পা র্থ প্র তী ম মি শ্র
জন্মান্তর
নিয়ম করে এখানে আসি। দরজার ওপারে রেখে আসি যাবতীয় লজ্জা-শরম। নিজেকে নিজের সামনে মেলে, পোশাক খুলি সব...
জলের নীচে দাঁড়াই। বেখেয়ালে খেয়াল ধরে মন। ঘড়ির কাঁটা এখানে বারণ। জ্যামিতি- পরিমিতি-ব্যাকরণ অপ্রয়োজন।
বড় হালকা লাগে। সাপ লুডো জীবন, সরীসৃপ চলন, মৃগলুব্ধ দৃষ্টি ধুয়ে যায় সব।
এই ছোট্ট ঘরেই প্রথম ঈশ্বর দর্শন!
ককপিট
সংক্রান্তি ছুঁয়ে সাগর স্নান। আউলি বাউলি সাজ, কুমারী টুসুর লাজ মাখে গান্ধর্ব বাতাস...
বাউরি পরবও পাতে ধুলাট উৎসব...
ককপিটে লড়াই
রক্তক্ষরণ
ডানাকাটা যন্ত্রণা পালকের বিছানায়...
আলো না আদিমতা!
বাতাসে উড়ে স্তোত্রপাঠ সাবাস সাবাস..
মুখোমুখি
এই দুপুর বয়স মোছে কাঁচপোকা রং-আদর আহ্লাদ- মগ্ন ভাতঘুম...
মন্দাক্রান্তা ছন্দে দুপুরের পায়ে পা রেখে চলে আসি ভাঙাচোরা পুকুর ঘাটে।
পিঠে পিঠে,পা ছড়িয়ে সুখ-দুঃখ কথা কই, কাটাকুটি খেলি...
চই চই ডাক জলকেলি-ডুবসাঁতার শেখায়।
শিরিষ গাছের ঠোকরানো কাঠের শব্দ মন টানে।
অদৃশ্য পোকাদের প্রকাশ্যে আনার সম্মোহন মন্ত্র শিখে নেই কাঠঠোকরার কাছে...
এদিকে বাবলাতলায় রামধনু রং ছড়িয়ে নেশা ধরিয়ে দিব্যি জল কাঁচে মুখ দ্যাখে মাছরাঙ্গা, না না অর্জুন পাখি। জলের নিচের চলাচল, মনোসংযোগ, গতিবেগের অঙ্ক ওর জলবৎ...
এইসব কুড়োতে কুড়োতে সূর্য গেল পাটে। ছেড়ে যাবে ও! আমিও ফিরবো ঘরে...
চিন্তা নেই, অন্ধকার যতই গাঢ় হোক, কুড়োনো রসদ দিয়েই জ্বালবো পান্ডুলিপি...
ভালোবাসা
সেই কবে খুলেছি সমস্ত প্রকোষ্ঠ, জানালা।
চেয়েছি মাখতে সোনালী রোদ্দুর।
চেয়েছি আস্ত একটা সবুজ মেঘ এসে
ঢুকে পড়ুক আমার ভিতর।
আমাকে ওড়াক- ভাসাক স্বপ্ন দরিয়ায়...
আমি তো সেই কবেই সর্বস্ব খুলে বসে আছি মৌসুমী!
দুয়ারে পড়েনি পায়ের ছাপ।
কতদিন বাজেনি বৃষ্টি নূপুর।
উঠোনজুড়ে আসেনি চড়ুইর ঝাঁক।
দু-বেলা শস্য দানা ছড়িয়েছি কতবার...
আজ এই হাড়-হীম উত্তুরে বাতাসে বন্ধ দরজায় কড়া।
আসার সময় হল বুঝি!
এই পড়ন্তবেলায় কীবা দেওয়ার থাকে!
জলপিড়িও নেই, কোথায় বসতে দিই।
শস্যদানাও নেই, কীবা খেতে দিই।
আর ভালোবাসা! সেও থেকে থেকে হয়েছে অহল্যা পাষাণ।
জীবাশ্ম কথা
সুবর্ণরেখা কালের হাতে পড়েনি বাদ,
মুখ ফিরিয়েছে সেও...
রেখে গেছে পললে পললে লেখা আর রেখা
কত কথকতা ইতিহাস।
আজ সেই প্রত্নগর্ভ ছিঁড়ে
চোখ মেলছে
জীবাশ্ম কথা...
কে জানতো তুমি অমরাবতী, সখিসেনা-অহিমানিকের প্রণয় দহন
অনন্ত হাহাকার...
কে জানতো তুমি তারও নীচে মহাসুখধাম;শান্তি প্রস্রবণ
জ্বেলেছিলে প্রজ্ঞা প্রদীপ,
শুনিয়েছিলে পঞ্চস্কন্ধবেদ
সুষুম্নায় বিশ্বাস রেখে
কেমন পাওয়া যায়
মহাসুখ স্বাদ...
-----
1 Comments
Valo hoyeche....
ReplyDelete