জ্বলদর্চি

জঙ্গলমহলের লোকগল্প/ অহংকারী গাছ/সংগ্ৰাহক- পূর্ণিমা দাস/ কথক- বিশ্বনাথ দাস, গ্ৰাম- ডুমুরিয়া, থানা-নয়াগ্ৰাম, জেলা- ঝাড়গ্ৰাম

জঙ্গলমহলের লোকগল্প 

অহংকারী গাছ

সংগ্ৰাহক- পূর্ণিমা দাস 

কথক- বিশ্বনাথ দাস, গ্ৰাম- ডুমুরিয়া, থানা-নয়াগ্ৰাম, জেলা- ঝাড়গ্ৰাম 

বহুদিন আগের কথা। একটা জঙ্গলের ঠিক মাঝখানে দুটো বিরাট গাছ ছিল। একটা ছিল ডুমুর গাছ, আর একটা ছিল আম গাছ। আম গাছ ছিল স্বভাবে খুবই শান্তশিষ্ট ও হাসিখুশি। পাখিরা এসে তার ফল খেত, চড়ুই এসে তার ডালে বাসা বাঁধত, আর কোকিল তাকে গান শোনাত। আম গাছ সবাইকে তার কাছে আসার জন্য আহ্বান জানাত এবং পাখিদের সঙ্গে সঙ্গে সেও গান গাইত। এমনকি সে খুবই দয়ালু ছিল। তার ছায়ায় সে পথিকদের আশ্রয় দিত। এছাড়া ঝড় এলে সে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকত, যাতে পাখিদের বাসার কোনো ক্ষতি না হয়। 

কিন্তু ডুমুর গাছ একটুও দয়ালু ছিল না। সে নিজের চেহারা নিয়ে ব্যস্ত থাকত। আম গাছের থেকে লম্বা ও সবুজ হওয়ায় তার খুব অহংকার ছিল। সে কখনো পাখিদের তার ডালে বসতে দিত না। আর কোনো পথিক যদি তার ছায়ায় বসত তাহলে সে শুকনো পাতা পথিকের মাথায় ফেলে পথিককে তার কাছ থেকে তাড়িয়ে দিত। 

ডুমুরের এইরুপ আচরণ দেখে হাওয়া এসে তাকে বলল-“ডুমুর গাছ, তুমি কী নিয়ে এত গর্ব করো? সব গাছেরই ছায়া আছে একথা তোমার অজানা নয়। সব জেনেও তুমি সবার সঙ্গে এরকম ব্যবহার করো কেন?”

তখন ডুমুর বলে-“তা আছে যদি তো আমার ছায়ায় বসার কী দরকার শুনি? আসলে ওরা বসে কেন জানো। কারণ আমার মতো ছায়া এখানে কোনো গাছই দিতে পারে না।”

 হাওয়া তখন বলে-“না, তোমার সঙ্গে আমার কথা বলাই বেকার।”
🍂

সেই সময় সেখানে কয়েকটি পাখি আসে। তারা ডুমুর গাছের ডালে যেই না একটু বসতে যাবে অমনি ডুমুর গাছ তাদের বলে-“এই আবার চলে এল। যাও বলছি এখান থেকে যাও, আর গিয়ে ওই আম গাছে বাসা বানাও। তোমরা আমার ডালে বসলে আমার সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাবে।”

সব শুনে আম বলে-“কী সব বলছ কী ডুমুর? ওরা তো শুধু বাসা বানাতে চায়। কিন্তু তুমি তো ওদের বসতেই দাও না। ওরা কত সুন্দর, আর কী মিষ্টি গান গায়, উঃ আমার তো শুনেই মন-প্রাণ জুড়িয়ে যায়।”

তখন ডুমুর বলে-“ও হো, ওরা খুব বিরক্তিকর গান গায়। আর একটা কথা, আমার ডালে আমি কাকে বসতে দেব আর কাকে বসতে দেব না তা কী তুমি ঠিক করে দেবে? ওদের আমি বসতেও  দেব না আর বাসা বানাতেও দেব না। কারণ ওরা আমার ডাল নষ্ট করে দেবে। তোমার যদি এত দয়ার শরীর তাহলে তুমি ওদের বসতে দাও। কারণ তুমি ছোটো গাছ, বেঁটে গাছ। এছাড়া তুমি আমার মতো সুন্দরও নও। তাহলে তুমি ওদের বসতে দাও এবং বাসা বানাতে দাও।”

এই শুনে হাওয়া বলে-“মুখ সামলে কথা বলো ডুমুর। এইভাবে কাউকে বলতে নেই। এতে তার খুব কষ্ট হয়।”

তখন আম গাছ বলে-“না না হাওয়া, আমি কষ্ট পাইনি। কারণ বেঁটে হওয়া খারাপ না। আর আমি নিজেকে নিয়ে খুব খুশি। তাই কে কী বলল তাতে আমার কিছু যায় আসে না।”

এইভাবে দিন কাটতে থাকে। কিন্তু আম ও ডুমুর গাছের মধ্যে কিছুই বদলালো না। আম গাছ যেখানে সারাদিন পাখিদের সঙ্গে হাসি মজা করত। সেখানে ডুমুর গাছ কারোর সঙ্গে কথাই বলত না। 

একদিন এক ঝাঁক মৌমাছি সেই জঙ্গলে এল। রাণী মৌমাছির ডুমুর গাছটি দেখে তাদের মৌচাক বানানোর উপযোগী বলে মনে হল। তাই রাণী মৌমাছি তার সঙ্গীদের বলল-“সঙ্গীগণ, এই দেখতে পাচ্ছ ডুমুর গাছটা। এই গাছটি যেমন বড়ো তেমনি মজবুত বলে মনে হচ্ছে। তাই চল আমরা ওখানে গিয়ে মৌচাক বানাই।”

এইসব শুনে ডুমুর মৌমাছিদের বলে-“তোমরা ঠিক বলেছ, আমি অনেক বড়ো এবং মজবুত। কিন্তু তোমরা আর যেন কী একটা বললে এখানে মৌচাক বানাবে। না না তা হতে পারে না। কারণ আমি চাই না আমার এত সুন্দর ডালে চেটচেটে মধু লেগে থাকুক। এছাড়া তোমরা সারাদিন ভনভন করবে তা আমি সহ্য করতে পারব না। তাই অন্য জায়গা দেখ। এখন তোমরা এখান থেকে যাও আমার অনেক কাজ আছে।”

তখন রাণী মৌমাছি বলে-“তুমি তো একটা গাছ জঙ্গলের একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে আছ। তোমার আবার কিসের এত কাজ?”

ডুমুর বলে-“সে যাই হোক। কিন্তু আমার ডালে আমি মৌচাক বানাতে দেব না ব্যস।”

সব শুনে আম ডুমুরকে বলে-“ডুমুর ওরা মৌমাছি, প্রকৃতির সঠিক মাত্রা বজায় রাখার জন্য ওরা খুবই উপকারী। আর এখন ওদের মৌচাক বানাতে গাছের ডাল তো লাগবেই। আমরা যদি একে অপরকে সাহায্য না করি তাহলে তা প্রকৃতির জন্য অনেক বড়ো ক্ষতি।”

তখন ডুমুর বলে-“আঃ আমি এত কিছু শুনতে চাই না। আমি ওদের মৌচাক বানাতে দেব না, তাতে আমার সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাবে। তোমার যদি ওদের নিয়ে এত চিন্তা তাহলে তোমার ডালে ওদের মৌচাক বানাতে দাও। কারণ তুমি আমার মতো এত সুন্দর নও। তাই তোমার সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ারও কিছু নেই।”

আম গাছ ডুমুর গাছের কথায় খুব কষ্ট পেল। কিন্তু কোনো উত্তর দিল না। বরং সে মৌমাছিদের ডেকে বলল তারা যেন তার ডালে মৌচাক বানায়।

তখন রাণী মৌমাছি আম গাছকে বলে-“সত্যি আম গাছ তুমি খুব ভালো। আমরা তোমার ডালেই মৌচাক বানাব। উম্ কী মিষ্টি গন্ধ তোমার।”

আম গাছ বলে-“ধন্যবাদ রাণী মৌমাছি।”

এরপর মৌমাছিরা আম গাছে মৌচাক বানিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে লাগল। আম গাছ তাদের ভনভন আওয়াজে বা চেটচেটে মধুতে একটুও বিরক্ত হল না। বরং এইসব তার খুব ভালো লাগত। 

আর ওদিকে ডুমুর গাছ যাকে দেখে তার উপরই চিৎকার করতে থাকে। ফলে কেউ তাকে পছন্দ করত না।

কয়েক সপ্তাহ পরে দুজন কাঠুরিয়া জঙ্গলে এল। বাড়ি বানানোর জন্য তাদের কাঠ চাই। তাই তারা জঙ্গলে এসেছে। তারা প্রথমে আম গাছটা দেখে ভাবল এটাই কাটবে। কারণ তাদের কাজের জন্য এই গাছটা ভালো হবে। কিন্তু তাদের মধ্যে একজনের কিছু একটা নজরে পড়ল।

তখন সে অপর আরেকজন কাঠুরিয়াকে বলল-“দাঁড়াও ভাই, ওই দেখ এই গাছটায় একটা মৌচাক। আমরা যদি এই গাছটা কাটতে যাই তাহলে মৌমাছিরা হুল ফুটিয়ে দেবে।”

অপর কাঠুরিয়া তখন বলে-“হ্যাঁ ভাই, তুমি ঠিক বলেছ। চলো তাহলে আমরা অন্য একটা আম গাছ খুঁজি।”

এরপর দুজন কাঠুরিয়া অন্য একটি আম গাছ খুঁজতে বের হয়। তারা একটু এগিয়ে যেতেই ডুমুর গাছটি দেখতে পায়। গাছটা এত লম্বা দেখে তাদের গাছটি খুব পছন্দ হয়।

তখন দুজন কাঠুরিয়ার মধ্যে একজন আরেকজনকে বলে-“চল ভাই, আমরা এই ডুমুর গাছটাই কাটি। কারণ এটি খুব মজবুত বলে মনে হচ্ছে। চল এটি আমার একেবারে গোড়া থেকে কেটে নিয়ে যাই।”

এরপর তারা দুজনে মিলে ডুমুর গাছটি গোড়া থেকে কাটতে শুরু করে।

এদিকে ডুমুর গাছ কাঁদতে শুরু করল। কারণ সে এই জঙ্গল ছেড়ে যেতে চায় না। সে সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকে। কিন্তু কেউ তাকে সাহায্য করতে আসে না। তখন তার মনে পড়ে যে সে সবার সঙ্গে কী ব্যবহার করেছিল। 

যন্ত্রণায় ডুমুর গাছ চিৎকার করে বলতে থাকে -“আঃ আমার খুব লাগছে। ওরা আমাকে নিয়ে কী করতে চায়। কেউ আছো দয়া করে আমাকে বাঁচাও।”

ডুমুর গাছের পাশে থাকা আম গাছ সব দেখছিল। সে ডুমুরের কষ্ট আর সহ্য করতে পারল না। তখন আম গাছ মৌমাছিদের ডাকতে লাগল। সে বলল-“এই যে মৌমাছিরা। তোমরা কী জেগে আছো।”

আম গাছের ডাক শুনে রাণী মৌমাছি এসে বলল-“কী হয়েছে আম গাছ, আমাদের ডাকছ কেন?”

তখন আম গাছ বলে-“ডুমুরের বিপদ হয়েছে রাণী মৌমাছি। ওকে আমাদের সাহায্য করতে হবে।”

এই শুনে রাণী মৌমাছি বলে-“ছাড়ো তো, আমরা কেউ ওকে সাহায্য করব না।  কারণ ও জঙ্গলের সবার উপরেই রেগে থাকে, সবাইকে অপমান করে। তাই কেউ ওকে সাহায্য করবে না।”

আম গাছ তখন বলে-“তুমি এটা কী বলছ রাণী মৌমাছি?”

সেই সময় হাওয়া এসে বলে-“মৌমাছি ঠিকই বলেছে আম। কেউ ওকে সাহায্য করবে না। ওকে সাহায্যই বা কেন করবে। ও যদি তার ডালে মৌমাছিদের মৌচাক বানাতে দিত তাহলে কাঠুরিয়ারা আজ ওকে কাটত না। তাই ও আজ যে শাস্তি পাচ্ছে এটা নিজের ভুলের জন্য।”

তখন আম গাছ বলে-“না না হাওয়া এটা হয় না। ডুমুর যা করেছে আমরা তা করতে পারি না। কেউ আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলে আমাদেরও যে তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতে হবে এরকম কোনো কথা নেই। আর এই জঙ্গল আমাদের সবার বাড়ি। সবাই এখানে থাকতে চায়। তাই ডুমুরের যখন আমাদের প্রয়োজন তখন আমরা তাকে একা ছেড়ে দিতে পারি না।”

রাণী মৌমাছি তখন বলে-“হ্যাঁ হাওয়া, আম ঠিক বলেছে। ডুমুরকে আমাদের সাহায্য করতে হবে।”

এরপর রাণী মৌমাছি তার সঙ্গীদের ডাকে। সে বলে-“এই যে মৌমাছির দল, সব বেরিয়ে এস। আমাদের ডুমুর গাছের সাহায্য করতে হবে।”

রাণী মৌমাছির ডাকে মৌচাক থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছিরা বেরিয়ে আসে। এরপর তারা কাঠুরিয়াদের কাছে গিয়ে তাদের চোখে, মুখে, কানে, নাকে হুল ফোটাতে থাকে। তখন কাঠুরিয়ারা সেখান থেকে চলে যায়।

কাঠুরিয়ারা চলে যাওয়ার পর ডুমুর গাছ নিজের ব্যবহারের জন্য খুবই লজ্জা পায়। সে বলে-“আমাকে ক্ষমা করো মৌমাছিরা। আমি তোমাদের সঙ্গে যা ব্যবহার করেছি তারপরেও তোমরা আমাকে সাহায্য করলে। এর জন্য তোমাদের আমি ধন্যবাদ জানাই।”

তখন রাণী মৌমাছি বলে-“আমাদের ধন্যবাদ দিও না ডুমুর, আম গাছকে দাও। ওর সঙ্গে তুমি সবসময় খারাপ ব্যবহার করো। কিন্তু আজ তোমাকে বাঁচানোর জন্য ওই আমাদের রাজি করিয়েছে।”

ডুমুর গাছ তখন বলে-“সত্যি! আম আমি সত্যি খুব দুঃখিত। আমি নিজের ভুল বুঝতে পেরেছি। আমি বুঝেছি আমাদের সবার ভেতরেই বিশেষ গুণ রয়েছে, আমরা সবাই বিশেষ। তাই আমি তোমাদের সবাইকে কথা দিচ্ছি আজ থেকে আমি আর কোনোদিন নিজেকে নিয়ে অহংকার করব না। আর কারোর সঙ্গে খারাপ ব্যবহারও করব না। তোমরা সবাই আমাকে ক্ষমা করো।

ডুমুর গাছ উচিত শিক্ষা পেল। এরপর থেকে ডুমুর গাছ হাওয়া আর পাখিদের উপর চিৎকার করত না। সেও আম গাছের মতো চড়ুইদের তার ডালে বাসা বানাতে দিত, পাখিদের গান গাইতে দিত। এমনকি পথিকদের তার ছায়ায় বসতে দিত। আর আম গাছকেও আর অপমান করত না। ডুমুর গাছ এবং আম গাছ একে অপরের বন্ধু হয়ে উঠল।

Post a Comment

1 Comments


  1. জঙ্গলমহলের লোকগল্প: "অহংকারী গাছ"

    সংগ্রহ: পূর্ণিমা দাস

    কথক: বিশ্বনাথ দাস, গ্রাম-ডুমুরিয়া, থানা-নয়াগ্রাম, জেলা-ঝাড়গ্রাম

    পর্যালোচনা: চন্দন ভট্টাচার্য্য


    পূর্ণিমা দাস কর্তৃক সংগৃহীত এবং বিশ্বনাথ দাস কর্তৃক কথিত "অহংকারী গাছ" গল্পটি জঙ্গলমহলের লোককথার এক অমূল্য সম্পদ। এই সরল এবং মনোগ্রাহী আখ্যানটি কেবল শিশুদের জন্য একটি শিক্ষামূলক গল্প নয়, বরং এটি মানব চরিত্রের গভীর দিকগুলো তুলে ধরে। গল্পটির মূল বিষয়বস্তু হলো অহংকার ও বিনয়ের মধ্যেকার দ্বন্দ্ব এবং এর ফলাফল।
    গল্পের দুটি প্রধান চরিত্র—আম গাছ ও ডুমুর গাছ—একে অপরের সম্পূর্ণ বিপরীত। আম গাছটি বিনয়, দয়া এবং সহানুভূতির প্রতীক। সে নিঃস্বার্থভাবে তার ফল, ছায়া এবং আশ্রয় দিয়ে সবার মন জয় করে নেয়। অন্যদিকে, ডুমুর গাছটি তার উচ্চতা ও সৌন্দর্যের অহংকারে মত্ত। সে পাখি, পথিক এমনকি মৌমাছিদেরও ঘৃণা করে। এই অহংকারী স্বভাবের কারণে সে একাকী এবং সবার কাছে অপ্রিয় হয়ে ওঠে।
    গল্পের নাটকীয় মুহূর্ত আসে যখন দুজন কাঠুরিয়া জঙ্গলে আসে। তাদের বাড়ি তৈরির জন্য কাঠ দরকার। আম গাছের ডালে মৌমাছিদের মৌচাক দেখে তারা গাছটি কাটতে ভয় পায় এবং এর বদলে অহংকারী ডুমুর গাছকে বেছে নেয়। এটি গল্পটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মোড়, কারণ ডুমুরের অহংকারই তার বিপদ ডেকে আনে। বিপদের মুহূর্তে ডুমুর গাছ যখন সাহায্যের জন্য চিৎকার করে, তখন কেউ তার পাশে দাঁড়ায় না। কিন্তু দয়ালু আম গাছ, তার প্রতি ডুমুরের খারাপ ব্যবহার সত্ত্বেও, মৌমাছিদের ডেকে ডুমুরকে বাঁচানোর অনুরোধ করে। মৌমাছিরা আম গাছের কথায় রাজি হয়ে কাঠুরিয়াদের তাড়িয়ে দেয়।
    এই ঘটনা ডুমুর গাছের জীবনে এক বড় পরিবর্তন নিয়ে আসে। সে তার ভুলের জন্য অনুতপ্ত হয় এবং বুঝতে পারে যে সত্যিকারের সৌন্দর্য বাইরের রূপে নয়, বরং ভেতরের গুণে। সে তার অহংকার ত্যাগ করে এবং আম গাছের মতো দয়ালু হয়ে ওঠে। গল্পটি খুব সুন্দরভাবে এই বার্তা দেয় যে, পারস্পরিক সহযোগিতা, দয়া এবং বিনয় আমাদের জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এটি কেবল একজন ব্যক্তিকে নয়, বরং একটি সমাজকেও সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে।
    পূর্ণিমা দাসের এই সংকলন এবং বিশ্বনাথ দাসের কথকতার গুণে গল্পটি তার নিজস্ব মাটির গন্ধ বহন করে। এটি প্রমাণ করে যে লোকসাহিত্য আজও আমাদের জীবনে প্রাসঙ্গিক এবং গুরুত্বপূর্ণ নীতিশিক্ষা প্রদান করে।

    চন্দন ভট্টাচার্য্য
    কবি, লেখক, গল্পকার ও সমালোচক

    ReplyDelete