গুচ্ছ কবিতা
তথাগত বন্দ্যোপাধ্যায়
বিচ্ছেদ
চুপ করে যাও তুমি কবিতা ।
অভাবের ঘরে, কেউ কবিতা কি পড়ে?
সামনে মাধ্যমিক, উচ্চ-মাধ্যমিক, জ্বালিও না আর,
তারপরও আছে কতো কঠিন পরীক্ষা দেওয়ার!
এসো না এখন কাছে এসো না ।
পেটে ভাত জোগাতে তো পারো না,
টাকা, বাড়ি, গাড়ি দিতে পারো না,
কানে ফিসফিসিওনা, যাও চলে,
এই সম্পর্কটা যেও ভুলে ।
যেচে আর কোনোদিনও পোড়ো না গায়ে,
আমায় দাঁড়াতে হবে যে নিজের পায়ে ।
নতুন বিষণ্ণতা
হতে চায় সবাই রাজা, সবাই রানী, ফেসবুকীয় কাহিনী।
হচ্ছেও অনেকে। আমি জনপ্রিয় হচ্ছিনা! বিরক্তি।
বয়স হয়ে যাচ্ছে, অথচ বিখ্যাত হচ্ছিনা! বিরক্তি।
অনেকেই দুঃখ লেখে। আমিও আমার দুঃখ লিখি।
এমনকি তা অন্যের চেয়ে বেশি গভীর জানিয়েও লিখি,
অথচ বেশি কেউ সত্যি সত্যি দুঃখিত হচ্ছেনা! বিরক্তি।
অসফল আমি সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটেও!
বিষণ্ণতা আর বিষণ্ণতা...
অলিখিত পুরুষ-জীবন
কৈশোর শেষ হতে না হতেই কানে আসে-
এতো বয়সের মধ্যে চাকরি, এতোর মধ্যে বিয়ে আর অতোর মধ্যে বাচ্চা,
নইলেই রাস্তার মোড়ে মোড়ে নিন্দুক মোতায়েন করা আছে,
শুনে যেতে হয়, পুরুষকে মেনে নিতে হয়।
আগেই চাকরি পাওয়া প্রেমিকাকে মাঝে সাঝে যেতে দিতে হয়,
কোত্থাও লেখা নেই তবু হায় এমনই বাঁধন হতে হয়!
তৃতীয় বিশ্বের কোনো দেশে আজো এমনই পুরুষ-জীবন হতে হয়।
এতো জনসংখ্যায় কারো স্বপ্ন হারালে জানি –
কোনো নিম্নমানেই আর নিম্নদামেই সন্তোষ পেতে হয়,
আপোশ করতে হয় পেট চালানোর দায়ে, আপোশ করতে হয়।
রাজদ্রোহী
ভালোবাসেন বিড়াল প্রজাতিকে, শুনলাম।
বিড়াল নয়, পুষেছেন তার সবচেয়ে বড়, হিংস্র, শিকারী প্রজাতি, বাঘ।
যার কামড়ের জোর হাজার পাউন্ড প্রতি বর্গ ইঞ্চি প্রজার গায়ে,-
তা যে নারকীয় নয়,-
রাজকীয় ভাব আনে সাড়ে তিন ইঞ্চির শ্বদন্তও, এই জানলাম।
ওর গর্জনের কৃপায় আজ আপনিই এ রাজ্যের রাজা।
প্রজা ভয় করে রাজাকে, আর রাজার ভয়মিশ্রিত শ্রদ্ধা বাঘের প্রতি,
এইতো রাজ্যের নিয়ম!
ওকে সময়ে কাঁচামাংস খেতে দিতে ভুলে যাওয়ার আগে পর্যন্ত-
আপনিই আমাদের নায়ক, মানলাম।
আরও পড়ুন
0 Comments