জ্বলদর্চি

পরিবেশ বাঁচলে মানুষ বাঁচবে/পর্ব-১/সুদীপ সেন

পরিবেশ বাঁচলে মানুষ বাঁচবে
পর্ব-১

সুদীপ সেন

আমাদের চারপাশের প্রকৃতি, পরিবেশ এবং বাস্তুতন্ত্রের এর ক্রমবর্ধমান ক্ষয়ক্ষতি ক্রমশই বিপদসীমার উপরে চলে যাচ্ছে। প্রাকৃতিক পরিবেশ বা ইকো – সিস্টেম যদি অনিয়ন্ত্রিতভাবে দুর্দম গতিতে ধ্বংস হতে থাকে, আমরা জেনেশুনে বিষ পান করছি জেনেও যদি বল্গাহীন ভাবে প্রকৃতিকে ধংস করতে থাকি তাহলে আমরা বেঁচে থাকার একদম বেসিক অক্সিজেনটুকু কোথায় পাবো ? খাবার না পেলেও মানুষ হয়তো কয়েকদিন বাঁচবে কিন্তু অক্সিজেন না পেলে ? অক্সিজেন না পেলে সব কিছু ফেলে রেখে পরপারে যাত্রা করতে হবে, আমাদের জীবনের পরমায়ু দাড়াবে কয়েক সেকেন্ড মাত্র।

একদিকে আমাদের দৈনন্দিন জীবনশৈলীর বিভিন্ন সেক্টরে আকর্ষণীয় উন্নতি হচ্ছে, আরো সহজে কাজ করার IT / AI নির্ভর ব্যবস্থা, বিভিন্ন নতুন যন্ত্রের উদ্ভাবন, আরো অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, বিভিন্ন নতুন জায়গায় ভ্রমণ, দ্রুতগতির লাইফস্টাইল - নতুন নতুন গবেষণালব্ধ আবিষ্কার, খেলাধুলা - শিক্ষা - সঙ্গীত ও  শিল্পকলা - ফ্যাশন সামগ্রী - চিকিৎসা - ব্যবসা – বিনোদন ইত্যাদির হরেক কিসিমের নতুন পদ্ধতির উদ্ভাবন, এমনকি সাফল্যের সাথে অতীব গর্বের চন্দ্রযান / সৌরযান নিক্ষেপ, তার সাথে G-20 বা এইধরনের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের উন্নতি সাধনের চেষ্টা নিরন্তর চলছে আবার অন্যদিকে বিভিন্ন এলাকায় যুদ্ধ, হিংসা, সামাজিক নিপীড়ন, অর্থনৈতিক শোষণ, বন ও বন্যপ্রাণ ধ্বংস, নদী - সমুদ্রে তীব্র দূষণ, পাহাড় ধংস, নদীর উপর বাঁধ, বাতাসে কলকারখানার ধোঁয়া ধুলো বিষাক্ত গ্যাসের মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি, অন্যান্য প্রাণী ও উদ্ভিদের অনিয়ন্ত্রিত নিধন, মারণাস্ত্রের প্রদর্শনী ও শক্তির আস্ফালন ইত্যাদিও সবই নিজের নিজের মতো করে চলছে।

কিন্তু প্রশ্ন এই যে, অক্সিজেন না পেয়ে বা তেষ্টার সময় জল না পেয়ে বা বিষযুক্ত খাবার খেয়ে, দিনের শেষে মানুষ নিজেই যদি না বাঁচে, তাহলে উপরের কোনো কিছুরই কি দরকার বা প্রাসঙ্গিকতা থাকবে ? 

আগামী দিনে আমরা নিজেদের, আমাদের সন্তানদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছি ? আমাদের সন্তানরা নিঃশ্বাস নেবার জন্য একটু বিশুদ্ধ জল, একটু পরিস্কার বাতাস আর একটু বিষহীন খাবার পাবে তো ! 

দৈনন্দিন লাইফস্টাইল, প্রয়োজন – ভোগবিলাস – বিনোদন – বাধ্যবাধকতা  অনুযায়ী প্রকৃতি ও বাস্তুতন্ত্র ধ্বংসের প্রক্রিয়াতে আমাদের সবারই কম বেশি কিছুটা ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না। তাই প্রকৃতি ও বাস্তুতন্ত্র রক্ষার  প্রক্রিয়াতেও আমাদের সবাইকেই একটু এগিয়ে আসতে হবে। সরকার বা কোনও আইন – আন্দোলনের জন্য অপেক্ষা না করে, যেখানে যতটুকু প্রকৃতি – পরিবেশের সুরক্ষা নিজে করা যায় সেটুকু করতে হবে। বিন্দু বিন্দু জলেই সিন্ধু সৃষ্টি হবে, আমরাও সুস্থ ভাবে বাঁচবো আর আমাদের সন্তানরাও আগামী দিনে সুস্থ ভাবে বাঁচার পরিবেশটা পাবে। 

"প্রকৃতি - পরিবেশ বাঁচলে মানুষ বাঁচবে, মানুষ বাঁচলে তবেই বাকি সবকিছু কাজে লাগবে"।
🍂

Post a Comment

2 Comments

  1. বাস্তবায়ন কঠিনের দিকে এগিয়ে চলছে

    ReplyDelete