জ্বলদর্চি

শ্রীতনু চৌধুরী


শ্রী ত নু  চৌ ধু রী  


প্রকৃত ঈশ্বর

তার প্রতিটি শাখায় পান্থনিবাস
শান্তি আর সহাবস্থানে কাক্কোকিলের
অনাবিল অপত্য বিনিময়
তার চিকন পাতায় আঁকা প্রেমিকার মুখ
প্রহর লালিত্যে প্রেমজ আঁকিবুকি
কোষভর্তি বাতাসের অনন্ত প্রবাহে
যে প্রাণ দিতে পারে
সে' ই তো প্রকৃত ঈশ্বর
শিশুর হাতে খেলনার প্রাচুর্যের মত
ভগবানের নিয়ত ভাঙাগড়া, আত্মঘাত
অন্তিম দহনে অথচ সে'ই
হৃদয় আলিঙ্গনে পুড়ে
হয়ে যেতে পারে তাই
না পোড়া অমেয় জীবনজ্যোতি
বৈদুর্য মনির মত বলে
জীবনে অনেকে অনেক কিছু হতে বলেছিল
কিন্তু একবারও কেউ
গাছ হতে বলেনি।
কসাইখানা

যে অংক যোগে মিলেছিল
বিয়োগে মেলাতে গিয়ে একদিন
হাতে উঠে আসে কফিনের পেরেক
রক্ত ঘাম শ্বাসযন্ত্র পেরিয়ে
হাতুড়ির অন্তিম ঘা' এ
হৃৎপিণ্ড স্পর্শ করলে সে সূচালো শলাকা
ভেতর থেকে একটা গোঙানির শব্দ ওঠে
ঈশ্বর কণা দিয়ে যে পথচলা শুরু
সেই যাত্রা পথে 
ক্লান্ত ঈশ্বরকে 
তখন দেখি কসাইখানায়।


অমরত্ব

তুমুল প্লাবন শেষে
ঐ দ্যাখো,পলি হয়ে
শুয়ে আছে শুদ্ধ শতক
চলো, রোপণ করে দিয়ে আসি
অমরত্ব বীজ
নদীগুলি যদি ভেসে যায় তারপর
শিলাবতী জলে-
ক্ষতি নেই
এ জন্মে অন্তত একবার
তোমাকে ছুঁয়ে
পবিত্র হয়ে গেছি রাই।


সহযাত্রী

তোমার কাছে চাইনি কিছুই
যে সম্ভাবনাগুলি পেয়েছি
তা নকশিকাঁথা বলেই 
ভাবতে ভালো লাগে।
সকড়িমাখা হাত, তাই বিস্রস্থ কপালে
লেপ্টে থাকা অসংলগ্ন চুলগুলোকে নিয়ে
মাঝে মাঝে বড় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ো তুমি
তখন বিরাট একটা প্রশ্ন চিহ্ন নিয়ে
বিপন্ন সাঁকোর সামনে দাঁড়াই

এতটা পথ তো একাই হাঁটলাম
এবার এই সাঁকোটা
তোমার হাত ধরেই পেরোতে চাই রঞ্জনা।
রাধা-মন্দির

 প্রয়োজন নেই তাই যাপন করনি মন্দির।পূজা লোভী সযত্নে করে মহিমা নির্মাণ।পতনের আগে বৃষ্টিকণার সামনে পেতে রাখি হাত। চূর্ণে চূর্ণে ভরিয়ে দাও সাধন সন্ন্যাস।ভেজা হাত বুকের উপর রাখি।বুঝে নিতে চাই-কতটা দেবত্ব দিয়েছ তাকে, তাই পরেছে সে ঈশ্বরবেশ। কত বাঁশি বাজে,বিফলে গিয়েছে কত সুর। কুলভাঙা নূপুর সঙ্গতই কেবল কুলে কুলে প্রতীষ্ঠা করেছে গৃহ।
শুধু তোমারই কোনো ঘর নেই রাধে।

----

Post a Comment

2 Comments