জ্বলদর্চি

ভাদু পূজা /ভাস্করব্রত পতি

পশ্চিমবঙ্গের লৌকিক উৎসব, পর্ব -- ৮৬
ভাদু পূজা

ভাস্করব্রত পতি

"কাশীপুরের রাজার বিটি বাগ্দীঘরে কি কর। 
হাতের জালি কাঁখে লয়ে সুখ সায়রে মাছ ধর।। 
মাছ ধরণে গেলে ভাদু ধানের গুছি ভাঙিও না। 
একটি গুছি ভাঙ্গলে পরে পাচসিকা জরিমানা॥"--
মানভূম তথা পুরুলিয়া জেলার পূর্ব দিকে এক অঞ্চল পঞ্চকোট। এই রাজ্যের এক রাজা ছিলেন নীলমণি সিংহ দেও বাহাদুর (রাজত্বকাল ১৮৭১-১৮৭৫)। তিনি নাকি সিপাহী যুদ্ধে যোগদান করেছিলেন একসময়। 
"হায় একি হইল
সিপাই পলটন খেপিল
চারিদিকে মার মার কাট কাট
যত সিপাই খেপ্যেছে
কাশীপুরের মহারাজা
মহল ছাড়্যে আস্যেছে।"।"
পঞ্চকোট রাজার রাজধানী ছিল কাশীপুর। পাহাড়, জঙ্গল লালমাটির মানভূমের রাজপরিবারে হঠাৎ উৎসবের ছোঁয়া। রাজরাণী সন্তানসম্ভবা। রাজপরিবারের নতুন অতিথি আসছে। যথাসময়ে রাণীর কোল আলো করে জন্ম নিল ফুটফুটে শিশুকন্যা। আদর করে নাম রাখা হল ভদ্রেশ্বরী। স্নেহের ভাদুরাণী। 

দেখতে দেখতে বড় হয়ে উঠল ভাদুরাণী। রাজা নীলমণি সিংহ দেও বাহাদুরের কপালে ভাঁজ। মেয়ের জন্য পাত্র খোঁজার সময় উপস্থিত। ভাদুরাণী যেন বর্ষার জল পেয়ে লকলকিয়ে বেড়ে ওঠা কচি লাউডোগার মতো সতেজ এবং সবুজ। সকলের চোখে বিস্ময় ভাদুরাণীকে দেখে। ইনি কে? দেবী? না মানবী? 

সকলের শ্রদ্ধা, ভক্তি ও ভালোবাসার পাত্রী হয়ে উঠলো ভাদুরাণী। কিন্তু হঠাৎ ছন্দপতন। সব সুর থেমে গেল হঠাৎ। আদুরে ভাদুরাণী হারিয়ে গেল পৃথিবী থেকে। আকস্মিকভাবে মৃত্যু হল তাঁর। চারিদিকে হাহাকার। করুন আর্তনাদ রাজবাড়িতে। চোখের জল থামতেই চায়না কারোর। ভাদুরাণী আর নেই। 
দিন বদলের সাথে আস্তে আস্তে মানুষ ভুলতে লাগলো ভাদুরাণীকে হারিয়ে ফেলার বেদনা। তখন রাজা নীলমণি সিংহ দেও বাহাদুর সকলের উদ্দেশ্যে তাঁর আদরের ভাদুরাণীকে প্রতিটি ঘরে বাঁচিয়ে রাখার আবেদন নিবেদন করলেন। ভাদুরাণী বেঁচে থাক গানের সুরে। দেবীজ্ঞানে পূজিত হোক ভদ্রেশ্বরী। সারা কাশীপুর রাজ্যের দেবী কন্যা হয়ে সকলের জীবনের সাথে জুড়ে থাক দেবী ভাদুরাণীর স্মৃতি। রাজার নির্দেশ প্রজারা আন্তরিকভাবে গ্রহণ করে শুরু করল ভাদু পূজা। ভাদু পরব। ভাদুগানের সুরে সুরে বেঁচে থাকলো দেবী কন্যা ভদ্রেশ্বরী। সেই ভদ্রেশ্বরী আজ সকলের আদরের ভাদুরাণী বা ভাদুমনি। চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লো ভাদুরাণীর স্মৃতিতে ভাদু পূজার উপচার। 

ভাদু পূজার প্রচলন নিয়ে আরও একটি কাহিনীর সন্ধান মেলে। সেখানে ভাদুরাণীর বিবাহ স্থির হয় একজনের সাথে। কিন্তু বিবাহ করতে আসার পথে ডাকাতদের আক্রমণে হবু বরের মৃত্যু হয়। সেই খবর রাজবাড়িতে এলে ভদ্রেশ্বরী তথা ভাদুরাণী দুঃখে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরে জ্ঞান ফিরলে স্বেচ্ছায় সহমরণে যান স্বামীর চিতায়। সতী হয়ে যান তিনি। এই মর্মান্তিক ঘটনার স্মরণে জন্ম নেয় ভাদু পূজাপূজার প্রচলন। 

তৃতীয় একটি কিংবদন্তিও শোনা যায় এই সম্পর্কে। একসময় ছত্রিনা বা ছাতনার রাজার সঙ্গে পঞ্চকোটের রাজার খুব যুদ্ধ হয়েছিল ভাদ্র মাসে। সেই যুদ্ধে জয়লাভ করেন পঞ্চকোটের রাজা। এই ভাদু উৎসব নাকি সেই জয়ের স্মৃতিবাহী। 

নানা ধরনের কাহিনীর ঘনঘটায় ভাদুর উৎপত্তি নিয়ে চরম ধোঁয়াশা। কিভাবে এলো ভাদু পূজা? ভাদুর নানা উৎস নিয়ে তুমুল বিতর্ক রয়েছে গবেষকদের মধ্যেও। ড. সুধীর কুমার করণ লিখেছেন, "ভাদু পরবটি প্রাচীন নয়, আধুনিক কালেরই এবং পঞ্চকোটের রাজবংশের পৃষ্ঠপোষকতায় এর জন্ম বিগত শতাব্দীর মধ্যভাগেই । ছোটনাগপুর বা পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের আদিবাসীদের মধ্যে ভাদুরাণীকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। ভাদুরাণী : রাজকন্যা। এই রাজকন্যাকে অবলম্বন করেই টুসু পরবের অনুকরণে এর গতিবেগ এবং এ উৎসব মাত্র কয়েকটি অঞ্চলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।" ভাদু গানের মধ্যেও মেলে ভাদুকে নিয়ে জিজ্ঞাসা ---
"সত্যি করে বল ভাদু তোর কোথায় ছিল ঘরবাড়ি! 
তোর জন্ম কোথায় দে পরিচয় বলচে লোকে আনাড়ি!!" 

কাশীপুর রাজবাড়ির এই ঘটনা অনেকেই অস্বীকার করেন। রামশঙ্কর চৌধুরী লিখেছেন, "আদপে এই কিংবদন্তির কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই"। কেউ কেউ বলেন ভাদুর জন্ম উনিশ শতকে। আশুতোষ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, "কাশীপুর রাজপরিবারের এই বিবরণটি ঐতিহাসিক সত্য।" ভাদ্র মাসে হয় ভাদু উৎসব। অনেকের মতে তাই এর নাম ভাদু। 
ভাদ্র > ভাদু
উল্লেখ্য যে পুরুলিয়ার কোনো কোনো অঞ্চলে এই ভাদুর অনুকরনে 'ভাদা' উৎসব পালন করে ছেলেরা। 
তবে THE TRIBES AND CASTS OF BENGAL VOL -1, 1891) তে রিজলে উল্লেখ করেছেন যে প্রাক্তন পঞ্চকোট রাজের প্রিয় কন্যার নামেই নামাঙ্কিত। তিনি কুমারী অবস্থাতে মারা গিয়েছিলেন। তাঁর স্মৃতিতে এই ভাদু নামটি প্রচলিত। তবে গবেষকদের অনুমান পঞ্চকোটের রাজা বলতে নীলমণি সিংদেওকেই বোঝায়। তাঁর ১৩ জন ছেলে থাকলেও কোনো মেয়ের সন্ধান মেলে না। এমনকি ভদ্রাবতী বা ভদ্রেশ্বরী তাঁর নাম ছিল কিনা জানা যায়না। তাছাড়া ভাদ্র মাসে হিন্দুদের বিয়ে হয়না। আর ভদ্রেশ্বরীর মৃত্যু একটি শোকবিহ্বল ঘটনা। যা কখনো উল্লাসকর অনুষ্ঠানের জন্ম দিতে পারে না। যাইহোক, ভাদুর প্রসার এবং প্রচার নিয়ে কাশীপুর রাজপরিবারের অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই। 
"কাশীপুর আর রাণীগঞ্জ কেঞ্জাকুড়ায় তোর থানা
বিষ্ণুপুর আর বাঁকুড়াতে পূজা দেয় ষোলো আনা!!"

মূলতঃ পঞ্চকোটের রাজা বাগদি ও বাউরিদের ধান চাষে উৎসাহিত করেছিল সেসময়। সেখান থেকেই ভাদোই ধানের উৎসবের প্রাধান্য বাড়ে। অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, "ভাদু কৃষিভিত্তিক পরব বা উৎসব অনুষ্ঠান। ভাদ্রমাসে ভাদুই যা আউশ থেকে পাকে -- তারই নবান্ন উৎসব হলো ভাদু।" তেমনি তরুণদেব ভট্টাচার্য বলেছেন, "পুরুলিয়া জেলায় প্রায় পঞ্চাশ ভাগ জমিতে চাষ হয় ভাদোই ধানের। বাকি পঞ্চাশ ভাগে হয় আঘনি বা আমন, রবি ইত্যাদির চাষ। এ প্রসঙ্গে মুন্ডাদের ননা বা জম ননা উৎসবের কথা স্মরনীয়। উৎসবটি হয় আশ্বিনে। আউশ ধানের নবান্ন উৎসব। জম ননার প্রভাব ভাদু উৎসবকে প্রতিষ্ঠিত করতে কতখানি প্রভাবান্বিত করেছে বিচার্য। ভাদ্রের সারা মাস ধরে একটা একটা করে কাটা হয় ধান, ঝাড়াই মাড়াই ও ভেনে ঘরে তোলার জন্য ডাক পড়ে মেয়েদের । ক্লান্তিকর কাজটিকে তাঁরা গানে গানে আনন্দময় করে তোলেন। দৈনন্দিন জীবনের আশা আকাঙ্ক্ষা, সুখ দুঃখ, স্বপ্ন ও বঞ্চনার সব রকম ঢেউ প্রতিধ্বনিত হয় সুরে সুরে। ভাদ্রসংক্রান্তির আগের রাত্রে ভাদুর জাগরণ। সারারাত চলে গান।"
ভাদু উৎসবকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। আগমনী, স্থিতি এবং বিসর্জন। ভাদ্র সংক্রান্তির আগের রাতকে বলা হয় জাগরণ বা আগমনী। মাসের মাঝামাঝি দিনগুলিতে বলে স্থিতি। আর শেষদিন ভাদু মূর্তিকে জলে ফেলে দেওয়া হয়। একে বলা হয় বিসর্জন। 
"যেও না যেওনা ভাদু, আমায় দুঃখ দিয়ে মনে! 
তুমি ছেড়ে চলে গেলে ধৈর্য না ধরিবে প্রাণে!!"
কোথাও কোথাও কেবলমাত্র জলে ঠেকিয়ে আবার রেখে দেওয়া হয় বাড়িতে। তৃতীয় বছরে তাঁর বিসর্জন হয়।
"ভাদু বিধুমুখী।
এস এস হৃদয়ে ধরে রাখি। 
বিদায় কথা শুনে তোমায় গো, 
অবিরল ঝরে আঁখি। 
(তুমি) যেও না গো, বিনয় করি, 
আমাদের দিয়ে ফাঁকি।"
বিসর্জনের দিন তথা ভাদ্র সংক্রান্তিতে হয় ছাতা পরব। পুরুলিয়ার চাকলতোড়ের ছাতা পরব খুব বিখ্যাত। 

এই ভাদু পূজায় কোনো অনুষ্ঠান নেই। মন্ত্রোচ্চারণ নেই। নেই কোনো পুরুত বামুন। বাজার থেকে কিনে আনা মূর্তি সাজিয়ে রাখা হয় ঘরে। প্রত্যেকের বাড়িতেই ভাদ্র মাসের প্রথম দিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত বালিকা ও তাঁর বন্ধুরা একসাথে জড়ো হয়ে ভাদুর পুজা করে। কোনও এক বয়স্কা মহিলা 'ভদ্রেশ্বরে নমঃ' বলে এক একটি ফুল ভাদুমূর্তির দিকে কয়েকবার ছুঁড়ে দেয়। আর চলে ভাদুগান। টুসু গানের অনুকরণে ভাদু গান চলে। ভাদু গানের সুরের সংগে টুসু গানের সুরের অনেকাংশে মিল রয়েছে। সাধারণত টুসুগানে দ্রুত তালিক সুর এবং ঢিমেতালের সুর প্রচলিত। তবে ভাদুগানের সুরটি টিমেতালে গাওয়া হয়। এখানে দ্রুততালিক সুর প্রযোজ্য নয়।
"ভাদুর আগমনে, 
কি আনন্দ হয় গো মোদের প্রাণে
ভাদুর আগমনে।
ভাদু আজ এলো ঘরে গো, 
এলো গো শুভদিনে।
মোরা সাজি ভর্তি ফুল তুলেছি গো
যত সব সঙ্গীগণে।
মোরা সারা রাতি করবো পূজা গো
ফুল দিব গো চরণে।
আনবো সন্দেশ থালা থালা 
খাওয়াবো ভাই জনে।"

মাটি নির্মিত ভাদুমূর্তি হয় দণ্ডায়মান বা পদ্মাসনে উপবিষ্ট। ভাদুর হাতে থাকে পদ্মফুল, ময়ূর, টিয়া, মিস্টি, পান ইত্যাদি। ভাদুর পূজা করা হয় শশা, জিলিপি, মণ্ডা, সন্দেশ, খাজা ইত্যাদি দিয়ে। ঘরটিকে সাজানো হয় এই সময়ে ফোটা শালুক ও দোপাটি দিয়ে। 

মানভূম তথা পুরুলিয়ার উত্তর পূর্ব সীমান্তের কাশীপুর রাজবাড়িকে কেন্দ্র করে প্রচলিত ভাদু পূজা। যা কিনা দক্ষিণ পূর্বের হুড়া, মানবাজারের কিছু অংশ, পুঞ্চা এলাকায় বিস্তার করে পার্শ্ববর্তী বাঁকুড়া জেলার উত্তর পূর্ব দিকের রঘুনাথপুর, সাঁতুড়ি পেরিয়ে বর্ধমানের পশ্চিম অংশে প্রভাব বিস্তার করেছে। সেইসাথে বীরভূম জেলাতেও এর অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়। এটি একটি অঞ্চলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। মানভূমের উত্তর পূর্ব দিকে বর্ধিষ্ণু পরিবারগোষ্ঠীতে ভাদু পূজার রেওয়াজ বেশি। বাউরি ও বাগদিরাও পূজা করে। 

ড. আশুতোষ ভট্টাচার্যের মতে ভাদু হল বর্ষা উৎসব বা কৃষি উৎসব। 'বাংলার লোকসাহিত্য'তে তিনি উল্লেখ করেছেন, "পূর্ব দক্ষিণ মানভূম, পশ্চিম বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান ও দক্ষিণ বীরভূম এই অঞ্চল ব্যাপিয়া কুমারীদিগের মধ্যে ভাদ্রমাসে যে গীতোৎসব অনুষ্ঠিত হয়— তাহা হিন্দু প্রভাববশতঃ বর্তমানে একটি পূজার আকার ধারণ করিয়াছে, তাহা ভাদু পূজা নামে পরিচিত। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ইহা আদিবাসীর ‘করম’ উৎসবেরই একটি হিন্দু সংস্করণ মাত্র। ... আদিবাসীর করম উৎসব, ভাদু উৎসবও বর্ষা উৎসব ব্যতীত আর কিছু নহে।” তবে এই উৎসবকে শষ্য উৎসব বলতে নারাজ সুধীর কুমার করণ। তাঁর মতে, "সীমান্তবাংলার ভাদু পরবের মধ্যেও এই একই রহস্য বিদ্যমান। করম উৎসবের প্রচুর প্রভাব সত্ত্বেও এই উৎসবকে ঠিক শস্যোৎসবের পর্যায়ে ফেলা যায়না এবং করম অথবা টুসু পরবের মতো জনপর্বের সমস্ত লক্ষণও এর মধ্যে নেই।"

ভাদ্রসংক্রান্তির তিথির আগের রাতে 'জাগরণ'। সমস্ত রাত ধরে সে দিন গান, নাচ, খাওয়া দাওয়া চলে দেদার। সবাই মিলে সুর তোলে ভাদুগানের। সেই গানের সুরে ভাদুরাণী হয়ে ওঠে বাড়ির মেয়ে। বাপের বাড়িতে আগমনের আনন্দোৎসব ফুটে ওঠে গানের লালিত্যে। উল্লেখ্য, আশ্বিনে যেভাবে উমারাণীর বাপের বাড়ি আগমন উপলক্ষে আগমনী গানের চল রয়েছে, এখানেও ভাদুরাণীকে ঠিক তেমনই ভাবে স্মরণ করা হয় ভাদুগানের মাধ্যমে। আর ভাদুগান হয়ে ওঠে কুমারী মেয়েদের হৃদয়ের মানস মুকুর। 
"ডাকে পাখিটি আঁখিটি মুদিয়া ডালে
যেও না ওগো ভাদু ধন। 
রহিব একাকি কি করে ঘরে, 
কি দিয়ে বুঝাই মন। 
যেও না ওগো ভাদু ধন। 
এ হেন ভাদর নিশায়
এমন হাসিটি ভোলা কি যায়
তুমি যে মোদের প্রাণরতন। 
যেও না ওগো ভাদু ধন।"

🍂

Post a Comment

2 Comments

  1. তথ্য সমৃদ্ধ মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক আলোচনা।

    ReplyDelete
    Replies
    1. অশেষ ধন্যবাদ,

      Delete