জ্বলদর্চি

গুচ্ছ কবিতা/ অমিত কুমার রায়

গুচ্ছ কবিতা 
অমিত কুমার রায়

গোলাপ গন্ধ চিঠি

তুমি প্রতি মাসে আমার কবিতা পড়তে চাও 
আমি কবিতা লিখতে পারি না! 
তোমার জন্য দুটো চিঠি পাঠালাম।
দেশ বিদেশের গল্প বেশ ভালো লাগে তোমার 
ভালো লাগে তোমার শব্দের কারুকার্য!
উচ্চারণে রক্তে রক্ত গোলাপ ফোটে 
তুমি সে গোলাপের সুগন্ধ ঘ্রান নেবে,
তুমি সেই গোলাপের চিঠি স্পর্শ করবে,
স্পর্শে এক অনন্য অনুভূতি লাভ করবে 
স্পর্শ জীবনের আরেক ওষুধ।
তুমি সে গোলাপকে বরণ করে নিও,
তখন যদি চিঠির গোলাপ হলুদ চিঠি হয় কবিতা 
পাপড়িগুলো হাসি হাসি মুখ করে ছড়িয়ে পড়ে 
তখন তুমি আবার গান ধরবে না তো!
গোলাপ মোরে বল সখি ফুট বি কবে?
আমার চিঠি যদি সত্যিই কবিতা হতে যায়  
তোমার হৃদয়ে রেখো আংটি করে,
নইলে পাখির মত খাঁচা মুক্ত করে 
উড়িয়ে দিও দূর আকাশে।
      

সর্ষেফুল

আমি এখন আমার চোখে 
সরষেফুল দেখছি!
বিস্তীর্ণ মাঠে হলুদ কার্পেট 
দিগন্ত রেখা ছুঁয়ে।
আলের মধ্যে সর্ষেক্ষেতে প্রবেশ করে 
আহা শুধু গন্ধ নয়?
নানা রঙের প্রজাপতির নাচ 
এপিস ইণ্ডিকা অলিদের নাচ! 
ইটালিয়ান বি'র বেশি হ্যাংলা মো 
পেটটা তো অনেক বড়!
আহা আমি সুরের জলসায়! 
হঠাৎ মন অন্যদিকে অন্যমনস্ক! 
কলকাতাও সর্ষেফুল দেখছে চোখে! 
পড়শী দেশের অবৈধ মৌমাছি 
গুনগুন শুরু করেছে! 
ধরা পড়ছে! 
মাঝি মাল্লারাও আজ ছাড়া পেয়ে 
চোখে সর্ষেফুল দেখার গল্প বলছে!
অকথ্য অত্যাচারের কাহিনী শোনাচ্ছে! 
নাকে সরষের তেল দিয়ে ঘুমিয়ে থাকলে 
সরষে ফুলের রূপ দেখা হবে না আর
সাধু তুমি সাবধান।
     

সাধু

পদপৃষ্ঠ পদপৃষ্ঠ পদপিষ্ট
পুণ্য ভূমিতে পাপাত্মার স্বর্গ লাভ।
হাজার হাজার কোটি রোজগার 
ঘরে উঠে আসে রেলের লাইনে।
পুণ্য স্পেশাল স্পর্শ 
সাধুর সঙ্গে সাধুর বসবাস।
     
🍂

অকৃতজ্ঞ 

যাকে ভালবাসতাম সে বুঝলাম 
এক বড় কৃতঘ্ন অকৃতজ্ঞ।
দ্বেষ দেশে যেতে ইচ্ছাটা মরে গেছে,
ঘৃণিত ব্যবহার অযোগ্য মানুষের হাতে থাবার হুঙ্কার।
নারী যেখানে গৃহমুখী বন্দি
ধর্মকে ভন্ডামীর মুখোশ পরায় 
সঙ্গম যেখানে মন বিকারে পরিপূর্ণ 
সেখানে জ্বলন্ত অন্ধকারের বাস!
এখনো থাকবে উদাস?
আকাশ আর ঘাসের কাব্য লিখে?
যে দ্বেষে মর্মর মূর্তি ধ্বংস হয় 
প্রতিবেশীকে হিংসে করে 
উপকারীর উপকার অস্বীকার করে 
হুংকার ব্যর্থ ইতিহাস গড়ে 
যে দেশে পরশ্রীকাতরতার উচ্ছিষ্ট জলে ভাসে
জল অভাবে  অস্থির 
সংস্কৃতি সেতু ভাঙে 
এদের বীরত্ব বাষ্পীয় ভবনে লিন।
লালন হাসান আজ অপাংতেও।
মাস্টারদার মুখ মনে পড়ে।
জীবনানন্দ জসিমউদ্দিন শামসুর রহমান 
নজরুল উড়ছে অস্থায়ী ঝড়ে!
কুষ্মাণ্ড ভিক্ষের চেয়ে কর্মের মানুষ সবার আগে।
মানুষ ধর্ম বাস্তবে জাগে।
অন্যায় তাড়িয়ে অন্যায় করে যে দাঁড়িয়ে 
ভবিষ্যতে সে কেবল ভিক্ষা মাগে।
ফাঁদ পেতে বসে আছো বেশ!
ডাঙ্গায় বাঘ জলে কুমির! 
নিজের ফাঁদে হয়তো দিয়েছ পা 
সময়টা আজ বড় নির্মম  অস্থির।

       
ওটিপি

আয়নার মতো এন্ড্রয়েড ফোন 
বন্ধুত্ব সেখানে লাইক এবং টাচে।
হাসলে কাঁদলে দেখা যায় 
স্পষ্ট দূরত্ব চন্দ্রালোকে। 
কেউ চিনলো কেউ চিনতে করছে ভুল 
যদি একবার পদস্খলন ঘটে তো
ওটিপি ঘাড় ভেঙে করে সর্বনাশ।

Post a Comment

0 Comments