জ্বলদর্চি

গুচ্ছ কবিতা ১৮ /শুভশ্রী রায়

গুচ্ছ কবিতা ১৮ /- শুভশ্রী রায়


চর্মবেশ

বিস্মৃত পূর্বজীবন ছিল আলোময়,
যে ধূসর সেতু পেরিয়ে এই পর্বে প্রবেশ,
তার সাহচর্যে গত জীবন ভুলে যাওয়া জন্মসম্মত;
ক্ষতে ভরা অস্তিত্ব অর্থহীন যার শুরু থেকে শেষ.....
তবুও মুঠোয় ধরে রাখতে চাই সমস্ত,
নিরন্তর অসম যুদ্ধে হেরে গিয়েও প্রিয় চর্মবেশ।


অনন্তময়

আমি অনন্তের অংশ
প্রকৃতপক্ষে আমার ঠিকানা হয় না কোনো
শুধু ভ্রমণ করি জীবন থেকে জীবন,
মৃত্যু এক ধোঁয়া ধোঁয়া সেতু;
সমস্ত ভ্রমণ জুড়ে দেয়....

সমস্ত মরণ নিজেকে নতুন করে পাওয়ার প্রকল্প,
অতএব ক্ষয় স্বাগত,
তিলে তিলে অবিনশ্বর ব্রহ্মের দিকে যাত্রা,
আগুনে ফেটে যাবে সকল শেকল....
সবটুকু আমি-কে গ্রাস করবেন স্বামী;
আপাতত তিনি আমার খোলসে
একটু খেলাধুলো করে নিচ্ছেন।

🍂
প্রার্থনা              

চোখে চোখে সূর্য ওঠে, অন্ধকার কুন্ডলী পাকিয়ে থাকুক ভুরুতে,
খুব কী চড়া সুরে কড়া কথা বলা যায়, যা বলার তারই শুরুতে?

গরম চায়ের কাপ এ দোকান ও দোকান ঠোঁটে ঠোঁটে ঘোরে,
আসেনি গতি, পরে জীবন বয়ে যাবে ধারণাবহির্ভূত তোড়ে।

সমস্ত সূচনা অনিবার্য, সব ঘটনা কত কত স্রোতে হবে বহুমুখী,
যার যা বলার বলে ফেলো নিজস্ব বৃত্তে মাত্রায় সুখী বা অসুখী।

কাল যেমন ক্ষয়ে গেছি, আজ ক্ষয় যেন আলাদা হয় তার থেকে,
দিনলিপি যাপনে অক্ষরের অশ্রু গড়ায় পঙক্তি এঁকে রেখে।


অসমাপ্ত

আমার নির্মীয়মান আত্মা
আমার ফেনায়িত বাসনা
সব মিলেমিশে নিয়মিত প্রার্থনা,
পাশে তবুও অধরা জগৎ

শরীর ও মন একেক সময় পরস্পরের অসহ্য,
ভেতরে আত্মার ককিয়ে কান্না,
সব মিলিয়ে জীবন দীর্ঘায়িত ব্যথাবহুল;
দহনে আত্মা পুড়ে ছাই হতে পারে না বলে
মহা আক্ষেপ তার, প্রস্থানে যাওয়ার আগে
চায় আরো বিশুদ্ধ আগুন সঙ্গত।


Post a Comment

0 Comments