জ্বলদর্চি

কবিতার কোলাজ/ দুর্গাপদ ঘাঁটি

কবিতার কোলাজ / দুর্গাপদ ঘাঁটি 


মুখ নয় মূক


ক্ষতবিক্ষত অক্ষর নিয়ে কবিতা লিখতে বসা তাইতো সিড়ির ধাপগুলি আলেয়া মনে হয়
আক্ষরিক মলাটে কত মুখ ভেসে ওঠে
ভরে ওঠে অভিসারে লাগামহীন চেয়ার

খিড়কীর পেছনে হিমোসায়নিনের
আয়নায় ছবি আঁকে মূক
বাতাসের গালে চিমটি কেটে 
চলে যায় পথ। 
           

অশুদ্ধ 

কতগুলো মরছে পড়া শাখায়
বিবর্ণ দুটি পাতা
শিশিরেউ সৌন্দর্য হারিয়েছে সকালে 
বীজ তার কামড়ে ধরেছে অপুষ্ট শরীর
বীর প্রসবিনী হওয়ার আগেই 
গর্ভপাত হয়েছে প্রত্যুষে তার

ভূমিকম্পের আগে অঝোরে
বৃষ্টি হয়েছিল রাতে
তারও আগে মাটির দানাগুলি কৃষকের
শরীর উপড়ে সাজিয়ে রেখেছিল প্রদীপ
তবুও আঁতুর ঘরে বীজানুর হানায়
আক্রান্ত হয় শৈশব
আসলে জরায়ুর আলাপনে অসুদ্ধ বীজ
এঁকে দিয়েছে এক গুহা অযত্নে কবেই। 
              


সেলাই 

বোতাম গুলো অশ্লীলভাবে জাপটে ধরে আছে 
পৃথিবীর যৌবন
না চাইতে সেলাইগুলো খুলে যায় লজ্জায়
ঘুম ভাঙে- স্নায়ু কোন কথা বলে না

কবেই ছিঁড়ে গেছে বীণা লাগামহীন 
তাকিয়ে তাকিয়ে শিউরে উঠে দালান
সংসারে সুতোর বড্ড অভাব
তেতুল পাতা ছিঁড়ে উঠুন গড়েছে নতুন 
তবুও সূত্রধর সেলাই করে চলে হৃদয়
কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে 
বোতামগুলি খুঁজে চলে মাঝি 
পারের অপেক্ষায়।
      


অসূর্যস্পশ্যা


অবাধ্য বর্ণমালায় ভাসিয়ে দিয়েছো জীবন 
বুকের আগুন ঘুমিয়েছে কখন অছিলায় 
স্বরবর্ণের সংসার ছেড়ে পশ্চিমী চাদর
জড়িয়েছো গায়ে বর্ণময় পশমের মতো

ক্ষুধার রাজ্য হারিয়ে ফেলেছে পথ
ওরা মেরুদণ্ডখানা খুলে রেখে 
আপোষ বারান্দায় বসে কড়িকাট গুনে নির্বিবাদে  
ক্ষয়ে যাওয়া মাথায় ভরে দুগ্ধবতী অহমিকা সিংহাসনে বসে আছে যারা শিকড় চালিয়ে 
জ্বলন্ত কনিনীকায় মৃত মানুষের ছবি
ভেসে ওঠে  জোয়ারে 
যখন ভোর হয় কুয়াশায় ঢাকে উঠোন আদরে 
তারপর সূর্য উঠে আধো আধো মেঘের আবডালে 
হোঁচট খেতে খেতে অমেরুদন্ডী ঝুলিয়ে দেয়
আয়ু প্রদীপের পিছন পৃষ্ঠায়।
           
🍂

Post a Comment

0 Comments