কয়েকটি রম্য কবিতা -১৬/ শুভশ্রী রায়
মায়াপাহাড়
এখন আমি নদীর বুকে ঘুরছি নৌকো করে
দু'টি চোখ আটকে গেছে দূরের ওই পাহাড়ে,
সে পাহাড় বড় ডাকছে আমায় তারই কাছে
কে জানে তার গায়ে কতশত মায়া আছে!
হয়তো সেথায় আছে নতুন রকম ঘরবাড়ী
মাটির না বোধহয়, উপাদান কাঠ-পাথরই,
মানুষজন সেখানকার নিশ্চয় খুব পরিশ্রমী
জমি আছে ফালি, কষ্ট করেও ফসল কমই;
হয়তো বা পাহাড় সে নীল রঙের দূর থেকে
কাছে গেলে দেখব ধূসরেই কে গেছে এঁকে!
তবু মায়াপাহাড় সুদূর থেকেই ডাকছে খালি
অজানার টানে ছড়িয়ে আকর্ষণের জালই,
হয়তো বা মানুষ থাকে কিম্বা পরী করে খেলা
যেতে নাই বা পারি, ভেবেভেবে কাটে বেলা!
সুদূরকামী
অপূর্ব এক নীল পাহাড়, ঝকঝকে সুউচ্চ চূড়ো
সূর্য আর চন্দ্রদেব হাসিমুখেই চূড়ায় গুঁড়োগুঁড়ো,
ওপর থেকে শুরু রূপবতী রূপালি এক তটিনী
স্রোতে তার, তীরে তার, রূপকথা কম জোটেনি,
পাহাড় বড় মায়ায় মোড়া, অপার সৌন্দর্যের খণি
প্রকৃতি অন্য রকম, কোমল-কঠোর প্রাচুর্যে ধনী;
কে যেতে চায় না বলো সে পাহাড়ে, ইচ্ছুক সবাই
কিন্তু প্রত্যেকেই কী ভাবে যাওয়ার সুযোগ পাই?
তাই কলমটাকে সঙ্গে নিয়ে অদেখা পাহাড় খুঁজি,
মুগ্ধ কল্পনা দিয়েই সুদূরকে পাওয়া যায় না বুঝি!
পাহাড়ি
পাহাড় বরফে আচ্ছন্ন হো'ক না হো'ক,
তার অপূর্বতা আমাকে নিরন্তর টানে,
"আমার কাছে এস একবার", স্বপ্নে দেখা দিয়ে
কখনো বা অস্ফুটে বলে যায় কানে কানে।
পাহাড় নীলচে নয়তো ধূসর রুক্ষ নিস্পৃহ ,
উচ্চতা নিয়ে সমতলের প্রিয় বিপরীত,
পাহাড় ডাকে দিনে রাতে কাজের ফাঁকে ফাঁকে,
দেখা হ'লে ভালোবেসে ফেলব কল্পনাতীত।
পর্বতের জন্য
দেখেছ, সূর্যোদয়ের কালে পাহাড়ের গায়ে মহাজাগতিক গয়না?
দেখেছি বইকি মন দিয়ে , এত অপার্থিব যে পাপচোখে সয় না!
সৌর ঐশ্বর্য কি অসীম মহিমায় নিস্পৃহ বিরাট পাহাড়ের সর্বাঙ্গে বয়, না!
পুনর্জন্ম কে চায়, যদি পরের বার রাজকীয় পর্বতের মধ্যে জন্ম হয় না?
0 Comments