জ্বলদর্চি

দূরদেশের লোকগল্প— নাইজেরিয়া (আফ্রিকা)দুই পালোয়ানের লড়াই /চিন্ময় দাশ

দূরদেশের লোকগল্প— নাইজেরিয়া (আফ্রিকা)
দুই পালোয়ানের লড়াই

চিন্ময় দাশ

একটা লোক বাস করত এক গ্রামে। খুব বলশালী ছিল লোক। গায়ে ভয়ানক শক্তি। জ্বালানির কাঠ কাটতে বনে যেত গ্রামের সবাই মিলে। ঘরে ফিরত যখন, তার বোঝা হোত অন্য সবার চেয়ে দ্বিগুন। 
ওহ হ্যাঁ, লোকটার নাম সাদুশা। আর, তার বউ হোল সেতু। একদিন সাদুশা তার বউকে বলল—আমার পেশিগুলোর দিকে চেয়ে দ্যাখ। আমিই হোলাম দেশের সবচেয়ে বড় বাহুবলি। আজ থেকে ‘ওস্তাদ বাহুবলি’ বলে ডাকবি আমাকে।
সাতু বলল—রাখো তোমার বাহাদুরির কথা। তোমার গায়ে কত শক্তি, সেটা কোনও কাজের কথাই নয়। খুঁজে দ্যাখো, দেশে নিশ্চয় আরও বলবান আছে কেউ। খোঁজারও দরকার নাই। একদিন নিজেই হয়ত পেয়ে যাবে তেমন কাউকে।
একদিন পাশের গ্রামে গিয়েছে সাতু। ফেরার সময় পিপাসা পেয়েছে তার। রাস্তার পাশেই একটা কূয়া। তাতে বালতি ফেলে দিল। শব্দও হোল ঝপাং করে। তার পরেই সমস্যা। যত টানাটানি করে, বালতি আর ওঠে না। যেন পাথর বাঁধা আছে দড়িতে। 
তখনই গাঁয়েরই এক মহিলা এসেছে জল তুলতে। মাথায় একটা কলসি। ছোট বাচ্চাটা তার পিঠে বাঁধা।
সাতু বলল-- এখানে জল পাবে না গো। বালতি উঠছে না কূয়া থেকে।
মহিলা বলল—এসো, দুজনে মিলে টানি তাহলে। 
কিন্তু তাতেও ফল হোল না কোন। টানাটানিই হোল কেবল। বালতি কিন্তু নড়েও না, চড়েও না। 
--একটু দাঁড়াও তো। বলে, মহিলা তার বাচ্চাকে নামাল পিঠ থেকে। বাচ্চাটাকেই বলল—বালতিটা তুলে দে তো, বাবা। জল নিয়ে নিই।
অবাক ব্যাপার। বাচ্চাটা অবলীলায় বালতি তুলে, মায়ের কলসি ভরে দিল। দিয়ে, আবার এক বালতি জল তুলে, সাতুর দিকে এগিয়ে দিল। কোন কসরতই করতে হোল না বাচ্চাটাকে।
জ্বলদর্চি অ্যাপ ডাউনলোড করে নিন।👇
সাতু হাঁ হয়ে গেছে একেবারে। কথা সরছে না তার মুখ দিয়ে। তাজ্জব ব্যাপার! কোন রকমে বলল—অবাক ব্যাপার তো! নিজের চোখে দেখেও, বিশ্বাসই হচ্ছে না।
মহিলার মুখে মজার হাসি। সে বলল—এর আর এমন কি শক্তি? এর বাবা তো একজন পালোয়ান কি না!
বাড়ি ফিরে পুরো ঘটনাটা স্বামীকে জানাল সাতু। সে তো রেগে কাঁই। গরগর করতে করতে বলল—নিজেকে পালোয়ান বলতে পারে না ও। পালোয়ান হলাম আমি। দেখাচ্ছি মজা। উচিত শিক্ষা দিয়ে দিচ্ছি হতভাগাটাকে। 
সাতু বলল—খবরদার, অমন কাজটি করতে যেও না। বাচ্চাটার গায়েই যদি এত শক্তি হয়, তার বাবার তাহলে কী হবে? ভেবে দ্যাখো একবার। মারা পড়বে শেষকালে।
--সেটা তো কাজেই প্রমাণ হয়ে যাবে। তখনও গরগর করছে লোকটা। 
পরদিন সকাল না হতেই বেরিয়ে পড়েছে সাদুশা। সেই গ্রামে পৌঁছে, সোজা কূয়ার কাছে হাজির। ঝপাং করে বালতি ফেলে দিল জলে। এবার কেরামতি দেখাবে বলে, এক হাতে তুলতে গেল বালতিটা। কিন্তু ক্ষমতায় কুলোল না। এবার দু’হাত লাগালো। হোল না তাতেও। 
দু’পা পিছিয়ে, হ্যাঁচকা টান লাগালো। তাতেও বালতির নড়ন চড়ন নাই কোন। দড়িটা যেন কূয়ার তলায় বাঁধা হয়ে আছে শক্ত করে। 
এবার কূয়ার ভিতর শরীর ঝুঁকিয়ে, শরীরের সব ক্ষমতা লাগিয়ে, অনেক টানাটানি হোল। লাভ হোল না কিছুই। বালতি রয়ে গেল নীচুতেই।
ঠিক তখনই, সেই মহিলা এসে হাজির। হাতে বালতি। পিঠে বাঁধা রয়েছে বাচ্চা ছলেটা। কূয়ায় বালতি নামাতে যাবে, ওস্তাদ বলল—কী করছো তুমি?
--কেন? জল তুলব।
--তাই না কি? তুলব বললেই হোল? ওস্তাদ ব্যঙ্গ করে বলল—বালতি ওঠাতেই তো পারবে না।
কোন জবাব দিল না মহিলা। একটু মুচকি হাসল শুধু। পিঠ থেকে বাচ্চাটাকে নামিয়ে, বলল—এক বালতি জল তুলে দাও তো, বাচ্ছা।
মায়ের হাত থেকে বালতি নিয়ে, অবলীলায় এক বালতি জল তুলে দিল বাচ্চাটা।
ওস্তাদের তো কথা সরছে না মুখে। কোন রকমে তোতলা গলায় বলল—এমন অসম্ভব কাজ হোল কী করে?
মহিলা হেসে জবাব দিল—কত বড় পালোয়ানের ছেলে এ, তুমি জানবে কী করে?
এবার আঁতে ঘা লাগল ওস্তাদের। বলে উঠল—এ তল্লাটে আমার চেয়ে বড় পালোয়ান আছে না কি কেউ? চলো তো, দেখি কত বড় পালোয়ান সে।
--খবরদার, খবরদার। অমন কাজটি ভুলেও করতে যেও না। তোমারর মত লোকেদের চিবিয়ে খেয়ে ফেলে সে। তার সামনে যাওয়া ভারি বিপদ। মহিলা বলল—এবার তোমার মর্জি। যেতে চাইলে, যেতে পারো। 
মহিলার পিছু নিল ওস্তাদ। তাদের উঠোনে পৌঁছে যা দেখল, অবাক হয়ে গেল সে। বিশাল আকারের একখানা চুল্লি। পাশে হাড়গোড়ের ইয়াব্বড় একটা স্তুপ। 
একটু বাদেই ভয়ানক এক গর্জনে বাতাস কেঁপে উঠল। এমনই সে গর্জন, তাড়াতাড়ি কানে হাত চাপা দিতে হোল ওস্তাদকে। তখনই ধুপ ধাপ শব্দে মাটি কেঁপে কেঁপে উঠতে লাগল। আর একটু হলে, মাটিতে পড়েই যাচ্ছিল ওস্তাদ। কোণ রকমে সামলে নিল। বিড়বিড় করে বলল—কী হচ্ছে এসব?
মহিলা হেসে বলল—কী আবার হবে? বাচ্চাটার বাবা ফিরছে শিকার থেকে। আর, এই যে উনুন, রান্না হয় এতেই। আসলে, গরীবের ঘর তো আমাদের। তাই বাইরেই উনুন বানাতে হয়েছে। এদিকে মানুষটা তো হাতি ছাড়া প্রায় কিছুই খায় না। পাশেই যে হাড়গোড়গুলো দেখছো, ওগুলো হাতিদেরই।
বেদম ঘাবড়ে গেল ওস্তাদ। বলল—তুমি নিশ্চয়ই বোকা বানাচ্ছো না আমাকে। তাহলে, আমি এখন বরং পালাই এখান থেকে।
--সেটি আর হচ্ছে না। অনেক দেরি হয়ে গেছে। এসো, আমি বরং কোথাও লুকিয়ে রাখছি তোমাকে। 
উঠোনের এক দিকে বড় বড় মাটির জালা সাজানো। মানুষ সমান উঁচু জালাগুলো। চটপট তার একটাতে সাদুশাকে ঢুকিয়ে, ঢাকনা চাপা দিয়ে দিল মহিলা। 
ভেতরে ঢুকেই, ঢাকনার একটা কোণা সামান্য উঁচু করে রাখল ওস্তাদ। যাতে বাইরেটা নজরে পড়ে। তখনই দেখল, বিপুল চেহারার একটা লোক  বেড়ার আগল ঠেলে ভেতরে এসে ঢুকল। আস্ত একটা হাতি রয়েছে লোকটার কাঁধে।
মহিলা জানতে চাইল—কীগো, সব ঠিকঠাক আছে তো?
--এমনিতে সবই ঠিক আছে। হয়েছে কী, তীর-ধনুক নিয়ে যেতে ভুলে গেছলাম। খালি হাতেই মারতে হোল হাতিটাকে। বাড়তি ধকল হোল খানিকটা। এই আর কী? 
ঢাকনার ফাঁক দিয়ে সবই দেখছে আর শুনছে ওস্তাদ। হাত-পা কাঁপছে তার। একটু বাদে উনুনে আগুন জ্বালল পালোয়ান। হাতিটাকে সেঁকে নিল খানিকটা। খাওয়া শেষ হোল যখন, হাড় কখানা ছাড়া, এক টুকরো মাংসও পড়ে নাই। 
হঠাতই পালোয়ান তার বউকে বলল—কী ব্যাপার বল তো? মানুষের গন্ধ পাচ্ছি যেন!
--সে আর কোত্থেকে পাবে? মহিলা বলল—তবে, তুমি আসবার সামান্য আগে, একজন লোক গেল এদিক দিয়ে। তার গন্ধই রয়ে গেছে, মনে হচ্ছে। অন্য মানুষ আসবে কোত্থেকে? 
পালোয়ান বলে উঠল—কপাল মন্দ দেখছি। মানুষের মাংস ভারি সুস্বাদু হোত রে, বউ!
বলতে বলতে সেখানেই মাটিতে গড়িয়ে পড়ল পালোয়ান। গাছের ডালাপালা কাঁপতে লাগল তার নিঃশ্বাসে। 
বউটা তাড়াতাড়ি এসে ঢাকনা খুলে দিল হাঁড়ির—পালাও এখান থেকে। যত তাড়াতাড়ি পারো। 
সাদুশা কোন রকমে বেরিয়ে, পড়ি কি মরি করে, ছুটে পালাতে লাগল সেখান থেকে। কিন্তু বেশি দূর যেতে হোল না,মাটি কেঁপে উঠতে লাগল। একটা গর্জন ভেসে এলো পেছন দিক থেকে। 
পাঁচজন চাষী লাঙল চালাচ্ছিল তাদের জমিতে। সাদুশা সেখানে পৌঁছাতে, তারা জানতে চাইল—কী হয়েছে গো, অমন করে দৌড়াচ্ছ কেন? 
--সাধ করে কি আর দৌড়াচ্ছি গো? একটা মহা পালোয়ান তাড়া করে আসছে পিছনে। 
--শান্ত হও, শান্ত হও। আমরা এতগুলো মানুষ আছে কী করতে? আমরা থাকতে, কাউকে তোমার ক্ষতি করতে দেব না।
তখনই আবার ভেসে এল গর্জনটা। লাঙলের মুঠি খসে গেছে হাত থেকে। কানে হাত চাপা দিয়ে, লোকগুলো বলল—কিসের শব্দ গো?
--ওটাই তো পালোয়ান। তাড়া করে আসছে এদিকেই।
রইল পড়ে বলদ আর লাঙল। লোকগুলো ছুট লাগালো মাঠের উপর দিয়ে। যেতে যেতে চেঁচাল—তুমিও পালাও। এখানে দাঁড়িয়ে থেকো না বোকার মতো।
সাদুসাও দৌড় লাগিয়েছে আবার। খানিক পথ না পেরুতেই, এক দল লোকের সাথে দেখা। বণিকের দল। নিজেদের বোঁচকা-বুঁচকি নিয়ে চলেছে দল বেঁধে। সাদুশাকে দাঁড় করিয়ে, তারা জানতে চাইল—অমন করে দৌড়াচ্ছো কেন? হোলটা কী? 
--একটা মস্ত পালোয়ান তাড়া করে আসছে পিছনে। 
লোকগুলো বলল— রোস, রোস। দশ-দশ জন লোক আছি আমরা। কোন পালোয়ানের সাধ্য নাই, আমরা থাকতে তোমার গায়ে হাত দেয়।
ঠিক তখনই থর থর করে মাটি কেঁপে উঠল। এমনই সে কাঁপন। লোকগুলো এ ওর গায়ে পড়ল হুড়মুড়িয়ে। মাটিতে গড়াগড়ি গেল তাদের গাঁটরিগুলো। ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে আছে দেখে, সাদুশা বলল—বলছি কী তাহলে? পালোয়ানটা এসে পড়েছে।
অমনি সে কী দুর্দশা লোকগুলোর! দৌড় – দৌড় – আর দৌড়! অমন দৌড় সারাটা জীবনে দৌড়য়নি তারা। তবে, যাবার সময় সাবধান করে গেল সাদুশাকে—বাঁচতে চাও যদি, তুমিও পালাও। 
প্রাণ নিয়ে পালাচ্ছে সাদুশা। যেতে যেতে একটা বাঁকের মুখে এসে হাজির। সেখানে একটা মস্ত চেহারার লোক বসে আছে রাস্তার ধারে। পাশে এই এত্তগুলো হাড়গোড় ডাঁই করা। সেগুলো যে হাতিরই, এবার আর চিনতে অসুবিধা হোল না সাদুশার। 
লোকটা বলল—কীহে, অমন ছুট লাগিয়েছ কেন?
লোকটাকে দেখে একটু সমীহ হয়েছে সাদুশার। সে বলল—ছুটব না। সর্দার পালোয়ান তাড়া করে আসছে যে।
--খবরদার বলছি। কড়া গলায় ধমক দিয়ে উঠল লোকটা—যাকে তাকে সর্দার পালোয়ান বলবে না কখনো। আমিই হোলাম পালোয়ানদের সর্দার।
ঠিক তখনই সেই ভীষণ গর্জন। সাদুশা দৌড় লাগাতে যাবে, লোকটা খপ করে সাদুশার একটা হাত ধরে ফেলল।
ততক্ষণে পালোয়ান পৌঁছে গিয়েছে সেখানে। গর্জন করে উঠল—ছেড়ে দাও ওটাকে।
লোকটা গর গর করে বলল—পারলে, এসে নিয়ে নাও।
পালোয়ান এক পা এগোতেই, সাদুশাকে শূণ্যে ছুঁড়ে দিল লোকটা। সাদুশা গিয়ে পড়ল উঁচু একটা গাছের মাথায়। নীচে তখন দুই পালোয়ানের যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। জাপটা-জাপটি, ধস্তা-ধস্তি। কখনও বা মাটিতে লুটোপুটি খাচ্ছে দুজনে। 
গাছের একেবারে মাথায় বসেও, লোক দুটোর গর্জনে কানে তালা পড়বার জোগাড় সাদুশার। গাছটাও এমন দুলে দুলে উঠছে যে তার নিজেরই আছাড় খেয়ে পড়বার জোগাড়। 
দু’হাতে শক্ত করে ডাল আঁকড়ে আছে সাদুশা, কিন্তু চোখ দুটো গেঁথে আছে নীচের লড়াইর দিকে। এক সময়  দেখল, মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যুদ্ধ চলছে দুই পালোয়ানের। একজন জাপটে ধরে আছে অন্যজনের হাত দুটোকে। হঠাতই দেখল, দুজনেই জোর এক ঝাঁকুনি দিয়ে লাফিয়ে উঠল। 
উঠল তো উঠল। বাতাসে লাফিয়ে উঠেছে দুজনে। উঠে যাচ্ছে উপরের দিকে। থামবার লক্ষণ নাই। বাতাস কেটে কেটে, সোঁ-সোঁ করে, উঠেই যাচ্ছে আকাশের দিকে।
গাছের মাথায় বসে, ঘাড় উঁচিয়ে দেখছে সাদুশা। কতক্ষণ দেখবার পর, চোখে পড়ল, একটা মেঘ ফুঁড়ে উঠে গেল দুটোতে। তখন আর কিছুই চোখে পড়ল না। 
তার পরও অনেক সময় ধরে গাছেই বসে রইল সাদুশা। নেমে আসবার সাহসই হোল না। বলা তো যায় না, কখন ধুপ করে এসে আছড়ে পড়ে মাটিতে। তখন আর কাড়াকাড়ি নয়। ভাগাভাগি করে, সাদুশাকে ছিঁড়ে খেয়ে ফেলবে দুজনে। 
গাছের মাথায় সারাটা দিন কাটিয়ে দিল সাদুশা। নামবার সাহসই হোল না তার। অন্ধকার নেমে এল যখন, গাছ থেকে নেমেই, লাগালো এক দৌড়। থামল একেবারে নিজের ঘরটিতে এসে। বুক ভরে শ্বাস নিল তখন। 
সারা দিনের ঘটনা, নিজের হেনস্থার কথা বউকে কিছুই বলেনি সাদুশা। তবে, একটা ব্যাপার হয়েছে। সেদিন থেকে নিজেকে আর পালোয়ানও বলে না সে। সেই গুমোর আর নেই তার। পালোয়ান শব্দটা মুখেই আনে না কখনও। পালয়ান কাকে বলে, নিজের চোখে দেখে এসেছে। ভাবলেই থরথর করে কেঁপে ওঠে বুকের ভেতরটা। 
আর, সেই আসল পালোয়ান দুটো? তাদের কথা কেউ জানে না। তবে, দেশের মুরুব্বিরা বলে, উপর পানে যেতে যেতে, একটা কালো মেঘের মধ্যে আটকে গিয়েছিল দুটিতে। সেখান থেকে আর বেরুতে পারেনি। 
তাই বলে কিন্তু লড়াই থামেনি দুই পালোয়ানের। কেন না, দুজনের মধ্যে কে বড়, সেই ফয়সালা যে আজও হয়নি। ক্লান্ত হয়ে পড়লে, বিশ্রাম নেয় মাঝে মধ্যে। তার পর আবার উঠে লড়াই শুরু করে দেয় দুজনে। মাঝে মাঝে গর্জনও করে ওঠে ভয়ানক শব্দে। সে আওয়াজে পৃথিবীর মাঠ-ঘাট, নদী-নালা, বন-পাহাড় সব, স-ব কেঁপে ওঠে থরথর করে। তাকেই লোকেরা বলে—বাজ পড়ছে গো, বাজ। 
কিন্তু, আমরা যারা এই গল্পে আসল ঘটনাটা পড়লাম, তারা ভালো করেই জানি, ওগুলো বাজ পড়বার শব্দ নয়। আসলে ওসব শব্দ লড়াইয়ের সময় দুই পালোয়ানের হুঙ্কার মাত্র।

Post a Comment

1 Comments

  1. এই লোকগল্পের অনুবাদগুলো ভালো হচ্ছে।

    ReplyDelete