অসম্পূর্ণ তার গন্ধ
এখানে রঙের বালতি,
এখানে অর্ধেক মুখ,
অর্ধেক আকাশ।
কাদা শুকোতে শুকোতে
আমাদের ভেতরের ঈশ্বরী
বেরিয়ে আসছে ধুলো মেখে—
এক হাতে শঙ্খ, অন্য হাতে শূন্যতা।
তুমি যদি বলো, পূজো আসছে,
আমি বলব—
আকাশে এখন শুধু অসম্পূর্ণতার গন্ধ,
ভাঙা প্রতিশ্রুতির মতো
ঝুলছে ঘরে ঘরে।
ঈশ্বরের অভিনয় ঘর
প্রতিমার চোখ নেই এখনও,
তবু সে তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে।
কারও গায়ে সবুজ রং,
কারও শরীরে প্লাস্টিকের সাদা।
কেউ বসে আছে হাঁটু গেড়ে—
কেউ যেন বলছে,
“আমাকে পূজা করো না,
আমাকে ছেড়ে দাও।”
তবু আমরা আবার
বালতি নামাচ্ছি, রঙ তুলছি,
পৃথিবীর সমস্ত ভাঙাচোরা
ঢেকে দিতে চাই একরাশ রঙে।
এ যেন এক অভিনয়,
যেখানে ঈশ্বরও
স্টেজে নামতে লজ্জা পায়।
🍂
অপেক্ষার নাম প্রেম
আমি দেখেছি,
অর্ধেক আঁকা দেবীর চোখের দিকে তাকিয়ে
একটা শূন্য নীল হাওয়া ঢুকে পড়ে ঘরে।
কোনও বালক হাত বাড়িয়ে তুলছে রঙের পাত্র,
কোনও বৃদ্ধ কারিগর বসে আছে ক্লান্তিতে।
তাদের ঘামে ভিজে ওঠে প্রতিটি শরীর,
যেন একেকটা নদী বইছে প্রতিমার তলদেশে।
এই অসম্পূর্ণতাই কি আসলে পূর্ণতা?
যখন উৎসব আসবে,
তখন দেবী দাঁড়াবেন শোভিত রূপে,
কিন্তু আজ—
তিনি কেবল রঙ মাখা মানুষের স্বপ্ন,
যেন অপেক্ষার নাম প্রেম।
অর্ধেক আলো, অর্ধেক শরীর
রাতের ভেতর থেকে কেউ ডেকে উঠল—
“তুমি কি আমায় গড়ে দেবে?”
আমি তখন দেখলাম,
বৃষ্টির জলে ভিজছে অর্ধেক প্রতিমা,
অর্ধেক কাদা, অর্ধেক মানুষ।
তুমি কি কখনও লক্ষ্য করেছো—
একটি ছাইপাশ থেকে জন্ম নেয় রঙ,
একটি অসমাপ্ত হাত থেকেও আসে ছোঁয়া?
আমরা যখন দুঃখে ভিজে যাই,
আমাদের কপালে জ্বলে ওঠে সিঁদুরের রেখা,
এ যেন ভোরের আলোর মতো হঠাৎ।
দেবী তখনো আসেননি,
কিন্তু তাঁর নূপুরের শব্দ
ভেসে আসছে ভাঙা ছাদের ফাঁক দিয়ে।
নদীর কাছে শেষ উচ্চারণ
নদী কি জানে, কত মুখ ভেসে আসে তার বুকে?
রঙের ভেতর ডুবে থাকা প্রতিমা
একদিন হঠাৎই ঘুমিয়ে পড়ে।
আমরা বলি— বিসর্জন,
কিন্তু এ তো আসলে
ঈশ্বরের ফিরে যাওয়া কাদার ভেতর।
শিশুরা তখনও শাঁখ বাজায়,
কোনও বৃদ্ধ হাত জড়িয়ে ধরে নদীর ঢেউ।
আমি তখন দেখি—
প্রতিমার চোখ নড়ে উঠল এক মুহূর্তের জন্য,
কোনও অদ্ভুত নীল পাখি উড়ে গেল আকাশে।
কে জানে, এ কি সত্যি?
না কি ভাসমান আলোয় চোখের ভুল?
নদীর বুক তখন শব্দহীন—
শুধু কাদার ভেতর গলে যাচ্ছে
আমাদের অসমাপ্ত ঈশ্বর।
4 Comments
ভালো লাগল
ReplyDeleteঅন্যরকম লাগলো কবিতা গুলো
ReplyDeleteসুন্দরী হয়েছে কবিতা গুলো।
ReplyDeleteএক কথায় বলতে গেলে অসাধারণ।
ReplyDelete