জ্বলদর্চি

গুচ্ছ কবিতা /দিলীপ মহান্তী

গুচ্ছ কবিতা

দিলীপ মহান্তী


প্রতিশ্রুতি

আমিও আকাশদীপ জ্বালি
নদীগুলি তুলে রাখি হাতে

বিকেলের বাতাসের সুর
টেনে নিই বাঁচার প্রহর

পৃথিবীর পাহাড় চৌচির
ছিন্ন মাটি, পাথরের গান

এভাবেই নেচে যাক পথ
আলো হোক সমস্ত প্রান্তর...



 রজনীগন্ধা

রজনীগন্ধার বন নদীর ওপারে
এখন দুপুর রোদে দৃষ্টি পুড়ে যায়
দূরের প্রকৃতি যেন ঢেউ ভেঙে নড়ে

গন্ধ আসে ঘুমন্ত রাত্রিতে
পথঘাট সেজে ওঠে, সকাল আসবে
কিছু ফুল চলে যাবে বাজারে বা হাটে

সাদা ফুল জেগে ওঠে, ব‍্যথা পাবে রাতের হাওয়ায়!



 অসুখ


আমরা হাসপাতালে যাই অসুখ সারাতে   
যাওয়ার আগে অজস্র ভয় ও অসুখ
আরো বেশি গ্রাস করে, ভয়ার্ত আমাকে!

আমার আপনজন অসুখের ঘোরে
শোকার্ত কান্নায় মোড়া প্রসারিত দৃষ্টি ঢেলে ঢেলে
নিজেকে অসাড় ও দিশেহারা করে!
ঠেলে দেয় আরো বেশি বিপদের দিকে...

অভিজাত হাসপাতালে চক্ চকে মেঝে ও দেওয়াল!
তবুও জীবাণু ঘোরে অদৃশ্য আকাশে!
তবুও জীবাণু ঘোরে কিছু কিছু মানুষের ছদ্মবেশ ধরে!

হাসপাতালে অসুখ সারে না!
অনেক অসুখ নিয়ে ফিরে আসি ঘরে।


নৌকো

মনপবনের নৌকো
ভাগ‍্যিস ভেসেছিল জলে

এরকম দিনে কপিলারা ভেসে ঘর বাঁধে
রান্নাঘর অবধি নৌকোর ওপরে
কেমন আগুন জ্বলে
কুবেরও বসে বসে পুড়ে!

হোসেনের স্বপ্ন শুধু দ্বীপে খেলা করে

আমিও শ্রাবণে ভিজে
ভেসে যাবো দূর বালুচরে

মনপবনের নৌকো
ভেসে যাও জলে...

জঙ্গলের আদিমতা মেখে
জঙ্গলের নির্জনতা শুঁকে
সবুজ উঠোনে কেঁপে কেঁপে
রিক্ত ও নিঃস্ব হয়ে যাবো।


মাটি

কত কত বছর পেরোনো আশা
উড়ে আসে চেরা তালপাতা থেকে
ভুলে গেছে তার জীর্ণ হলুদ বাসা
পথ চলে গেছে অজানা নিরুদ্দেশে

হাওয়া বয়ে যায় মহাভারতের দেশে
মাটিতে ভাসে রক্ত-ধোয়া ছবি
কুরুক্ষেত্রে শকুন উড়ছে হেসে
মাঠের মধ্যে বয়ে গেছে লাল নদী...



জ্বলদর্চি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন। 👇



               ---

Post a Comment

0 Comments