জ্বলদর্চি

পার্থজিৎ চন্দ


পা র্থ জিৎ  চ ন্দ


আরণ্যক

ক্রমশ ফুরিয়ে আসা কুণ্ডের জলে জ্যোৎস্না পড়েছে

জল খেতে এসেছে হায়না বুনোমোষ নীলগাই

পাশাপাশি জলের দিকেই বেঁকে গেছে শঙ্খচিতির লকলকে জিভ

কাদার ভেতরে তারা ছটফট করে
ছটফট করে মোষের বাচ্চা

কুণ্ডের থেকে তারা পালাতে চাইছে

কাদায় আটকে গেছে বিষধর সাপ, জল খেতে আসা পশুর শরীর

ছটফট করতে করতে আবার তাদের তেষ্টা পাচ্ছে
আবার তাদের জিভ শুকিয়ে আসছে
ফুরিয়ে আসছে কুণ্ডের জল

এই মৃত্যুর মাথার ওপরে
লক্ষ বছরের জ্যোৎস্নার মায়া ঝরে ঝরে পড়ে
বিষাদসিন্ধু

সে প্রথম বোঝা গেল খাড়া ও দেবীর দিকে একযোগে তাকানো যায় না। তাই শেষমেশ হাড়িকাঠে ছাগশিশু মাথা নীচু করে নেয়। তাকায় মাটির দিকে। বাজো, সাদিয়ানা বাজো। এই গ্রহপথে বলির বাজনা যদি এতদূর, তবে তুমি তারও থেকে দূর ছড়িয়ে ছড়িয়ে পড়। সোহারির জলে বিষ। সোহারির মুখে হীরক ছড়ানো। কবে আর কোন পিপাসাক্লান্ত ঠোঁট এসব ভেবেছে! যে বলে গুপ্তহত্যা আমি তার দিকে চেয়ে হাসি, মনে মনে বলি, হত্যা গুপ্ত নয়, শুধু খাড়া ও দেবীর চোখের দিকে একযোগে তাকানো যায় না বলে ছাগশিশু মাথা নীচু করে নেয়


জন্মদিনের লেখা

আলোর বর্গগতি ও অভিশপ্ত পারদের নিবিড় সংযোগ ২১ চৈত্রের বিকেলবেলায় এক কলসাকৃতি জরায়ুর পেটের মধ্যে ঠেসে ধরেছিল মেঘ; বায়ুঘূর্ণন। সরলবর্গীয় গাছ চিরকাল অতলের নাভিবিন্দুমুখী, ট্রলার ঘুরেছে একা। কোথাও পুকুরে সন্ধের ছায়া নেমে আসে। একটি একাকী শোল কালো জলে ঘোরে। নিজের খেয়ালে নিজেকে হারায়, আকাশের দিকে চায়। আঁধার ঘনাইছে বনে বনে…, ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন আদিম ওয়াট জলের ভেতর পুঁতে রেখে গেছে সমানুপাতিক অভিশপ্ত পারা। শোলের বিষাদমুখ তাকে ঠোকরায়

গ্রহপথে রাধামাধবের মন্দির ছিল, ছিল ইরানী গোলাপও। মনে পড়ে সে কবে জন্মেছিলাম চৈত্রবেলায়


বাঁশি

তার চোখ থেকে আলো ছিনিয়ে নিয়ে গেছে প্রখর লুব্ধক

এ বন অন্ধদের
এ বনের ভেতর কালো মিনারেট

নেমে আসছে অন্ধকার

নিভে আসছে ঘড়ি
নিভে আসছে ঘন্টার প্রহর

পুণ্য সরোবরে, পুণ্য জলের ভেতর
শুধু বেজে উঠছে মদনমোহন বাঁশি
দিগন্ত

প্রজাপতি যতদূর উড়ে যায় ততদূরই ঘটনা-দিগন্ত

তারপর হোটেলের ঘরে ফিরে এসে লনের বিষাদ, মদঘোর

বহু-রাতে মনে পড়ে যাবে ক্যান্ডিফ্লস এসেছিল
ঢেউয়ের মাথায় নিভে গিয়েছিল ঝিকমিকে ছোট ছোট
  স্মৃতিহীন চীন-দেশী বল

------

-

Post a Comment

1 Comments

  1. প্রতিটি কবিতাই কাব্যগ্রন্হে পড়া।বারবার পড়ার মতো লেখ।।

    ReplyDelete