জ্বলদর্চি

যেতে যেতে পথে-৯১/রোশেনারা খান

যেতে যেতে পথে

রোশেনারা খান

পর্ব ৯১

আজ দীপ ইউকে ফিরে গেল। সাহাবাজের বাবা মা এসে সব প্রোগ্রাম ক্যানসেল করে গ্যেছে।১৭ ফেব্রুয়ারি ওদের বাড়িতে সাহবাজ ও রানীর আশীর্বাদ ও রেজিস্ট্রি হবে, আমার বাড়িতে কোনও আয়োজন করতে হবে না।

      মন একেবারেই ভাল নেই, গতকাল দুপুর থেকে কেঁদে চলেছি। সকালে শুনলাম রাতে বেশ কয়েকবার ঘুমের মধ্যে কেঁদে উঠেছি।ওই মানুষটাকে ছেড়ে কি করে বাঁচব? নাসিমাও আজ চলে গেল, কি চুরি করে নিয়ে গেল জানিনা। ছোট দেওর ফোন করে জানাল, সুযোগ বুঝে আমার এক দেওর আমাদের জমিতে পুকুর কাটাবার আয়োজন করেছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে পার্টির এক নেতাকে বলে ওটা বন্ধ করি।

    বাবলি গিয়ে কাউন্সিলরের কাছে সমস্ত পেপারস জমা দি এলে ওরা বাড়ি এসে আমার একটা সই নিয়ে যায়। এরপর ওরা এনকোয়ারিত আসবে। আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি, আমার কাছে একটি বিশেষ দিন। বিশেষ ভাবেই কাটালাম। সে সব  কথা লিখতে ইচ্ছে করলেও লিখতে পারছিনা। তবে বাইরে নিজেকে শক্ত রেখেছি, কারও কাছে ভেঙ্গে পড়িনি। যারা নিজেদের অপরিহার্য ভেবেছিল, তাদের সাহায্যের প্রয়োজনই হয়নি।
কী করি? কী করে জীবনটাকে ছন্দে ফেরাব? এখনো বাড়িতে লোকজন আছে। ওরাও ২/৩ দিনের মধ্যে চলে যাবে, রানী কলেজ চলে যাবে।রহিমাও তার  কাজ হয়ে গেলে চলে যাবে। মেয়ে, আর আমার আদরের নাতনি হাতে গোনা ৪ দিন থাকবে। তখন আমার কীভাবে দিন কাটবে জানিনা। যে ভাবে হোক আমাকে   কাজের ও লেখার জগতে ফিরতেই হবে।

   আজ রানীর(নাতাশা)সাহবাজের রেজিস্ট্রির ডেট। কয়েকদিন আগে ওর হবু  শাশুড়ি সঙ্গে করে নিয়ে গিয়ে প্রয়োজনীয় সমস্তকিছু কিনে দিয়েছে। রেজিস্ট্রি ওদের বাড়িতে হবার কথা, সেইমত রানী বিউটি পার্লার থেকে ওদের বাড়িতে এসে উঠেছে।হঠাৎ ওদের ম্যানেজার রেজিস্টারকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের বাড়িতে হাজির। সাহবাজের বাবা এসে বললেন, কাবিলনামা (ইসলামি মতে রেজিস্ট্রি বিয়ে)এখানে হবে, ওরাও আসছে। রানীর বাবা সকালে এসেছে।সাক্ষী হিসেবে আমি, বাবলি,  রানীর বাবা ও সাহাবাজের বাবা, ওঁদের ম্যানেজা্‌র, বাবলি ও আমি সই করলাম।  ওদের মিষ্টিমুখ করানো হল। ওরা চলে যাওয়ার পর আমরাও ওদের বাড়ি গেলাম।

    এখন রীতিনীতি সব বদলে গেছে। আগের দিনে মুসলিম বিয়েতে এনগেজমেণ্টে   রিং পরানোর রেওয়াজ ছিল না। এদের তো আংটি বদল, মালাবদল, সবই হল। তবে রেজিস্ট্রিটা যে আমাদের বাড়িতে হয়ে গেছে, সেটা সেই মুহূর্তে ওদের বাড়িতে কেউ জানে না। ছবি তোলা হল।এলাহি খাবার আয়োজন ছিল।আমাদের সঙ্গে স্বপ্না ও চন্দ্রিমাও এসেছে।সবকিছু সারা হলে আমরা বাড়ি ফেরার পর ওদের বাড়ি থেকে  প্রচুর খাবার  পাঠিয়ে ছিল। সাহবাজের মা ও দাদার রেজিস্ট্রিতে আপত্তি ছিল।  যেহেতু সাহজামাল(সাহবাজের বা্বা)খান সাহেবকে কথা দিয়েছিলেন, তাই বাড়ির লোককে আপত্তির সুযোগ না দিয়ে চুপিসারে রেজিস্ট্রিটা সেরে নিয়েছিলেন।

     আমি ওখানে ছিলাম, কিন্তু আমার মন ছিলনা। ওখানে থাকা কালে স্বপ্নাদি (খড়গপুর IIT র অধ্যাপিকা ও সারদা কল্যাণ ভাণ্ডার এর ট্রাস্টি)আমাদের বাড়ি               আসতে চেয়ে ফোন করেছিলেন। বাড়িতে ছিলাম না বলে বারণ করতে হল। রাতে সুস্মিতা(অলিম্পিয়ান)ও অদিতির (ওয়েস্টবেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপিকা) সঙ্গে ফোনে অনেকক্ষণ কথা হল।

    মেয়েটা আমার চলে যাবে, আগামিকাল সকালে ফ্লাইট(এমিরেস্ট), তাই আজ ওদের নিয়ে কইখালির ফ্ল্যাটে এসেছি। পরদিন ওকে এয়ারপোর্টে পৌঁছে দিয়ে ফ্ল্যাটেই ফিরে এলাম। ১০টার দিকে চন্দ্রিমা এসে পৌঁছাল। অ্যাপলোতে চেকআপ করিয়ে বাড়ি ফিরব। দুজনেরই ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া আছে। আমার ডাক্তার নিউরোলজিস্ট ডঃ অরুনাভ ঘোষ সব শুনে চন্দ্রিমাকে বললেন, ‘ওনাকে অনেকদিন ধরে দেখছি। উনি অনেক স্ত্রংগ মাইন্ডের মানুষ, ওনাকে নিজেকেই এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে’। আমাকে বললেন, ‘বাড়িতে একা থাকবেন না, যেখানে যা  প্রোগ্রাম থাকবে, যাবেন। মানুষের মধ্যে থাকলে দেখবেন আপনার মত অনেকেই আছেন। কে কী বলল, সে সব কথায় কান দেবান না। ওটা ওদের নেচার’।আমাকে একটামাত্র ট্যাবলেট দিলেন, আর বললেন, বাকি ওষুধ তেমনি চলবে। আমি কথা বলতে পারছি না, বুক ঠেলে কান্না আসছে।তাই বেরিয়ে এলাম।   চন্দ্রিমার দেখানো হলে আমার মন ভাল করার জন্য ও গড়িয়াহাট নিয়ে গিয়ে এটা সেটা কিনে দিল। ওর কাছে আমি যেন বাচ্চা মেয়ে।
🍂

       বাড়ি ফিরে এলাম। বাবলির ফ্লাইট ওদের টাইম ১০ টা ৩০ শে বারমিংহাম এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করেছে। পরেরদিনই বিকেলে সারদা কল্যাণ ভাণ্ডার থেকে স্বপ্নাদি আর বন্দনা(মেম্বার) আমাদের বাড়ি আসেন। আমাকে অনেক কিছু বুঝিয়ে গেলেন। আর বললেন ,রেখাদি বলেছেন যে কোন প্রয়োজনে আমি যেন ফোন করি।

    লেখালিখিতে মন দেবার চেষ্টা করছি। পেনশনের জন্য যা যা করতে হবে  সব কিছুতেই তন্ময়দা ও অন্যান্য স্টাফরা ভীষণভাবে সহযোগিতা করছেন। আজ দেখলাম তন্ময়দা মেসেজ পাঠিয়েছেন, ‘আগে সুস্থ হন, অনেক তো করেছেন। পেনশন নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।সব হয়ে যাবে’।

   খান সাহেবের পাশের বেডে যে সঞ্জয় গোলদারের ডায়ালিসিস হত, তিনি আজ মারা গেছেন, ওনার স্ত্রী রীতা ফোন করে জানালো। বছর ৫৫ বয়স হবে। আজ সৌমিত্র দস্তিদার(ফিল্ম পরিচালক)ফোন করেছিলেন। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলার সময় বললেন, আপনার মত মানুষের সমাজে এখন খুব প্রয়োজন।  

    আজ ২৫ দিন হল উনি আমাকে ছেড়ে চলেগেছেন। এক এক সময় আমার সম্রাটকে ভীষণ দেখতে ইচ্ছে করে। কথা বলতে ইচ্ছে করে, কত কথা জমে আছে। এই মানসিক কষ্ট থেকে বেরিয়ে আসার আপ্রাণ চেষ্টা করছি। লিখব যে, লেখার বিষয় মাথায় আসছে না।

    আসাদুল বাবার সঙ্গে মিষ্টি নিয়ে এসেছিল আজ। ও MBBS পাশ করেছে।  ভাল লাগল শুনে। ওদের সাফল্য মনে ক্ষণিকের জন্য হলেও খুশি এনে দেয়। ওরা আমার কাছে সন্তান তুল্য। ১মারচ পাথরায় বসন্ত উৎসব হবে। ইয়াসিনদা ফোন করে বললেন, ‘দিদি আর কতদিন এভাবে ঘরবন্দি হয়ে থাকবেন? বসন্ত উৎসবে  আসুন, মন ভাল হবে’। সপ্নাকেও বললাম। ওর গাড়িতেই আমি রানী গেলাম। আমাকে গাড়ি থেকে নামতে দেখেই সঞ্চালিকা ঈশিতা বার বার আমার উপস্থিতি  ঘোষণা করতে লাগলেন। আমরা মঞ্চে গিয়ে বসলাম, প্রচুর আবির উড়ছে বাতাসে। মেয়েরা দলে দলে নৃত্য পরিবেশন করছে। আমাকে কিছু বলতে বলা হলে, অল্প সময় বললাম। তার আগে ওরা আবির দিয়ে আমাকে বরণ করল। কিছুক্ষণ পরে DM ম্যাডাম রেশমি কমল এসে মঞ্চে আমাদের পাশেই বসলেন।। ওনার বক্তব্য  শোনার পর, লাঞ্চ করে বাড়ি ফিরে এলাম। একটা দিন অন্যভাবে কাটল।

দিল্লিতে মুসলিমদের ওপর গেরুয়া বাহিনীর আক্রমন চলছেই।ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে, মসজিদের মিনার ভেঙ্গং গেরুয়ে পতাকা বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। ভাজপার  পুলিশও আক্রমণকারিদের সঙ্গে মিশে পাথর ছুড়ছে। সরকার দেখেও দেখছে না।কানে তুলো গুঁজে, চোখে ঠুলি পরে বসে রয়েছে।  

   সন্ধ্যায় সুস্মিতা এসেছিল, পরে সর্বশ্রী(পিংলা কলেজের অধ্যাপক) এল। কেউ এলে ভাল লাগে। সর্বশ্রী আমার খুব ভাল বন্ধু। যারা সেদিন আসতে পারেনি তারা পরে পরে এসে দেখা করে যাচ্ছে।

    দেশের অবস্থা খুব খারাপ। দিল্লিতে একতরফা মানুষ খুন হয়েই চলেছে।  কেজরিওয়ালও কিছু করতে পারছে না। তার ওপর চীন থেকে করোনা নামে এক রোগের ভাইরাস এসেছে, এতে আক্রান্ত রোগীরা নাকি বাঁচছে না।রোগটা খুবই ছোঁয়াচেও। বিমানযাত্রীদের শরীর ও মালপত্রকে আশ্রয় করে এই রোগ দেশবিদেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। আমাদের দেশে প্রাথম এই রোগের জীবাণু পাওয়া যায়  কেরালার একজনের শরীরে। তিনি কিছুদিন আগে চীন থেকে ফিরেছিলেন। এই করোনার বিষয়ে খান সাহেবের কাছ্রি জেনেছিলাম তখন গুরুত্ব দিইনি।
      উনি যে এভাবে ফাঁকি দিয়ে চলে যাবেন, ভাবিনি আমি।ভীষণ দেখতে  ইচ্ছে করে আমার সম্রাটকে। কথা বলতে ইচ্ছে করে। রানী কলেজ বেরিয়ে গেলে একা একা খুব মনখারাপ লাগে। কাজের মধ্যে ডুবে থাকার চেষ্টা করছি। অনেক কষ্টে একটা লেখা তৈরি করে পাঠিয়েছি।

    আজ সাহবাজ ওর মাকে নিয়ে  মঙ্গলাপোতা গিয়েছিল আমার মাকে দেখতে। সঙ্গে  রানী ও আমিও গেছলাম। মনি আয়োজনে কোন ত্রুটি রাখেনি। ওরা খুব খুশি হয়েছে। কিন্তু আমি ভাল নেই, শরীরটাকে কেমন একটা আলস্য জড়িয়ে রেখেছে। বেঁচে থাকতে হলে আমাকে কাজের মধ্যে থাকতে হবে। সামনে আন্তর্জাতিক নারীদিবস, এইদিনটা আমার খুব ব্যস্ততার মধ্যে কাটে। এবারও বিভিন্ন জায়গা থেকে ডাক পেয়েছি। সব জায়গায় যাওয়া সম্ভব নয়, স্বপ্না অনেক আগে থেকে ওর কলেজে যাওয়ার কথা বলে রেখেছে। ওইদিন ওর কলেজে একটি সাহিত্যসভাও হবে। ২/১ দিনের মধ্যেই স্বপ্না চিঠি দিতে আসবে জানিয়াছে।  

      ৮ মার্চ স্বপ্নার সঙ্গে বিষ্ণুপুর রামানন্দ কলেজে গেলাম।মেদিনীপুর কলেজের অধ্যাপিকা অপরনিতাও আমন্ত্রিত, ও ট্রেনে এসেছে। নারীদিবসের অনুষ্ঠানের পর সাহিত্যসভা হল। এবার আমি খুব একটা ভাল বলতে পারিনি। আমি আর অপরনিতা গাড়ি নিয়ে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে পড়ি। সন্ধ্যায় আমার আরও তিনটি অনুষ্ঠান রয়েছে। দুটি মেদিনীপুরে, একটি খড়গপুরে। খড়গপুর যাওয়া সম্ভভ নয়,  সে কথা ওঁদের জানিয়ে দিয়েছি। বাড়ি পৌঁছে, স্নান সেরে, রেডি হয়ে ‘চেম্বারস অ্যান্ড কমার্সের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ‘আইস অ্যান্ড প্রাইস’ রেস্টুরেন্টে গেলাম। তখন অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে। আমার বক্তব্য সবাই খুব মনোযোগ সহকারে শোনেন, আজকেও শুনলেন। তারপর ঝর্ণা আচার্যর হাতে স্মারক তুলে দিয়ে আমি আর একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবার জন্য বেরিয়ে এলাম। ওঁরা গাড়িতে করে  আমাকে ‘গোলোকপতি ভবন’এ পৌঁছে দিলেন। এখানে ‘নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতি’র  শতবর্ষ উদযাপন ও আন্তর্জাতিক নারীদিবস পালন চলছে।জানতাম না আমিই  এখানে প্রধান বক্তা। এখানে বক্তব্য খুব ভাল হয়েছে।কোনও চাপ ছিল না। প্রাক্তন প্রধান শিক্ষিকা অশীতিপর বৃদ্ধা সুনন্দাদির খুব ভাল লেগেছে, অন্যদেরও ভাল লেগেছে।বাড়ি ফিরতে পৌনে দশটা বেজে গেছল।  

     আজ সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখলাম অনেকেই আমার গতকালের বক্তব্যের প্রশংসা করেছেন। আগামিকাল খান সাহেবের এই ইহলোক ছেড়ে চলে যাওয়ার ৪০ দিন হবে।আজ তাই কিছু প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। ইসলাম ধর্ম মতে এইদিনটি রুহু (আত্মা)বিদায়ের দিন। খ্রিষ্টানদেরও ৪০ দিনে এই কাজটি হয়ে থাকে।

     গত ১ মাস ১০ দিন ধরে মসজিদের ইমাম সম্পূর্ণ কোরান পাঠ করেছেন, আজ তা আমার সম্রাটের নামে বক্সানো (উৎসর্গ)হল। তাঁকে বিরিয়ানি খাইয়ে টাকা কাপড়জামা দিয়ে বিদায় করা হল। রেস্টুরেন্টে বেশকিছু প্যাকেট খাবারের  অর্ডার দেওয়া ছিল। আমি আর চন্দ্রিমা টোটোতে করে সেই খাবার পিরের দরগা, মন্দির ও স্টেশন চত্তরে ভিখারিদের মধ্যে বিতরণ করে এলাম।

     কিছু ভাল লাগছে না। চারপাশ যেন খা খা করছে। এমনিতেই আমার বসন্তকাল ভাল লাগে না। পাতাঝরা গাছগুলো দেখলে মন ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে। আজ ১৪ মার্চ, আমাদের ৫০ তম বিবাহবার্ষিকী। গতকয়েক বছর এইদিনটি চন্দ্রিমা ছোট্ট করে পালন করত। এবার আর হবে না।আমি তো বহুদিন ধরেই কোনও উৎসব পালন করি না। জীবনে আমার আর কোন কিছুতেই আনন্দ নেই। সব এখন অতীত।

     এর পর দিনই ফয়জলের আমন্ত্রনে প্রধান অতিথি হিসেবে ওর স্কুলে গেছলাম। ভাষাদিবস(যদিও আজ ১৫ মার্চ),অঙ্কন প্রতিযোগিতা ও বৃক্ষরোপণ অনুষ্ঠানের কর্ম সূচি ছিল। আমি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক কৌশিক দাস,  ডঃ এফ আর খান, চন্দ্রিমা সামন্ত ও আরও অনেকে। স্কুলের এই সমস্ত বাচ্চাদের  সঙ্গে সময় কাটাতে ভাল লাগে। আমাদের দেখলে ওদের মুখগুলো খুশিতে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।ফ্যামিলি পেনশনের জন্য সমস্ত পেপারস জমা দিয়ে এলাম। ব্যাঙ্কে সবাই খুব সহযোগিতা করছেন,।দ্যাখা যাক কবে, আর কত টাকা পে্নশন পাই।

    আমাদের দেশেও করোনা ভাইরাস ক্রমশ মারাত্বক আকার ধারণ করছে।  সারাবিশ্বে করোনা ছড়িয়ে পড়েছ। আমাদের রাজ্যের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১৫ এপ্রিল  পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে, ছুটি বাতিল হয়েছে আমলা, আধিকারিক, ডাক্তার্‌,  নার্স ও অন্যান্য বহু সরকারি কর্মচারীদের।জনসাধারণকে সতর্কতা অবলম্বন করতে  বলা হয়েছে। ঠাণ্ডা লাগানো চলবা না, মাঝে মাঝে  সাবানে হাত ধুতে হবে। মাস্ক ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে। তীর্থক্ষেত্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মল, হোটে্‌ল, রেস্টুরেন্ট, সব বন্ধ।বাজারে শাক-সব্জির দাম আগুন। সব ধরণের অনুষ্ঠান, জমায়েত বন্ধ।

     করোনা  এরাজ্যেও  ঢুকে পড়েছে। এক আমলার ছেলের মাধ্যমে,সে সদ্য ইংল্যান্ড থেকে জ্বর নিয়ে ফিরেছে। এরা সব ক্ষেত্রে পদাধিকারের ক্ষমতা ফলায়।  ওদের জন্য আজ রাজ্যবাসী বিপন্ন বোধ করছে। যাঁদের টাকা আছে, তাঁরা যতটা সম্ভব  বাড়িতে খাদ্য ও অন্যান্য সামগ্রী মজুত করে রাখছেন। ভাবছি দিন আনা,দিন  খাওয়া মানুষগুলর কী হবে? তাদের না আছে টাকা, না আছে কাজ।   
                              

Post a Comment

0 Comments