জ্বলদর্চি

প্রয়াত নারায়ণ দেবনাথ। শ্রদ্ধা ও স্মরণে তাঁরই লেখা : স্মৃতি শুধুই স্মৃতি।

প্রয়াত নারায়ণ দেবনাথ। শ্রদ্ধা ও স্মরণে তাঁরই লেখা : স্মৃতি শুধুই স্মৃতি। 


স্মৃতি শুধুই স্মৃতি 

নারায়ণ দেবনাথ

তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছে, সেই সময় আর্ট কলেজ থেকে বেরিয়ে চিন্তায় পড়ে গেলাম যে এবার করবোটা কী, এখন যেমন নানা ধরনের কাজের সুযোগ তখন এর কিছুই ছিল না, কিন্তু কিছুতো করতে হবে তাই তখন লোকাল ছোটখাট কোম্পানীর কসমেটিক্সের ডিজাইনের কাজ যা পেতাম তাই করতাম। কিন্তু তাতে মন ভরত না। আমার মনের ইচ্ছে ছিল আর্ট কলেজ থেকে বেরিয়ে ছবি আঁকার কাজ করব কিন্তু পাবো কোথায়? এই ভাবে বছর তিন চার কাটার পর এক বন্ধুর মাধ্যমে শুকতারা পত্রিকার প্রকাশক দেব সাহিত্য কুটিরের কর্ণধার স্বর্গত শ্রদ্ধেয় সুবোধচন্দ্র মজুমদার মহাশয়ের সঙ্গে যোগাযোগ হলো। তিনি আমাকে গল্পের ছবি আঁকতে দিলেন। আমিও তখন আমার মনের যা ইচ্ছে ছিল ছবি আঁকা, তা পেয়ে মনের আনন্দে গল্পের ছবি আঁকতে লাগলাম। এরপর পূজাবার্ষিকীতেও আঁকা শুরু হলো। তখনও কিন্তু ছবি দিয়ে গল্প বলা শুরু হয়নি।


  এই ভাবে বছর দুই তিন পার হওয়ার পর একদিন আমাকে বলা হলো যে আমি চিত্র কাহিনী করতে পারবো কি না। আমি রাজি হয়ে গেলাম। শুরু হলো শুকতারার পাতায় 'হাঁদা ভোদার কাণ্ডকারখানা'। এর বছর খানেক পর ‘বাঁটুল দি গ্রেট'। তারপর ‘বাহাদুর বেড়াল' ইত্যাদি। এরপর অন্যান্য পত্রিকায় অন্য ছবিতে গল্প। সে সব পত্রিকা অবশ্য এখন বন্ধ হয়ে গেছে।

  এছাড়া আরও মনে পড়ছে স্বর্গত বিমলদার (মৌমাছি) কথা। তিনি তখন আনন্দবাজার পত্রিকার আনন্দমেলার পাতা পরিচালনা করতেন। ওর সঙ্গেও একজনের মাধ্যমে পরিচয় হওয়ার পর তিনি আমাকে দিয়ে আনন্দমেলার পাতায় শুরু করলেন চিত্র কাহিনী ‘রবিছবি'। কাহিনী বিমলদার, ছবি আমার। আরও একটা চিত্র কাহিনী বেরিয়েছিল, 'বীরেশ্বর বিবেকানন্দ'।

  তারপর এলো দীনেশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সম্পাদিত কিশোর ভারতী পত্রিকায় ছবির গল্প ‘নন্টে আর ফন্টে’। যা এখনও প্রতি মাসের সংখ্যায় চলছে। কলেজ স্ট্রীট পাড়ার আরও কত প্রকাশকের বই-এর ছবির প্রচ্ছদ করেছি তার কিছু মনে আছে কিছু স্মৃতি থেকে হারিয়ে গেছে। 

(জ্বলদর্চি || স্মৃতিকথা বিশেষ সংখ্যা || ২০১০)

আরও পড়ুন 
জ্বলদর্চি পেজে লাইক দিন👇


Post a Comment

0 Comments