বাগদি চরিত (সপ্তত্রিংশতি পর্ব )
শ্রীজিৎ জানা
খুদা তার মনসা মন্দির প্রতিষ্ঠায় বাখুল ডেকে বসেনি। পাড়া, বাখুলে অনুষ্ঠান হলে সুপারিভাঙানি করার রীতি ছিল এতদিন মাল পাড়ায়। খুদা সেইসব প্রথা মানতে নারাজ। তবে বাখুলের অনেকেই জানে খুদার এই সাহস একা দেখাবে, এমন ছাতির জোর তার নাই। গুনীন বলে তাকে পাড়াঘরে একটু ভয়ডর করে। প্রকাশ্যে মুখে যতই সব চড়বড় করুক,মনে সবার ভয় আছে গুনীনকে। যদি বাণ মেরে দ্যায়,জালাবান,শুকনাবাণ। যদি রোগজ্বালা আটকে দেয়। মারাত্মক ভুগতে হবে তখন। তারচে খাল কেটে কুমীর না আনাই ভাল। খুদা এত বকাহাবা নয়। শয়ে শয়ে লোককে শিকড়বাকড় দেয়। জলপড়া দেয়। ঝাড়ফুঁক করে। চোখমুখ দেখলে মানুষটার মনের কথাটা সে বিলক্ষণ বুঝতে পারে। বাগদি জাতের ছেনা হলে কি হবে, খুদা মাল সোজা জিনিস নয়। পাড়াঘরের লোক শুধু নয়, খুদা নিজেও জানে সেকথা। জাতভাইদের থেকে সে নিজেকে আলাদা মনে করে। সাগরীও জানে তার বর ভালোই চালাকচোস্ত। সাগরী তার ঠাকুমাকে টপকা বলতে শুনেছে,সাপের বড়া আর মানুষের গেঁড়া,দুটোই নাকি খুব জাতের! খুদার আড়ন গেঁড়াপারা। বাবলাগাছের মতো কালো শরীর,মাথায় চুলের ঘের নিয়ে বেশ ছুবরিপারা গোছের। খুদা জানে তার বিরুদ্ধে পাড়া বাখুলের কেউ মুখ খুলবে না সহজে। বাইর থেকে অনেকেই উড়াঘাই মারবে। তাতে খুদার কোন আসে যায় না। তবে মন্দির প্রতিষ্ঠার আগে পাড়াঘর ডেকে একবার বসতে চেয়েছিল সে। সাগরী রাজি হয়নি কিছুতেই।
– কেনে তুমি পাড়া ডাকতে যাবে? মায়ের মন্দির পতিষ্ঠা কোরব,ইকি ছেনা- মেইছেনার বিয়া দেইঠি। ঠাকুরের পুজায় কারো এসতে ত বাধা নাই। যার পেরান চাইবে এসবে, যার চাইবেনি,এসবেনি।
— কুন্তু মোদের বাখুলে আগে ত এরকম করেনি কেউ। মোর বেলায় যেদি করি, পাঁচকথা বোলবেনি?
— লোকের কথায় তমার যেদি এত পেসটিকে লাগে,তবে তমার ভাই গুরবেটাদের পায়ে জিয়ে ধর না!
— বাখুল ডেকে বসার সঙে অদের পায়ে ধরার কি সম্পক্ক?
— অম্নি সাগরী বাগদী তমাকে উদাকাড়া বলেনি। মিটিনে বসলে বাখুলের লোকেরা কি তমাকে ছেড়ে দিবে?অদের সঙে মিলঝিল কত্তে বোলবেনি? তমার ভাই,তমাকে লাথঝাটা মাল্লেও তুমি গায়ে মাখবেনি কুন্তু আমি অদের নামে জলপশ্য কোরবোনি কুনু দিন।
—তাবলে বাখুল মোমঝিয়ে কাজ করাটা কি ঠিক হবে বোলুঠু? লোকে যা পাল্লে কোরু, মোকে দশটা বিশটা গেরামের লোক খুদা গুনীন বোলে মান্যি করে। তাদের কাছে ছোট হই যাবোনি ত!
— ইখিনে ছোট বোড়োর কুনু পশ্ন নাই। বেটা ঝিয়ের মাথা খাবে, শোগ সব্বনাশ ফেলাবে,মন্দির কোত্তে বাধা দিবে আর তাকেই পায়ে ধরে আনতে হবে! ইটা কি রকমের বিচার!
— তাবাদে কি জানু, দুদের বালক গুলান লুট লুট করে ঘুরবে চোখের সামনে! গটা চারদিক থিকে লোক এসবে আর নিজের রক্তের ছেনা গুলান বাইরে ঘুরবে সিটা কি ঠিক হবে বোলুঠু?
—অ বাবা! তমার ত দেখিঠি, অদের জন্নে দরদ এগবারে উধলে উঠেঠে! এত নানাস্তানি করার পরেও তুমি চিত নি! নাকি সান বৌ তমার মত গুনীনকেও ওসুদ করে ফেলচে!
🍂
— তুই খচরাশালি চুপ মার দিখি। তুই মেইয়া জাত বার হাত কাপড়েও লেঙটা! ঘরকুনা হয়ে ত থাকু,মোকে পাঁচ জাগা ঘুত্তে হয়,পাঁজ জনের সঙে কথা বোলতে হয়। একটা বিবেচনা করে ত এগাতে হবে।
— কেনে সেদিনে ত ঝন্টা ঠাকুরপো তসাকে ত বুজি গেল। তাতেও কি তসার গেনশিক্ষা হয় নি!
— তুই বেশি ঝন্টা ঝন্টা কোরুসুনু ত! অদের কি লিবি! পাটির নেতা মানেই নিজের সাথ্য আগে দেকবে। তাতে কে মোল্ল,কে বাঁচল অদের কুনু কিছু যায় এসবে নি।
মন্দিরের মিটিং হওয়ার পর থেকে ঝন্টা এখন প্রায়ই খুদার বাড়িতে আসে। কোন কোন দিন অনেক রাত অব্দি থাকে।মনসা মন্দির আছে বলে বাস্তুতে মাংসা রান্না করতে পারেনা। ভিটার নীচে একটা চাঁচ ঘেরা চালাঘর করে রেখেছে খুদা। তার পাশে সাগরীর হাঁস মুরগীর ছাড় আছে। ভিটাতে মাংস রান্নায় বাধা থাকলেও, রান্না করে এনে খেতে বারণ নেই। পাতে একটু মাছ মাংস না হলে কেমন অরুচি ঠেকে সবার।
পাটি অফিসেও হামেশাই মদ মাংসের আসর বসে। তাবাদে হুটহাট করে ঝন্টু আর তার দু একজন স্যাঙাত নিয়ে খুদার ঘরে জড়ো হয়। মাংস সঙ্গে নিয়ে রাতেই হঠাৎ হাজির। কখনো সাগরীর কাছ থেকে হাঁস কিনে রান্না করে। সাগরী সব জোগাড়পাতি করে দেয়। কোন বিরক্ত হয় না। রান্নার শেষে জামবাটিতে মাংসের ঝোল আসে খুদার ঘরে। ছেনাপেনা গুলান খায়। সাগরীও মাংসের হাড় চিবাতে পছন্দ করে। হাঁস মাংস তার বেশি পছন্দের। তার উপরে ঝন্টুর হাতের হাঁস মাংসের রান্না সবার চেয়ে এক কাঁটা উপরে। সেবার ত সবার সামনে সাগরী নিজের ভাল লাগা কত মোলায়েম করে বলে,
— যাই বল কেনে, ঠাকুরপোর মত হাঁস মংসর ঝোল কেউ রাঁদতে পারবেনি! মোদের কোচার বাপ যতবার রেঁদেচে,ততবারই এঁসটানি গন্দে টিকা যাইনি। কুন্তু ঠাকুরপোর রান্না এগবারে ফাসকেলাস।
—তবু ত সেদিনে আরো অনেককিছু দিইনি। হাঁস মাংসের ঝোলে যেদি পিঁয়াজ সাঁই দিয়ে রাঁদা যায ত কুনু কথাই নাই। তবে সবদিন ত সাঁই পাওয়া যাই নি,সেজন্নে শীতকাল এলে তমাকে এগদিন রান্না করে খাওয়াব খন।
—থাইলে কোরবে খন। আমি সব জগাড়জন্ত করে দুব।
এসব কথা যখন চলে খুদা কেন কে জানে ছটপট করে। তার মনের ভিতরটায় কে যেন আঁচড়কামড় করে। আজকাল সাগরীকে ক্যামন যেন তার মনে হয়। ভাবে কীভাবে বদলে গেল সাগরী এই কদিনের মধ্যেই। আহে তো দিনরাত কাউচান করত। উঠতে বসতে তাকে দাঁতে পিষত। ছেনা-মেইছেনা দুটাকে চাল কুটা করে ছাড়ত। হাঁস- মুরগীর অনিষ্ট করা নিয়ে যার তার সঙ্গে ঝগড়া করত। ছাগলে গাছপালা খাওয়া নিয়ে দিনদুবেলা চিল্লামিল্লি করত। খুদা ভিতরে ভিতরে অতিষ্ঠ হলেও, বাইরে কিছু বলতে সাহস পেতনা। বললেই অন্যের রাগ ঘুরে আছড়ে পড়ত খুদার ঘাড়ে। কিন্তু সেই সাহরী এরকম লক্ষ্মীমন্ত হল কীভাবে? খুদা ভেবে কুল পায় না। আবার পরক্ষণেই ভাবে, এসবই হয়তো মা মনসার দয়া। হয়তো মা ভর করছে বলেই তার এরকম স্বভাবে বদল এসেছে। কিন্তু নিজের মনের ভাবনা হলেও,সেই ভাবনাটায় খুব একটা জোর পায় না খুদা। আগে সাগরীর গা হাত পা সাদা খড়িপরা হয়ে থাকত। তেমন গা হাতের যত্ন নিত না। কিন্তু এখন বিকাল হলেই মাথায় জবজবা করে খুসবাই নারকেল তেল দেয়। টান করে খোঁপা বাঁধে। মাঝেসাঝে খোঁপায় রুপার চুলকাঁটা গুঁজে। সুগন্ধি সাবান মাখে গায়ে। গুড়ালি ঢেকে শাড়ি পরে। খুদার মনের গর্তর ভিতরে চিন্তাটা জলকেঁচার মতো হিল হিল করে।কিছুতেই চেপে রাখতে পারে না। দুয়ারে বসে কবচে ওষুদ বাঁধতে বাঁধতে খুদা বলেই ফেলে,
—তা, হ্যারে সাগরী! এখন যে দেখিঠি, তুই ত ভালোই সাজুগুজু কোরুঠু!
— ক্যানে তমার কী ভাল লাগেঠে নি? সাগরী কী সবদিন একই বেশে থাকবে! আগে অতশত বুজতম নি। ধূলা-ঝাপসা গা লিয়ে থাকতম। কুন্তু মোর ত বুজা উচিত ছিল,যতহোক আমি ত একটা গুনীনের বউ। অমন কোরে যেদি থাকি লোকে কী বোলবে বল দিখি! বোলবে,দ্যাখ,ম্যানেজার গুনীনের বউকে দ্যাখ্! জাতের অলা কুথাকার! কুনু ছিরি-চেড্ডাল নাই! তাবাদে এখন মা দয়া করেঠে মোকে। মোর মুখ দিয়ে মা বেখ্যাত করেঠে কত কথা। এট্টু পরিস্কার পরিছিন্ন না থাকলে হয়! একটু ত ধরাকাটে থাকতে হবে নাকি?
সাগরীর কথা খুদার মনে ধরে। শিকড় বাঁধার কাজ তখনও থামায় না। কারো তিন ধাতু,কারো চার ধাতু,কারো আবার পাঁচ ধাতুর মাদুলিতে ওষুদ পুরে মোম দিয়ে মুখ বন্ধ করতে হয় তাকে। প্রতি মাসে অনেক মাদুলি তাকে তৈরী করতে হয়। তারপর মায়ের পায়ের নীচে রেখে মন্ত্রপূত করে যার যা প্রয়োজন সেইমত সে দেয়। এই কাজ সে নিজ হাতেই করে। মাদুলি বাঁধার কাজ করলেও খুদা কান খাড়া করে শুনে সাগরীর কথা। মিজমিজ করে হাসে। বলে,
– ক্যানে ভাল লাগবেনি, ভালই ত দেখতে লাগেঠে তোকে। ভাবিঠি এতদিন পরে মা মোর মুখের দিকে চেইচে। বউটাকে মোর একটু মানুষ করে দিচে। লোকেও তোর সুনাম করেঠে।
খুদার মুখে প্রশংসা শুনে সাগরীর মনটা চড়ুই পাখির মতো ছিটপিট করে। মেইয়াদের রূপের বাহার নিয়ে দু'কথা বললেই হল,তাতেই তাদের মন গদগদ। ইনিয়েবিনিয়ে বললেও কোন আপত্তি নেই। মেইয়া জাতটা আজীবন পুরুষের কথার ছলনে ভুলে রইল। পুরুষ তার কথার ফাঁসে মেইয়াকে গিরো বেঁধে কাজ হাসিল করে নেয়। অবলা জাতটা পুরুষের ভিতরকার ধাপ্পাবাজি ধরতে পারে না। সাগরীও তো ওই জাতের। খুদার কথায় তার মনে শুধু খুশীর লহর উঠে না, একটা নিশ্চিন্তি বোধ জন্মায়। মনে মনে বলে,
—যাই হোেক লোকটা থাইলে এখনো কিছু ধত্তে পারেনি।
পরক্ষণেই সাগরীর মনটা ভারী হয়ে ওঠে। খুদার উপরে তার মায়া হয়। তার ভিতরের সাগরীটা আবার কথা বলতে শুরু করে,
–তুই ইটা ঠিক কোচ্ছুনু, সাগরী। ঘরে নিজের মানুষ থাকতে, পর পরুষের সঙ্গে সম্পক্ক কোরুঠু! তুই গৈরাতে যাবি। একটা সাদামাটা লোককে তুই ঠকাওঠু। তোর নরকেও ঠাঁই হবেনি,দেখে লিবি!
মনের ভিতরের উচাটন মানুষের মুখে স্পষ্ট ফুটে ওঠে। মুখের রেখা দেখে মনের ভিতরকার চালচলনের খানিকটা আভাস পাওয়া যায়। সাগরীর মুখটা সেই মুহুর্তে যেন ফ্যাকাসে হয়ে ওঠে। খুদার চোখে যাতে না পড়ে সেই মুখের অবয়ব,সাগরী ঘরের কাজের অছিলায় ঝট করে সেখান থেকে সরে যায়।
খুদার মিজমিজানো হাসির আড়ালে লুকিয়ে ছিল কেউটের কামড়ের যন্ত্রণা। মন ভোলানো কথার ভিতরে ছিল খোলসাখালি বিলের শূন্যতা। খুদা আজকাল একলা থাকলে উদাস হয়ে যায়। কত ধরনের চিন্তা কইমাছের ঝাঁকের মত খলখল করে মাথার ভিতর। টাকার প্রতি তার লোভ আছে। এই ব্যাপারে সে নিজেই নিজেকে সমর্থন করে। দুনিয়াতে টাকার উপরে কার আবার লোভ নেই? সে তো বুদ্ধি খাটিয়ে রোজগার করে। তাতে একটু আধটু ভুজুংভাজুং মেশায় তো তাতে কী এমন আসে যায়! কিন্তু মানুষেরও তো উপকার হয়। সেটা তার মন্ত্র নাকি গাছগাছড়া নাকি মা মনসার কেরামতি অতসব ভেবে দেখে না। তবে একটা বিষয়ে মনে মনে তার গর্ব হয়। লোকে জানে খুদা গুনীন জাতে বাগদি কিন্তু ছোট জাত বলে তাকে হেয় করার সাহস পায়না অনেকে। উল্টে অনেক বামুন কায়েত মাহিষ্য তার দুয়ারে লুটায়। খ্যাঁচাকলে পড়লে কাটানছেঁড়ান কত্তে তার কাছে ছুটে আসে। সাপকাটি হলে তখন জাতের বাছবিচার কোথায় ছুটে পালায়। রুগী বাঁচাতে খুদা বাগদির পায়ে ধরে কাঁদাকাটা শুরু করে দেয়। তবে খুদার টাকার লোভ থাকলেও কখনো জাতের বিষয় টেনে রুগীর প্রতি অবহেলা করেনা কখনো। উল্টে নিজের দর বাড়াতে মরণবাঁচন চেষ্টা করে সে। খুদা গুনিনের এমন গুণের কথা সবাই জানে। খুদাও জানে সব সাপেদের কাটার ধরণধারণ। কাটার জায়গায় চোখ রেখে, দাঁতের দাগ দেখেই জেনে যায় কোন ল'য়ে ছুঁয়েছে। এই নিয়ে মনে মনে খুদা দারুণ গর্ব করে। কিন্তু সাপেদের খুঁটিনাটি সব জানলেও সাগরীর ভাবগতিক খুদা জানে না। নারী পুরুষ দুজনেই দুজনের ভিতরকার ঘরের আলনদালন নিয়ে কিচ্ছু জানে না। শুধু উপরকার ভাসমান ছায়াছবি দেখে আমোদেই কাটিয়ে দেয় একটা আস্ত জীবন। ঠিক যেন শিলাবতী নদী। যার উপরকার ঢেউয়ের উত্থান পতনের চরিত্রে ভিতরের চোরা ঘূর্ণি স্রোতের রাক্ষুসিপনা বোঝা মুশকিল। খুদা ভেবে কুল পায় না। শুধু জালের ফাঁসে যেমন জাল ঢোড়া জড়িয়ে জালের জট দ্বিগুন পাকিয়ে দেয়,তেমন খুদার মনে ভাবনা জট পাকায়। আগে সাগরীর শরীরে খিদা ছিল রাক্ষসীর মতো। ঢেমনা সাপ যেমন করে চোয়ালের চাপে আধার ধরে পাক দিয়ে তাকে লবেজান করে গিলতে থাকে ধীরে ধীরে। তেমন করে খুদাকে যেন গিলে খেতে আসত। খুদার দম আটকে যেত। কিন্তু সেই খিদার আগুন যেন আর নাই! যতবার খুদা তার আঁচ পেতে চেয়েছে, ততবার বুঝেছে কে যেন জলের ঝাপটা দিয়ে আঁচ নিভিয়ে দিয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু এসব ভাবনার কোন পোক্ত প্রমাণ এখনো সে পায়নি। তবে কথায় কথায় সাগরীর ঝন্টুকে টেনে আনা খুদা পছন্দ করে না। ঝন্টু তাদের উপকার করেছে ঠিকই তবে তাদের সব বিষয়ে তার নাক গলানোটা খুদার গায়ে লাগে। সেদিন তাই আর খুদা নিজেকে আর সামলে রাখতে পারেনা। মন্দির প্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে লোখার ছেলেমেয়েদের ডাকার কথা তুললে সাগরী বলে,
— ঝন্টা ঠাকুরপো ত বোলেইচে,ছেনাপেনাদের ডাকাও যা,বুড়াদের ডাকাও তা। তাবাদে বুড়াতের না কিছু বোলে ছেনাগুলানকে ডাকবে কি কোরে শুনি? থাইলে ঝন্টা ঠাকুরপোর কথাই মানা ভাল। সে ত বোলেই দিয়েচে,বাদ যখন এগবারেই বাদ। বুড়া কি ছেনা কারো কুনু পেলেস নাই।
— ঢ্যামনাশালি, তুই বেশি ঝন্টা ঝন্টা করিসিনি দিখি। উ কি মোদের ফেমিলির কত্তা! অর কথায় মোদের দিকে চোলতে হবে! তুই ডাকবিনি, সেটা বল। অর নাম সব সময় মোর কাছে হেজায়সিনি দিখি।
— কেনে? আগে ত তুমিও ঝন্টা ঝন্টা করে তার গায়ে উঠে যেতে। এখন গাত্তর জ্বালি কিসের? তমার কুথায় জ্বাল দিয়ে দিচে? দরকার ফুরি গেছে,আর তাকে চিন নি! অই জন্নে লোকে বেইমান বোলে, বুজেচ ত।
—তোকে ত বোলবেনি,থাইলে তুই মন জোগি থাক না তার সঙে। মোর মাথা খাউঠু কেনে?
0 Comments