গৌতম বাড়ই
'এই বিষাক্ত নষ্ট মৃত সময়ে এ কবিতার কোনও নাম নেই। প্রতিবাদ আর তার ভাষা খুঁজে পায় না। বিষাদে ভরে থাকে মন। '
এইমাত্র খবরে:শুনলাম
একটা দ্রোহ বেলুন চুপসে গেল
ঠিক ঠিক চারমাস পর
শ্মাশানের ধোঁয়ায় এখনও উড়ে বেড়াচ্ছে
নারী শরীরের অব্যক্ত যন্ত্রণা
চিতার আগুন এখন ছাইচাপা শোকে ঢাকা
ছিন্ন হচ্ছে নারী শরীরের সেই সমস্ত অঙ্গ- প্রত্যঙ্গ
গঙ্গার বয়ে যাওয়া শীতল সন্ধ্যার বিষাদে ........
দেহে যে চিহ্ন বহন করে এসে দ্রৌপদীও হয়েছে নারী
কিন্তু রাজরানী হয়েও নিস্তার পায়নি
কত কত রাত দখল করে আওয়াজ ওঠার মতন এখনও
রাতের আকাশ দীর্ণ করে আওয়াজ ওঠেনি
মা আমাকে এমন নারী জন্ম দিয়েছিলি কেন? কেন? কেন?
আলোকজ্জ্বলে নারী তার দর্পণের প্রতিবিম্বে
দেখে তাকে আর
কেঁপে কেঁপে ওঠে তার নারী শরীর
এ বড় পাপ , জন্মপাপ এঁকেছে এ শরীরে !
প্রতিটি চিহ্ন বিপদ ডেকে আনে
আঁধার ঘনিয়ে আসে,
দূরে পশ্চিমপাড় থেকে নদীতে গান ভেসে আসে
" রাম তেরী গঙ্গা মইলি হো গয়ী পাপিয়ো কা পাপ ধোতে ধোতে..."
আমরা বুঁদ হয়ে আছি দে দোল দোল দোল
চোখে বেঁধেছি কাপড়, কানে দিয়েছি তুলো
শুধু বাড়িয়ে দিয়েছি দুটো মুঠোখোলা হাত
দূর্নীতি যখন নীতি হয়ে যায়
বোবাস্টেশনে মাননীয় প্যাসেঞ্জাররা শুধু নিজের জমানো দুঃখ কথা বলে
প্রতিবাদ নয়,
ছিঁড়ে ফেলতে চাই আজ পর্যন্ত লেখা সমস্ত বিদ্রোহ উপাচার
সেই বাবা- মা একদিন হৃদয়ের তীব্রশোকে
পাথর হয়ে যাবে এই রাজা ছাড়া রাজনীতির দেশে
এই বেশ বেশ আছি
এক কাপ চায়ে চুমুকে খেয়ালে ডিজিটাল দেয়ালে
রাত হয়ে আসে আরও অন্ধকার চারপাশে
চারমাস পরে কানপাতলে শোনা যায় তাই
পশ্চিম পাড় থেকে পুরানা সুপারহিট হিন্দী গান
"রাম তেরী গঙ্গা মইলি হো গয়ী পাপিয়ো কা পাপ ধোতে ধোতে"
জনগণ আপনারা শুনে নিন
আজ পর্যন্ত কোথাও কিছু ঘটেনি
যেটুকু ঘটেছে তা বুদ্ধিহীনতার সামান্যতম উদাহরণ
অথচ আমরা দেবী পুজোতে লেফ- রাইট করি
জমিয়ে পুজো করি আর ফাটিয়ে বিসর্জন দেই
এই জন্ম ব্যর্থ আমাদের
মা তুই দুঃখ নিয়ে থাক
পর জন্মের সুন্দর পৃথিবীতে আমাদের পুনয়ায় সবার সাথে সবার
দেখা হবে কথা হবে।
আমরা ভালোবাসার রক্তগোলাপ সারা পৃথিবীতে
ফুটিয়ে তুলবোই
ভরিয়ে দেব, দেখিস!
🍂
দু- লাইনের দশটি কবিতা
একলা
ভিড়ের মাঝে ঠেলছো আমায়, যতোই হোক ভিড়
আমি বড্ড একলা
ফাঁকি
দু-হাতে দুই পাখি, মস্ত বড় ফাঁকি
ফাঁকের মাঝে আটকে গেছে গলা
জন্ম
সব জন্ম বৃথা, শিশু কোলে মাতা
যুদ্ধবোমা পড়ছে তাদের মাথায়
বারমুডা
ক্যালিপসো সঙ্গীতে উন্মাদনায় পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জে
ওখানেও একটি বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল আছে
আদিম বিদ্যা
সে আমার হিতৈষী, কেমন গলা কাটছে আমার কচকচ করে
এ আদিম বিদ্যা সকলের করায়ত্ব
মোহন বাঁশির সুরে
প্রেমের মতন ছল ! আর কী আছে বল?
মোহন বাঁশি শুনে রাধা এক বস্ত্রে ঘর ছাড়ে
বিবর্তন
হাওয়া গাড়ি থেকে বাস, বাস থেকে দোতলা বাস
তে'তলা হলো না , ক্যাবগাড়ি ফিরে এলো শহরে
বিয়ে
অঞ্জু মহেন্দ্রু আর সোবার্সের জম্পেশ কেচ্ছা
ভিভ রিচার্ডস আর নীনারও , পতৌদি বিয়ে করেছিল
এক্সপিরি
বহুদিন চাঁদ সূর্য গাছপালা হয়েছে , কবিদের শব্দ ভান্ডার শেষ
এবার সিন্ডিকেট খুলে নতুন কিছু আমদানি
আলো
শোক থাকলে দুঃখ থাকবে, শোক ভুলে যাও তবে
একশত আটটা প্রদীপ জ্বালাও ঊর্দ্ধ মস্তকে
0 Comments