কয়েকটি রম্য কবিতা- ১৮ / শুভশ্রী রায়
জাদু জগৎ
এসো একটু মজা, ছিটোফোঁটা অন্য রকম চিন্তা করি
যে জগতে বাস করি তার একটা জাদুময় রূপ গড়ি,
থাকতে তো হ'বে, শুরু থেকে শেষ বাস্তব দুনিয়ায়
রোজ অমোঘ বাস্তবের ঘষা খেতে হবে সমগ্র সত্তায়,
কঠোর দুনিয়া কেড়ে নিতে চাইবেই কল্পনার নয়ন,
তার প্রবলতার সামনেও করে যেতে হবে জাদু বয়ন;
ঘোর বাস্তব থেকেই বার করে নেব তার জাদু সংস্করণ
বাস্তবিকতার ভিতে দৃঢ় থেকে কল্পনাকে করব বরণ,
এখানেই তো আমাদের জয় বাস্তবের চাকার তলায়,
তার অজস্র ধাক্কা খেয়েও কল্পনার হাত ধরে চলায়!
সবুজ মন
পাখী এক, সোনালি ডানা তার অপূর্ব, বড় হাল্কা
সারা দিন ওড়াওড়ি বাস্তব আর কল্পনার আকাশে,
কখনো ডাকলেও আমার তো উড়বার নেই উপায়!
মনের জানলায় এলে দু' দন্ড বসে থাকি সকাশে।
প্রিয় পাখী বুনো-জংলি সবুজ, মুক্তি মাখানো ডানা
পুরো দিন তারা ঝাঁকে ঝাঁকে আলো করে ঘন বন,
সবুজতম সে পাখীর গল্পসল্প লিখি, সাধ্য কোথায়?
তাকে কলমে আনতে গেলে সবুজ করতে হ'বে মন।
কল্পনায় সঙ্গীরা
আছে সে এক টিয়া আমি যাকে মনের কথা বলি
কাছাকাছি রাখি, সঙ্গে সেই থাকে যেখানে যাই;
না পুষি না, পুষলে এক দিন অবশ্যই উড়ে যেত
কল্পনায় থাকে বলে উড়ে যাওয়ার সুযোগ নাই।
আছে সে এক পুষি বেড়াল আদুরে ও বুদ্ধিমতী
আমার কাছে দিনরাত থাকে বলে নিয়েছি ধরে;
কাল্পনিক বলেই এরা চিরটা কাল বেঁচে থাকবে,
ভালোবাসা দেবে পাবে, বাস্তবের হ'লে যেত মরে!
এক দিন না এক দিন সবাই শেষ হয়ে যায়, সত্যি
এই শেষ থেকে বাঁচার কোনও উপায় নেই ঠিক;
কল্পনায় রাখলে তাদের থেকে যাবে অসীম সুখে
সম্ভবে অসম্ভবে চিন্তা অমর, মাগি কল্পনার ভিখ!
মিস্টার মিয়াও মিয়াও
ওহ্ তিনি এক মহা আদরের সবার প্রিয় মিস্টার মিয়াও মিয়াও,
খাবার পেতে দেরি হলেই বলেন, "খানা লে আও, লে আও!"
আরাম করে ক্যাটফুড খেয়ে নিয়ে তারপরে ঘুম দেন টানা
কেমন করে সুখের বিশ্রাম নিতে হয়, আছে ভালোই জানা!
বড় পছন্দের কাজ বেশি না, কালেভদ্রে ইঁদুর তাড়া করা
কিম্বা লাফটাফ দিয়ে টেবিল নয়তো সোফায় উঠে পড়া,
সবচেয়ে ভালোবাসেন ঘুমোতে, মেজাজ খারাপ ঘুম না হলেই!
দারুণ সবুজ মাণিক্য চোখদু'টো তখন ভীষণ ক্রোধে জ্বলেই;
সব সময়ে পরিষ্কার থাকেন, বেরিয়ে যান না যখন তখন,
পরিবারের প্রতি ভীষণ টান, বেঁধে রেখেছে অদৃশ্য বন্ধন!
0 Comments