জ্বলদর্চি

রবি-উপন্যাস মালিকা /সুবর্ণা নাগ

রবি-উপন্যাস মালিকা

সুবর্ণা নাগ


মনের গহীনে পুলকে ,আবেগে
অনুভবে দিন কাটে। 
প্রেম-প্রতিশোধ বিকোয় বুঝি  'বৌ-ঠাকুরানির হাটে'।। 

ধর্মাধর্মের দোলাচলে যখন
রীতি নীতি পড়ে বর্ষি, 
লেখনী এমন বাঙময় তাঁর
লেখে ঋষিবর 'রাজর্ষি'।। 

হৃদি উচাটন, দেহতরী মন
কাজল কালিমা কালি, 
প্রত্যাখ্যান, প্রতিপালনে 
রচেন 'চোখের বালি'।। 

পরিহাসে যেন তরঙ্গরাজি
নদীতে বদলি ভবী,
প্রাপ্তির ধনে সাজায়ে ডালি
গল্প গড়েন 'নৌকাডুবি'।।

যৌবনে তব স্বপন বিহারী
গ্রন্থি বাঁধনে মধু গন্ধ, 
হাস্যরসের চিরকুমার সভার
শেষে 'প্রজাপতির নির্বন্ধ'।। 

গোঁড়ামির যুপকাষ্ঠে যখন
দেশবাসী পড়া ধরা, 
পরাধীনতার প্রতিবাদে তব
সম্মুখে আসে 'গোরা'।। 

প্রাচুর্যতার অলিন্দে বসি, 
ইতি- উতি মন যায় রে। 
জটিলতাময় সময় সীমায় 
রাজনীতি 'ঘরে বাইরে'।।

নীড়াভিমুখী প্রেমও অভিসারী, 
মাগে প্রিয়তম সঙ্গ। 
সূক্ষ্ম মনের বাসনা পূরণে
দলিল 'চতুরঙ্গ'।। 

চিত্তহীন বিত্ত বৈভবে
হয় কি মনের সংযোগ? 
দ্বিধা-সংকুল সমর্পণের
কাহিনীই হলো 'যোগাযোগ'।। 

আধুনিকতার লেখনী স্রোতে
হলো কবিবর সবিতা। 
দেখাশোনা নয় চেনাশোনা চাই, 
ইহাই 'শেষের কবিতা'।।

একই নদীর দুই তীর
আদতে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ। 
নাটকীয়তার জীবন পটে
অবশেষে 'দুই বোন'।।


সংসার-বনরাজি মাঝে
ভালোবাসা এক গুলঞ্চ।
যাতনা-যাপনে নিঃশেষিত
কথা-গাথা এই 'মালঞ্চ'।। 

বাজিলে রণ দুন্দুভী, 
অসহযোগে দেশ ধায়, 
দেশের দশের আন্দোলন
বর্নিল 'চার অধ্যায়'।।


[রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত তেরোটি উপন্যাস বাংলা সাহিত্যের ভান্ডারে অমূল্য রত্নরাজির সমান। রচনার কালানুক্রমে উপন্যাস গুলিকে সাজিয়ে আমার নিবেদন 
'রবি-উপন্যাস মালিকা' কবিতাটি। 
  রচনার বৎসর সহ উপন্যাস সমূহের নাম ----
বৌঠাকুরাণীর হাট (১৮৮৩), রাজর্ষি (১৮৮৭), চোখের বালি (১৯০৩), নৌকাডুবি (১৯০৬), প্রজাপতির নির্বন্ধ (১৯০৮), গোরা (১৯১০), ঘরে বাইরে (১৯১৬), চতুরঙ্গ (১৯১৬), যোগাযোগ (১৯২৯), শেষের কবিতা (১৯২৯), দুই বোন (১৯৩৩), মালঞ্চ (১৯৩৪) ও চার অধ্যায় (১৯৩৪)।]
জ্বলদর্চি অ্যাপ ডাউনলোড করে নিন।👇

Post a Comment

0 Comments