও বেশ একটা গুরু গম্ভীর ব্যাপার নিয়ে বলেছেন।ভাল আলোচনা।কিন্তু। এটাকে, আমার মনে হয়, আরও সহজবোধ্য করে বিশ্লেষণ করলে ভাল হত।তা ছাড়া আজ এই তথ্যসুরক্ষা কথাটি এত বেশি করে আসছে, কারণ, সবাই জানে কারোর তথ্যই এখন সুরক্ষিত নয়।জন্মানোর পর মুহুর্ত থেকেই একটি শিশুর কোন কিছুই রাষ্ট্রের কাছে গোপন থাকছে না।তাই ফেসবুক, হোয়াটস এপ মোবাইল ফোন এগুলোকে নিয়ে মানুষ এত চিন্তিত।তাই আধারকার্ড নিয়ে এত তর্ক।
সারা পৃথিবীর ব্যক্তিগত কোন কিছুই আজ আর গোপন থাকছে না।সবাই চতুর্দিক থেকে বিভিন্ন ভাবে উঁকি মারছে অন্যের গোপনীয়তায়, সেটা বিক্রয়যোগ্যও হয়ে যাচ্ছে।আর সেই জন্যই এই বিষয়টা নিয়ে এত চেঁচামেচি।
যাই হোক, সব মিলিয়ে, এগিয়ে চলেছে আমাদের সবার প্রিয় ছেলেবেলা।তার চলার পথকে আরও সুন্দর করে সাজিয়ে রাখছে শ্রেয়া ব্রজবাসী, রানি মণ্ডল ও শুভঙ্কর সেনের মত ক্ষুদে আঁকিয়েরা তাদের রঙীন মন দিয়ে।
শেষে প্রতিবারের মতই কামনা করি, এগিয়ে চলুক 'জ্বলদর্চি ছোটোবেলা'র নৌকো মৌসুমীর মত পাকা মাঝির হাতে সময় নদীতে ভাসতে ভাসতে।

Post a Comment

0 Comments