জ্বলদর্চি

নিঃসন্তান দম্পতির স্বপ্নপূরণের ঠিকানা মেদিনীপুরের সিমবায়োসিস /রুম্পা প্রতিহার

নিঃসন্তান দম্পতির স্বপ্নপূরণের ঠিকানা মেদিনীপুরের সিমবায়োসিস

রুম্পা প্রতিহার

পারস্পরিক সহযোগিতা আজও  মানুষের জীবন যাপন ও ধারণের সহায়ক। তার নাম হয়তো আলাদা, রূপও হয়তো ভিন্ন। কিন্তু মূলে অনুঘটকের মতো কাজ করে সহযোগিতার মনোভাব। সহমর্মিতাও। বিজ্ঞানে যাকে বলা হয় সিমবায়োসিস।হ্যাঁ, মেদিনীপুরের সিমবায়োসিস ফার্টিলিট সেন্টার সেই সহযোগিতার পাশাপাশি সহমর্মিতার মনোভাব নিয়ে একই ছাদের তলায় মা ও শিশুর বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা পরিষেবা দিয়ে আসছে।
প্রত্যেক মানুষের বয়ঃবৃদ্ধির সাথে সহজাত আকাঙ্ক্ষা অন্তত একটি প্রতিরূপ এই ধরিত্রীর বুকে রেখে যাওয়ার। কিন্ত আকাঙ্ক্ষা ও বাস্তবেরর মধ্যে যোজন দূরত্ব, যোজন প্রতিবন্ধকতা। সেই প্রতিবন্ধকতার একটা নাম হল বন্ধ্যাত্ব। বর্তমানে সারা বিশ্বজুড়ে বন্ধ্যাত্বের (ইনফার্টিলিটি) সমস্যা বেড়েই চলেছে। বন্ধ্যাত্ব  কি? খুব সহজ ভাষায় বলতে গেলে বন্ধ্যাত্ব হল শরীরের একটি প্রজননগত অসুখ। যার ফলে মানুষ তার প্রতিরূপ সৃষ্টিতে (সন্তান)ব্যর্থ হয়। এই প্রতিরূপ সৃষ্টি হল শারীরিক  বহু ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার এক জটিল পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে বহু কার্যকারণের সুস্থ সমন্বয় প্রয়োজন। যার মধ্যে আছে পুরুষের সুস্থ শুক্রাণু ও মহিলার সুস্থ ডিম্বাণু উৎপাদন ক্ষমতা (যাকে দেশীয় ভাষায় নারী ও পুরুষের উর্বরতা শক্তি বলা হয়), অবাধ ডিম্বনালী ও শুক্রনালী-- যার সাহায্যে শুক্রাণু ডিম্বাণুর কাছে পৌঁছাতে পারে, মিলনের সময় শুক্রাণুর ডিম্বাণুকে প্রজননক্ষম করার ক্ষমতা, নিষিক্ত ডিম্বাণু গর্ভাশয়ে স্থাপিত হওয়ার ক্ষমতা ও সেটি ভ্রূণে পরিণত হওয়ার পূর্ণ  ক্ষমতা। সুতরাং বন্ধ্যাত্বে পুরুষ এবং মহিলা উভয়েরই ভূমিকা আছে। যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কারণ পুরুষের ক্ষেত্রে তার শুক্রাণুর স্বল্পতা বা একদম না থাকা বা শুক্রাণুর গঠনে বিকৃতি অথবা ডিম্বানুর  কাছে পৌঁছানোর আগেই শুক্রাণুর মৃত্যু ইত্যাদি। মহিলার ক্ষেত্রে সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো তার ডিম্বস্ফোটনের সমস্যা। তা যদি না হয় তাহলে জরায়ুতে সমস্যা থাকলে কিংবা হরমোনাল সমস্যার কারণেও বন্ধ্যাত্ব হতে পারে।
এখানেই প্রশ্ন আসে বন্ধ্যাত্ব যদি নারী ও পুরুষ  দুজনের শারীরিক সক্ষমতার ওপর নির্ভরশীল, তাহলে শুধু বন্ধ্যাত্বের তকমা নারীকে দেওয়া হয় কেন? এর জন্য আমাদের সমাজ মানসিকতা দায়ী, দায়ী অজ্ঞতা, সর্বোপরি দায়ী বিজ্ঞান মনস্কতার অভাব। বন্ধ্যাত্ব একটি অসুখ। সুতরাং অসুখ যখন আছে, তখন তার চিকিৎসাও আছে। আধুনিক বিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে খুব সহজেই চিকিৎসার সাহায্যে এই অসুখ থেকে মুক্তির পথ পাওয়া যায়। সেই আশায় যখন কোন নিঃসন্তান দম্পতি সিমবায়োসিস ফার্টিলিটি সেন্টারে আসেন, তখন প্রথম তাঁদের বয়স, মেডিক্যাল ইতিহাস জানার প্রয়োজন হয়, এরপর জননগ্রন্থিতে কোনো অপারেশন হয়েছে কিনা, নিয়মিত ঋতুস্রাব হয় কিনা--- এগুলো জেনে মোটামুটি ধারণা করা যেতে পারে সমস্যাটি কোথায়। তার উপর ভিত্তি করে ডিম ঠিক মত ফুটছে কিনা তারও অনুসন্ধানের প্রয়োজন। নারীর ক্ষেত্রে কিছু হরমোনাল পরীক্ষা ও জরায়ুর কাঠামো ঠিক আছে কিনা তাও দেখা হয়। আর পুরুষের ক্ষেত্রে সিমেন আনালাইসিস করা হয়।
যেসব দম্পতি বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় ভুগছেন তাঁরা সন্তান চাইলেও অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় টেস্ট টিউব বেবি -পদ্ধতি  চান না। তাঁদের ধারণা সর্বশেষ আশা হল টেস্ট টিউব বেবি । কিন্তু ধারণাটি নিতান্তই ভুল। কারণ সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বয়স। বয়স বাড়ার সাথে সাথে নারীর ডিমফোটা কমতে থাকে, তার মানও কমতে থাকে, জরায়ুর ধারণ ক্ষমতাও কমে যায়। অন্যদিকে পুরুষের ক্ষেত্রে সক্রিয় শুক্রাণুর সংখ্যা, তার ঘনত্ব, সংক্রমণের সমস্যা, রক্তে শর্করার পরিমাণ ইত্যাদিও জরুরি বিষয়। তাই স্বাভাবিক প্রক্রিয়াতে  সন্তান না এলে অযথা দেরি না করে টেস্ট টিউব বেবি  নেওয়াই সঠিক পদ্ধতি।

অনেকেরই টেস্ট টিউব বেবি  সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা নেই। তাদের ধারণা টেস্ট টিউব বেবি  মানে ফার্টিলাইজেশন থেকে পূর্ণাঙ্গ শিশু বোধ হয় টেস্ট টিউবেই হয়। বিষয়টি তা নয়। টেস্ট টিউব বেবি  বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসার একটি বিশেষ পদ্ধতি। এই পদ্ধতিরও বিভিন্ন কৌশল রয়েছে। যার মধ্যে একটি হচ্ছে I.V.F. বা ইন- ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন পদ্ধতি।এখন প্রশ্ন আই ভি এফ পদ্ধতি কাদের কাজে আসে?

(১) যে সব মেয়ের ফ্যালোপিয়ান টিউবে ব্লকেজ বা কোনো অসুবিধা থাকে এবং শুক্রাণু ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করতে পারে না এই পদ্ধতি তাদের সন্তানলাভে সহায়ক।
(২) যে সব মেয়ের জরায়ুর দেওয়ালে ফাইব্রয়েড আছে বা ওভ্যুলেশন (ডিম্বস্ফোটন) ঠিকমতো হয় না, তারা এই পদ্ধতিতে সন্তানলাভ করতে পারে।
(৩) শারীরিক অসুস্থতা, সার্জারি বা দুর্ঘটনার ফলে যে সব মেয়ের ফ্যালোপিয়ান টিউব বাদ দিতে হয়েছে তাদের জন্য আই ভি এফ ফলদায়ী।
(৪) পুরুষদের ক্ষেত্রে স্পার্ম কাউন্ট বা শুক্রাণুর ঘনত্ব কম হলে এই পদ্ধতিতে সুফল মেলে।
(৫) এ ছাড়াও যদি কোনও মেয়ে জেনেটিক অর্থাৎ জিনবাহিত সমস্যার কারণে গর্ভে সন্তান ধারণ করতে না পারে তার ক্ষেত্রে আইভিএফ কাজে আসে।
(৬) অনেকে সময়ে টেস্ট করে দেখা যায় সন্তানকামী দম্পতির কারুরই কোনো সমস্যা নেই তবু অজ্ঞাত কারণে গর্ভে সন্তান আসছে না। সে ক্ষেত্রেও আইভিএফ পদ্ধতির সাহায্যে সন্তানলাভ সম্ভব।
এই পদ্ধতিতে স্ত্রীকে ঋতুস্রাবের সময় থেকে কিছু ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। যাতে তার ডিমগুলো বড় ও পরিপক্ক হয়। তারপর আল্ট্রা সাউণ্ড সহ রক্ত পরীক্ষা করলে জানা যায় ডিমগুলো বড়ো হচ্ছে কিনা। যখন ডিমগুলো বড় ও পরিপক্ক হয় তখন ডিমগুলোকে বাইরে নিয়ে এসে স্বামীর শুক্রাণুর সঙ্গে মিলিয়ে ল্যাবেরেটরিতে ভ্রূণ তৈরি করা হয়। সেই ভ্রূণ স্ত্রীর জরায়ুতে প্রতিস্থাপন করা হয়। জরায়ুতে ভ্রূণ সংস্থাপন সম্পন্ন হওয়ার পরই তা চূড়ান্ত বিকাশ লাভ অর্থাৎ পূর্ণাঙ্গ শিশু  হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে থাকে। সূচনার এই সময়টুকু ছাড়া বাকি সময়টাতে শিশু একদম স্বাভাবিক গর্ভাবস্থার মতই মাতৃগর্ভে বেড়ে ওঠে এবং সময়মত সেখান থেকেই নবজাতকের জন্ম হয়। কোনো টেস্ট টিউবে এই শিশু বড় হয় না।

বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় সর্বজন স্বীকৃত আধুনিক এই টেস্ট টিউব বেবির সঙ্গে একজন স্বাভাবিক গর্ভধারিণী নারীর জরায়ুতে বেড়ে ওঠা শিশুর জীবন- প্রণালীতে কোনো পার্থক্য নেই। শিশু মাতৃজঠরে থাকাকালীন সময়কার স্বর্গীয় অনুভবে দুই নারীই সমান অনুভূতিশীল। তাছাড়া টেস্ট টিউব বেবির জন্মদানের পুরো প্রক্রিয়াটিও স্বামী- স্ত্রীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ।  অতএব অনেক নিঃসন্তান দম্পতির মুখে হাসি ফোটায় এই টেস্ট টিউব বেবি। শুধু ল্যাবরেটরিতে নিষেক কার্য সম্পন্ন হয় বলে, আর যেহেতু ল্যাবরেটরিতে প্রচুর টেস্ট টিউব থাকে, তাই এইরূপ নামকরণ। মনে রাখতে হবে এটা প্রতিবন্ধকতা মাত্র। মানুষেরই সহযোগিতায় নিজের অন্তর তাগিদে মানুষ মাত্রই যেকোনো প্রতিবন্ধকতাকে জয় করতে পারে। শুধু প্র‍য়োজন নিজেদের সদিচ্ছা,অন্যের সহযোগিতা ও পাশাপাশি বাস করা মানুষগুলোর সহমর্মিতার। অর্থাৎ সিমবায়োসিসের। অর্থাৎ মিথোজীবিতার।
এ তো গেল বীজ বপন ও অঙ্কুরোদগমের কথা।  এবার আসি অঙ্কুরিত বীজ চারাগাছ হয়ে পৃথিবীর বুকে আশ্রয় নেওয়া ও বেড়ে ওঠার কথায়। মাতৃগর্ভে একটি  ভ্রূণ পূর্ণাঙ্গ রূপ পেতে ৩৭ সপ্তাহ সময় নেয়। তার পূর্বে ভূমিষ্ঠ হওয়া আড়াই কিলোর থেকে কম ওজনের শিশুকে প্রিম্যাচিওর শিশু বলা হয়। সন্তান সময়ের আগে জন্মালে তা নিঃসন্দেহে মা ও পরিবারের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সময়ের আগে ভূমিষ্ঠ হলে অনেক ক্ষেত্রেই শিশুর সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ  ঠিকভাবে গঠিত হয় না এবং সেগুলি ঠিক মতো কাজ করতেও শুরু করে না। তাছাড়া এই শিশুরা বাহ্যিক আবহাওয়ার প্রতি অত্যধিক সংবেদনশীল থাকে, যার ফলে তাদের অধিক যত্ন নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা যায়। এই প্রিম্যাচিওর শিশুদের স্নান করানো বা খাওয়ানোর সময় অতি সতর্ক ও সচেতন থাকতে হয়। সৌভাগ্যবশত এখন চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতির কারণে ২৬-২৭ সপ্তাহের পরে জন্ম নেওয়া প্রিম‍্যাচিওরর শিশু বেঁচে থাকার এবং ধীরে ধীরে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই হতাশাকে দূরে ঠেলে, ভয় না পেয়ে মনকে শক্ত করে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। লক্ষণ অনুসারে শিশু বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে ইনকিউবেটারে রেখে এদের চিকিৎসা করতে হয়।
কান্না  মানুষের দুঃখের, কষ্টের প্রতীক। কিন্তু মানুষের জীবনে নবজাতক শিশুর কান্না সবথেকে সুখের। এই কান্নায় ধ্বনিত হয় ৯ মাস গর্ভাবস্থা কাটিয়ে পৃথিবীতে সুস্থ শিশুর প্রথম আগমন বার্তা। কিন্তু জন্মেই শিশু কেন কাঁদে? আর যদি না কাঁদে, তাহলেই বা কী হয়? শিশু মায়ের গর্ভে বেড়ে ওঠে। গর্ভ জায়গাটি পৃথিবীর মতো নয়। সেখানে উষ্ণ, অন্ধকার, তরল পরিবেশ থাকে শিশুর চারপাশে। খাবার বা বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিয়েও তাকে কোনো ভাবনাচিন্তা করতে হয় না। নেই অক্সিজেনের জন্য কোনো চিন্তা। সবই সে পায় মায়ের শরীর থেকে। মায়ের গর্ভে শিশুর দেহে প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও অক্সিজেন আসে প্লাসেন্টা বা নাড়ির মাধ্যমে। যেটি সাধারণভাবে  গর্ভফুল নামে পরিচিত । গর্ভাশয়ের ভিতরে অবস্থিত বিশেষ এই অঙ্গটি মায়ের দেহ থেকে অক্সিজেন ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ রক্ত ফিল্টার করে নাড়ির মাধ্যমে শিশুর দেহে পাঠায়।
অর্থাৎ গর্ভে শিশুর আলাদা করে শ্বাস নেওয়ার জন্য কোনো কাজ করতে হয় না। শিশুর নবগঠিত ফুসফুস তখন থাকে তরলে পূর্ণ। জন্মের সঙ্গে সঙ্গে বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটে। হঠাৎ করেই শিশুটি নিজেকে আবিষ্কার করে ঠাণ্ডা, শুষ্ক ও উজ্জ্বল পরিবেশে। শিশু যখন প্রথম গর্ভের বাইরে আসে তখন হৃদপিণ্ডের শ্বাস-প্রশ্বাসের পথ শরীরের বিভিন্ন ফ্লুইড নিঃসরণের কারণে আটকে যায়। শুরু হয় তার প্রথম অভিযোজন —সম্পূর্ণ বিপরীত পরিবেশে টিকে থাকার জন্য প্রথমবারের মতো তার শ্বাস নেওয়ার লড়াই। আর তখনই সদ্যোজাত চিৎকার করে কেঁদে ওঠে। এর অর্থ কান্নার মাধ্যমে  শিশুটি প্রথম নিশ্বাসে অক্সিজেন টেনে নিতে পারছে। এ কান্নার ফলেই পরিষ্কার হয় তার শ্বাস-প্রশ্বাসের পথ।  এরপর শিশু স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে পারে। এজন্য আর বাড়তি চেষ্টার দরকার নেই। কান্নার পেছনে নতুন পরিবেশ ও শরীরে নতুন পরিবর্তন নিয়ে বাচ্চার অনুভূতিও কাজ করে। এ সময়কে বলে সোনালি সময় বা গোল্ডেন মিনিট। কোনো কারণে নিশ্বাস নিতে না পারলে অক্সিজেন–সংকটে শিশুর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। হৃৎপিণ্ড, ব্রেইনে অক্সিজেন না পৌঁছানোর কারণে একসময় শ্বাস নিতে ব্যর্থ হয় শিশু। তার প্রতিটি অর্গান বা অঙ্গে মারাত্মক খারাপ প্রভাব ফেলে এই ঘটনা। এ সমস্যাকে বলে পেরিনাটাল অ্যাসফিক্সিয়া। তাই লেবার রুমে একজন শিশু বিশেষজ্ঞের উপস্থিতি জরুরি। যিনি এই সমস্যা থেকে সদ্যোজাতকে মুক্ত করে তাকে পৃথিবীর সঙ্গে নিজেকে অভিযোজিত করে নিতে সাহায্য করবে।
যদি কোনো শিশুবিশেষজ্ঞের অনুপস্থিতে ডেলিভারি স্বাভাবিক ভাবে হয়ে যায়, তারপর বৃথা  কালক্ষেপ না করে সদ্যোজাতকে এক অভিজ্ঞ  শিশুবিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে রাখা জরুরি। কারণ নবজাতকের মধ্যে জণ্ডিস, হাইপারবিলিরুবিনেমিয়ার মত রোগের ঝুঁকিও থাকে। তাছাড়া সময়ের অগ্রগতিতে নবজাতকের ঠিকমতো শারিরীক বৃদ্ধি ঘটছে কি না, তার ভবিষ্যৎ জীবনকে সুস্থ ও নীরোগভাবে গড়ে তোলার জন্য টিকাকরণ বা ভ্যাক্সিনেশন অত্যন্ত আবশ্যক। এসবকিছুর জন্য অভিজ্ঞ শিশুবিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী চলা উচিত। মনে রাখতে হবে আজকের শিশু আগামী পৃথিবীর ভবিষ্যৎ। এই ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদেরই। শুধু। শুধু সুষম খাদ্য,ওষুধ, পথ্য  দিলেই নবজাতক সম্পূর্ণ শারিরীক ও মানসিকভাবে পূর্ণতা অর্জন করে না, পাশাপাশি চাই অনুকূল পারিবারিক ও সামাজিক পরিবেশ। অর্থাৎ সিমবায়োসিসের।মিথোজীবিতার।আসুন আমরা বিজ্ঞানের এই সমস্ত আশীর্বাদ যথাসময়ে গ্রহণ করে সুস্থ সবল ধীশক্তিসম্পন্ন শিশুকে পৃথিবীর আলো দেখিয়ে নিজেদেরই ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তুলি।
এই বিজ্ঞান চেতনাকে সঙ্গে নিয়ে মেদিনীপুর শহরের সিমবায়োসিস ফার্টিলিটি সেন্টার মানব সেবায় নিয়োজিত। নিঃসন্তান দম্পতির মুখে হাসি ফোটাতে এই প্রতিষ্ঠান সাফল্য অর্জন করেছে। এই সাফল্যের কারণ জানালেন প্রতিষ্ঠানের দুই কর্ণধার স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞ  ড. কাঞ্চন কুমার ধাড়া ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ  ড. সন্ধ্যা মণ্ডল। তাঁদের  বক্তব্য সিমবায়োসিস ফার্টিলিটি সেন্টারের সম্পূর্ণ টিম ও দম্পতিদের পূর্ণ সহযোগিতায় এই বিরাট কর্মযজ্ঞ ঘটে চলেছে।
সিমবায়োসিসের এই সাফল্যে ডাঃ কাঞ্চন কুমার ধাড়া ও ডাঃ সন্ধ্যা মণ্ডল পেয়েছেন দেশ বিদেশের সম্মান। তবে তাঁদের কথায়, নিঃসন্তান বাবামায়ের মুখে হাসি ফোটানো ও  সুস্থ শিশুকে এই পৃথিবীর বুকে বড় হতে দেখার আনন্দই হল আমাদের চিকিৎসক-জীবনের সেরা পুরস্কার।

Post a Comment

0 Comments