জ্বলদর্চি

কবিতাগুচ্ছ /শিবালোক দাস

কবিতাগুচ্ছ

শিবালোক দাস


কাঙাল


লেখা ছিল না কোথাও
আলোয় সরে সরে আসতে
ক্রন্দনে তছনছ করে দিলে মাছি।

মেলানো ধাঁধায় তুমি দাঁড়াও কাঙাল,
দেওয়ালের পিঠে পাঠিয়েছি দুহাত। 

উন্মাদের ভাষায় প্রার্থনা করি।
করতে, করতে...‌নকশায় দুবার
নিবৃত্ত আমার চাতুর্য, ও‌ আগুন,
ভুলো না দুদন্ড সখ্য আমার।

হতেও পারে প্রমাদ। বলতে পারিনি।

লেখা ছিল না কোথাও জোরালো
আকর্ষণে চোখের আড়াল কাটাকুটি...


জ্বর 

বুঝি না উপমা। হাওয়া বদলে 
বসে থাকি মন্ত্রমুগ্ধ...
ব্যর্থ করো গানে গোপন নিরীক্ষণ।

ফিরি অজানা নিরুত্তাপে, খুচরো
স্বরে নাম শুনেছি সেই প্রথম...
তুমি মুঠোয় রাখতে একটি নিষিদ্ধ
দরজা, প্রলাপে জন্মান্ধ হতে বাউন্ডুলে
ধরল কোমল প্রার্থনা।

লিখতে লিখতে ছড়িয়ে পড়ে বহুবার।
হাওয়া বদলে আমি দেখি, মন্ত্রমুগ্ধ তো
কেবলই গমক, নেমে যাওয়া জ্বরে।

🍂
ad

ভবিষ্যৎ


তুমি ডেকো আমাকে দিন ফুরোলে,
পিঁপড়ের বিষ ভুলে যাই, অপলক
চাওয়ার আগে নেমে তো আসুক চাঁদ।

আশ্চর্য প্রদীপে নিভে আসে ঘর, 
শুকনো পাতার ভেতরের অন্ধকারে
পাহাড় কাটে হিম, কতদিন তুলে রাখিনি
চোখ, বুজে আসত বন্ধদ্বারে...

তুমি ডেকো আমাকে লুপ্তপ্রায় কথায়,
লুকিয়েছি শীর্ণতা, চাও এটুকুই আলোর
কাছে এসে দাঁড়ালে, পুরোনো ভাঁজে...

ভবিষ্যৎ কি লাবণ্যময়, প্রজ্ঞায় ও ত্যাগে !

ঈষৎ ঝুঁকে আমার হাতে ছুঁয়ে দাও গোলাপী মরশুম।



শরীরে ঈশ্বরের দাগ

কেটে যায় প্রাত্যহিক দুরভিসন্ধি--
আলোড়ন রাখি মৃত ঘোষণায়
যে জোয়ার হারিয়েছে ধ্যানে,
সে কেমন করে সন্ধ্যা নামায় ?

শরীরে ঈশ্বরের দাগ। 
ভুলেছি স্তব্ধ নির্বিষ মুখ।

নীল সময়ে আনত তালুর ভেতর
ছন্নছাড়া শীতঘুম... বেজে ওঠে ক্রন্দনে।

দোষী কোরো না, আগুনে ধরা দাও
পুরোনো বরফ তৃষ্ণা হোক পুণ্যে।

শরীরে ঈশ্বরের দাগ অব্যক্ত ভালোবাসায়,

নিঃশব্দ রেখায় ধ্বংস যেন বালিহাঁস, ভাসুক প্রবাহে।



দরজা


কতবার সাক্ষাৎ চিনতে পারে গান ?
কতবার পাশাপাশি দাঁড়িয়ে ঋদ্ধ করো আহ্বান ?

বর্ষামঙ্গলে বৃষ্টি সর্বনাশে--

ওল্টাই ধার,
নিমন্ত্রনে সে স্পর্শ নেই, 
ধ্বংস চেনাতে মৃত ঘোড়ায় ভেঙেছে শত ব্যবধান,
টিপেছে শেষবার উষ্ণ অভিব্যক্তি,
নিভিয়েছে রোশনাই।

দরজা খুলে যাচ্ছে শান্ত হাতে, রোদ্দুর 
ছুঁয়ে উদাসীন কবিতার মতোই ফেরে,
আতস কাচ পুড়িয়ে থামো, গুহালিপিতে।



বলিনি

তঞ্চকতায় আকাশ খুঁজে পেলে
সম্পূর্ণ হত বিস্ময়...
ঋণের কাছেই খুলে রাখি
কঙ্কাল, চাই নিদারুণ ত্যাগে
নিষেধাজ্ঞার অপচয়।

আলোয় গ্রহণ করো
আমার মুখ, প্রশ্বাস পেরিয়ে দ্রুত
ভারি হয়ে ওঠে ব্রহ্মে।

তীব্র অনুশোচনায় দগ্ধ করো কোন নাভি ? 
দেওয়াল ভেঙে তারামগ্ন ঘর।

আলোকিত হয়ে প্রতিদিন দাঁড়িয়ে থাকো ক্ষতে...



Post a Comment

0 Comments