জ্বলদর্চি

আবহমান /আবীর ভট্টাচার্য্য চক্রবর্তী

আবহমান 
আবীর ভট্টাচার্য্য চক্রবর্তী


(১)
আমার চোখে আজও ভাসে আবহমান সে বরষদিন
চৈতীহাওয়ায় গাজন তলায় ভক্তজনেরা সু-সমাসীন
অমলতাসেও সে রঙ লেগেছে, শেষপ্রহরের চৈত্রবায় 
গতানুগতিক ক্ষুৎপিপাসায় আমরা আজও কী অসহায়! 
যদিও এখন বিকেল তবুও সকাল দেখতে বড়ো আশা
অতীত ভুলেছে; কিন্তু হায়!তার কাছেই তো ফিরে আসা
বন্ধ দেরাজ গন্ধ ছড়ায় আজ যেন কার হালখাতা
বাবার সঙ্গে পাড়ার মোড়েতে ফল-মিষ্টির সুখকথা
কোথায় যে গেল সেসব দিনের সুরভরা সেই যৌথগান
নববর্ষের সুপ্রভাতের পূণ্যাহ হোক চিরায়মান… 


(২) 
চিরায়মান রৌদ্রছায়ায় নিজের সঙ্গে হাঁটি
বর্তমানে ব্যথা পেলে অতীত-শীতলপাটি
পেতে নাহ'য় দুটি দন্ড বসি… 
বাইরে যখন নিবিড় কালো কালবোশেখি ঝড়ে
বুকের মধ্যে আথালপাতাল আমের কুশি ঝরে
মেদুর কোন মলয় বাতাস ছোঁয়ায় পাশে বসে
যার সঙ্গে বসত আমার, নিত্য ভালোবেসে। 
বর্ষবরণ, বর্ষশেষের হিসেব নাই তায়, 
সে যে আমার নিত্যদিনের, অশেষ আশ্রয়। 


জ্বলদর্চি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন। 👇



(৩) 
এই যে সর্বক্ষণ, শুধুমাত্র অন্যের তালে তাল
স্বার্থমগ্ন দোলাচল, ব্যাখ্যাতীত আকাঙ্খার টানে
তোয়াজের অনন্ত আয়োজন, স্বকীয়তা করে বিসর্জন
দেখতে দেখতে বড়ো ক্লান্তি আসে মনে, 
মুখটি ফিরিয়ে দেখি ধুলোমাখা যাপনের উন্মুক্ত বিষুব, 
তোমাদের নকল-নবিশী যখন বিরক্ত করে খুব… 

ঐ যে নদীর পারে চিরায়ত রাখালিয়া বাঁশি
ডোবার জলজ ঘ্রাণে ভুলে যাওয়া শৈশবের হাসি
বাংলা অক্ষরে যারা পাঠ নেয় আগামীর ব্রতে
আমি তো তাকিয়ে থাকি তাহাদের সুকল্যানী পথে। 
যদি পারো রেখে দিও একমুঠো ধান-দূর্বাশীষ
নির্মোক আড়ালে জাগে যেন কোন ফিনিক্স-আশীষ
তাকে দিও অরিত্র আদর আর পদ্মনাভ ঘ্রাণ
পঞ্জিকার পাতা লেখে ঈশীভর অনিরুদ্ধ প্রাণ…

আরও পড়ুন
আত্মহত্যার সপক্ষে / ঋত্বিক ত্রিপাঠী 

Post a Comment

1 Comments