জ্বলদর্চি

কয়েকটি রম্য কবিতা- ২৭/ শুভশ্রী রায়

কয়েকটি রম্য কবিতা- ২৭/ শুভশ্রী রায়

প্রকৃতি পুজো

চলো আন্তরিক উপাসনা করি প্রকৃতির,
শপথ নিই, প্লাস্টিক ফেলে জঙ্গল, পাহাড়,
নদী-সমুদ্রতীর করব না হাজার হাতে নোংরা,
কখনোই সুন্দরকে ধ্বংস করব না আর।

গাছ কেটে কেটে বনজঙ্গল সাফ করা নয়,
নয় উন্নয়নের নামে হোটেল-রিসর্ট সারি সারি,
জোরে গান চালিয়ে পাখিদের তাড়িয়ে দেব না;
করব না কিছু যাতে প্রকৃতির গোঁসা হয় ভারি।


হিয়া জুড়ে টিয়া

টিয়া সোনা যখন তারিয়ে তারিয়ে খায় পেয়ারা,
খবরদার তাকে বিরক্ত কোরো না কেউ তোমরা,
বাগানে গিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি নয় একদম;
শুধু একটু গুনগুন করুক দু'একখানা ভোমরা।

শুক প্রখর বুদ্ধিমতী, টিয়া বড় সুন্দর এক পাখি,
পান্নাসম দ্যুতি ঠিকরে পড়ে সবুজ ডানা থেকে,
বছর বছর, শতক-সহস্রাব্দ জুড়ে আমাদের প্রিয়;
শ্যামল মমতায় রাখি তাকে কাব্য-কথায় এঁকে।

ছড়াকারিণী

আমি নিতান্ত এক বিস্মিত ছড়াকারিণী
স্কুলে নিশ্চয় প্রতি দিন পড়া পারিনি,
তাছাড়া ছুঁয়েছি শূন্য অঙ্কে অনেকবার,
কঠিন শর্ত নেই তো সব কিছু পারবার!
কখনো বলি না নিজেকে ছড়ায় ভালো,
মাঝেমাঝেই মিল-ছন্দের কাটে তালও,
তাও মহানন্দে লিখে যাই কত না ছড়া,
পাঠকের কাজ সে লেখার বিচার করা।

 ইচ্ছা-নদীর জলের চঞ্চলতা, রোদের তাত
এসবই আমার ছড়ায় থাক ধরেটরে হাত,
সঙ্গতে আসুক মায়াবাতাসের মিঠে পরশ,
চাই তো এমনই, তবে ছড়া হয় কিনা সরস,
বলতে পারি না, শুধু ছড়া লিখে পাই সুখ,
সে ছড়ার আয়নায় জগৎ দেখে কি মুখ!
জীবনের সব রংরূপ ছড়ায় ভরে দেওয়া-
পারি কি আদৌ সোজা এই দেওয়ানেওয়া?


সবুজ গাছে হলুদ পাখি

আমাদের ঘন সবুজ গাছে হলুদ পাখির বাসা,
দৃশ্য বটে সেরার সেরা, দেখারই মতন, খাসা!
সাত বছরের সোহমসোনা শোভা দেখে খুশি,
বলল- ইচ্ছা করে অপূর্ব এই পাখিটাকে পুষি।

কী ভেবে সাগ্রহে প্রিয় দৃশ্য আঁকতে করল শুরু,
কতবার যে মোছামুছি হল, রং পড়ল হাল্কা-পুরু,
অবশেষে সবুজ-হলুদ উজ্জ্বলতা সোহমের মনে;
দেখাল অপূর্ব গাছ-পাখির ছবি ডেকে জনে জনে।

Post a Comment

1 Comments