জ্বলদর্চি

গুচ্ছ কবিতা /দীপঙ্কর সরকার

গুচ্ছ কবিতা 
দীপঙ্কর সরকার 


সভ্যতা  

জ্যোৎস্না ভেজা রাতের কথকতা শুনি, শূন্য 
অবিরল। ঘাসের ডগায় শির শিরে
হাওয়া। 
নদী জলে প্রতিবিম্ব তার, উপকূল জুড়ে 
রঙ্গ রসিকতা, ঘেয়ো কুকুরের ডাক,এই
সেই আদিমতা বিলাস বিহীন আসমুদ্র 
হিমাচল। পাথরে পাথর ঘষে অগ্নি সংযোগ, 
ধাতব অক্ষরে লেখা প্রাণের স্ফুরণ। 
প্রযুক্তিগত রণকৌশলে ভরা যাবতীয় 
গুহা-গহ্বর।


একাত্মতা   

আমার সমস্ত স্বপ্ন তোমাকে ঘিরে 
রাজন্যা, তুমি আছ শ্বাসে প্রশ্বাসে 
বিরহ জ্বালায়।
আনন্দ উৎসবে আছ বিষাদে বিশ্লেষে
তুমি চির অন্তর্লীন। 
ভ্রমণে সাঁতারে আছ পায়ে পায়ে 
পথ চলা অনন্ত যাত্রায়।
ঘুমে ও জাগরণে আছ চেতনে
অচেতনে, জানি থাকবে চিরনিদ্রায়। 
তুমি আমি অর্ধনারীশ্বর জীবনে মরণে 
অঙ্গাঙ্গি অভিন্ন আত্মায়।
🍂


বিবর্ণ হৃদয়  

হৃদয় বিবর্ণ আজ অতিকায় ধুলোর আস্ফালন 
কোথায় নোয়াব মাথা! সময়ের অভিঘাতে জ্বলন্ত 
প্রবাদ। খুঁটে ঘায় ঘাস গাছপোকা।
জলেও
বিষণ্ণ অবসাদ,পাখির পালকে স্মরণচিহ্ন
এক বিশীর্ণ অঞ্চল। কোথাও সুস্থিতি নেই, 
হুটোপাটা সর্বত্র এখন। যেদিকেই
চেয়ে দ্যাখো 
ভাঙা ভাঙা ছোপ ছোপ জলদাগ বিশুষ্ক অবতল। 


দিব্যদৃষ্টি  

আমি স্বপ্নে দেখি হাওয়ায় লেগেছে আগুন 
পুড়ে যাচ্ছে গাছের পাতা, এখন ফাগুন মাস 
ঝলকে উঠছে রোদ। চাঁদের গায়েও লেগেছে 
উত্তাপ জোনাকির কাল শেষ। 

ফুট উঠছে ব্রহ্মকমল একান্ত নিষ্পাপ, অদূরে 
নদীর দীর্ঘশ্বাস নিস্তব্ধ দুপুর এখন। একরাশ ক্ষোভ 
উগরে দিয়ে নৈর্ঋতে জমে উঠছে 
মেঘের পাহাড়, 
আতপ্ত ঝর্ণার জল ঝরে পড়ছে উপত্যকা বরাবর। 

ধূ ধূ বালুচরে কাঁটা গুল্ম কিছু ধুঁকছে অসহায়, 
এমনই বিশীর্ণ স্বপ্ন সব ভেসে উঠছে মনের ক্যানভাসে 
আমি তাকে পারিনা এড়াতে - এ নয় আমার কোনো 
নগ্ন অজুহাত। 


আমাকে আমার মতো  

আমার সকল নিয়ে বসে থাকা আলো ও
নির্মাণ। ভালো-মন্দের বিভেদ টানা। 
একান্ত ব্যক্তিগত নিজস্ব অধ্যায়। কারো
হস্তক্ষেপ বড্ড  বেমানান। ঈর্ষা ও
অসূয়া, 
যা কিছু ভুলচুক হরিষে বিষাদ আমারই
ত্রুটি বিচ্যুতি সব, আমার অহং।
রবাহূত 
তোমার উচ্চারণ কাঙ্ক্ষিত নয় অশোভন
বরং। আমাকে আমার মতো থাকতে চাওয়া 
নিশ্চয় অপরাধ নয়, অহেতুক নাক গলানো 
মুদ্রাদোষ বন্ধ হোক তোমার সকাশে এই 
আর্জি করি নিবেদন।

Post a Comment

1 Comments

  1. কমলিকাAugust 02, 2025

    ভালো লাগলো

    ReplyDelete