জ্বলদর্চি

রক্ত ধোয়া জলে /মিলি ঘোষ

রক্ত ধোয়া জলে 
মিলি ঘোষ

অত্রিকা ঘরে থাকলেই আর্য ওর পেছন পেছন ঘোরে। কী করে যেন দিদির উপস্থিতি ঠিক টের পেয়ে যায় ছেলেটা। স্কুল থেকে ফিরে ব্যাগ রাখতে না রাখতে ভাইয়ের আবদার মেটাতে লুকোচুরি খেলতে হয় অত্রিকাকে। যে ছেলেটা জন্ম থেকে দৃষ্টিহীন, সে খেলে লুকোচুরি! অত্রিকা খাটের তলায় অন্ধকারে ঘাপটি মেরে থাকে। আর্যর তো ওটাই জগৎ। সে তো অন্ধকারেরই যাত্রী। আলোর সঙ্গে তো পরিচয় নেই ওর। তাই লুকোচুরি খেলায় বার বার ভাইয়ের কাছে হেরে যায় অত্রিকা। ছেলের দৃষ্টি ফেরানোর জন্য বাবা মা চেষ্টার ত্রুটি করেননি। কিন্তু লাভ কিছু হয়নি। আর্যর এক দাদুও জন্মান্ধ ছিলেন। দাদু বলতে বাবার এক কাকা। 
সুপর্ণা আক্ষেপ করে বলে, "তোমার কাকার জন্যই ছেলেটা আমার অন্ধ হয়ে গেল।"
   "এভাবে বলছ কেন? হতে পারে জিন ঘটিত। কিন্তু সেজন্য কাকাকে দায়ী করছ কেন?" অরূপ গলা নামিয়েই প্রতিবাদটা করল।
সুপর্ণার চোখে জল আসে। ধরা গলায় বলল, "এ ছেলের কী ভবিষ্যত আছে বলো! কার কাছে রেখে যাব আমরা?"
অরূপ চুপ করে যায়। ভেবেও কোনও কূলকিনারা পায় না। তবু ভাবে, "অত্রি ভাইকে খুবই ভালোবাসে। কিন্তু একদিন তো ও শ্বশুরবাড়ি চলে যাবেই। আমরাও থাকব না এক সময়। কী করবে তখন ছেলেটা একা একা!"
 দৃষ্টিহীনদের স্কুলে ভর্তি হয়েছে আর্য। এ ছাড়া বাড়িতেও এক ভদ্রমহিলা এসে ওকে ব্রেইল পদ্ধতিতে অক্ষর পরিচয় করান। চোখের মতো এক জোড়া দামি অঙ্গ না থাকার ফলে চোখের কাজটা আর্য হৃদয় দিয়েই করে। এই হৃদয় নামক বস্তুটা আর্যর এতটাই বড়ো যার মধ্য দিয়ে আর্য গোটা পৃথিবী দেখতে পায় আর অসম্ভব দক্ষতায় এমন কিছু কাজ করে, যা আয়ত্ত করতে মানুষ জীবনের অর্ধেক পার করে ফেলে অথবা সারাজীবনে পেরেই ওঠে না। বাড়িতে ওকে দেখে কেউ ধরতে পারবে না ও দৃষ্টিশক্তিহীন। শুধু রাস্তায় বেরোলে পাশে কাউকে থাকতে হয়।

🍂

বাড়িতে পুরোনো মডেলের যে হারমোনিয়ামটা আছে, সেটা সুপর্ণার। এখন অত্রিকা ব্যবহার করে। দু'জনের কেউই খুব উঁচু দরের গাইয়ে নয়, চলনসই। কিন্তু আর্য যা হারমোনিয়াম বাজায় দেখে আশ্চর্য হতে হয়। স্কুল থেকেও আর্যর বাবাকে বলা হয়েছে, "ওকে কোনও মিউজিক্যাল ইনস্ট্রুমেন্ট কিনে দেবেন।"
অত্রিকা অবাক হয়ে বলে, "ভাই, তুই শিখলি কী করে এসব? মা দেখিয়ে দিয়েছে?"
আর্যর চটপট উত্তর, " না, নাহ্। মা পারবে নাকি এরকম বাজাতে! নিজে নিজেই বাজাই। হাত দিলেই তো বুঝতে পারি কোনটা সা, কোনটা রে।"
তবু অত্রিকার সন্দেহ যায় না। জানতে চায়, "স্কুলে বাজাস, না?"
   "খুব কম। স্কুলে আমাকে সরোদ বাজাতে দেয়।"
 অত্রিকা চোখ বিস্ফারিত করে বলে, "সরোদ!"
  "এই তো দেখ না, আমার আঙ্গুলে দাগ আছে। মিউজিকের ম্যাম শেখান তো।"
অত্রিকা অপলকে চেয়ে থাকে ভাইয়ের দিকে। যেন একটা মেঘমুক্ত আকাশ দেখছে। পায়ের তলায় একটা শক্ত মাটির অনুভব। যে মাটিতে কোনও দেশভাগ নেই। কাঁটা তারের বেড়া নেই। শুধু দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ। যত দূর চোখ যায় সে মাঠ শুধু সোনার ফসলে ভরা। 

স্কুলের গণ্ডি পার করেই অত্রিকা বাবার কাছে বলল ও টিউশন করতে চায়। অরূপ তো পত্রপাঠ নাকচ করল।
বলল, "নিজের পড়ায় মন দে। ইকোনোমিক্স অনার্স খুব সহজ কথা নয়।"
    "কোনদিন আমি পড়ায় ফাঁকি দিয়েছি, বলো তো? আর টিউশন করলে চর্চা থাকে। তুমি নিজেও তো এক সময় ছাত্র পড়াতে। ভীত তো তুমিই গড়ে দিয়েছ আমার।"
কথাটা ভুল বলেনি অত্রি, তবু আজ মেয়ের কথা শুনে নিজের মধ্যে কোথাও যেন অক্ষমতার আভাস পেল অরূপ। বেসরকারী অফিসে চাকরি। চারজনের সংসার টেনে চলেছে। অফিসে নানান সমস্যা, তার মধ্যে আর্য যেন গলার কাঁটা হয়ে বিঁধে আছে আজ তেরো বছর ধরে। সুপর্ণার কাছেও বিশেষ কিছু বলে না অরূপ। সুপর্ণা আজও জানে না মাস গেলে অরূপের হাতে কত টাকা আসে। ও কিছুটা গলায় আঁচল জড়িয়ে স্বামীর পদধূলি নেওয়া গোছের মহিলা। অরূপ অফিস থেকে ফিরলে ওর পায়ের জুতোটা খুলে দিতে পারলে সুপর্ণা কৃতার্থ হয়। যদিও সেটা সম্ভব হয়নি। কারণ, অরূপ পছন্দ করবে না। কিন্তু কুড়ি বছরের বিবাহিত জীবনে অরূপের মনটাকে পড়ার চেষ্টা করেনি সুপর্ণা কোনওদিন। অত্রিকার কথাও খুব ভেবেছে বলা যায় না। ওর ভাবনা শুধু আর্যকে নিয়ে। সেটা অস্বাভাবিকও নয়।

বাবাকে রাজি করিয়ে দুটো টিউশন নিল অত্রিকা। দু'জনেই ইলেভেনের ছাত্র।
মধ্যবিত্ত পরিবারে ছেলেমেয়ের জন্মদিনে আয়োজন কমের দিকেই থাকে। সুপর্ণা পায়েস করে আর অরূপ অফিস থেকে ফেরার পথে একটা মাঝারি মাপের কেক নিয়ে আসে। এবারে কিন্তু ভাইয়ের জন্মদিনে বেলুন দিয়ে বাড়ি সাজাল অত্রিকা। নোনা ধরা দেওয়ালে হাত পড়েনি বহুদিন। তার মধ্যে রঙিন বেলুনগুলো যেন ঝড়ে ভেঙে যাওয়া প্যান্ডেলে আলোর মালার মতো দুলছে। ভাইকে একটা নতুন জামাও দিয়েছে। মেয়ে ছাত্র পড়িয়ে ছেলের জন্মদিনের আয়োজন করেছে। অরূপ, সুপর্ণা দু'জনেই খুশি। তবে, সব থেকে বেশি খুশি আর্য। প্রতিটি বেলুন ছুঁয়ে ছুঁয়ে বলে যাচ্ছে কোনটা লাল, কোনটা নীল বা সবুজ।
আজকের দিনটা কোনও কারণ ছাড়াই দারুণ। জন্মদিনই যদি কারণ হবে, তাহলে তো বিগত বারো বছরে এমন করেই সকালটা রোদে ঝলমল করত। এমন করেই বসন্তের বাতাস বইত, কোকিল ডাকত। এমন করেই রাতের আকাশে সোনার নৌকা দেখা দিত। সব কিছুই আজ ঘটেছে কারণ ছাড়াই। কেক কাটা পর্ব মিটে গেলে অত্রিকা খাটের তলা থেকে একটা বড়ো বাক্স বার করল, যার ঢাকনা খুলতেই বেরিয়ে এল নতুন ঝকঝকে একটা সরোদ। হাততালি, হাসি, আনন্দের মধ্যে চাপা পড়ে গেল অরূপের চোখের কোণের চিকচিকে জল। স্কুল থেকে বলা সত্বেও আর্যকে কোনও বাদ্যযন্ত্র কিনে দিতে পারেনি অরূপ। মনকে বুঝিয়েছিল, হারমোনিয়াম তো ভালোই বাজায়। বাজিয়ে আর্য খুশিই থাকে। তলিয়ে ভাবেনি এই বাদ্যযন্ত্রই ছেলের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। 

যে বয়সে গাইবার কথা, - উতল হাওয়া লাগল আমার গানের তরণীতে..... ঠিক সেই বয়সে অম্বরের সঙ্গে আলাপ অত্রিকার। ততটা বোঝা যায় না। বন্ধুত্ব? নাকি এর গভীরে রয়েছে আরও না বলা কথা! 
অত্রিকা তখন মাস্টার্স করছে। বেশ একটু রাত। আর্য আর অরূপ ঘুমিয়ে পড়েছে। মনে হলো দরজায় নিঃশব্দে কেউ এসে দাঁড়াল। বই থেকে মুখ ঘোরাতেই দেখে মা। 
   "কিছু বলবে? মা?"
   "না, থাক। তুই পড়।"
   "আমি এখন অনেক রাত পর্যন্ত পড়ব। কী বলবে, বলো না।"
সুপর্ণা কিছুটা ইতস্তত করেই বলল, "পরীক্ষাটা হয়ে গেলে আমরা কি অম্বরের বাবা মা'র সঙ্গে কথা বলব?"
   "অম্বরের বাবা মার সঙ্গে? হঠাৎ?"
   "না, মানে.... চাকরি তো বিয়ের পরেও করতে পারবি।"
   "বিয়ে? বিয়ের কথা আসছে কোথা থেকে?"
   "কী চাস তোরা বল তো? আমি না তোদের জেনারেশনকে ঠিক বুঝে উঠতে পারি না। তোর বাবার আর চার বছর চাকরি আছে। আমাদের দিকটাও তো ভাববি।"
   "আমাদের জেনারেশনকে বুঝতে হলে তোমাদের আরও কিছুদিন বাঁচতে হবে। পড়ার চাপ আছে মা। তুমি ঘুমাও গিয়ে।"

এমনিতেই অরূপ স্বল্পভাষী। তার মধ্যে অবসর গ্রহণের পর থেকে কথা বলার মাত্রা আরও কমেছে। অরূপের এই বোবার শত্রু নেই ভাবখানা ইদানিং সুপর্ণার অসহ্য লাগে। একশোটা কথা বললে যদি একটা উত্তর পাওয়া যায়।
সুপর্ণা একদিন অভিযোগ করল, "তুমি কিছু বলো না বলে মেয়েটা এরকম হয়ে গেল।"
    "কীরকম বলো তো?"
    "এতদিন তো পড়া পড়া করে ওর ঘরে ঢুকতেই দিত না। এখন তো অত্রি চাকরি করছে। কলেজে পড়ায়। ওর একটা পজিশন আছে সমাজে। কিন্তু বিয়ে না করলে এই পজিশন থাকবে না। নানা জনে নানা প্রশ্ন করবে।"
অরূপ কোনও উত্তর না দেওয়ায় সুপর্ণার রাগ বাড়তে থাকে। নিজের মনেই গজর গজর করে, "আমারও তো একটা সাধ-আহ্লাদ আছে। একটাই তো মেয়ে। ছেলের তো আর বিয়ে দিতে পারব না।"
সেদিন রাতেই অরূপ অত্রিকাকে ডেকে বলল, "তুই কি আর্যর কথা ভেবে বিয়ে করতে চাস না?
    "মা পাঠিয়েছে না, তোমাকে?"
অরূপ হেসে ফেলে। হাসলে অরূপকে এখনও বেশ ভালো লাগে। 
   অত্রিকা বাবার সাজানো দাঁতের পাটির দিকে তাকিয়ে বলল, "আমি বিয়ে করলে তোমাকে শ্বশুর বলে মনেই হবে না। তুমি এখনও যথেষ্ট হ্যাণ্ডসাম।"
   "বলছিস! তোর মা শুনলে রেগে যাবে। যাইহোক, তোর বিয়ে না করার আসল কারণ কি আর্য? নাকি অম্বরের সঙ্গে কিছু হয়েছে।"
   "অম্বরের সঙ্গে ঝামেলা হবার চান্স কম। কারণ, আমরা বিয়ে করিনি।"
একটু চুপ থেকে আবার বলল অত্রিকা, "ভাইকে ছেড়ে আমি কোথায় যাব! তোমরা যখন থাকবে না, তখন এই শূন্য পুরীতে ও একা একা বাঁচবে কী করে, বাবা?"
   "সরোদ বাজিয়ে আর্যর এখন ভালোই নামডাক হয়েছে। প্রচুর ছাত্রছাত্রী। মানুষ ভালোবাসে ওকে। সর্বক্ষণের একজন লোক রেখে দিবি। আর তুই মাঝেমাঝে এসে থাকবি।"
   "প্লিজ বাবা। মার শেখানো বুলি শুনতে আমার ভালো লাগছে না। অম্বরের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তোমরা আর আমাকে রিকোয়েস্ট কোরো না।"

মধ্য পঞ্চাশের অত্রিকা আর পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই আর্য, সংসারে মাত্র দুটি প্রাণী। অত্রিকা না ফেরা পর্যন্ত রান্নার মাসি থেকে যায়। আর্য নিজে সবই পারে। তবু একজন পাশে থাকা। 
  আর্য জানতে চায়, "মাসি, তোমার কে কে আছে বাড়িতে?"
 "কে আর থাকবে। বুড়ো-বুড়িতে থাকি।"
 "ছেলে মেয়ে নেই?"
 "ছিল। বেঁচে থাকলে আজ তোমার বয়সীই হতো।"
ঘরের মধ্যে অখন্ড নীরবতা। আর্য জানে, দুঃখের গাদায় সূঁচ ফোঁটালে সে ফাল হয়ে বেরোয়। দৃষ্টিহীনতা নিয়ে জীবনে সে'ও তো কম প্রশ্নের মুখোমুখি হয়নি!
মাসি শুকনো চোখে তাকিয়ে থাকে সে কোন্ অনন্তের দিকে। ঠোঁটটা যতটা সম্ভব কম ফাঁক করে বলল, "খুন হয়ে গেল।"
আঁতকে ওঠে আর্য, "খুন!"
   "কতবার বললাম, বাবু, পাটি ফাটি করিস না। ওসব ভালো কাজ নয়। আমার কথা কানে নিলে তো!"
মাসি বলতে থাকে, "দলের ছেলেরাই মেরে দিল। আমি কুয়ো-তলায় বাসন মাজছিলাম। তিনটে ছেলে এসে আমার টিনের দরজাটা এক ধাক্কায় খুলে বলল, 'মাসি একটু জল দাও তো। হাতটা ধোব।' ওদের হাতে তাজা রক্ত লেগে। আমি কুয়ো থেকে জল তুলে ঢালতে লাগলাম। ওরা সেই জলে হাতের রক্ত ধুয়ে ফেলল। আমি তখনও বুঝিনি, এ আমার বাবুর শরীরের রক্ত!"
এবার মাসির শুকনো দুটো পুকুরে বানভাসি দেখা দিল। কত কাল কত যুগ পর মাসি আকুল হয়ে কাঁদল তারই ছেলের বয়সী আর এক ছেলের কাছে।

আর্যর মন নামক কেন্দ্রটিকে ঘিরে একটা বৃত্ত সর্বক্ষণ ঘুরে চলে শত শত যন্ত্রণা নিয়ে, হাজারো প্রশ্ন নিয়ে। এই বৃত্তের পরিধি কখনও বাড়ে, কখনও কমে। কেন্দ্র একই থেকে যায়। আজ পরিধি অনেকটাই বিস্তৃত। কিন্তু আর্য থেকে গেছে কেন্দ্রেই। এটিই ওর আশ্রয়স্থল। এখানেই আর্যর সরোদ সুর তোলে কখনও শান্ত নদীটির মতো, কখনও পাহাড়ের জটা থেকে মৃদঙ্গের তালে তালে পা ফেলে নেমে আসা ঝর্ণার মতো কখনও বা প্রকৃতির তাণ্ডব লীলার মতো। 
অত্রিকা কলেজ থেকে বাড়ি ফিরে দেখে আর্য সরোদে বিভোর। অম্বর এল একটু পরে। যেদিন অম্বর আসে, আর্য খুব খুশি হয়। কিন্তু আজ ও চোখ খুলল না। আজ ওর সরোদে বিষাদের সুর। মাসির ছেলের শরীরের রক্ত ধোয়া জলে সে সুর একাকার হয়ে বয়ে চলেছে। এই বহমানতার না আছে আদি না আছে অন্ত।

Post a Comment

1 Comments

  1. রক্ত ধোয়া জলে,মিলি ঘোষ।
    পড়লাম। পরিস্কার নিটোল একটা কাহিনী শেষ চমকে লেখিকার জাত চিনিয়ে দেয়।
    এককথায় অপূর্ব। সিনেমার শেষ দৃশ্যের মত শেষ শব্দ সমষ্টি কানে এক অদ্ভুত ব্যথার মায়াবী সরোদ অনেকক্ষন ধরে গল্পের রেশ টেনে বেজে চলে।
    ছটি চরিত্রে ছটি মানুষ কে ধরা ছোট গল্পে,একটা অসামান্য কাজ।
    অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।
    শব্দ ব্যবহার লেখনী বলিষ্ঠ।

    ReplyDelete