জ্বলদর্চি

বালিশ /ভাস্করব্রত পতি

বাংলা প্যারোডি কবিতা, পর্ব -- ৪৫

বালিশ

ভাস্করব্রত পতি

পাঁশকুড়াতে যেতেই আমার পাঁচশো টাকা পকেটমার, 
'হায় কি হল' বলেই আমি বুক চাপড়াই বারংবার।। 
মনের দুঃখে চলেই এলাম শিল্প শহর হলদিয়া, 
চপ ঘুগনির শিল্প হেথায় চলছে তো রমরমিয়া।। 
চুপি চুপি টপকে নদী চলেই এলাম নামখানা, 
আমায় দেখে শহরবাসী আহ্লাদে তো আটখানা।। 
বললে, "যাওনা থেকে কেবলমাত্র একটি দিন, 
ইচ্ছমতো 'খানা' পাবেন, 'খন্দ' শুধু জুড়ে নিন"।। 
আসছি হেঁটে হেঁট মাথাতে রৌদ্র মাথায় গনগনে, 
গড়িয়াহাটের মোড়েই হাজির গণ্ডগোলের মাঝখানে।। 
'কি হয়েছে'? এই শুধোতেই গাঁট্টা খেলাম মস্তকে
বললে হেঁকে চোপ বেয়াদপ, মনখানা দাও পুস্তকে।। 
যেথায় যত হচ্ছে বাওয়াল, শোষণ তোষণ ধর্মঘট, 
চোখে দ্যাখো, কানে শোনো, কেবল থেকো 'স্পিকটি নট'।। 
সবাই যখন চুপটি আছে, কি দরকার মুখ খুলে? 
ঘুমোই বরং 'বালিশ' মাথায়, যাকনা দুটো চোখ ফুলে।। 

🍂

নালিশ

জয় গোস্বামী

কাঁচরাপাড়ায় যেতেই আমায় আঁচড় দিল পুসিতে, পা'কপাড়াতে যেতেই আমায় ঠোকরাল কাক খুশিতে।। বাগনানে যেই গেছি আমায় চড় মেরেছে বান্দরে, আমবাগানে যেতেই শেয়াল গান শেখাল কান ধরে।। ডোকরাগড়ে যেতেই দেখি রাগে সবার চোখ রাঙা, কাঠঠোকরা বলল, 'আমরা ফালতু ছেলে ছোকরা না।। বেলগাছিয়ায় গেছিলেন যে, কই আমাদের বেল কোথায়? 
সারা ভারত ঘুরতে যাব, গাড়ির ট্যাঙ্কে তেল কোথায়?' গতিক দেখে যেই না আমি পালিয়ে এলাম খড়দাতে, 
ক্যাক করে সেই ধরল আমায় খ্যাঁকশেয়ালের বড়দাতে।। 'ভাইয়ের কাছে গান শিখেছিস? ভাই তো জানে কাঁচকলা! 
আমিই তোকে গান শেখাব, শিগগির চল তালতলা।। তালতলাতে যেতেই দেখি কানভাঙা এক তানপুরোয়, খ্যাঁকশেয়ালের বেসুর তানে হাজার লোকের প্রাণ জুড়োয়।। 
সবাই যখন গান শুনছে, কী হবে আর দোষ খুঁজে, 
বরং নালিশ বন্ধ রেখে ছড়াই লিখি মুখ বুজে।।

Post a Comment

0 Comments