জ্বলদর্চি

নির্বাসিতের কান্না: ২৫ বছর পরেও(তসলিমাকে নিজের দেশ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হোক) /গৌতম বাড়ই

নির্বাসিতের কান্না: ২৫ বছর পরেও
(তসলিমাকে নিজের  দেশ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হোক) 

গৌতম বাড়ই 


অপরাধ কী? মেয়েটা বড্ড সোজাসাপ্টা লেখে। আর সোজাসুজি কলম দাগে। লজ্জা শরম তো নেই আর অকুতোভয়। মেয়েছেলের বাপু কিছু বিধিনিষেধ মানতেই হয়। বললেই হবে পুরুষদের সমকক্ষ!

  হরমোনাল পরিবর্তনগুলো মানব শরীরের দুটি ভাগে দু- রকম। ঘুরিয়ে বললেই হয় পৃথিবী চলবে পুরুষদের অঙ্গুলি হেলনে। এই যে আমরা খামোকা চিল্লিয়ে মরি, শহুরে আমজনতা, বুদ্ধিবেচা  নাগরিক, গণতন্ত্র আর মানব অধিকার এবং মুক্তচিন্তার অধিকার নিয়ে, সব লোক দেখানো! তাদের ভাবখানা দেখ আমি কত শুভবুদ্ধি সম্পন্ন, আমি ঠোঁটের কেতাবী সিগ্রেটের ধোঁয়ায় এরিস্টটল, লোরকা, ফুকো, তলস্তয় অবলীলায় বলি। এই বাঙালির হৃদয় ভেঙ্গে আর একটি যে জন্ম নেওয়া দেশ, সে দেশের যে মুখের ভাষা, মায়ের ভাষা  আমারও তাই। শুধু মাত্র মুক্তচিন্তায় লেখার অপরাধে স্বভূমি, স্বজনহারা  আজ দীর্ঘ পঁচিশ বছরের ওপর। তার যে যন্ত্রণাকাতর চিঠি আর আর্তি সেদেশের সর্বেসর্বা প্রধানমন্ত্রী এবং তারচেয়েও বড় কথা একজন মহিলা রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে, আজ দু'বছর হল তসলিমার জন্য তার মন ছিটেফোঁটা গলেনি। 


ক্লিক করে পড়ে নিন 👇
দীর্ঘ কবিতা / তসলিমা নাসরিন
  
  এখনও নির্বাসিতের যন্ত্রণাদায়ক জীবন কাটাচ্ছেন তিনি। আসলে কোথাও যেন আমরা সেই মৌলবাদের কাছেই পদানত। ধর্ম রাষ্ট্রকে পরিচালনা করে। যতই আমরা পাকিস্তান আর আফগানিস্তান দেখাই না কেন, আমরাও কী সবাই মৌলবাদের কাছে টিকিটা বেঁধে রাখিনি? একজন নারী তার জীবনের খোলামেলা আলোচনা করতে পারেন না? তার মেয়েবেলা দিয়ে সমসাময়িক সমাজ নিয়ে লিখতে পারেন না? খুব লজ্জা! তাই না। আর পুরুষ হলে সাতখুন মাপ। 

  সে লেডি চ্যাটার্লীজ লাভার বা  বিবর যাই হোক না কেন। বইগুলো নিষিদ্ধ হয়েছে, মামলা হয়েছে, লেখকদের তো নির্বাসন করা হয়নি। অর্থাৎ পুরুষ হলে বাক্- স্বাধীনতা বা মুক্তচিন্তার লেখা এইসবে হাজার কন্ঠ হাজার জনগণ এগিয়ে আসবে, নারীর জন্য না এবং না। ইস্ , এতটা উদার হয়ে নিজের সর্বনাশটা করে মরি। 

  তাই একজন নারীর পঁচিশ বছরের কান্না আমাদের অন্তর ভেজায় না, ভেজাবে আর কোটি মোমবাতি জ্বলবে যেদিন নারীটি আরও কোন দূরদেশে ব্যথা নিয়ে রওনা হবে। আর ফিরে আসবে না। তসলিমা নাসরিন এ শতাব্দীর সেরা সাহসী লেখিকা এবং নারী আমাদের কাছে। 

  তাই আমাদের আবেদন তসলিমাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হোক। সঙ্গে তসলিমার চিঠিটি দেওয়া হল। অনুরোধ আপনারাও চিঠিটি একবার পড়ে দেখুন। এ বেদনা ভরা আর্তি! কত মর্মান্তিক! 

লিঙ্কটি খুলে চিঠিটি পড়ুন। 

জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇
আরও পড়ুন 

Post a Comment

0 Comments