ChatGPT 101
সন্তোষ ভট্টাচার্য
ChatGPT যেহেতু আমার লাইনেরই গবেষণার ফল তাই আমি এটাকে সহজ করে বোঝাবার চেষ্টা করবো। সাহিত্য থেকে বেশ খানিকটা দূরে। তাই বুঝে পড়বেন।
রোবটের আইডিয়া তো আমাদের বহুদিনের। বহু ফ্যাক্টরিতে যেখানে খুব তাড়াতাড়ি রিপিট কাজ নির্ভুল করতে হয় অথবা কেমিকাল গ্যাস বা উত্তাপের জন্য যেখানে কাজ করা মানুষের পক্ষে ক্ষতিকারক সেখানে রোবট এসে গিয়েছে আজ থেকে ৫০-৬০ বছর আগেই। তবে তাদের কাজ খুব মেকানিকাল। ধরুন কভেয়ার বেল্টে করে র আইরন আসছে তা ফার্নেসে ফেলতে হবে, তারপর ফার্নেস থেকে গলিত আইরন বয়ে নিয়ে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। তা এসব করতে গিয়ে বহু মানুষের প্রাণ হানি হয়েছে তাই বহুদিন হলো রোবট হ্যান্ডই এসব কাজ করে আসছে।
৯০ এর দশকে এলো নিউরাল নেটওয়ার্ক। মানে একধরনের কম্পিউটার নেটওয়ার্ক যাকে ট্রেন করানো যায়, শিক্ষা দেওয়া যায়। যেমন ধরুন কম্পিউটারকে ছাপার অক্ষর পড়তে শেখানো হলো। আশ্চর্য জনক ভাবে সে শিখে গেলো। তাকে একটা বই যদি স্ক্যান করে দিয়ে দেওয়া যায় সে ৯৫% নির্ভুল ভাবে স্ক্যান করা ইমেজ গুলো নিয়ে doc ফাইল বানিয়ে দিতে পারলো।
নব্বই দশকে কাজ আর বেশি এগোলো না কারণ তখন কার কম্পিউটার প্রসেসর খুবই অনুন্নত মানের ছিল। এরপর চলে আসি ২০১০ সাল নাগাদ। যখন কম্পিউটার প্রসেসর এর প্রভূত উন্নতি হয়েছে, মেমোরি ও হার্ড ডিস্ক খুব চিপ হয়ে গেছে। তার সাথে সাথে সাথে রিসার্চ ক্ষেত্রে নিউরাল নেটওয়ার্কের ও যুগান্তর এসে গেছে।
মানুষ এর পর ছবি ট্রেন করতে শেখালো কম্পিউটারকে। সে কতগুলি বেড়াল এর ছবি কম্পিউটারকে দেখিয়ে বলল এ হলো বেড়াল আর কুকুরের ছবি দেখিয়ে বলল এ হলো কুকুর। এই ভাবে কিছুক্ষণ ট্রেনিং চলার পর দেখা গেল কম্পিউটার নির্ভুল ভাবে বেড়াল কুকুর আলাদা করতে পারছে। এমন কী নতুনভিকোনো প্রজাতির বেড়াল আগে না দেখে থাকলেও চিনে নিতে পারছে। বিজ্ঞানীরা ভাবলেন এতো দারুণ ব্যাপার, তা, হাতের কাছে যা পেলেন সব কম্পিউটার কে চেনাতে থাকলেন আলু মুলো পাহাড় আসবাবপত্র সব কিছু। আশ্চর্যজনক ভাবে কম্পিউটার শিখে গেলো কোনটা কী।
এরপর কম্পিউটার কে বলা হলো এবার নিজে থেকে ছবি আঁকও তো। সে এঁকেও দিলো নির্ভুল ভাবে, বাড়ি ঘর আপনি আমি সবাইকে। তাকে ভিডিও ট্রেন করিয়ে ভিডিও বানাতে বলা হলো। এমন বানাতে শুরু করলো কেউ আর বলতে পারবে না সেটা মানুষ তৈরিকরে নি।
এর খারাপ দিক প্রচুর আছে বড় বড় নেতার মুখে উল্টোপাল্টা কথা ঢুকিয়ে মজা করতে মানুষ ভিডিও ছাড়তে লাগলো বাজারে। কমন মানুষ ভাবলো এসব সত্যি। কম্পিউটার এর কারসাজি বোঝা খুব শক্ত হয়ে গেলো। কম্পিউটার এখন পুরো স্বল্প দৈর্ঘের মুভি বানাতে সক্ষম।
সাহিত্যের কথায় আসি। মানুষ কম্পিউটার কে বই পড়াতে শেখাল। কোন বাক্য থেকে কী মানবিক ইমোশন আসে কম্পিউটার তা শিখে নিলো। এখন এমনই অবস্থা হয়েছে কম্পিউটারকে গল্প প্রবন্ধ বা পদ্য লিখতে বললে সে লিখে দেয়। যে কোনো ভাষায়। এখন যেহেতু ইংরিজি থেকেই সব শুরু, ইংরিজিতে যা লেখে তা এক্সপার্টের মতনই লেখে। অন্য ভাষায়ও সে এক্সপার্ট হয়ে যাবে বছর দুয়েকের মধ্যেই।
তা আপনি কী করবেন? ChatGPT বলে একটি অ্যাপ ইন্সটল করে নেবেন ফোনে। এর অনেক ভার্সন বেরিয়েছে তাদের কেউ কেউ পয়সা চায়। সে সব করবেন না। open source ChatGPT হলো ফ্রি তাই ইন্সটল করবেন। এরপর ধরুন আপনার জানতে ইচ্ছে হলো কনিষ্ক সম্পর্কে, জিজ্ঞেস করবেন প্রশ্ন বোধক বাক্যে, সে বলে দেবে। ধরুন আপনার বৃদ্ধ বা কী মা সব ভুলে যাচ্ছেন বয়স জনিত কারণে আপনি জানতে চান কী রিসার্চ হয়েছে, বেস্ট মেডিসিন কী, আপনাকে বলে দেবে কম্পিউটার। এমন কী কোন ফান্ডে টাকা ইনভেস্টমেন্ট করলে ভালো হয় তাও বলে দেবে। তবে এসব প্রশ্ন গুলো ইংরিজিতে করলেই ভালো হয়।
আপনার গল্প বা কবিতা বা প্রবন্ধ লিখে কাল জমা দিতে হবে লেখা আসছে না। একে বলুন লিখে দেবে। আপনি শুধু দরকার মতো বাংলায় ট্রান্সলেট করে নিন। আজই চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
Santosh Bhattacharyya
San Jose, California
1 Comments
অতি অল্প হইলো!
ReplyDelete