Posts

অরুণ দাসের কবিতা ও কবিতাভাবনা/ঋত্বিক ত্রিপাঠী

Image
অরুণ দাসের কবিতা ও কবিতাভাবনা ঋত্বিক ত্রিপাঠী  গত তিন দশক ধরে কবিতা ও কবিতা ভাবনায় আমরা ধরতে চেয়েছি অরুণ দাসকে। তিনি কবিতা লেখেন। পাশাপাশি কবিতার গতিপ্রকৃতি নিয়ে চর্চা করেন। তাঁকে ধরতে চেয়েছি, আনন্দের বিষয়। ধরতে পারিনি। এ ব্যর্থতা আমার মতো পাঠকের। কেন পারিনি! তাঁর পদ্য আত্মস্থ করতে চাই নিরপেক্ষ এক জীবন দর্শন। তাঁর গদ্যের জন্য চাই আধুনিক পাঠচর্চা। কবিতায় তিনি প্রেমের কথা বলেন। তার থেকেও বড় কথা তিনি নিজস্ব ভাষায় পদ্য লেখেন। সহজ সরল ভাষা। উদাস হয়ে, নির্লিপ্ত হয়ে জীবনের স্বাদ নেন, শ্বাস নেন তিনি। "চূর্ণি, আমাদের একটি সাদা পাতা আছে/ কোমল নদীর শরীরে বেড়ে ওঠা চাঁদ /ঘনরাতে তার শুকিয়ে যাওয়া চোখের জলে/ লেগে থাকে শিশিরের দাগ।" এই তাঁর প্রায়োজনিক কথা। জরুরি কথা। চেতনার চূর্ণীর কথায় আসে সহজেই  অতিচেতনা(নদীর শরীরে চাঁদ বড় হচ্ছে)। আর একটি কবিতায় লেখেন- "এই যে বিষাদসিন্ধু দিলাম তোমায়/একদিন/অনুভূতি হারানো সব মৃতপাখিরা ছুঁয়ে যাবে তার জল।" পরম আশ্চর্যময় হয়ে ওঠে তাঁর চেতন ও অবচেতনের দ্বন্দ্ব। দ্বন্দ্ব এখানে মিলন। চিত্রকল্প নিছক চিত্রকল্প থাকে না। হয়ে ওঠে কবিতার শরীর। শরীর স

মেদিনীপুরের রসায়ন বিজ্ঞানী ড. নন্দগোপাল সাহু : সাধারণ থেকে 'অসাধারণ'-এ উত্তরণের রোমহর্ষক কাহিনী - ৫/পূর্ণচন্দ্র ভূঞ্যা

Image
বিজ্ঞানের অন্তরালে বিজ্ঞানী ।। পর্ব ― ৩৬ মেদিনীপুরের রসায়ন বিজ্ঞানী ড. নন্দগোপাল সাহু : সাধারণ থেকে 'অসাধারণ'-এ উত্তরণের রোমহর্ষক কাহিনী - ৫ পূর্ণচন্দ্র ভূঞ্যা স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে এক দীর্ঘ কোয়ান্টাম লাফ  দিগন্তরেখা যেখানে আকাশে মেশে, গুঁড়ো গুঁড়ো স্নো পাখা লাগিয়ে উড়ে বেড়ায় হাওয়ায়; কোথায় সমুদ্র আর কোনটা নীলাকাশ বোঝা দুষ্কর সেখানে। যতদূর চোখ যায়, শুধু ধবধবে সাদা। দুধ সাদা বরফের চাদর ঢাকা, না-কি আকাশে ভাসমান সাদা পেঁজামেঘ নেমেছে মাটিতে― প্লেনের জানলা দিয়ে দেখে একলপ্তে বোঝা মুশকিল। প্লেন ল্যান্ড করতেই মালুম হল ব্যাপারখানা। এ মাঝ-আকাশের মেঘমালা নয়; বরং অতীব ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় জমে যাওয়া বরফের আচ্ছাদন! তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে। রেকর্ড শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থেকে কমে মাইনাস কুড়ি ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের আশপাশে ঘুরপাক খাচ্ছে উষ্ণতা। সময়টা ২০০৪ সালের জানুয়ারি মাস। কানাডায় বৎসরের শীতলতম মরশুম এখন। বিমানবন্দরের টারম্যাকে হাঁটু অব্দি বরফের পুরু স্তর। আলাদা করে রানওয়ে নজরে পড়ে না। শুধু বরফ আর বরফ। বিমানবন্দরের ল্যান্ডিং, বিল্ডিং, সিগন্যাল টাওয়ার, ওয়াচ টাওয়ার, মাঠ, ক্ষেত, রাস্তা

আফ্রিকার (তাঞ্জানিয়া) লোকগল্প /(সিংহ-ভাগ)/ চিন্ময় দাশ

Image
দূরদেশের লোকগল্প—৪৯ :  আফ্রিকা (তাঞ্জানিয়া)  সিংহ-ভাগ  চিন্ময় দাশ  আফ্রিকা মানেই বন-পাহাড়ের দেশ। আর সে দেশের তাঞ্জানিয়ার কথা আমরা অনেকেই জানি। সেরেঙ্গেটি ন্যাশনাল পার্ক, আর আফ্রিকার সবচেয়ে উঁচু ও বিখ্যাত কিলিমাঞ্জারো পাহাড়ের জন্য এই রাজ্যটি সারা পৃথিবীতে বেশ জনপ্রিয়। হাতি, সিংহ, চিতাবাঘ, বুনো মহিষ, গন্ডার, লম্বা গলা জিরাফ -- এইসব বড় চেহারার জীব দেখা যায় তাঞ্জানিয়ায়।  কিন্তু বড়রা আছে বলে, ছোটরা কি নেই সেখানে? আছে, আছে-- সবাই আছে। বরং সংখ্যায় একটু বেশিই আছে এই ছোটরা। তা, সবার কথা এখানে বলে আর কী হবে? আমরা বরং শেয়ালের কথাই বলি।  সবাইকে ছেড়ে, শেয়াল কেন-- এমনটা কেউ বলে যদি, উত্তর ভারী সোজা। শেয়ালের বুদ্ধি যেমন বেশি, তেমনি ধূর্তামিও। ধূর্তামীতে শেয়ালের জুড়ি মেলা ভার। তবে, কখনও কখনও তাকেও ফাঁদে পড়ে যেতে হয়। একদিনের কথা বলি। কিলিমাঞ্জারো পাহাড়ের তলায় এক বন। একেবারে পাহাড়ের গা ঘেঁষে। সেখানে পাথরের খোঁদলে থাকত একটা শেয়াল। একটা বুনো গাধাও থাকতো কাছাকাছি। দুজনেরই হয়েছে ভারী ফ্যাসাদ। খাবারের জন্য বনের ভিতরে ঢুকতে সাহস হয় না তাদের। কিছুদিন হল এক সিংহ এসে ডেরা গেড়েছে সেখানে। যা বিশাল চেহা

ছোটোবেলা বিশেষ সংখ্যা -৪৭

Image
সম্পাদকীয়, ছোটোবন্ধুরা, শুনলে অবাক হয়ে যাবে, ১৯৪৭ সালের  ১৫ ই আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসের পরও বহুবার দেশকে বহিঃশত্রুর হাত থেকে বাঁচাতে দেশের বীর সন্তানরা প্রাণ দিয়েছেন। তার একটির কথা আজ অবশ্যই মনে করিয়ে দিয়েছেন  চিত্রগ্রাহক নীলাব্জ ঘোষ আঙ্কেল। তাঁর উপহার দেওয়া ছবিটি কার্গিল সীমান্তের। টানা দুই মাস পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ চলার পর ১৯৯৯ সালের ২৬ শে জুলাই শেষ হয়েছিল কার্গিলের যুদ্ধ। এই যুদ্ধে প্রাণ দিয়েছিলেন ৫২৭ জন ভারতের অমর জওয়ান। হ্যাঁ, তাঁরাও শহিদ ক্ষুদিরামের মতো অমর শহিদ। ক্ষুদিরামের কথায় মনে পড়ে গেল, এবারের সংখ্যাতে মুক্তি জেঠু তোমাদের ক্ষুদিরামের কথা বলেছেন। সন্দীপন আঙ্কেল স্বাধীনতাকে স্মরণ করে খুব সুন্দর কবিতা লিখেছেন। জানি কার্গিলের ছবি দেখে তোমাদের কাশ্মীর বেড়াতে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে। উঁহু, একদম মন খারাপ করবে না। তারচেয়ে বহ্নিশিখা আন্টির লেখা পড়ে পুরীতে মানস ভ্রমণ করে নাও। তবেই না সন্দীপ জেঠুর গল্পের রিম্পার মতো স্কুলে যেতে পারবে। তবেই না বন্দনা আন্টির কবিতার মতো বলতে পারবে, আমরা করব জয় নিশ্চয়। একি তোমরা চুপ কেন এতক্ষণ? নিশ্চয়ই ছোট বন্ধু সৃজিতার মতো জম্বি গেম খেলায় মেতে

রাখীবন্ধন : মিলনের উৎসব /প্রসূন কাঞ্জিলাল

Image
রাখীবন্ধন : মিলনের উৎসব   প্রসূন কাঞ্জিলাল  ভাই-বোনের ভালোবাসা ও অটুট সম্পর্কের উৎসব রাখী বন্ধন। কিন্তু জানেন কী, শিব-সহ অন্যান্য দেবতাদেরও বোন আছে? রাখীবন্ধন উপলক্ষে জানুন তাঁদের অজানা তথ্য। রাখীবন্ধন উপলক্ষে আসুন জেনে নেওয়া যাক দেবতাদের বোনেদের নিয়ে অজানা উপাখ্যান ,যেমন অনেকে বলে থাকেন যমুনা তাঁর ভাই যমের হাতেও রাখি বেঁধেছিলেন এই দিন। আবার অনেকে বলেন দ্রৌপদীও শ্রীকৃষ্ণের হাতে রাখি বেঁধেছিলেন। পুরাণে আছে একবার কৃষ্ণের আঙুল কেটে যায়, দ্রৌপদী তাঁর গায়ের কাপড় ছিঁড়ে তা বেঁধে দিয়েছিলেন কৃষ্ণের আঙুলে। এর বদলে কৃষ্ণ কথা দেন, যে কোনও বিপদেই তিনি দ্রৌপদীকে রক্ষা করবেন। আবার অনেকে বলে থাকেন শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমার দিনে হতদরিদ্র নারীর বেশে বালির কাছে আশ্রয় চান লক্ষ্মী। বালি নিজের প্রাসাদের দরজা খুলে দেন তাঁর জন্য। খুশি হয়ে লক্ষ্মী, কাপড়ের টুকরো বেঁধে দেন বালির হাতে।  কথিত আছে গণেশের দুই পুত্র, শুভ ও লাভ বায়না ধরেছিল নিজেদের বোনের হাতে তারা রাখি পরতে চায়। কিন্তু কোনও উপায় নেই। শেষে গণেশের দুই স্ত্রী, ঋদ্ধি ও সিদ্ধির অন্তর থেকে নির্গত অগ্নি সৃষ্টি করা হয় সন্তোষীকে। তার হাত থেকে রাখি

নাস্তিকের ধর্মাধর্ম -- পর্ব--(১৮)/সন্দীপ কাঞ্জিলাল

Image
নাস্তিকের ধর্মাধর্ম ---- পর্ব--(১৮) সন্দীপ কাঞ্জিলাল ধর্মের মাহাত্ম্য  লিউ টলস্টয় (খ্রিঃ ১৮২৮-১৯১০) ৮২ বছরের দীর্ঘ জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে সভ্যতা শব্দটির একটি সংজ্ঞা দিয়েছেন। সেই নিরিখেই মানুষ ও ধর্মকে তা প্রাচ্যেই হোক বা পাশ্চাত্যেই হোক, বিচার করা যেতে পারে। কারণ সব ক্ষেত্রেই মানুষের জীবনই একমাত্র বিচার্য বিষয়। সংজ্ঞাটি হলো: "The aim of civilization is to enable us to get enjoyment out of everything." মানুষের সুখ কিসে? প্রতিটি মানুষের যাবতীয় কাজ বা উদ্যোগের পেছনে তার ব্যক্তিগত সুখ চিন্তা নিত্য বর্তমান।  ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থতা ছাড়া অন্য বিশেষ কোনো অভিপ্রায়ের জোর দানা বাঁধতে পারে না। অন্য অভিপ্রায় বলতে নিজের বাইরে পরার্থপরতার ভাবনা। সুখী মানুষই নিজের প্রয়োজন মিটিয়ে এই ভাবনায় ভিড়তে পারে। কিন্তু নিজেকে বাঁচাতে তার নিত্য সংগ্রাম ঘরে ও বাইরে। মানুষের সুখে দুঃখে, দুই অবস্থাতেই প্রশ্ন, আমি কে এবং কি জন্য আমি আছি বা থাকবো? সুখে থাকতেও তাকে সংগ্রাম করতে হয়, দুঃখে পড়লেও এই সংগ্রাম অনিবার্য হয়ে পড়ে। ধর্মের আশ্রয় অথবা রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে আশ্রয় কোনটাই তাকে স

ইউ জি সির সাম্প্রতিক নির্দেশিকা - সমতা না সমস্যা?/সজল কুমার মাইতি

Image
ইউ জি সির সাম্প্রতিক নির্দেশিকা  - সমতা না সমস্যা? সজল কুমার মাইতি এই অতিমারির প্রকোপ শেষ হতে না হতে নতুন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের হাত ধরে আবার প্রবলভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। ফেজ ওয়ান থেকে ফেজ টু প্রবলতর হয়ে দেখা দিচ্ছে। আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুর সংখ্যা সবেতেই আগের রেকর্ড ভেঙে ugc-recent-guidelines-equality-or-problems নতুন রেকর্ড গড়ে তুলছে।  দিশাহারা মানুষ। ধনী দরিদ্র এক সারিতে এসে দাঁড়িয়েছে। ধনী দেশকে ও অসহায় লেগেছে। দরিদ্র দেশের কথা যত কম বলা তত ভাল। আমাদের দেশে উচ্চ শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে নীতি নির্ধারণ ও প্রয়োগের সর্বোচ্চ সংস্থা ইউ জিসি বা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি আয়োগ। সময় সময় এই আয়োগ উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন নীতি ও নির্দেশকা প্রকাশ করে। দেশের সকল উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় তা মেনে চলে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ক্ষেত্রে অটোনমি বা স্বাধিকার বজায় রাখার কথা বলা হয়ে থাকে। বাস্তবে তার প্রয়োগ হতে খুব একটা দেখা যায় না। তবে ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে। সমতার সুযোগ  16 জুলাই, 2021 শে ইউ জি সি পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে যে নতুন নির্দেশকা বের করেছে সেটাই এই বিষয়ে সাম্প্রতিকতম