জ্বলদর্চি

তিনটি কবিতা / শুভশ্রী রায়

তিনটি কবিতা / শুভশ্রী রায়

অমোঘ ঋণ

বুকের মাঝে টলটলে গ্রাম-পুকুর, দিব্যহরিৎ দিন
দারিদ্র তার শ্যামল আঁচল বিছিয়ে অমোঘ ঋণ,
বুকের ভেতর গল্পে ক্ষুদ্র কোঠাবাড়ী আর অভাব
তুচ্ছ যা তাই অসাধারণ প্রকৃতি যেই বাড়ায় হাত;
কুঠীর মাঠ সে অনেক দূর, কল্পনা দেয় হাতছানি
দেবী বিশালাক্ষী, সংসারে সুদিন তুমি দাও আনি!
পার্থিব সুখ অন্যদের, আমাদের উঠোন ভরা ক্ষুধা
মেটে না গেঁয়ো বালক-বালিকার সামান্য চাহিদা।
তাও সোনা সে জীবন, পাঁচালি থেকে সবুজ ভাপ
দু' চার ঘর শিষ্য বাড়ী, সুখের সকরুণ অল্প মাপ,
বিনা সংস্কারে ঘর ভেঙে পড়তে পারে, কম আয়;
অমর আখ্যান লিখে চলেন বিভূতি বন্দ্যোপাধ্যায়।



ভূতুড়ে

কোনও কোনও জ্যোৎস্না ধোওয়া রাতে, কি বলব!
এক কলেজবাড়ী বলে- আমি ইতিহাস হয়ে জ্বলব,
সাহেবমেম আসে হাঁকিয়ে মস্ত ঘোড়ার গাড়ি টমটম
দেখে বেচারা দারোয়ানজীর গা করে ওঠে ছমছম।

কখনো ঢোকে এক পালকি পর্দা ঢাকা রীতি মতন,
নেমে আসেন এক বাঙালিনী বেশে সাবেকি যতন,
না, প্রতি পূর্ণিমা রাতে নয়, মাত্র দু'য়েকবার বছরে
আসে প্রকাশ্য বড় রহস্য, বাস অতীতের গহ্বরে।


সোনাই দস্যি         

ওরে ওরে ছোট্ট ডাকাত খোকনসোনা, 
আজকে তোর সঙ্গে কথাই বলব না।
তোর সাথে সারা দিন একটাও নয় কথা,
তোকে বকাবকি করতে যাওয়া বৃথা।
বুঝি না, দুষ্টুমি তুই কেন যে এত করিস,
তারপরে নিজেই চেঁচিয়ে পাড়া ভরিস!

ছোট্ট খোকনসোনা, এ দিকে শোন দেখি!
হাসিতে ভরা মুখটা গোমড়া কেন এ কি?
রাগ ভুলে একটুখানি আয় আমার কাছে,
তোর ওপরে বেশি রাগ করতে পারি না যে;
দস্যি ছেলে, যে কারণেই দুষ্টুমি তুই করিস
আমার ঘর তোর প্রাণ দিয়েই তো ভরিস!



Post a Comment

1 Comments