যেতে যেতে পথে
রোশেনারা খান
পর্ব ১০৫
আমার অপারেশনের দিন এগিয়ে আসছে। কয়েকদিন আগে পৌরসভা থেকে ইফতার পার্টিতে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণপত্র দিয়ে গেছে। ওঁরা ভীষণভাবে চাইছেন, আমি এই পার্টিতে যোগ দি। আমার এই ব্যপারটাই ভাল লাগে না, তবুও গেলাম। কিছু কিছু কাজ ইচ্ছার বিরুদ্ধেও করতে হয়। অপারেশনের ডেট চেঞ্জ করে ৩০ এপ্রিল করলাম। কারণ এর মধ্যে পেনশনারদের একটি সম্মেলন আছে। সেটাতে যোগ দিতেই হবে।
ঘরে বাইরে কাজ সামাল দিতে গিয়ে সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারছি না। আজ বড়ননদ শারুকে ফোন করে জানলাম ও কানেও খুব কম শুনছে। কানটাও দেখানো দরকার। সে আমি না হয় সব ব্যবস্থা করে দেব, কিন্তু ওদের তো সঙ্গে করে নিয়ে যেতে হবে। বলব ওর সুপুত্রকে(?)।
অপারেশনের পর ১ মাস লিখতে পারব না, তাই আত্মকাহিনীর ৪/৫ টা পর্ব লিখে রাখতে হচ্ছে। আশিস দত্তকে হিজাবের ওপর একটি লেখা পাঠিয়েছিলাম ওনার ভাল লেগেছে। রাহাত নামে একটি অল্প পরিচিত ছেলে আমাকে বার বার ওদের গ্রামে ২৮ এপ্রিল ইদের মেলাতে যাওয়ার জন্য বলছে। কিন্তু আমার পক্ষে যে একেবারেই অসম্ভব, সেটা বুঝতে চাইছে না।
বাবলি ফোন করেছিল, ওখানে ওয়েদার ওলটপালট হয়ে গেছে। এবার নাকি প্রচণ্ড ঠাণ্ডা পড়বে।আরও বলল, ওমিক্রনের জন্য তেলের ও অন্যান জিনিসপত্রের অসম্ভব দাম বেড়ে গেছে। তার ওপর ৪ থেকে ৫ লাখের মত মাইনে কমিয়ে দিয়েছে। যুদ্ধের কারণে ফ্লাইটগুলোকে উড়ানের পথ পরিবর্তন করতে হয়েছে।ফলে গন্তব্যে পৌঁছাতে বেশি সময় লাগছে।সেইসঙ্গে টিকিটের দামও বাড়িয়ে দিয়েছে।
সকালবেলা রান্না করছিলাম। ফোনটা কাছে ছিল না, পরে দেখলাম শিবাজীপ্রতিম বাবুর মিসডকল, কল ব্যাক করতে বললেন, আমি পরে কথা বলব, এখন অন্য একজনের সঙ্গে কথা বলুন। কথা বলে জানলাম সেই অন্যজন,বাসবী। ওঁরা পুরুলিয়া যাচ্ছে সেমিনারে যোগ দিতে। বাসবী বলল, ‘তোমাকে নিয়েই আলোচনা হচ্ছিল। আমি বললাম, রোশেনারার সঙ্গে প্রায়ই কথা হয়।তাই তোমাকে ফোন করা’। ওঁদের কয়েকদিনের প্রোগ্রাম, ওখানে থাকবে।
বিকেলে মিয়াবাজার গেলাম ইফতার পার্টিতে যোগ দিতে। আমাকে দেখেই সৌমেন খান(পৌরপিতা) নিয়ে গিয়ে মঞ্চে বসালেন। এখানে সব রকম মানুষই রয়েছেন। সামনের সারিতে ছিলাম তাই পিছনটা দেখা হয়নি। আমার বাম দিকে ছিলেন মেদিনীপুর কলেজের অধ্যক্ষ, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, বিধায়ক জুন মালিয়া, S P, D M, ও আরও অনেকে। গোপাল বাবু জুন মালিয়ার সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিলেন। ইফতারির সব কিছুই সামনের টেবিলে সাজিয়ে দিয়েছিল। এছাড়াও এক প্যাকেট করে বিরিয়ানি দিয়েছিল।
৩০ এপ্রিল একটা চোখে মাইক্রো সার্জারি হয়েছে, রানী সঙ্গে গিয়েছিল। চন্দ্রিমা পরে গিয়েছিল। দুপুরের আগেই বাড়ি ফিরে এসেছিলাম। তারপর থেকে চন্দ্রিমা রোজ এসে স্নান করিয়ে দিয়ে যায়। ২ মে ইদ গেছে। এতে আমার জীবনে কোন ভাল বা মন্দ অনুভূতি জাগেনি। অনেকেই দেখতে এসেছে।এভাবেই দু’সপ্তাহ কেটে যেতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছি।
🍂
আরও পড়ুন 👇
আমার ভিসার জন্য বাবলি কিছু পেপারস পাঠাতে বলেছিল, পাঠিয়ে দিয়েছি। ওর পাসপোর্ট নিয়ে একটা সমস্যা হয়েছে। সেটা ঠিক না হলে টিকিট কাটতে পারছে না। এবার ওরা আমাকে সঙ্গে নিয়ে যাবে বলে ঠিক করেছে। এদিকে সাংসারিক সমস্যার শেষ নেই, রাজু কাজে আসছে না। ওর মিস্ত্রীদের ভুলে আমার যা ক্ষতি হয়েছে, তা তো ওকেই ঠিক করতে হবে। কাসেমার(নন্দাই) অসুস্থতা বেড়েই চলেছে, আর সুস্থ হতে পারবে বলে মনে হয় না। ওর জন্য জমি বিক্রিটাও আটকে আছে। খান সাহেবের ঘরখানাও এখনও উদ্ধার করে উঠতে পারিনি। কি ভাবে এসব সমস্যার সমাধান করব, জানিনা।
একটি নতুন খবর হল রানী মা হতে চলেছে। এত তাড়াতাড়ি এই সুখবর শোনার ইচ্ছে ছিল না, কিন্তু এসে গেলে,প্রথম সন্তান নিতেই হবে। আসলে ওর ট্রেনিং চলছে। কলেজে যেতে হচ্ছে। এছাড়াও ওর শ্বশুর বাড়ির লোকজন বড় বৌয়ের আগে ছোট বৌয়ের মা হওয়াটা মেনে নিতে পারছ্বন না।
প্রতিদিন কোন না কোন অনুষ্ঠান থাকছে। ইচ্চে না থাকলেও যেতে হয়।ভালবেসে ডাকলে না করতে পারি না। কয়েকদিন আগে পাঞ্চালী ওদের সংগঠন ‘অদ্বিতীয়া’র রক্তদান শিবিরে উপস্থিত থাকার জন্য কার্ড দিয়ে গেছল। ওদের ওই শিবিরে কিছুক্ষণের জন্য গেছলাম। অতিথি হিসেবে রবীন্দ্রনাথের মূর্তিতে মালা দিয়ে, চারাগাছে জল সিঞ্চন করে অনুষ্ঠানের সূচনা করলাম। এরপর একে একে অনেকে আসেন। আমি বাড়ি অনুষ্ঠান শেষের আগেই বাড়ি ফিরে এসেছিলাম।
আজ চোখ দেখিয়ে এলাম। ডাক্তার বললেন, একেবারে ওকে।আজ একটা চশমা বানিয়ে নিলাম। আর একটা চোখ সামনের বছর ব্রুয়ারিতে অপারেশন করানোর কথা বলেছেন। শীতের সময়ই করিয়ে নিতে হবে।
বাবলি পাসপোর্ট পেয়ে গেছে, আগামীকাল আমার ভিসার জন্য এজেন্ট অসিত দাসের সঙ্গে কথা বলবে। এবার আমার যাওয়াটা হবে বলেই মনে হচ্ছে। তবে এ নিয়ে এখন মনের মধ্যে কোন আনন্দ বোধ হয় না। জীবনের সব আনন্দ হারিয়ে গেছে।
রানীকে নিয়ে ডঃ সব্যসাচীর কাছে গেছলাম, ওনার কথাবার্তা ভাল লাগেনি। যে প্রথম মা হতে চলেছে, তাকে বলছেন, মিসক্যারেজ হয়ে যেতে পারে, থাইরয়েডের কারণে ভ্রুনের গ্রোথ হয়নি ।অষুধগুলো ৭ দিন খাও, এতেই বোঝা যাবে বাচ্চা থাকবে কি না। টেস্টের রিপোর্ট দীপকে পাঠালে ও বলল, ‘থাইরয়েড বেশি আছে, তবে ভয়ের কিছু নেই’।
বহুদিন পর আজ সুস্মিতা এসেছিল। তাও আবার সাইকেল চালিয়ে।ওর বাড়ি বেশ দূরে। এক তো ৫ফিট ১০ইঞ্চি হাইট, তার ওপর অলিম্পিয়ান হিসেবে খেলাধুলার জগতে তো বটেই, তার বাইরেও ‘ইনটারন্যাশনাল ফিগার’। রাস্তার লোক তাকিয়ে থাকবে এটাই তো স্বাভাবিক। চন্দ্রিমাও এসেছিল। আমরা খুব হাসাহাসি করলাম ওর সাইকেল চালানো নিয়ে। মেয়েটি এতটাই ঘরোয়া, যে ঘরের মেয়ে বলেই মনে হয়।
রানী আজ ডঃ দীপঙ্কর মণ্ডলের কাছে গিয়েছিল। ইনি দীপের খুবই ঘনিষ্ঠ, সিনিয়ার দাদা। রানীর পরিচয় জেনে ভিজিট নেননি। নিজে পরীক্ষা করে জানিয়েছেন বাচ্চার হার্টবিট পাওয়া যাচ্ছে। সব ঠিক আছে।
আজ(১৮/০৫/২২) মুখ্যমন্ত্রী মেদিনীপুর জনসভা করলেন। তার আগে MLA, M P ও আমলাদের সঙ্গে মিটিং করেছেন। কিছুদিন আগে মমতা ব্যানাজির বাংলা অ্যাকাডেমি পুরস্কার পাওয়া নিয়ে রাজ্য জুড়ে ধিক্কারের ঝড় বয়ে গেছে। উনি তাঁর ‘কবিতা বিতান’ কাব্যগ্রন্থের জন্য এই পুরস্কার পেয়েছেন। এই ত্রিবার্ষিক পুরস্কারটি এই বছরই চালু করা হয়েছে। তথ্য সংস্কৃতি দপ্তর ‘কবি প্রনাম’ নামে একটি সাহিত্যসভার আয়োজন করেছিল। সেখানে শিক্ষামন্ত্রী সাহিত্যি ছাড়াও অন্যান্য ক্ষেত্রে কাজের জন্য এই নতুন পুরস্কারটির প্রথম প্রাপক হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানারজির নাম ঘোষণা করেন। উনি সেই পুরস্কার গ্রহণও করেন। বুদ্ধিজীবী মহলের মতে, এটা সাহিত্যের অপমান, সংস্কৃতির অপমান, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের অপমান।
অসিত দাস আজ দুপুরে ফোন করে আমার পুরনো ও নতুন দুটি পাসপোর্টেরই ছবি তুলে পাঠাতে বললেন। পুরনো পাসপোর্ট কী কাজে লাগবে জানিনা, ওটাও রাখা ছিল, দুটিরই ছবি তুলে পাঠালাম। আর কী কী লাগবে, সেটা পরে জানাবেন। আজ সন্ধ্যায় মেদিনীপুর কুইজ কেন্দ্র আয়োজিত ‘রবীন্দ্র নজরুল সন্ধ্যা’ অনুষ্ঠানে গেছলাম। আমি ছাড়াও অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের আধিকারিক বরুণ মণ্ডল, অধ্যাপক জয়জিৎ ঘোষ, লায়েক আলি খান, সুজন বেরা প্রমুখ।
আজ ফোন করে আসিত দাস আমার ঠিকুজি কুষ্টি সব নিলেন। এখন নাকি ইউকে ভিসা পেতে ৪৫ দিন পর্যন্ত সময় লাগছে।বাবলি রাতে ফোনে বলল ভিসার জন্য অসিত দাস বেশি টাকা চাইছে। কিছু করার নেই, আমি অসব ঝামেলা নিতে পারব না। তাই ওনার কথামত ১৪,৫৬০/ টাকা পাঠিয়ে দিলাম। ৯ জুন ১ টা ১৫ মিনিটে আমাকে ভিসা অফিসে পৌঁছাতে হবে।
পৌরসভার ইফতার পার্টিতৈ
আজ প্রচুর ঝড়বৃষ্টি হয়েছে সমগ্র পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে। কলকাতার অবস্থা খুবই খারাপ। এদিকে আমার অবস্থাও খুব খারাপ। আমার জন্ম তারিখে ভুল থাকায় EPF এর টাকা আমার একাউন্টে ঢুকছে না। সেই ভুলটা খান সাহেবই করে গেছেন। আমার জন্ম তারিখ ২৫/১১/৫৭, আর পরিবর্তিত জন্ম তারিখ ২০.০৪/৫৭ ।উনি দুটিকে গুলিয়ে ফেলে লিখেছেন ২৫/০৪/৫৭ লিখে ফেলেছেন। ভুলটা ঠিক করার জন্য পেনশন অফিসে গিয়েছিলাম, কিন্তু কোন কাজ হল না। অফিসার ছুটিতে। একজনই স্টাফ ছিল, সে খুব বাজে ভাবে বলল, না না ও আর ঠিক হবে না। আপনি আধার কার্ডের ডেট চেঞ্জ করে দিন। আমি বললাম, তা কী করে হয়? ওটাই আমার সঠিক জন্ম তারিখ। স্কুলের সার্টিফিকেট, প্যান কার্ড, পাসপোর্ট, সব জায়গাতেই আধার কার্ডের নাম্বারই আছে। তখন কিছুটা নরম হয়ে বলল, দেখি। খান সাহেবের ছবি দেখে বলল, এনাকে তো চিনি। ওনার মত মানুষ কী করে এমন ভুল করলেন! তারপর বলল, জুনের ১০/১২ করে আসুন, যদি অফিসার কোন উপায় বলতে পারেন।
অসিত দাস আজ বললেন, ভিসা অফিসে আমার টাইম ১০ টা ৪৫ । আজ বাবলিও জানাল ওদের আসার টিকিট হয়েছে ২৭ জুলাই, ফেরার ১৩ আগস্ট। তার মানে আমার যাওয়ার টিকিট ও ওইদিনের করতে হবে। বাবলিরা হিথরো হয়ে আসবে, বারমিংহাম থেকে দমদম কোনও ফ্লাইট নেই। যুদ্ধের কারণে টিকিটের দামও বেড়েছে। এক একজনের প্রায় ১,৫০,০০০/ টাকার মত পড়ছে।
আমার টিকিট এখনো হয়নি। জানতে চাইছিল আমি কবে ফিরতে চাই। আমি বলেছি অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে বা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে। নভেম্বরে লাইফ সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে। তাছাড়া রানীকে এই অবস্থায় একা রাখা ঠিক হবে না।আমি না থাকলে ওর মা ও থাকবে না। জুলাই এর প্রথম দিকে গোছগাছ শুরু করব। বেশি কিছু নিয়ে যাওয়ার দরকার নেই। তার আগে অনেকগুলো লেখা শেষ করতে হবে। বিশেষ করে আমার আত্মকথার বেশ কয়েকটা পর্ব ঋত্বিককে পাঠিয়ে রাখতে হবে।
বিকেলে(২৭ মে) আমার মেজ নন্দাই মারা গেলেন। খুব কষ্ট পাচ্ছিলেন। খবর রেয়ে তখুনি গেছলাম, আজ রাতেই দাফন হবে, আমি তার আগেই ফিরে এসেছি। এক এক করে বনস্পতির পাতা ঝরে পড়ছে প্রাকৃতিক নিয়মেই। আমার শ্বশুর বাড়ি থেকে অনেকেই এসেছে।
এসির রিমোট কাজ করছে না। ওটা দোকানে পাঠাব বলে সুদীপকে ডেকেছিলাম, ও সকালে এসে নিয়ে গেছে। সন্ধ্যায় গান্ধি মূর্তির পাদদেশে সই সংগ্রহ করা হবে। আমাকে ওখানে কিছু সময়ের জন্য যেতে বলেছিল। কিন্তু নাজিমের ফোন পেয়ে সব্ ওলট পালট হয়ে গেল।
অদ্বিতীয়ার রক্তদান শিবিরে
আজ কাশেমের তিনদিনের কাজ ছিল। মইদুলকে ফোন করে ডেকে, ওর টোটোতেই গেছলাম, ফেরার পথে বাঁশগলি থেকে একটা সরু দেখে বাঁশ কিনলাম, আম পাড়ার লগি করার জন্য। কাছে কেউ নেই, একাই থাকছি। আমি তো একাই।তথাকথিত কাছের মানুষ যারা তারায় আজ অনেক দূরের মানুষ। তাদের ব্যবহারে আপনাপন দেখিনি। দুপুরে বেশ বৃষ্টি হল। দেওয়াল থেকে যে টাইলসগুলো খসে ঢালু ছাদে আটকে ছিল, সেগুলো ভীষণ আওয়াজ করে গাড়ির শেডে পড়ে শেডটাও ভেঙ্গেছে। ফোন করে রাজুকে(মিস্ত্রি) খুব বকলাম, বলেছি আগামীকাল না মিস্ত্রি পাঠালে আমি অন্য ব্যবস্থা নেব।
ব্যাঙ্কে গিয়ে টাকা তোলার পর পাশবই আপডেট করলাম, নতুন চেকবই নিলাম। সামনে অনেক খরচ। এদিকে তানির কলেজ থেকে খবর এসেছে, ওদের ওয়ার্ডে ডিউটি শুরু হচ্ছে। তাড়াতাড়ি পৌঁছানোর জন্য ফ্লাইটের টিকিট কাটতে হল। আগামি পরশু রবিবার ফ্লাইট। প্রায় প্রত্যেক বারই ফ্লাইটে যাতায়াত করতে হচ্ছে। আগে জানালে ট্রেনের টিকিট কাটত। যাতায়াতেই আত টাকা খরচ হয়ে গেলে চলবে কী করে?
আজ রবিবার, আমি আর ছবি তানিকে এয়ারপোর্টে ছেড়ে এলাম। গতকাল গনত্রান্তিক লেখক শিল্পী সংঘ র একটি প্রোগ্রামে গেছলাম। যা ভয় করেছিলাম,তাই হল। বারবার আমার নাম ঘোষণা করায় আমাকে মঞ্চে বসতে হল। আমার একদমই মঞ্চে বসার ইচ্ছে ছিল না। তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে হবে আমাকে। আমি পিছনের সারিতে বসলেও আমাকেই প্রথমে বক্তব্য রাখতে হল। এর কিছুক্ষণ পরেই বাড়ি চলে আসি।
৬ টা ৩০শে আজ ভিসার জন্য কলকাতা রওনা হয়ে ঠিকানা খুঁজতে অনেক সময় লাগল। তবুও ১০ টা ১০ মিনিটে ভিসা অফিসে পৌঁছে গেলেও আমাদের ভিতরে যেতে বাধা দেওয়া হয়, যে সময় দেওয়া আছে। তার ১৫ মিনিট আগে ঢুকতে দেওয়া হবে ।মিনিট ১৫ পরে চন্দ্রিমাকে নিয়েই ভিতরে ঢুকলাম। বললাম আমার পায়ে ব্যথা, ওর সাহায্যের প্রয়োজন। ওরা ওর পরিচয় পত্র দেখে, ব্যাগ চেক করে ছেড়ে দিল। তারপর এক এক করে সব কাজ শেষ করে বেরিয়ে এলাম। চন্দ্রিমার দক্ষিণেশ্বর যাওয়ার ইচ্ছে ছিল, কিন্তু ড্রাইভার রাজি হল না। ওর কে যেন মারা গেছে। ও তার জানাজায় সামিল হয়ার জন্য তাড়াতাড়ি ফিরতে চায়।
আজ রাজু এসে আমার থেকে টাকা নিয়ে টাইলসের কাজটা করে গেছে। এদিকে রানীকে এই অবস্থায় একা রেখে ওরা সবাই আজমির সরিফ গেছে। সাহবাজ কেন গেল? ওই কথা নিয়ে ওর সঙ্গে আমার তর্কাতর্কি হয়েছে। রানী সে কথা বাবলিকে বলাতে বাবলি আমাকে ফোন করে। সে অনেক কথা। বাবলি বলেছে তুমি জড়াবে না। রানীর ব্যপারটা ও সামলে নেবে। আসলে ধনসম্পত্তি আর বনেদিয়ানা দুটো আলাদা বিষয়। ধনসম্পত্তি একটা পুরুষে অর্জন করা যায়। বনেদিয়ানা কয়েক পুরুষ ধরে অর্জন করতে হয়।
ক্রমশ
0 Comments