জ্বলদর্চি

হ্যালুসিনেশন ও অন্যান্য /সালেহা খাতুন

হ্যালুসিনেশন ও অন্যান্য
সালেহা খাতুন 


অগ্নিময় পুরুষ 
কানে কানে কথা বলে
তোমার বিলাসের দ্রব্যসমূহে
জ্বালিয়ে দাও আগুন।

আলমারি খুলে 
প্রথমেই টেনে নাও
মাথার ঘাম পায়ে ফেলা শ্রমে
বহু মূল্যে কেনা কাশ্মীরি পশমিনা।

টুকরো টুকরো করে কেটে 
হাওয়ায় উড়িয়ে দিয়ে
সাধারণের সঙ্গে বসো
একাসনে একেবারে একা একা। 


ধর্মকে ধারণ 
না যা ধারণ করে তাই ধর্ম?
এ লড়াইয়ে তিনি
বার বার যান হেরে।

ধর্ম ব্যবসায়ীরা
গিলে খেয়েছে ওঁকে।
জান্নাত জান্নাত করে
বস্ত্র অলংকার সবই দেন বিলিয়ে।

সংসার সন্তান
সবই অসার মনে হয় 
নিজেরই মুদ্রাদোষে ডুব দেন
জীবনানন্দীয় বোধে।


অভিমানী অনিদ্রিত মন
সেই কবে থেকে
টবের বেলফুল ফোটার
শব্দ শুনতে পায়।

মধ্যরাতে আকাশের
তারাদের খসে পড়া 
তার চোখ-কান জুড়ে
তীব্র দামামা বাজায়।

আতঙ্ক-আশংকায় রুদ্ধ সে জীবন
সংজ্ঞায় বাঁধতে পারে নি কেউ,
ইচ্ছে তার ছুটে চলে
পাহাড় সমুদ্র আর জঙ্গলে জঙ্গলে।

মাটি নির্মিত মানুষ
আর আগুন থেকে সৃষ্ট জ্বিন 
গল্পে গল্পে কেটেছে অমলিন দিন
মনের গভীরে জেগেছে বিশ্বাস
পৃথিবীতে মানব থাকলেও
আকাশেই জ্বিনের বসবাস।

জ্বিন পরিদের সঙ্গে
মানবমানবীর অন্তহীন প্রেমের
মধ্যযুগীয় আখ্যানের পুনর্নিমাণ 
আসলে একান্তই হ্যালুসিনেশন।


কাল্পনিক গল্প গড়ে মন
চারিপাশে ভয়ের আবহে
নিকষ অন্ধকারের নদীতে 
সাঁতার দিয়ে চলে যায় সে।

এপিটাফ রচনায়
কেটে যায় সারাজীবন।
সংক্রামক ব্যাধির মতোই
ছড়িয়ে যায় বীজ তার।

কবিরাজ আর মনোবিদের 
দরবারে নিত্য বসে সভা
সীমানা পেরিয়ে গেলেই 
 মুখে ফোটে  রক্তিম আভা।।

Post a Comment

0 Comments