জ্বলদর্চি

বাগদি চরিত ( দ্বিচত্বারিংশতি পর্ব ) /শ্রীজিৎ জানা

বাগদি চরিত (দ্বিচত্বারিংশতি পর্ব ) 

শ্রীজিৎ জানা

ময়নার কথা লোখা কিছুতেই বিশ্বাস করতে চায় না। তার মেজ বৌদি ওরকম স্বভাবের নয়। মেজদা আজ কত বছর হল নিরুদ্দেশ। তার বাপের ঘরের লোক তাকে নিয়ে যেতে চেয়েছিল অনেক করে। বাখুলের লোকও আরতিকে কত করে বুঝিয়েছিল।
—- কেনে তুই জা-জাউলিদের লাতঝাটা খাবি। উঠতে বসতে  বাখুলের খঁটা শুনবি! তারচে বাপের দয়রে থাক। তোর ছেনা তার বাপের অংশ ত পাবেই। তাকে ত আর কেউ লিতে পারবেনি।
কিন্তু আরতি কারুর কথা কানে তোলে না। যেই শুনে সেই গায়ে পড়ে তাকে স্বান্তনা দিয়ে যায়। আরতির মুখে একটাই কথা-
–মরি বাঁচি কুথাকেও যাবোনি। স্বামী -শ্বশুরের ভিটায় পড়ে থাকব। এখিনেও ঝাটালাত খাব আর সিখিনেও ভাই ভাজরাকে মাথায় তুলে রাখবে। যদ্দিন মা-বাপ থাকবে, ওই তদ্দিনই সুহাগ দেখাবি,তাবাদে তারা চোখ বুজালেই আর কেটাবেনি। 
সেই থেকে আরতি শ্বশুরের ভিটায় আছে। ছ্যানা তার বড় হয়েছে। কখনো কেউ তার নামে কোন অকথা-কুকথা বলেনি। ময়নার কথায় লোখা তাই কিছুতেই আমল দেয় না। কিন্তু ময়না তাকে হামেশাই ওই নিয়ে কানের কাছে ভনভন করে। লোখা বিরক্ত হয়। রেগে খেঁকিয়ে উঠে,
— ঢ্যমনাশালী, সে মেইয়া যা পাল্লে কোরুি তোর কি শুনি! তোর মোর সখ সাদ আছে, তার নাই? বেশ কোচ্চে! তোর সোজ্জ না হলে,চোক বুজি রাখবি। আর এগবার বোলেচু ত, তোকে নি মোগর পিটা করে ছাড়াব।
— তমাদের ত বংশবোলির উরকমের ধারা। তাবলে ভাদর-বউকে ধরে টানবে। মোর ঘরে থাকবে,মোর খাবে আবার মোর ছাতির উবরে বোসে লেংটালাচ কোরবে? ময়না বাগদি কুনুমতে মেনে লিবে নি। যেদিন মাথা গরম হবেনি,সেরদিন ধূনার হাঁড়ি মাথায় লিয়ে গাল পাড়ব। কারোর বাছ বিচার রাখবোনি,বলে দিলম।
— তোর ঘর বোলতে কি বোলুঠু, খজরাশালী! ই ঘরে তার অংশ নাই। তাবাদে তার ভাগের ধানে ভাত খায়। তোর কথার সে ধার ধারবে কেনে!
— নিজের খায় ত, হাঁড়ি  আলাদা কোরে খেতে বলোনি কেনে? মোকে কেনে কাকবল রেঁদে খাওয়াতে হবে ওই হেনেচ্ছ্যারা মাগীকে! ভাসুর - দেয়র মানে নি যে মেইয়া, তার মুখে ময়না বাগদি কুনুিদিন ম্যাটা লাগাতে যাবেনি। 
—তোর এত গাত্তর জ্বালা কিসের বল দিখি? একটা মেইয়ার স্বামী নাই,ছেনা নাবালক,সব থেকেও কিছু নাই – তাকে লিয়ে এরকম দুন্নাম কোত্তে তোর মুখে বাধেঠেনি! লঘু-গুরু মানুনু! দেখবি,তোর মুখে কুষ্ঠিবেদ্যা হবে!
— মোর কুষ্টিবেদ্যা হবে! এত বোড়ো শাপশাপান্ত কোল্ল মোকে। নিজের মাগ মিথ্যাবাদী আর পরের মাগ সতী! তোমারও নিশ্চই সাথ্য আছে কিছু। যেদি বিষ না খেইচি ত মোর নামই নয়।
লোখা থমকে যায়। যদিও মাথাটা তার রাগে বনবন করে পাক খাচ্ছে। ময়নাকে সে জানে। তার উপরে মেইয়া মানুষের রাগ। সত্যিই যদি কিছু করে বসে। এই কথা কাটাকাটির সময় আরতি ঘরে নেই। মাঠের দিকে চলে গেছে ছাগল নিয়ে। সেটাই রক্ষা। থাকলে আরেক কেলেঙ্কারি হত। ঘরের ভিতরের ঝগড়াকে লোখা পাঁচকান করতে চায় না।
— লিকুচি করেচি তোর সংসারকে! আন খুসকি,পান খুসকি লিয়ে শালা মেইয়া জাত পড়ে থাকবে! ইদিকে সংসার টানতে মোর গতর স্যাঁকা হোয়ে যায়ঠে,তার উবরে উঠকা ঝামেলা! 
বলেই গামছা ঝটকাতে ঝটকাতে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু মনটা মানে না লোখার। ভিটার নিচে তার বড় ছেলেটা খেলছিল। তাকে ডেকে লোখা বলে,
— দ্যাক কোচা তোর মা খুম রেগে আছে। মোর সঙে সুখবাদ্দি হইচে। তুই ঘরকে যা দিখিনি। আর মায়ের কাছ ছাড়া হবিনি। তোকে কুথাও পাঠালেও যাবিনি এগদম।আমি কালিতলায আছি, বুজলু।
লোখার বড় ব্যাটা বুঝে যায় তার মা- বাপে আবার ঝগড়া হয়েছে। তার কাজ মাকে পাহারা দেওয়া। একাজ শুধু সে একা করে না। তাতের পাড়ার অনেকেই করে। তার উপরে সে এটাও জেনে যায়,আজ তাদের আরতি বড়মা রান্না করবে। তার মা দুপুরে খাবে না। বগমা তাকে লুকিয়ে কি হয়েছে জিগ্যস করবে। কিন্তু সে তো কিছুই জানে না। তাই বাপ যা বোলেছে সেটাই আউড়াবে। তেমন হলে বড়মার সঙ্গে মায়ের এক পত্তন ঝগড়াও হতে পারে। বেচারা খেলা ছেড়ে ঘরের দিকে দৌড় লাগায়।

সকাল সকাল ঘরের কাউচানে লোখার মেজাজ গরম হয়ে যায়। সোজা কালিতলার দিকে গটগট করে হাঁটা দেয়। আটচালাটায় ধপ করে বসে পগে। ট্যাঁক থেকে বিড় বের করে ধরায়।  হঠাৎ দেখে ভগী খুড়া হাজির। জাল বুনতে বুনতে আসে। অন্যদিন ভগী খুড়াকে দেখলে লোখা আপনা থেকেই বেশ খুশি হয়। এমনিতে সে তো আস্ত একটা গল্পবাজ। তার উপরে ভগী খুড়াকে পেয়ে যাওয়া মানে সোনায় সোেহাগা। কিন্তু আজকে যেন তার একা থাকতেই ভাল লাগছিল। খুিড়াকে দেখে তাই বিরক্তই হয় লোখা। যদি তাকে দেখে জিগ্যেস করে, সে কি কোরে বলবে এসব কথা। সাতপাঁচ ভাবনা তার বিড়ির সুখটানটাকে বেস্বাদ করে দেয়। ভগী খুড়া কাছে আসতেই লোখা আগেভাগেই জিগ্যেস করে,
— কি গ খুড়া! সকালবেলা ত তুমি ইদিকে আসোনি কুনুদিন! আজকে কি মনে কোরে?
— কেনে রে ইদিকে এসতে বারণ আছে নাকি! থাইলে বল, পালি যাইঠি।
🍂
ভগী খুড়ার দাড়ি-গোঁফ সবদিন কামানো। হাসলেই সারা মুখে হাসির ঢেউ ফুটে ওঠে। লোখা স্পষ্ট দেখতে পায়, কথাটা বলার সঙ্গে সঙ্গে একটা মুচকি হাসির রেখা তার মুখে ফুটে উঠেছে। লোখাও সহজ ভাবে উত্তর দেয়।
— ই কেমন কথা বলঠ, খুড়া! বারণ থাকবে কেনে! তাবাদে তমাকে আমি এসতে বারণ কোত্তে পারি কুনুদিন!
— আজগে বোধয় সাতসকালায় বৌমার সঙে খ্যাঁকা-কুঁদুল বাঁদিচু। মেজাতটা সেজন্ন বোধয় জ্বালা উনানের মতো হয়ে আছে।
লোখা কোন উত্তর করে না। আবার একটা বিড়ি ধরিয়ে টান দেয়। আটচালার ধারের খুঁটির গায়ে হেলান দিয়ে ভগী খুড়া বসে পড়ে। নাভির কাছে জাল বোনা লাঠির একপ্রান্ত গোঁজা থাকে। কথা বলতে বলতেই খুড়া না দেখেই জালের ফাঁস বুনতে পারে। কেতা বাঁ হাতে ধরে কেঁড়াটাকে ঘুরিয়ে জাল-ফাঁসে গিঁট দেয়। বাগদির ঘরে জাল না থাকলে মানায়। জেলার ঘরেই কি শুধু এঁশাজাল থাকবে! তবে আজকালের ছেনা-ছকরারা সেরকম জাল বুনতে পারেনি। জাল বুনা শিখতেও চায় না। হাটে বাজারে এখন কত জাল পাওযা যায়। সেরসবই তবে মেশিনে বুনা। কিন্তু ভগী খুড়ার তাকে পছন্দ নয়। নিজে বাজার থেকে পছন্রদ মাফিক সুতা কিনে আনে। সেই সুতা উবু হয়ে বসে যত্ন করে কেঁড়ায় গুটায়। তারপর জো তুলে জাল বুনা শুরু করে। যেমন জালের তেমন ফাঁসের ঘের হয়। এখন কি জাল বুনছে লোখার সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। অন্য সময় হলে হাজারটা প্রশ্ন করতো খুড়াকে। গতিক বুঝে খুড়া নিজে থেকেই আবার বোলতে শুরু করে,
— আসলে কি জানু মোদের ভিটার দিকটায় এট্টুও রোদ নাই। বাঁশঝাড় আর খিরিশ পাতার ঘেরায় এট্টুও তাপ পাইনি। জাড়ের দিনে এট্টু রোদ না পুয়ালে মোদের মত বুড়ারা টেঁসে যাবে এগবারে। কালিতলায় সব কালেই রোদ হেউঢেউ খেলে। তাই জাল লাঠিটা লিয়ে চলে এলম। এখন বল দিখি তোর কি হইচে। অত তেতে আছুি কেনে!
— শালা মেইয়া জাতের জ্বালায় মোকে আর কিছু ভাল লাগেরনি। কিছু একটা ছুঁত পেল ত,সেটাকে লিয়ে কানের কাছে সারাদিন ভ্যানভ্যান করে কানে তালা ফেলি দিবে। 
—- তুই উত্তর কোরু কেনে! বউদের সামনে সব সময় কান করবি চঙা। এক কান দিয়ে ঢুকাবি আর এক কান দিয়ে বের করে দিবি। নাইলেই মোরবি।
— তা বোলে যাইতাই বোলবে আর মোকে মেনে লিতে হবে। শালা পায়ের জিনিসকে মাথায় তুলা মানেই বিপদ।
— ইটা তুই ঠিক বোল্লু নি। মেইয়ারা পায়ের জিনিস লয়,অরা মাথারই জিনিস। তবে কিনা অদের ভার বুজে মাথায় কত্তে হয়। নাইলেই ঘাড়ে সটকা লেগে যাবে। আর ঠিক ওজন জেনেশুনে যেদি মাথায় তুলু ত শিব ঠাকুরের মতো মজে থাকবি।
— উটা তুমি উল্টা বলঠ। তমার সঙে পুরান লিয়ে তক্ক করা বিথা,জানি। কুন্তু কিত্তনে শুনেচি উ শিবঠাকুর বউকে মাথায় তুলছিল বলেই হেউড়া পাগলা হই গেছে। 
—থাইলে আগে মান,যে বউমা তোর মাথার উবরে উঠে লাচে।
— বল কি গু খুড়া। অর মুরাদে কুলাবে মোর কাছে মুখ খুলা। কাঠ ফেলা দিয়ে অর গতর উলে দুবনি খন।
— সাদে কি বলে বেগদা জাত। হুঁক কথায় বউকে মাত্তে কোঁকি যাউ। কেনে রে তোদেরএমরকম স্বভাব। মেইয়াদের গায়ে হাত তুলে বোলেই মোেদের জাতের লোগ গুলান তাড়াতাড়ি অধঃপাতে যায়ঠে। কখনোে মেইয়াদের গায়ে হাত তুলবিনি।
— তোর খুড়ি কম বেদেরবার ছিলনি। মোর সঙে কাউচান কোেত্ত। কুন্তু তার গায়ে কুনুদিন হাত তুলেচি ইটা কেউ বোলতে পারবেনি। এখন বল দিখি কি এমন গুরুত্বক ব্যাপার হই গেছে যে বৌমার উবরে ওরকম রেগে টং হয়ে আছুি!
– বোলবোেনি ভেবেছিলম। কুন্তু না বোল্লে, তুমি আসাকরই দোষী ভাববে। কথাটা লোজ্জার হলেও বোলব। তমাদের বউমা বলেঠে কি জান,মোর খুদাদ্দা নাকি আরতি বৌদির সঙে আছে। উ কবার নাকি রাতের বেলায় খুদাদ্াদাকে বৌদির ঞরে ঢুকতে দেখেচে।
— বলু কি রে লখি! 
বলেই পান- খয়েরের কষ ধরা কালো দাঁত বের করে খলখলিয়ে হেসে ওঠে। লোখার কাছে সেই হাসি যেন গা-পিত্তি জ্বালানোে মনে হয়। রাগে গরগর করে ফিসফিসিয়ে বিষ উগরাতে থাকে লোখা,
— বুড়া বয়সে হাসির বেগ দেক্ ক্যামন! ইটা দাঁত কেলানার বিষয় হল! কথা ছ্যা -ছ্যা, হায়-হায় কোরবি তা নয়, দাঁত কেলিয়ে অস্তির।
–তুই মোর উবরে রেগে জাউঠু,জানি। কিন্তু সব জিনিসকে অত গুরুিত্বক কোরে ভাবিসিনি,বুইলু! তবাদে ইটাত রে পুরা রসের কথা। রস বোলতে এগবারে হাঁড়ি উথলানা খেজুর রস। সুদু একটা কথা ভেবে আশ্চয্যি হইঠি,মোদের খুদাও থাইলে ভালোই পারে। গেঁড়া খুদখুদা হলে কি হবে রে! 
— তুমি ভালোই মস্করা করঠ! কুথা তুমি ছিছিক্কার কোরবে,তার বদলে ভালোই মজা পাওঠ!
— কেনে তখন থিকে ইটাকে ঘেন্না কোরুঠু,বল দিখি মোকে। তোের সেজ ভাই বউকে রেখে দিয়ে পালি গেছে সেই কবে। একটা ছেনা থাকে তার মাসা-দাদুর দয়রে। বউড়িটার কি কুিনু শক-আহ্লাদ নাই! তুই দু'দিন বউমার কাছে না জিয়ে থাকতে পারবিনি,আর লোকের বেলায় নাক তুলুঠু! ঘিনা কোরুঠু। 
— বৌদি নাইলে একা কুন্তু মেইদা! মেজ বৌদি ত আছে! একটা ছেনাপেনার বাপ হোয়ে নিজের ভাদর-বৌয়ের সঙে নাড়গিরি কত্তে লোজ্জা পাইনি।
— বউ থাকলেই কি সব আশ মিটি গেল! কথায় আছে ঘরের পিঠা বোড্ড তিতা,পরের পিঠা বোড্ড মিঠা। তাবাদে খুদার বউ যা,তাতে খুদা ত ভয়েই জোড়ো পাকি থাকে। উ বউকে যে অর মনে ধরেনি,তা জানি। কিনা বিয়া করা বউ তাই! ওরকম অনেকেই আছে। তোর দাদুও ছিল।
— মানে কি কথা বলঠ তুমি
—- তোর দাদুর নাঢ় ছিল। বেরাদের ছচিবালা। ফস্সা টুকটুকা দেকতে ছিল বয়েস কালে। তুইও ত দেখেচু থাকে। সতু বেরার ঠাকুমা। অর দাদু ছিল লবংশু। তোর দাদু বেরাদের ঘরে আটমেনা খাটত। বাগদির ছেনা। জাঁকড়া জুয়ান চেহারা। বেরাবুড়ার সম্পত্তি ছিল কুন্তু মুখে আগুন দিবার কেউ ছিল নি। ছচিবুড়ি খুব শয়তানি মাগী। বিয়ার পরেই বুড়ি সব বুজে যায়। বেরা বুড়া কুিনু কম্মের নয়। কুন্তু সেকালে অত ছাড়াকাট ছিল নি। কি হবে অত সম্পত্তি রক্ষা হবে কি করে। লোকে বলে তোর দাদুর ওরসে নাকি বেরা বুড়ার ছেনা হয়। কুন্তু বুড়া জানে তার ছেনা জন্মানার মুরাদ নাই। ইদিকে সুন্দরী বউয়ের ভয়ে কিছু বোলতে পারেনি। তোর দাদুকেও ছাড়াতে পারেনি। যত হোক বেটা ছেনার মায়া! বুড়ির আবার একটা বেটা হয়। ইবার বেরাবুড়া তেমন খুশি হয়নি। উদিকে তোর দাদুর ত দুদেভাতে কাটেঠে। ফ্যাসাদ বাঁদল গেরামের দু'এগজন ফিসফিসানি কোত্তে লাগল। বুড়া আড়ে নাই তাড়ে আছে। বউকে জব্দ করবে বলে প্যাঁচ কষতে লাগল। কুন্রতু পারবে কেন সেই মেইয়ার সঙে। বুড়ার আফিমের নেশা। দুদ খেত রাতের বেলা। বলে শুনি ধুতরা বিচা গুঁড়িয়ে বুড়ি নাকে দুদে মিশি দিইল। অতেই বুড়া সগ্গে চলে যায়।
— কুথার সঙে কুথার একটা গল্প জুড়ে দাওঠ তুমি। দাদু সঙে মেজোদ্দার কি সম্পোক্ক বল দিখি।
— আরে দাদুর রক্ত এট্টু ত থাকবেই তোদের মদ্দে!
— ইসব কি তমার কথা বল দিখি থুড়া। তমাকে মান্যগোন্ন করি বলে যা খুশি বোলে যাওঠ। তার মানে মোদের সব ভাইদল নাঢ়িমারা!
— রেগে যাউঠু কেনে! আগে হামেশাই বিধবাদের নাঢ় রাখত। জমিজাগার লোভ দেখিয়ে মোদের জাতের কম বয়সি বিধবাদের ভোগ কোত্ত। এখন সব সোব্ব হইচে। অত কেনে রাগুঠু বল দিখি। অরা যেদি এট্টু মেলামেশা করে শান্তি পায় কোরুনা। 
— হেরগ খুড়া তুমি না একটা ধম্মপথের লোক। পাপ পূণ্য মাননি। ইসবকে পশশয় দাওঠ।
— পাপ পূণ্ন মানি বোলেই বোলিঠি। চোখের সামনে একটা বউড়ি জীবনের সব সুখ আহ্লাদ নিজের হাতে বিষ খাইয়ে মেরে ফিলবে,আর ধম্মপথের দুহায় দিয়ে তার মনের আশাটাকেও পূরণ হোতে দুবনি– এমন বিচার মোর কুষ্টিয়ে ৰিখা নাই। নিজেকে ইভাবে মেরে ফেলাও একটা পাপ বুজলু। কারো ত কুনু অনিষ্ট করেনি তারা। নিজেদের ইচ্ছায় মিলেঠে। কি এমন দোষ করেঠে তারা। চোখের সামনে যখন লোক লোককে ঠকায়ঠে,নানাস্তানি করেঠে,মা-বাপকে নিজ্জতন করেঠে তখন ত গলা ফাটাওনি তরা। বেশ করেঠে খুদা।
— এরকম চরিবত্তি লিয়ে উ যে মনসার থানে গনায়,ওষুদ দেয় অতে অর ভাল হবে মনে করঠ।
— ভাল মন্দের বিচার করার তুই আমি কে রে! আপ ভাল ত জগত ভাল। নিজেদের মনটাকে আগে ঠিক কোরবি, থাইলেই দেখবি সব ঠিক।

Post a Comment

0 Comments