জ্বলদর্চি

চারটি কবিতা /প্রভাস মজুমদার

চারটি কবিতা
প্রভাস মজুমদার


ঋত অক্ষরেরা

মধ্য রাতে অক্ষরেরা উঠে বসে
চারিদিকে অচেনা চোখ নিশুতি পাহারায়
একাক্ষর থেকে ব্রহ্মনাদ
অচেনা পৃথিবীর  নৈ:শব্দ গভীরে
এসে দাঁড়িয়ে থাকে

আমি মায়াপট ধরে থাকি ঘোর  সমমোহনে
আকাশ অক্ষরেরা অপূর্ব চলাচলে
আমার বুকের উপর আলোপথ আঁকে
ঘুম চোখ উঁকি মেরে দ্যাখে
বাইরে বিদায়ী চাঁদ নক্ষত্র লোকে যায়  !

ঋত অক্ষরেরা পুনরায় ধীরে ধী
রে
ঘুমিয়ে পড়ে আহেলী ভোরে  !


ঢেউ

ঠিক ঢেউ নয় ঢেউয়ের মত বসন্ত হাওয়া
সম্বচ্ছর জুড়ে গুটি কয় ভালোলাগা দিন
ফিরে ফিরে এসে, দোলায় যাপন

জন্ম তমসুখে বাঁধা পড়া জীবন
সংক্ষোভে ছিঁড়ে ফেলে মুক্ত চোখ, উদ্ধত আনন্দে
শুক্লা পঞ্চমী, কোজাগরী, বুদ্ধ পূর্ণিমা... এবং
দীপাবলী রাত উৎসবে মেতে ওঠে প্রেমিক মন
এখনো আকাশ, নদী হাওয়ার মত রাত দিন ভেসে যায়  !

যে হৃদয়ে ময়লা জমেছিল পাহাড়ের মত
ঢেউ এসে পাহাড় ভাঙে, বাঁধ ভাঙে আদিম সুখে
অদৃশ্য আহেলী হাত মেলে ধরে চাঁদ
আমি নির্জন সুখ চরে একাকী হেঁটে যাই...
ঢেউ গুলি নীরব পর্বত ভেঙে আমার পিছু নেয়   !

🍂


শব্দের ঢেউ

শব্দের উচ্চ্বাস ভেঙে সে এক সমুদ্র নদী
বসন্তের কাছে এল
যারা ঘুরে ফিরে এক জীবনেই
বহুরূপী সেজে ঘুরে গেল
আমি প্রান্তিক মানুষের মত.. মেঘ মেপে, বাষ্প মেপে, তাদের সমস্ত রঙ ধুয়ে যাওয়া দেখি!

যাদের আসার কথা ছিল না
তারাও এল এই উৎসবে
কত মিথ্যা ছুটে এসে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাইল
শুধু গো ধরা বোকা মানুষেরা ছুটে চলে গেল
অভীক মনে তাদের সত্য ছাড়া আর হারাবার কিছুই ছিল না,
চতুর মানুষ গুলি বুঝতেই পারল না  !

শব্দের কলোচ্ছাসে তীর ভেঙে হৃদয়ের ঢেউ
গল্প বুনতে বুনতেই মহাকালে চলে গেল!


ভিজিয়ে নিয়ো মুখ

টুকরো হয়ে ভেঙে যায় প্ৰিয় অন্বয় কাব্য
সহেলী মেঘ চলে যায় অনাবৃষ্টি রেখে
রোদ জ্বলা খরা মাঠ, তৃষ্ণার্ত চরে মরু মাস হাহাকার...
তারপরে হা জল হা জল ;

এখানে দিতে এসে কারু মিতি নিঃশেষ
খুঁজি ঋজু রেখ তৃপ্ত মুখ, গৌরব আলো
দেখি শুধু অরতি বাসগৃহে কাল কাল মুখ
এরা জানে ছিনিয়ে নিতে, অচির বস্তূ সুখ   ;

আমি এই সব ক্ষত সতত মেনে নিতে থাকি
ভাবি দূরাশা নিরাশার মাঝে.. কেউ হাত ধরে আছে!
গ্রীবা ছুঁয়ে বলে গেছে অনলাপ ভোর.....
শিশিরে ভিজিয়ে নিয়ো মুখ!



Post a Comment

1 Comments

  1. ভালো লাগল কবিতা।

    ReplyDelete