জ্বলদর্চি

নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস/দোলনচাঁপা তেওয়ারী দে


নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস

দোলনচাঁপা তেওয়ারী দে 

আজ ২৪শে আগস্ট নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস। এই দিনটি কেন পালন করা হয়,এর গুরুত্ব এবং তাৎপর্যই বা কি? আসুন এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নিই।

নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে ফোরাম, ভারতের মুম্বাই ভিত্তিক একটি নারীবাদী সংগঠন। এটি ১৯৮০ সালে ধর্ষণের বিরুদ্ধে ফোরাম হিসাবে উদ্ভূত হয়েছিল, মথুরা ধর্ষণ মামলার রায়ের বিরুদ্ধে শহরে বিক্ষোভ সংগঠিত করেছিল।

নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার জন্যে জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি-২০১১ সালে প্রণয়ন হয়। এ নীতির একটি অংশ হলো নারী নির্যাতন প্রতিরোধ।

১৯৭৯ সালে মথুরা ধর্ষণ মামলার রায়ের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদী চিঠি ধর্ষণ সম্পর্কিত ভারতীয় আইন সম্পর্কে একটি নতুন বিতর্কের জন্ম দেয়। মুম্বাইতে, চল্লিশজন মহিলা ১৯৮০ সালের ২৩শে ফেব্রুয়ারি, রায়ের প্রতিবাদে একটি জনসভার আয়োজন করেছিলেন। এই দলটি নিজেদের ধর্ষণের বিরুদ্ধে ফোরাম বলে উল্লেখ করে। কিন্তু অনেক ধরণের উদ্বেগের কারণ আছে, এবং সেগুলির মোকাবিলা করতে হবে এটি বুঝে, এই গোষ্ঠী দলের নাম পরিবর্তন করে রাখে ফোরাম এগেইনস্ট অপ্রেসন অফ উইমেন (এফএওডব্লিউ) বা নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে ফোরাম।এই ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যরা হলেন লতিকা সরকার, চয়নিকা শাহ, উপেন্দ্র বক্সি, রঘুনাথ কেলকার, বসুধা ধাগমওয়ার এবং সোনাল শুক্লা।

এই গোষ্ঠীটি " সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর জন্য একটি ছাতাসুলভ গোষ্ঠী, ট্রেড ইউনিয়নগুলির সাথে কাজ করা একটি গোষ্ঠী এবং প্রতিদিনের ভিত্তিতে মহিলাদের সাথে যোগাযোগ করার জায়গা - মহিলা কেন্দ্র" হিসাবে কাজ করে চলেছে।

নারী ছুটিতে বিভিন্ন আইন রয়েছে। এখনো নারী পাচার, যৌতুক, নারীকে এসিড নিক্ষেপ, অপহরণ ও যৌন হয়রানি ও নারী নির্যাতনমূলক অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। গ্রাম্য সালিশির আন্দোলনের মাধ্যমে অপব্যাখ্যা চলছে, বিচার বহির্ভূত শিক্ষা প্রদানের ঘটনা ঘটছে। নারী পথের নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট ফরেনসিক সুবিধা এখনো নেই। অনেক ক্ষেত্রে বিচার  করা হয় না এবং বিভিন্ন কারণে বিলম্বিত হয়। মহিলা সহায়তার জন্য মহিলাকেন্দ্র রয়েছে৷ এই কেন্দ্রে নারীদের আশ্রয়, বিনা মূল্যে আইনগত পরামর্শ ও ব্যাখ্যার জন্য সহায়তা দেওয়া। নাগরিকটি বিভাগীয় পুলিশওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস ইন্টারনেট স্থাপন করা হয়েছে ও এর মাধ্যমে একই জায়গা থেকে সমন্বিতভাবে চিকিৎসাসেবা, আইনগতসেবা, পুলিশি সহায়তা, আশ্রয় ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে ন্যাশনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টারের মাধ্যমে নির্যাতনের শিকার নারীকে মনোসামাজিক কাউন্সেলিং সেবা প্রদান করা হয়। সেই সঙ্গে বিভিন্ন পেশায় প্রশিক্ষণ দান করে আত্মনির্ভর হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও জাতীয় মহিলা সংস্থায় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেল ও হেল্প লাইনের মাধ্যমে সহায়তা প্রদান করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। যথাক্রমে জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে এবং উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে এবং ইউনিয়নে ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটিগুলো জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। নারী ও কন্যা শিশু নির্যাতন প্রতিরোধের লক্ষ্যে সারাদেশে ৪৪টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবু্যনাল স্থাপিত হয়েছে।
🍂

১৯৮০ এর দশক থেকে, এফএওডব্লিউ নারীর অধিকার সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত প্রচারণা গ্রহণ করেছে। কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া হলো।

মথুরার রায়কে ঘিরে সক্রিয়তা, ধর্ষণের প্রতিবাদে একটি ফোরামের প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন হয়েছিল, তারা রায়ের প্রতিবাদে একটি জনসভা ও সমাবেশের আয়োজন করেছিল।

লিঙ্গ নির্ধারণ এবং লিঙ্গ পূর্বনির্বাচনের বিরুদ্ধে ফোরামের (ফোরাম এগেইনস্ট সেক্স ডিটারমিনেশন অ্যাণ্ড সেক্স প্রিসেলেকশন বা এফএএসডিএপি) একটি সক্রিয় অংশ ছিল এফএওডব্লিউ। ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি লিঙ্গ-নির্বাচনমূলক গর্ভপাতকে ঘিরে সক্রিয়তার দুটি উদ্দেশ্য ছিল: লিঙ্গ নির্ধারণের পরীক্ষার বিরুদ্ধে একটি আইন পাস করা এবং বিষয়টি সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা।

"শুরু থেকেই, এটা স্পষ্ট হয়ে উঠল যে, যেহেতু এই প্রচারাভিযানটিতে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমর্থন পাওয়া যাবেনা, তাই আমাদের এই সামাজিক সমস্যাটি তুলে ধরার জন্য নতুন কিছু রূপের বিকাশ করতে হবে। তাই, পরীক্ষার বিরুদ্ধে মানুষের মনোভাবকে, বিশেষ করে কন্যা বা সাধারণভাবে নারীদের; যে নারীরা ছেলে পাওয়ার জন্য যে কোন কিছু ত্যাগ করতে পারে; চিকিৎসা সম্প্রদায় এবং অন্যান্য সচেতন ব্যক্তিকে প্রভাবিত ক'রে প্রচারণা (এর উপর কেন্দ্রীভূত)।

Post a Comment

0 Comments