জ্বলদর্চি

হেমন্তের হাট/সুমিত্রা মাহাত

হেমন্তের হাট

সুমিত্রা মাহাত
 
হেমন্তের হাট বেশ জমেছে ,ট্যাঙরা, মাগুর, চ্যাঙ
শাক সব্জি, সুতির শাড়ি,কলা,মাঝা, বন কুঁদরী, 
শুটকী, বেগুন, পেঁয়াজ, রসুন, 
হাঁসের ডিম, পাঁঠার ঠ্যাঙ। 
ঢুঁ মেরে যায় বহু-বিটি,
অফিস ফেরত,দাদু-নাতি,
মা-মাসি,কাকা-জেঠা,
ছেলে-বুড়ো,বাপ-বেটা;
বেচা কেনা চলে যত,
হেমন্তের হাট জমে তত।।


আনমনা

মিঠে রোদের আঁচল বিছিয়ে দিয়েছো,
তুমি আসবে বলে-
ভাঙ্গা রাজবাড়ি,মিষ্টি ডুলুং,পাতিহাঁস,
খেলা করে জলে-
ঝরে যাওয়া কাশবনের বুকে, একরাশ শূন্যতা
শীত এলো বলে-
নদীর জলে বুড়িমা পাথর ছেঁকে,
ভরা ঝুড়ি মাথায় তোলে-
মাঠে ফসল নেই বেশি আর,
নিয়েছে চাষী ঘরে তুলে-
দুই ভাই এর পোক্ত বাঁধনে, 
ভ্যান চলে ম্যাজিক বলে-
এক ড্রাইভার, এক হেল্পার,
যেন চোখ তাদের কথা বলে-
শিউলিরা সব ঘর বেঁধেছে,
খেজুর গাছে হাঁড়ি দোলে-
শীত এলো বলে-
শীত এলো বলে।।
🍂
নিশ্চুপ 

স্তব্ধ শাল বন,নীরব,নিশ্চুপ!
আমবাকুমের পালক ওড়ে,
থরো থরো কাঁপে বুক;
নীরব, নিশ্চুপ!

পাঁতার বোঁটা আলগা হয়,
উত্তুরে হাওয়া বয়,
রুক্ষ শুষ্ক শূন্য বুক;
নীরব, নিশ্চুপ!

কান্ডের ভাঁজে কচি কচি পাতা
চুপ মেরে আছে
এতেই সুখ
নীরব,নিশ্চুপ!

(ভাবে)শীতের দাপটে বন জুড়ে শুধু,
(হবে)হলুদ পাতার স্তূপ, 
তাই কি নীরব!তাই নিশ্চুপ!

শোনো শালবন, তাপে ভরো মন
ভুলে পুরাতন, করো আবাহন 
নতুন সাহসে ভরে নাও বুক, 
থেকোনা নীরব, নিশ্চুপ!

মরশুম
 
ফিঙে নাচে বিলে মাঠে,
গাঁয়ের বৌ নদীর ঘাটে,
তেজ কমে যাওয়া শীতল রোদ।
থারা থার পড়ে, পাকা ধান গাছি
কেউ বাঁধে, কেউ বিঁড়া বয়ে আনে,
মাথায়, বাঁহুকে।
পায়রার দল ঘুরে ঘুরে চরে,
(ধান)আঁটি থেকে ঝরে ঝরে পড়ে;
(তারা)ভরপেট খেয়ে ডানা মেলে ওড়ে;
ঘুঘি ভরে আনে, 
জেলে মাছ ঘরে।
সরষে, পালং, মূলা, ফুলকপি,
এই মরশুম ;
সিম,নিম,বিম,হলুদ ফুল
ডড়কা ঝিঙার , সারি দিয়ে ফুটে এগাছে সেগাছে।
মিষ্টি পেয়ারা ডাঁশা হয়ে আছে
পিঠা,পারবণ, ঠাকুর আনা,
বেলা ছোট কত কাজ বাকী যে!

Post a Comment

0 Comments