বার্লিনের ডায়েরি
৬৪ পর্ব
চিত্রা ভট্টাচার্য্য
(অভিশপ্ত পম্পাই নগরীর পরবর্তী অংশ )
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে শান্তিতেপূর্ণ নেপলস শহর ছবির মত সাজানো। বাসস্ট্যান্ডের দিকে চলতে গিয়ে আশেপাশের দিকে তাকিয়ে বিশালাকৃতির স্থাপত্য কীর্তি মধ্যযুগের রেনেসাঁ ও তার পরবর্তী সময়ের ইউরোপের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রচুর স্মারক চিহ্নে ভরে আছে সাগর পাড়ের মনোরম শহর টি। সিটি সেন্টারের দিকে বিখ্যাত কিছু বড়ো মিউজিয়াম ও চার্চ আছে। অদ্রিজা উচ্ছসিত হয়ে ঋষভের হাতটি ধরে এগিয়ে চলেছে ,এবং বলে ' এ শহরে পা রেখে প্রথমেই কার কথা মনে পড়লো বলোতো? ঋষভ ঘাড় চুলকে বলে সত্যি! ভাবতে অবাক লাগছে! আমরা এখন সেই বিশ্ব বিখ্যাত ফুটবলের ''একম এবং অদ্বিতীয়ম মহানায়ক ম্যারাডোনার '' নেপোলি ফুটবল ক্লাবের শহরে এসেছি। ফুটবল সম্রাট ম্যারাডোনা এই নেপোলির মত ছোট্ট একটা ক্লাব কে ইউরোপের ফুটবলের সেরা টিমে পরিণত করে বিশ্বের ফুটবলের আসরে তার শ্রেষ্ঠত্বের দাবি প্রতিষ্ঠা করেছিল। সে কাহিনী তোমার আমার মত ফুটবল প্রেমী মানুষদের কারোর অজানা নয় তিতির। '' শ্রী দূর থেকে শুনতে পায় পিতা পুত্রীর বিশ্বকাপ ফুটবল ও ম্যারাদোনা নিয়ে গভীর আলোচনা। পম্পেই। সমাধি নগরী।
এতো সকালে মিউজিয়াম দেখার কোনো সুযোগ না থাকায় সামনের চার্চ টিতে সকালের আলোয় প্রশান্তির প্রতীক জেসাস কে দেখতে গিয়েছিলো। তাঁর জন্ম ও শৈশব--নানা রূপের চিত্র ও ভাস্কর্য্য এক স্নিগ্ধ পরিবেশ মন কে আপ্লুত করে। সুগন্ধি ধূপের গন্ধ চার্চের চত্বরে আলোকিত মোমবাতি স্ট্যান্ড -- শ্রী আশ্চর্য্য হয়ে চারদিক খোঁজে ওর আজন্ম পরিচিত সেই চেনা দেশীয় স্যান্ডেল ধূপের গন্ধ এখানে এলো কোথা থেকে ? হয়তো মনের ভুল। অদ্রিজা সহজ সমাধানে এসে বলে যে কোনো উপাসনালয়ে এলে দেখবে এমন ধুপ দীপ পূজার গন্ধময় পরিবেশ। ঋষভের মতে , নেপোলি হচ্ছে বেশ বড়ো এক কসমোপলিটান সিটি। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে বহু লোকের বাস এখানে। বতর্মান রোম ও মিলানের পর ইতালীর সব থেকে তৃতীয় বৃহত্তম নগরী প্রায় দশ লাখ লোকের বসবাস কাম্পানিয়া অঞ্চলের রাজধানী এই নেপোলিতে। চলার পথে ট্রেনের সহ যাত্রীরা অনেকেই এগিয়ে চলেছিল ইউরোপের সব চেয়ে বড়ো ও পুরোনো সিটিসেন্টার নেপোলির স্কয়ারের দিকে। ওরা ক্যাপ্রিদ্বীপের যাত্রী একটি রাত নেপোলিতে কাটিয়ে পরের দিন পম্পেই নগরী যাবে ।
🍂
সকাল থেকে ব্রেকফাস্ট হয়নি। মনের মত রেস্তোরাঁ খুঁজতে এদিক সেদিক হেঁটে বেড়িয়ে শ্রীময়ীর চোখে পড়েছিল এই শহরের পায়ে পায়ে রয়েছে অজস্র পিৎজার দোকান। ইতালীয় পিৎজা পৃথিবীর বিখ্যাত এবং এই পিৎজার উৎস বা জন্ম এই ছোট্ট শহর নেপোলিতেই। খাদ্য রসিক রোমে পরিচিত বন্ধু ক্যাপ্টেন মল্লিক এই ইতালীর বিখ্যাত পিৎজার এক গল্প শুনিয়েছিলো। পিৎজা নামক প্রিয় সুস্বাদু খাদ্য বস্তুটি নেপোলিতে এসেছিল গ্রীকদের হাত ধরে। আসলে প্রথম দিকে পিৎজা ছিল গরিবের পছন্দের সস্তা খাবার পরবর্তী সময়ে রাজা চতুর্থ ফার্ডিনান্ডের সময় ধনী শ্রেণীর মধ্যেও এই পিৎজা সমধিক জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল কারণ রানী মার্গারিটা ১৮৮৯ সালে নেপোলি বেড়াতে এসে পিৎজা খেয়ে মুগ্ধ হয়েছিলেন। তারপর থেকেই এই পিৎজা খাবার টির চাহিদা ইতালী এবং তার বাইরে সমগ্র ইউরোপে ছড়িয়ে পড়েছিল। এবং নেপোলির এই বিখ্যাত পিৎজার নাম হয় মার্গারিটা পিৎজা। এখোনো এই বিশেষ পিৎজাটি কাঠ-কয়লার ওভেনে খুব যত্ন সহকারে বিশেষ উপকরণ ও প্রক্রিয়ায় বানানো হয়ে থাকে। সেই বিখ্যাত ক্ল্যাসিক মার্গারিটা পিৎজা যাতে মোজারেলা চিজ ,টমেটো ,তাজা চেরি সস পুদিনা পাতা সী সল্ট ও ভার্জিন অলিভ অয়েল , চিকেন পিস ইত্যাদি সহযোগে এমনি সুদৃশ্য টপিং করা পিৎজা যার স্বাদ ভেনিসে এবং মিলানে ও কয়েক বার খেয়ে বেশ সুখানুভূতি হয়েছিলো । শ্রী ও তিতিরে র বেশ ইচ্ছে কোনো নামী রেস্তোরাঁয় ঐ মার্গারিটা পিৎজা দিয়ে ব্রেকফাস্ট সেরে নেওয়ার ।
প্রতিটা রেস্তোরাঁয় পম্পেই যাত্রীর অসম্ভব ভীড় সুতরাং নামকরা রেস্তোরাঁয় পিৎজার জন্য লাইন দিয়ে সময় নষ্ট করলে নির্ঘাত বাস মিস হবে এবং বাস স্ট্যান্ডের সামনেই যে ইতালীয়ান সাধারন রেস্তোরাঁ টি পাওয়া গেল সেখানে ই মার্গারিটা পিজ্জা ও ক্রিম কফি সহযোগে প্রাতরাশ পর্ব চুকিয়ে বেশ কয়েক টি স্যান্ডউইচ প্যাক করে পম্পেইয়ের বাসে উঠে বসলো। তিতির বলে ওখানে লাঞ্চ পাওয়া যাবে না ,শ্রী হেসে বলে অসুবিধা নেই , লাঞ্চের জন্য যথেস্ট শুকনো খাবার চকলেট,কুকিজ ও কেক রয়েছে। বাস চলতে শুরু করেছে নেপলসের মধ্য দিয়ে। প্রাকৃতিক সাজে সুসজ্জিত শহর গুলোর অপরূপ সুন্দর ল্যান্ডস্কেপ চোখের সামনে থেকে নিমেষে সরে যাচ্ছে। প্রায় সারাটা পথ ডানদিকে সবুজে নীলে মেশানো ভূমধ্য সাগরের অতল জলের আহ্বানে মনে বাঁধ ভাঙা খুশির রাশির আনন্দ স্রোত বইছে। মাথার ওপর চক্রাকারে ঘুরে বেড়ায় সমুদ্রপাখির দল ,সাদা পাখার সীগাল তার ই সাথে দিগন্তের আসমানী নীলের হাতছানি তে দিশেহারা মন।
ছাই চাপা মৃত্যুপুরি।
লাক্সারী বাস চলছে ডাইনে বাঁ য়ে যে দু দিকেই অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য । আকাশের গায়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা আদিগন্ত প্রসারিত সবুজের চাদর গায়ে নিরীহ শান্ত পাহাড় ভিসুভিয়াস। ওর গায়ের পাশ দিয়ে জড়ানো কালো সরু ফিতের মত রাস্তা এঁকেবেঁকে দূর থেকে সুদূরে মিলিয়েছে। প্রলয়ন্মত্ত বিশাল ভিসুভিয়াস আগ্নেয়গিরি মালার মৌন গম্ভীর উদাত্ত রূপ ,---মেঘেদের কালচে আঁচলে মুখগুঁজে রোদ্দুরের সাথে লুকোচুরি খেলে চলেছে সারা টা পথ। ভয়ে ভয়ে তাকিয়ে থাকে শ্রী । রক্ত চক্ষু মেলে কখন আবার রোষানলে তাকাবে তার স্বভাব সুলভ বিধ্বংসী লীলায়। কখন কে জানে সে জেগে উঠবে গুমগুম রবে। আকাশ,বাতাস কাঁপাবে স্বীয় উদ্ধত রক্তিম মেজাজে !শ্রী পাশে বসা তিতির কে বলে ,দেখেছিস এখানের মানুষদের কী অসম্ভব দুঃসাহস ! এই বিধ্বংসী পাহাড়ের চরিত্র জেনেও তার ই পদতলে নতুন করে গড়ে তুলেছে স্বপ্নের সংসার ,মায়াময় গৃহকোণ। লোকালয় জনজীবন যদিও পাহাড় থেকে আট কিমিঃ দূরে। শ্রী ভাবে যেন, দুই হাজার বছর আগে নয়, এইতো সেদিন ঘুমন্ত আগ্নেয় গিরি সদর্পে জেগে উঠেছিল তার প্রলয়ঙ্কর বিধ্বংসী রূপটি নিয়ে। তারপর দক্ষযজ্ঞ ঘটিয়ে নির্মূল করে কেড়ে নিয়েছে আস্ত পম্পেই নগরীর শান্ত ছবির মত সুন্দর সাজানো শহুরটি কে। ভিসুভিয়াসের অগ্নুৎপাতে একে একে ধ্বংস প্রাপ্ত প্রায় সব শহরগুলো পার হয়ে বাস চলেছে এবং সব শেষে পৌঁছবে পম্পেই এবং সর্বশেষের শহর এরকোলানো।
ঐতিহাসিক দের মতে পম্পেই শহর ধ্বংসের সময় যে পরিমান অগ্নিগোলক ও অগ্নিবৃষ্টি বর্ষণ হয়েছিল তা যে কোনও পারমানবিক বোমা বিস্ফোরণের থেকেও বেশী ভয়াবহ। মর্মস্পর্শী ইতিহাসের সেই বিরল কাহিনী শ্রীর মনের ওপর বেশ প্রভাব ফেলেছিল। মৃদুস্বরে ধীরে ধীরে পাশে বসা তিতির কে প্রকৃতির সেই বিধ্বংসী রূপের গল্প শোনায়। '' ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরির ভয়ঙ্কর অগ্নুৎপাতে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া নগরী নিথর প্রাণ হীন দেহের -সেই আতঙ্কিত বীভৎস স্মৃতি সময়ের স্রোতে ভেসে জনজীবন থেকে অতীতের কবরে কবেই চাপা পড়ে গিয়েছিল। বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে যাওয়া প্রায় সুদীর্ঘ ১৫০০বছর পর্যন্ত কেউ মনে রাখেনি। ১৫৯৯ সালে সারনো নদীর গতিপথ পরিবর্তন করার জন্য একদল ইঞ্জিনিয়ার নিয়ে খনন কার্য্য চালাচ্ছিলেন ডমিনিক ফোন্তানা। সেই সময় মাটির তল থেকে কিছু বাড়ির দেওয়ালে অঙ্কিত অশ্লীল চিত্রকর্ম ও পাথরের পান্ডু লিপি ,কারুকার্য্য ময় প্রাসাদ ,খিলান মন্দির ইত্যাদি প্রকাশ্যে দেখা দিয়েছিলো। সেই সময়ে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা ও শাসন ব্যবস্থায় ঘোষিত ছিলো যেকোনো রকম অশ্লীল চিত্র বর্জনীয়।
সেই কারণে ভূতত্ত্ব বিদ ফোন্তানা তাঁর আবিষ্কৃত তথ্যাবলী পুনরায় মাটি চাপা দিয়ে রেখেছিলেন। তারওপরে ক্রমশঃ দেড়শত বছর অতিক্রান্ত হয়ে খনন কার্য্যের কাজ স্থগিত ছিল। এরপর ১৭৪৮ খ্রিষ্টাব্দে ভূতত্ত্ব বিদ চার্লস বার্বুনের আর্থিক সাহায্যে ও নির্দেশে ইঞ্জিনিয়ার রোকো গিয়াচ্চিনুর নেতৃত্বে ও পরিচালনায় মাটি খোড়ার কাজ পুনরায় শুরু হলে শহরটি ধীরে ধীরে অন্ধ ভূমি গর্ভ থেকে মুক্তি পেয়ে আবার আলোতে আসে। তিনি প্রায় সাড়ে সতের'শ বছর আগের মাটির তল থেকে প্রাপ্ত যাবতীয় বহু মনুষ্য শব দেহ ও গৃহ পালিত প্রাণী দেহের কঙ্কাল অলঙ্কার মুদ্রা তৈজস পত্র প্রাচীন প্রত্নতত্ত্ব মূর্তি ও মূল্যবান সামগ্রীর তালিকা স্প্যানিশ রাজদরবারে পেশ করে ছিলেন। পূর্ববর্তী আবিস্কারক ফোন্তানা কে অনুসরণ করে সেখানেও অভিযান চালিয়ে বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে প্রকাশ্যে আলোক পাত করেছিলেন তৎকালীন সেই প্রাচীন সভ্যতার দিকে। একটি সম্পূর্ণ নগর সভ্যতা ঢাকা পড়েছিল লোক চক্ষুর আড়ালে। সেখান থেকে সর্বসমক্ষে প্রকাশিত হলে ক্রমশঃ বহু ভূতত্ত্ববিদ,প্রত্নতত্ত্ববিদ ঐতিহাসিক এবং বিজ্ঞানীদের সমবেত প্রচেষ্টায় বড় আকারের সাফল্য আসে ১৮৬৩সালে। ইতিহাস বিদ বিস্মিত হয়ে দেখেন ছাইয়ের আস্তরণে তলে এতো যুগ যুগান্তর ধরে সব কিছু একদম অবিকল একই রকম আছে যেমন দুই হাজার বছর আগে ছিল। তিতির ও ঋষভ মন্ত্র মুগ্ধের মত শ্রীময়ীর দিকে তাকিয়ে থাকে।অবিস্মরণীয় ইতিহাসের কাহিনী শেষ হতেই বাস এসে থামলো সমাধি নগরীর দ্বার প্রান্তে। লম্বা এক লাইন জমেছে পম্পেই নগরীর পোর্টা মেরিনা প্রবেশ দ্বারের সামনে। ওদের আগে জনা পনেরো দর্শক পিছনে ও লম্বা ভীড়। টিকিট পেতে বেশী দেরী হয়নি। সেখান থেকে মিনিট দুয়েক হাঁটলেই শহরের একাধিক প্রধান ফটকের একটির সামনে পৌঁছনো যাবে। প্রাচীরের ভিতর ঢুকতেই প্রথমেই প্রবেশ দ্বারের সামনে ছিলো সেকালের পম্পেইয়ের আরাধ্য দেবতা জিয়াসের মন্দির। আজ গাইড এক লাস্যময়ী অপরূপা সুন্দরী রোমান কন্যা মিস ব্রানটা। শ্রী তিতির কে বলে রোমের পথে বেড়ানোর সময় যে অবিনশ্বর অপরূপ শিল্প কীর্তির নিদর্শন ভাস্কর্য্যর মূর্তিগুলো দেখেছিলাম মিস ব্রানটা কে দেখে মনে হলো যেন তেমনি এক জীবন্ত মূর্তি কথা বলছে। আধুনিক পোশাকে সুসজ্জিতা কোট প্যান্ট পরিহিতা এ যুগের দেবী এথেনা। শ্রীময়ীদের যাত্রা সঙ্গী ছিল দুই ফ্রান্স থেকে আসা দম্পতী আড্রিন ও ইরিনা যেন made for each other . দুজনেই প্রায় ছয় ফুটের মত লম্বা দুধে আলতায় মেশানো গায়ের রং। তাদের টিকোলো নাক , টানা টানা নীল চোখ ,মাথা ভর্তি সোনালী চুলের রাশি কাঁধ ছাপিয়ে নেমেছে প্রশস্ত কপালের ওপর। সামনের দিক হেয়ার ব্র্যান্ড দিয়ে সংযত রাখলেও ইরিনার চুল সযত্নে বিনুনিতে বাঁধা। তিতিরের চোখে বিস্ময় !পশ্চিমী দেশের ছেলে মেয়েরা বিধাতার কী অসামান্য কারুকার্য্য! কী অপরূপ সৌন্দর্যের লীলায় সৃষ্টি !
ধ্বংস প্রাপ্ত নগরী।
আড্রিন ও ইরিনা ফ্রেঞ্চ ভাষী , ইংলিশ তেমন ভালো জানেনা তবু অদ্রিজার সাথে আলাপ পরিচয় জমে গিয়েছিল। এক মুখ হাসি নিয়ে শ্রী ওদের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করে ওদের কথ্য ভাষা। নগরীর প্রবেশ পথ পার হয়ে কুড়ি জনের মত দল টিকে এক জায়গায় জড়ো করে খুব গম্ভীর ভাবে মিস ব্রানটা পম্পেই নগরের ঐতিহাসিক বিবরণ দিয়ে চলেছিল।
পম্পেইয়ের পথে পা দিয়ে ঋষভ বেশ সাবলীল ভাবে বলে ক্যাপ্টেন মল্লিক বা প্রফেসর অন্বেষণ থাকলে বেশ হতো। ওদের আনন্দময় উপস্থিতির বেশ অভাব অনুভব করছি। প্রাগ ও রোম দেখার সময় ওদের সাথে বেড়ানোর অতুলনীয় আনন্দের অভিজ্ঞতা ভারী উপভোগকর ছিল। যে সহজেই সে বেড়ানোর আনন্দ এক অন্য মাত্রায় পৌঁছেছিল।
শ্রী বলে ,ইউরোপ মহাদেশের যত জায়গা ঘুরে বেড়ালাম সর্বত্র শুধুই রাজা রাজত্ব হিংসা দ্বন্দ্ব ,লড়াই যুদ্ধ বোমবিং স্থাপত্য শিল্প ও ভাস্কর্য্যর ভাঙা গড়ার কাহিনী । পরিচয় হলো পরতেপরতে জড়িয়ে থাকা বিস্তর অজানা তথ্যের । কিন্তু এই পম্পেই নগরীতে দেখতে চলেছি এক অভিশপ্ত জীবনের করুণ পরিণতি। সুপ্তগিরির অন্তস্থলে জেগে ওঠা অগ্নিপ্রবাহের গলিত লাভার ধারায়, প্রাকৃতিক করাল গ্রাসের বিপর্যয়ে এক জীবন্ত নগরীর সমাধি।এক লহমায় বিলুপ্ত হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনা। সৃষ্টি স্থিতি প্রলয়ের তান্ডবে মুছে যাওয়া ধরণীর করুণ জীবন গাঁথা।কেউ সেদিন জীবিত ছিলোনা সে ইতিহাস লেখার জন্য প্রতক্ষ্যদর্শী হয়ে। তার অতীত আবিষ্কার হলো ভূতত্ত্ববিদদের আগ্রহ আর অনুসন্ধিৎসার অসীম পরিশ্রমে।
0 Comments